অর্থনীতিঃ পুঁজিবাদ, সমাজতান্ত্রিক এবং ইসলামী

লিখেছেন লিখেছেন আনিসুর রহমান ০৬ মে, ২০১৮, ১১:২৪:০৭ সকাল

পুজিবাদী অর্থনীতিঃ পুজিবাদী অর্থনীতির মূল ভিত্তি হ’ল, ‘মুনাফা (Profit)’। এই ‘মুনাফা’ ব্যাক্তির হতে পারে, সমাজের হতে পারে এমন কী কোন একটি দেশের জন্য হতে পারে। এই ক্ষেত্রে তারা যা যা বিষয় ‘মুনাফাবান্ধব’ নয় বলে নির্ণয় করে সেই ধরনের যে কোন বিষয়কে প্রতিরোধের জন্য নিজেরদের স্বার্থে কালা কানুন তৈরি করে, এমন কী দরকার বোধ করলে যুদ্ধেও জড়িয়ে পড়ে।

সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতিঃ পুজিবাদী অর্থনীতির মূল ভিত্তি হ’ল, “ সাম্যবাদ (Equal distribution)”। বিষয়টি বুঝার সুভিদার্থে ধরুন, কোন এক পাটীতে(Party) একটি বিরাট কেককে(Cake) আনা হল সকলের মাঝে বন্টন করে দেওয়ার জন্য। এ ক্ষেত্রে আপনি যদি তা সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতির সুত্র অনুসারে বন্টন করতে চান তবে অবশ্যই আপনি তা সকলের মাঝে সমান ভাগে ভাগ করে দিবেন। এই ক্ষেত্রে তারা যা যা বিষয় ‘সাম্যবান্ধব’ নয় বলে নির্ণয় করে সেই ধরনের যে কোন বিষয়কে প্রতিরোধের জন্য নিজেরদের স্বার্থে কালা কানুন তৈরি করে, এমন কী দরকার বোধ করলে যুদ্ধেও জড়িয়ে পড়ে।

ইসলামী অর্থনীতিঃ ইসলামী অর্থনীতি ভিত্তি হল ন্যায় বিচার; এই ন্যায় বিচার নির্ধারণের মূল মাপকাঠি হল কুরআন সুন্নাহ। উপরের কেকের উদাহরণটি টেনে এনে এখন আমরা যদি ইসলামের মাপ কাঠিতে তা বন্টন করতে চাই তবে তা করতে হবে সাম্যের ভিত্তিতে নয় বরং ন্যায় বিচারের ভিত্তিতে। অর্থাৎ কেকটিকে বন্টন করতে হবে ব্যাক্তি বিষেশের প্রয়োজন অনুসারে; যার অল্প কেক হলেই ক্ষুধা মিটে যাবে তাকে ততটুকু দিতে হবে আর যা ক্ষুধা মিটানোর জন্য বেশী কেক দরকার তাকে ততটুকু দিতে হবে।

ইসলামী অর্থনীতির সাথে ধনবাদী ও সমাজবাদী অর্থনীতির একটি বিরাট বিশাল প্রার্থক্য হ’ল, ধনবাদী ও সমাজবাদী উভয় অর্থনীতিতেই পরকালকে ফোকাস করে না বরং এই দুনীয়ার কল্যাণের জন্য কাজ করে। যার অবশ্যম্ভাবী ফলাফল হ’ল দুর্নীতির কাছে পরাজয়, স্বার্থের কাছে পরাজয় সর্বপরি মনবতার কাছে পরাজয়। ইসলামী অর্থনীতির সাথে ধনবাদী ও সমাজবাদী অর্থনীতির আর একটি বিরাট বিশাল প্রার্থক্য হ’ল, আইন প্রনয়ন। সকল আইনই কুরআন সুন্নার আলোকে প্রণীত হয়। ধনবাদী ও সমাজবাদী উভয় অর্থনীতিতে এই ধরনের কোন ব্যাধ্য বাধকতা না থাকার ফলে ব্যাক্তি স্বার্থে, দলের স্বার্থে কিংবা দেশের স্বার্থে মানুষের খেয়াল খুশী মত আইন প্রনীত হয়ে থাকে ফলে তাতে থাকে না ন্যায় বিচার তার পরিবর্তে থাকে কোন এক পক্ষের স্বার্থ রক্ষা।

ইসলাম বানিজ্যকে হালাল করলেও সুদকে হারাম করেছে। বাজারের স্থানকে হালাল বললেও, স্থান হিসাবে বাজারকে সবচেয়ে নিকৃষ্ট স্থান বলেছে। এটা সহজেই অনুনেয় আমাদের বাজারগুল হল আমাদেরকে ডীল্যিউশ(Delusion) করার সর্বতম স্থান শয়তানের জন্য। যেখানে শয়তান আমাদের আদী পিতা হযরত আদম () একটি বিশেষ গাছের ফলের দ্বারা অছওয়াছা দিয়ে ছিল জান্নাতে সেখানে আজকের দুনীয়ার বাজারগুলতে iPhone থেকে শুরু করে কী নেই মানুষকে Delusion করার জন্য।

আজকের প্রেক্ষাপটে বাজার এমন এক বাস্তবতা যা থেকে রেহাই নেই কারও। আপনি ঘুম থেকে উঠে টীভি অন করুন বাজার অর্থাৎ শয়তানের ডীল্যিউশ(Delusion) আপনার সস্মুখে হাজির, বাড়ীর বাহির হন বাজার অর্থাৎ শয়তানের ডীল্যিউশ(Delusion) হাজির। মোবাইল, ইন্টারনেট, ইমেইল আপনি যে দিকেই যান না কেন আপনি বাজার অর্থাৎ শয়তানের ডীল্যিউশ(Delusion) আপনার সস্মুখে হাজির হবে হবেই! এটা এটাই নির্দেশ করে, আমরা যে সময়টাতে অবস্থান করছি তা কোন সাধারন সময় নয় বরং কেয়ামতের নিকটবর্তী সময়!!

বিষয়: বিবিধ

৮০১ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

385290
০৭ মে ২০১৮ সকাল ১১:৩০
হতভাগা লিখেছেন : বাজারে আপনি না গিয়ে পার্বেন না । শয়তানের ওয়াসওয়াসা সবসময়ই থাকে - সে জন্য কি দোয়া পড়তে হবে সেটা আল্লাহ বলে দিয়েছেন।
০৭ মে ২০১৮ বিকাল ০৪:১৬
317639
আনিসুর রহমান লিখেছেন : আপনার সুচিন্তিত মতামতের জন্য ধন্যবাদ। বাজার নিকৃষ্ট স্থান হলেও এটা ছাড়া আমরা অচল। যে ভাবে টয়লেট বাড়ির ভীতরে নিকৃষ্ট স্থান হলেও তা আমাদের সবার বাড়ীতেই আছে। প্রসঙ্গক্রমে বলতে চাই, ইসলাম ধনী ব্যাবসায়ীদেরকে সাম্যবাদীদের ন্যায় (শ্রনী)শত্রু মনে করে না বরং সৎ ব্যাবসায়ীদেরকে তাদের সেবার জন্য আখেরাতে পুরস্কৃত করার সুসংবাদ দেয়। বস্তুত নবী করিম () ছিলেন একজন ব্যাবসায়ী।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File