আলহামদুলিল্লাহ বিশাল এক উট সাদাকাহ করলাম !
লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ০১ ডিসেম্বর, ২০১৮, ০৮:২৪:৩০ সকাল
----------------------------------------------------------
শালা আমি রান্না বান্না কেন শিখলাম !! হাটে মাঠে রাস্তাঘাটে লোকজন শুধু খাই খাই করছে আমাকে দেখে। -------জনগনের মান সলেমান কিচ্ছু নেই।
মসজিদ আর আমার বাসার প্রায় মাঝামাঝি একটা স্থানে স্যামুয়েলদের বাড়ী। ভাবছিলাম আজ কিছু সময় কাটাবো ওর সাথে। কিন্তু ওর নানী সকাল সাড়ে ১০টায় জানালো স্যামুয়েল এইমাত্র ঘুমালো। কি আর করা মসজিদের জন্যে রেডী হলাম। গত দুই শুক্রবার মসজিদে গিয়ে দেখেছি খুৎবা প্রায় শেষের পথে। আর আজ গিয়ে দেখী মসজিদ খোলেনি তখনও। ভেবেছিলাম আজ ঠান্ডা লাগবে না। কিন্তু ওখানে যাওয়ার পর খুব শীতল একটা বাতাস শুরু হল,তাতে আমি সারা হলাম। মসজিদের গেটে দাড়িয়ে শীতলতায় কাপছিলাম। পাতলা পাঞ্জাবী গায়ে দেওয়া আজ। এরপর এক ভাই আসলো অনেক পরে এবং দরজা খুলে দিল।
শুক্রবারের আমল সম্পর্কে বেশ কিছু হাদীস রয়েছে। এর একটি হল সূরা কাহফ তিলাওয়াত করা। আমি মনে হয় জীবনে ২বার শুক্রবারে পুরোটা তিলাওয়াত করেছি। এর মোট আয়াত ১১০টা। পরে প্রথম ১০ আয়াত,শেষ ১০ আয়াত তিলাওয়াত করতাম অলসতার কারনে। এখন শেষে যাইনা, প্রথমের ১০/১৫ আয়াত দিয়ে চালাচ্ছি, পুরো ফাকিবাজি। আল্লাহ এটাকে পুরোটা হিসেবে কবূল করুক।
তবে শক্রবার সম্পর্কে মারাত্মক এক হাদীস আছে। তবে হুবহু মনে করতে না পারলেও মূল ভাব মনে আছে। রসূল(সাঃ)বলেন-যদি কেউ শুক্রবারে উত্তমরূপে গোসল করে, ,আগে ভাগে মসজিদে যায়, পায়ে হেটে মসজিদে গমন করে, সামনের দিকে গিয়ে মনোযোগ দিয়ে খুৎবা শোনে, সামনের দিকে দাড়িয়ে সালাত আদায় করে......তাহলে তার (ওই মসজিদের উদ্দেশ্যে হাটার সময়) প্রতি কদমে কদমে ১ বছরের নফল ইবাদতের সওয়াব লেখা হয়। অনেকগুলো সহি কিতাবে এটি বর্ণিত হয়েছে।
তবে ছোটবেলা থেকে জুম্মাহর ব্যপারে একটা হাদীস জানতাম। তা হল যে আগে প্রবেশ করে, সে একটি উট সাদাকাহর সওয়াব পায়, এর পরের জন একটি গরু সাদাকাহ,,পরের জন বকরীর....এভাবে চলতে থাকে খুৎবা দেওয়া পর্যন্ত। আজ আমি তরতাজা এক উট সাদাকাহ করলাম আলহামদুলিল্লাহ
নামাজের পর সামির ভায়ের সাথে দেখা। অন্যদিন লোকজন বাইরে দাড়ায়, সবাই বের হলে গল্প চলে। কিন্তু ঠান্ডায় সবাই ভেগেছে। ফারিস ভায়ের সাথে দেখা হল। এই ছেলে সৌদী আরবের। মাঝে মাঝে ইমাম না থাকলে ও খুৎবা দেয়। ইউনিভার্সিটিতে পি.এইচ.ডি করছে। আরেক ফর্সা সুন্দর আরবের সাথে পরিচয় করিয়ে দিল বোন হিসেবে। বলছে,,এ তো আমার বোন...অমুক। সেই লোক হাসতে হাসতে শেষ। অসম্ভব মজার ছেলে। হঠাৎ হাসি থামিয়ে নিরব। কোনো কথা নেই। আমার দিকে তাকিয়েই আছে। বললাম,,,, কোনো সমস্যা ? বলে--অবশ্যই , অবশ্যই ! বললাম কি ? সে বলল---আমার মিস্টি কই , মিস্টি !! ওই যে রোজার মাসে ....। ওরে জ্বালা ! অক্টোপাসের মত ধরে বসল, ছাড়াতে পারলাম না। আগামী শুক্রবার মিস্টি বানায় খাওয়াবো কথা দিয়ে মসজিদ ত্যাগ করলাম। তবে আমার মিস্টির বড় ফ্যান এ নয়, বরং ফয়সাল। এরা সকলে মসজিদের নানান কাজে স্বেচ্ছাশ্রম দেয়। এমনকি কেউ মারা গেলে সকল দায়িত্ব নিজেদের কাধে নেয়। অনেক অনেক কর্যানকর কাজে নিয়োজিত থাকে। আল্লাহ ওদেরকে অনেক বেশী পুরষ্কার দিন। তবে ফারিস একটা জিনিস, হাসির বাক্স। প্রতি মুহুর্তে লোকজন মাতিয়ে রাখে। আগামী সপ্তাহে ওকে মিস্টি দিয়ে পুতে ফেলব।
উইনকো নামের গ্রোসারী স্টোরে গেলাম। কিছু খাদ্যদ্রব্য,মশলা কিনলাম। এবার এক পোষাকের দোকানে গেলাম। ফেরার সময় ভিন্ন একটা রাস্তা ধরলাম। সুন্দর সবুজ ফার্ম হাউসের রাস্তা ধরে ফিরছিলাম। উদ্দেশ্য ছিলো ডেভিস ফ্যামিলী স্টোরে থামা। এরা এই সময়ে মিস্টি আপেলের থেকে চেপে বের করা রস বিক্রী করে। খুব মিস্টি। দামেও সস্তা। কিন্তু বেখেয়ালে সেই স্টোর ছাড়িয়ে চলে আসলাম,,আর পেছনে ফেরা হলনা।
খেয়াল করেছি ছুটির দিনগুলো দ্রুত ফুরিয়ে যায়। আজ অামার খাবার শেষ হল। এখন আবার রান্না করতে হবে, কি জ্বালা !
বিষয়: বিবিধ
৭০৫ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন