ক্রাইসিস করোনা
লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ১৮ মার্চ, ২০২০, ০৭:৩৫:৩৬ সন্ধ্যা
বড় বড় স্টোরগুলোর সামনে নোটিশ দেওয়া হচ্ছে-এই এই আইটেম শেষ হয়ে গেছে। মানুষ ভয়ে প্রচুর খাবার মজুদ করেছে, যা দিয়ে অন্তত ৩/৪ মাস তাদের চলে যাবে। যদি আরও খাবারের সরবরাহ আসে,ওরা আরও কিনবে। বছর খানেকের মত খাবার মজুদ করবে, এবং আরও বেশী কিনবে। ওদের ডলার আছে প্রচুর। কিন্তু একটা ব্যাপার খুব কম লোকই বুঝবে। সেটা হল, কাগজী মুদ্রার মান। স্বর্ণ বা রৌপ্য মুদ্রার নিজস্ব মূল্য রয়েছে,ফলে এসব মুদ্রা অবমূল্যায়িত হয়না,সম্ভাবনাও নেই। কারন মুদ্রাগুলোর ওজনে বিক্রী করলেও পয়সা পাওয়া যায়।
নিয়ম ছিলো ডলার/পাউন্ড বা ধনী দেশগুলোর মুদ্রা ছাপানোর জন্যে এর ব্যাকআপ হিসেবে প্রকৃত সম্পদ যেমন স্বর্ণ,রৌপ্য,ডায়মন্ড,বা সর্বজনবিদীত সম্পদ আছে কি না তা দেখা বা নিশ্চিত করা। কিন্তু প্রকৃত সত্য এই যে, এসব মুদ্রা ছাপানোর সময় যথাযথ নিয়ম মানা হয়নি, কারন এদের উপর খবরদারী করার সাহস কারো নেই। এই কাগজী মুদ্রা ছাপিয়ে সেই কাগজকে আন্তর্জাতিকভাবে মার্কেটিং করে আন্তর্জাতিক মুদ্রা বানানো হয়েছে। এখন হিসেবে ১টি ডলারে ৮৭টি বাংলা টাকা পাওয়া যায়,যার পেছনে জোরালো কোনো যুক্তি নেই। কিন্তু দুনিয়াবাসী এটা মেনে নিয়েছে,এভাবেই চলছে। কিন্তু কথা হল এই যে, দুনিয়াবাসীর কাছে যতগুলো ডলার আছে, সেগুলো নিয়ে যদি আমেরিকার কাছে এসে বলে- আমাকে ডলার মোতাবেক সম্পদ দাও, বা ডলারগুলো রাখো, তোমার সম্পদ দাও, তাহলে কি আমেরিকা উক্ত পরিমান ডলার মোতাবেক সম্পদ প্রদান করতে পারবে ? উত্তর হল- না। হিসাব বলছে গোটা আমেরিকাকে অন্তত ৬০০ বার বিক্রী করে ওই পরিমান ডলারের সম্পদ পরিশোধ করতে হবে। তার মানে আমেরিকার মোট যে সম্পদ আছে তার চাইতে শত শত গুন বেশী ডলার ছাপিয়েছে তারা।
করোনা ক্রাইসিসে দেখা যাচ্ছে মানুষের হাতে ডলারের বান্ডেল আছে কিন্তু চাহিদা মোতাবেক সম্পদ নেই। চাল ,ময়দা দিয়ে যদি হিসেব করি, তবে বলতে হয় ২৫ পাউন্ডের এক বস্তা সাধারন চালের দাম ১২ ডলার, কিন্তু সেটা পাওয়ার জন্যে হাজার হাজার লোক হাজার হাজার ডলার নিয়ে বসে আছে। তার মানে অর্থনীতির ভাষায় এখন টাকার কোনো মূল্য নেই। কারন তার উপযোগীতা নেই। আর যদি চরম মন্দার কারনে এমন হয়, কোনো খাবারই নেই, তাহলে ওই ডলারের চেয়ে গাছের পাতা বেশী মূল্যবান, কারন গাছের পাতা খাওয়া যায়।
একই অবস্থা অন্যান্য ইউরোপ,আমেরিকার দেশগুলোর। পৃথিবীর মানুষগুলো ছোট্ট্ এক করোনার কাছে কতটা যে অসহায়,না দেখলে বিশ্বাস হবেনা। এই ক্রাইসিস দীর্ঘায়িত হলে আরও বহু হিসাব নিকাশ প্রকাশ্যে উঠে আসবে। দুনিয়াবাসীর বহু অহংকার ধুলোয় মিশে যাবে। যদি মাত্র এক বছর প্রধান প্রধান খাদ্য উৎপাদনকারী দেশগুলো খাদ্য উৎপাদন করতে না পারে, তবে ঠেলা বুঝবে সকলে। তবে সেসব লোকেরা টিকে যাবে, যারা নিজেরা নিজেদের ক্ষেতে ফসল ফলায়,বাড়ির পাশে তরকারী লাগায়,পুকুরে মাছ আছে,,,,পশুপালন করে। প্রকৃত হিসেবে এরাই ধনী, কিন্তু বিশ্ব আর্টিফিশিয়ালভাবে এমন লোকদেরকে ধনী বানিয়েছে, যাদের আসলে গোলাম হওয়ার কথা। প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারে শূণ্য থেকে ওরা সম্পদ তৈরী করেছে। আর বাংলাদেশের মত দেশগুলো, যাদের অপার সম্ভাবনা ছিলো প্রকৃত স্বনির্ভর হওয়ার, ওরাই জ্ঞানহীনতায়,যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে অন্যের গোলামী করে। উন্নত বিশ্ব কাগজ ছাপিয়ে এদের সম্পদ কিনে নিয়ে যায়।
বিষয়: বিবিধ
৯৪৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন