একটি বিয়ের পাগুড়ী একটি জীবন

লিখেছেন লিখেছেন এ এম ডি ১১ অক্টোবর, ২০১৪, ১০:৫১:৩৭ রাত

কাইয়ুম ছোট বেলা থেকে খুব হাড় ভাঙা পরিশ্রম করছে । তার একটাই চিন্তা একদিন তার ঘর সংসার হবে । ছেলে মেয়ে হবে আর তাদের নিয়ে সুখে শান্তিতে কাইয়ুমের দিন কেটে যাবে ।

কাইয়ুমের সে স্বপ্ন এগিয়ে চলছে । দেখতে দেখতে কাইয়ুমের বয়স ২০ পড়লো এবার কাইয়ুমের স্বপ্ন একটু অন্যভাবে গুরিয়ে দেখার স্বাদ জাগলো কায়ুম চিন্তা করলো দেশে অনেক হাড় ভাঙা পরিশ্রম করেছি সাফল্য হয়েছি ।

আর হয়ত কয়েক বছর পরে বাবা মা বিয়ের পিড়িতে বসিয়ে দিবে ।

আর একবার বিয়ের পিড়িতে বসে গেলে তখন আর দেশ ছাড়া দেশের বাহিরে কিছু দেখা হবে না । তাই কাইয়ুম বিয়ের পিড়িতে বসার আগে সে বিদেশ চলে গেল কিছু বৈদেশি মুদ্রা উপার্যনের জন্য ।

দেখতে দেখতে কাইয়ুমের বিদেশ যাওয়া প্রায় তিন বছর হয়ে গেছে । কাইয়ুম তিন মাসের ছুটি পেলেন তাই সে চিন্তা করলো এবার দেশে গিয়ে কিছু দিনের জন্য বাবা মার সাথে দেখা করে আসবে ।

কাইয়ুম চলে আসলো দেশে । বাবা মা কাইয়ুমকে দেখে অনেক খুশি হোলেন ।

বাবা কাইয়ুমকে বলছেন কাইয়ুম সেই যে ছোট থেকে সংসারে অভাবের কারনে তুমি হাড় ভাঙা পরিশ্রম ও সংসারের বোঝা তুমি তোমার কাধে নিয়েছো তা এখন তোমার কিছুটা হালকা করার সময় হয়েছে ।

তুমি তোমার ছোট বোনকে বিয়ে দিয়েছ । তোমার ভাইদের মানুষের মতো মানুষ করেছ ।

আমাদের জন্য অনেক হয়েছে কাইয়ুম এবার নিজের জন্য একটু ভাব ও কিছু করো । কাইয়ুম বলছে বাবা তেমন কিছুই করতে পাড়িনাই আপনাদের জন্য ।

মা বাবা দুজনে মিলে কাইয়ুমকে বুঝালেন কাইয়ুম এখন আমাদের বয়স হয়েছে আজ আছি তো কাল নেই তাই আমরা চাই তুমি এবার বিয়ের পিড়িতে বসো

ঘরের দিকে মন দেও ঘর সংসারি হও ।আমরা চাই আমাদের ঘরে এখন একটি সুন্দর পড়ির মতো বউ মা । কায়ুম তোমার অনেক টাকা পয়সা বাড়ি গাড়ি সব হয়েছে বাবা আর দরকার নাই । আমরা কালকে তোমার জন্য মেয়ে দেখতে যাবো । কাইয়ুম বাবা মাকে বলে দিলেন ঠিক আছে তাই হোক ।

কাইয়ুমের মা বাবা কায়ুমের জন্য মেয়ে দেখে দিন তারিক ঠিক করলেন ।

কাইয়ুমকে জানানো হোলো ।

কাইয়ুম তার বিয়ের সকল কেনা কাটা শেষ করলেন । এদিক ও দিক সকল আত্বিয়স্বজনদের বিয়ের নিমন্ত্রন দিয়ে দিলেন ।

আর মাত্র দুদিন বাকি আছে বিয়ের । কাইয়ুম মনের আনন্দে অনেক স্বপ্ন সাজিয়েছেন তার হবু বধূকে নিয়ে । কাইয়ুমের একটি ভাবনা জীবনে আমার

