নির্বাচন, গণতন্ত্র, গণঅভুথান নাকি আবার সিপাহী জনতার বিপ্লব? কোন পথে বাংলাদেশ?

লিখেছেন লিখেছেন আনিসুর রহমান ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৮, ০৭:১১:২২ সকাল

নির্বাচন ছাড়া কোন ভাবেই কোন দেশ নিজেদের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র দাবী করতে পারে না। তাই নির্বাচন যে একটা হবে তাতে কোন সন্দেহ নাই। সেই নির্বাচন যে ভাবেই হোওক না কেন? গভীর ভাবে অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে বুঝা যাচ্ছে যে, যে নির্বাচন হবে তা সকলের কাছে গ্রহণ যোগ্য না হওয়ার সম্ভবনাই বেশী! বিরোধী জোটের অর্ধ শতকেরও বেশী প্রাথীর মাথা ফাটিয়ে দেওয়া, বিরোধী জোটের শক্তিশালী প্রথিদের বাড়ীতে অবরুদ্ধ রাখা, জেলে পুরা, সান্ত্রাসী হামলা চালানো এবং হামলার পর অহত নেতা কর্মীদের বোনাস হিসাবে পুলীশের হাতে পিটুনি দিয়ে জেল হাজতে প্রেরণ ইত্যাদি বিষয় গুল বিবেচনায় আনলে যে কেউই বুঝতে পারবে, বাংলাদেশে যে নির্বাচন হতে যাচ্ছে তা বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় কতটা সহায়ক ভূমিকা রাখবে তা প্রশ্ন সাপেক্ষ।

বস্তুত বাংলাদেশীরা বুঝে গেছে তারা ১৯৭১ এর ন্যায় জেগে না উঠলে ফ্যাসিবাদের হাত থেকে মুক্তি নেই। এই ফ্যাসিবাদের হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য বাংলাদেশের আম জনতা যে, প্রস্তুত হয়ে আছে তাও আজকে স্পষ্ট হয়ে গেছে বিভিন্ন ছোট ছোট ঘটনার মধ্য দিয়ে। যেমন সিলেটে বিরোধী জোটের এক নেতার বাড়ীতে পুলিশ তালাশির নামে জংলী কার্যক্রম চালতে থাকা অবস্থায় জনতার মাঝে এই খবর জানাজানি হয়ে গেলে, মুহুত্রের মধ্য আম জনতা ১৯৭১ এর ন্যায় প্রতিরোধ গড়ে তোলে ফলে পুলিশ পালিয়ে যেতে ব্যাধ্য হয়। সাবাস বাংলাদেশ। বুঝায়ই যাচ্ছে ভোট চুরি বা ডাকাতীকে কেন্দ্র গণঅভুথান ঘটে যাওয়ার সম্ভবনা যে প্রবল তা কোন ভাবেই অস্বীকার করা যায় না। এই গণঅভুথান অনেকটাই নির্ভর করে বিরোধী জোটের নেতাদের HIDE & SEEK খেলার উপর, কেননা এই মুহুত্রে যতটা না তাদের নেতৃত দরকার তার চেয়ে বেশী দরকার জায়গামত তাদের উপস্থিতি। হত্যা খুন, গুম এবং গ্রেফতারের হাত থেকে পালিয়ে জায়গামত সঠিক সময়ে উপস্থিত থাকাটাই এখন সময়ের দাবী। এই ক্ষেত্রে অতি সাহসীকতা বিপর্যয় নিয়ে আসার সম্ভবনাই বেশী। তাই যতটা না গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সম্ভবনা আছে তার চেয়ে বেশী গণঅভুথান ঘটার, বর্তমান অবস্থা সেই দিকই নির্দেশ করছে।

এই ক্ষেত্রে গণতন্ত্রপন্থী নেতারা যেহেতু কোন একটি সিস্টেমের অধীনে কাজ করার কোন ধরনের সুযোগ পাচ্ছে না তাই এই গণঅভুথান যদি দেশের জন্য চরম বিশৃখল অবস্থার তৈরী করে তবে এর থেকে উত্তরণের কী কোন উপায় আছে। উত্তর হল হ্যাঁ আছে, এই ক্ষেত্রে যাদের নেতৃত্ব দেশ বিদেশে প্রশংসা অর্জন করেছে তারা হয়ত এগিয়ে আসবে। সে ক্ষেত্রে হয়ত ৭ ই নভেম্বরের ন্যায় আরেকটি সিপাহী জনতার বিপ্লব হওয়ার সম্ভবনাকেও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। এই ধরনের বিপ্লব বর্তমান রেজীমের জন্য যে বিপদ বয়ে আনবে তা ভাবলেও মন খারাব হয়ে যায়।

তবে সব কথার শেষ কথা হল, একটি ফেয়ার ইলেকশনই পারে এই ধরনের বিপর্যয় থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করতে। আমরা মনে করি একটি ফেয়ার ইলেকশনই বর্তমান রেজীমের জন্য মঙ্গলজনক। কেননা গত দশ বছর ধরে তারা যে সিস্টেম তৈরি করেছে তা ভঙ্গে রাতারাতি কোন গণতান্ত্রিক সরকারের পক্ষে তাদের উপরে কোন ধরনের অন্যায় করা সম্ভব নয়। কিন্ত গণঅভুথান কিংবা সিপাহী জনতার বিপ্লব হলে তাদের নেতারা যা আশংখা করছে হয়ত তার চেয়েও খারাপ অবস্থার তৈরি করবে।

বিষয়: বিবিধ

৬০৫ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

386269
২৭ ডিসেম্বর ২০১৮ বিকাল ০৫:১৬
কুয়েত থেকে লিখেছেন : আওয়ামীলীগের চুড়ান্ত পতন না হওয়া র্পযন্ত্ এই জাতির কল্যান হবেনা।ওরা মানুষ নয় কোন সৎ মানুষ আওয়ামীলীগ করতে পারেনা। ধন্যবাদ
২৯ ডিসেম্বর ২০১৮ বিকাল ০৪:১২
318163
আনিসুর রহমান লিখেছেন : হতাশ হওয়ার কিছু নেই। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেন,
“ আমি (আল্লাহ) উপদেশের পর যবুরে লিখে দিয়েছি যে, আমার সৎকর্ম পরায়ণ বান্দাগণ অবশেষে পৃথিবীর অধিকারী হবে। এতে এবাদতকারী সম্প্রদায়ের জন্য পর্যাপ্ত বিষয়বস্তু রয়েছে। (২১ঃ ১০৫)

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File