নারীজাতি যাদের কাছে তেতুলসম !!

লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ নূর উদ্দীন ১৮ জুলাই, ২০১৩, ০৯:০৯:২৯ সকাল

বাড়ীতে চাচা-জেঠাদের কটা তেতুল গাছ ছিল। ছেলেবেলায় তেতুলের প্রতি আসক্তি ছিলনা এমন ছেলে-মেয়েদের কম দেখেছিলাম। গুড়ামরিচ ও লবন মিশিয়ে, কখন আধাপাকা তেতুল ভাতের গরম মাড়ের ভিতর ডুবিয়ে রেখে কখনবা পাকা তেতুল খোসা ছাড়িয়ে ইত্যাদি হরেকরকমে এই লম্বাটে ফলটিকে বহুবার ভক্ষন করেছি ।

ইদানিং কেউ কেউ নারীদের তেতুলের মত ব্যক্ত করায় নিজেই লজ্জা পাই । কারন তেতুলতো নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবাই খায় এবং দেখলে সবারই জিহ্বায় পানি আসে ।

যারা নারী তেতুলসম বলেছেন এবং আরো বলেছেন পানি না আসলে সে নপংশুক ! প্রথমেই তাদের সাথে সবিনয়ে আমাকে দ্বিমত করতে হয় । পবিত্র কোরানে কোথাও নারীদের টকস্বাদযুক্ত তেতুলসম বলা হয়েছে বলে আমার চোখে পড়েনি । হাদীসের যেটুকু পড়েছি তাতে এ একি কথা কোথাও পেয়েছি বলে মনে পড়েনা । সুতরাং ইসলামের অনুশাসন বুঝানোর জন্য এধরনের উপমা না দিলেই বরং ভাল। নারীরা তেতুলের মত, দেখলে পানি আসতেই হবে এসব ইসলামের সঠিক শিক্ষা বলে মোটেও মনে হয়না ।

মহান আল্লাহ নারী-পুরুষ উভয়কেই যথাক্রমে পরপুরুষ ও নারী থেকে দৃষ্টি নত রাখতে বলেছেন । সুতরাং উভয়ের জন্যই পর্দা করা ফরজ । কারন আল্লাহর সীমা লংঘন করে দৃষ্টি লম্বা করলে উভয়েরই কামরিপু সতেজ হবার সমুহ সম্ভাবনা রয়েছে, তা রাস্তায় হোক বা কর্মক্ষেত্রে কিংবা বিমান বা হজ্জ্বে।

হুজুরদের এসব উপমায় স্বাভাবিক কারনেই কেউ প্রশ্ন তুলতে পারে, হুজুররা যখন বিমানে চড়েন, কিংবা হজ্জে যান সেখানেকি বিমানবালারা সুন্দর সাজে সামনে আসেনা, এমনকি হজ্জের তাওয়াফ করার সময়তো নারী-পুরুষ অনেকটা ঠাসাঠাসি করেই করতে হয় - তখনকি সবার গোসল ফরজ হবার অবস্হা হয় !! আবার যেসব মুসলিম পশ্চিমা দুনিয়ায় থাকে, তাদেরতো মাটির দিকে অথবা আকাশ পানে চেয়েই পথ চলতে হবে । নাহয় খুবসুরত অর্ধনগ্ন নারীদের দেখে তাদের বেহুশ হবার কথা !!

গার্মেন্টেসের মেয়েদের আমি নিজেও অনেক ভোরে বা গভীর রাতে কাজে আসা-যাওয়া করতে দেখেছি । এদের অনেকের ছেলে-মেয়েরা হুজুরদের মাদ্রাসায় পড়াশুনাও করে। গার্মেন্টসে কাজ করলেই যদি জেনা হয়ে যাবে, তাহলে আপনাদের মাদ্রাসায় পড়ুয়া এদের সন্তানদের মনের অবস্হাটা কি হতে পারে । এসব অনাহারি বা দরিদ্র নারীদের কষ্ট লাঘবের জন্য বা তাদের ইজ্জত রক্ষার জন্য হুজুরদের অবদান কি আছে সমাজে তা মানুষ মুল্যায়ন করতেই পারে । মহান আল্লাহ যেখানে নামাজের নির্দেশ দিয়েছেন, প্রায় সবস্হানেই যাকাতের কথা বলেছেন । কারন মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি ছাড়া নিষ্ঠার সাথে ধর্ম পালন অসম্ভব। হুজুররাতো নিজেদের অরাজনৈতিক বলেন । পারলে ইসলামী দলগুলোর কঠোর সমালোচনা করেন। তাহলে যাকাতের অর্থব্যবস্হা কায়েমের জন্য ইসলামী কল্যান রাষ্ট্র কারা গঠন করবে !!

বিষয়: বিবিধ

১৪৫৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File