হাড়ভাঙা পরিশ্রম ও মা বাবার দোয়ার যে পুরুস্কার আমার এখন তা গ্রহন করার পালা ।

কাইয়ুমের ছোট ভাই এসে কায়ুম কে জিজ্ঞাসা করলো ভাইয়া বিয়ের পরে তোমরা কি হানিমুনে যাবে কাইয়ুম বলছে ইচ্ছে ছিলো ।

ঠিক আছে ভাইয়া তাহোলে আমি তোমার হানিমুনের ব্যবস্থা করছি বলে চলে

গেলো কাইয়ুমের ছোট ভাই ।

কাইয়ুম বাড়ির ছাদে উপরে বসে ভাবনা করছে বিয়ের সবই কেনা হয়েছে আর কিছু বাকি নাই এরই মধ্যে কায়ুমের হঠাৎ মনে পড়ে গেলো সে বিয়ের সব কিনেছে কিন্তু তার বিয়ের পাগুড়ী কেনা হয় নায় ।

কাইয়ুম দৌড়ে ছাদ থেকে নিচে নেমে আছে আর তার মটরসাইকেল বাহির করে সে আবার বাজারের দিকে রওনা হয়ে যায় । তাদের বাড়ি থেকে ঠিক মাইল তিনেক রাস্তা তার পরে শহর ।

কাইয়ুম বিয়ের আনন্দে আছে তাই তার মন ছিল বিয়ের পাগুড়ী ভিতরে ।

কাইয়ুম মটরসাইকেল নিয়ে প্রায় মাইল দুই চলে গেলেন তার পরে বিশ্বরোড । কায়ুম ডানে বামে খেয়াল করলেন না । কাইয়ুম মটরসাইকেলটি নিয়ে সোজা বিশ্বারোডে উঠিয়ে দিলেন । রাস্তার বাম পাশ থেকে আসা একটি ট্রাক

উঠে গেল কায়ুমের শরীরের উপরে । কায়ুম ওখানেই পড়ে গেলেন । ওখানেই কাইয়ুমের শেষ নিঃশ্বেষ ত্যাগ করতে হয় ।

কাইয়ুমের আর কেনা হলো না বিয়ের পাগুড়ী ।

বিষয়: সাহিত্য

১০৪০ বার পঠিত, ২০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

273270
১১ অক্টোবর ২০১৪ রাত ১১:২৬
মেঘ ভাঙা রোদ লিখেছেন : শীট !! এটা কি হল ?
১২ অক্টোবর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:১৫
217581
এ এম ডি লিখেছেন : খুব দুংখ জনক একটি ঘটনা ।

ধন্যবাদ
273271
১১ অক্টোবর ২০১৪ রাত ১১:৩২
ফেরারী মন লিখেছেন : Surprised Surprised Surprised আর সাথে সাথে তার সব স্বপ্ন ধুলিস্মাৎ হয়ে গেলো। Sad Sad
১২ অক্টোবর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:১৬
217583
এ এম ডি লিখেছেন : হ্যা সুপ্রিয় ফেরারী মন ।

ধন্যবাদ
273282
১২ অক্টোবর ২০১৪ রাত ১২:১৯
মোহাম্মদ শাব্বির হোসাইন লিখেছেন : শুরুটা ভালোই হয়েছিল কিন্তু শেষটা যেন গলাটিপে মারা হলো। দূর্বল গাঁথুনি। তবে চেষ্টা করুন ধৈর্য ধরে ভালো করতে পারবেন।
১২ অক্টোবর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:১৮
217585
এ এম ডি লিখেছেন : ধন্যবাদ চেষ্টা করবো ।
273286
১২ অক্টোবর ২০১৪ রাত ১২:৩৮
বুড়া মিয়া লিখেছেন : বেদনাদায়ক সমাপ্তি হয়ে গেলো ...
১২ অক্টোবর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:২২
217586
এ এম ডি লিখেছেন : ধন্যবাদ প্রিয় দাদু ।
হ্যা এটাই সত্য আমাদের জীবনে চলার চলার
পথে কিছু সময় সচেতন না থাকায় এ ধরনের দূরঘটনায় অকাল জীবন দিতে হয় ।
273290
১২ অক্টোবর ২০১৪ রাত ০১:০০
নিউজ ওয়াচ লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ
১২ অক্টোবর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:২৩
217587
এ এম ডি লিখেছেন : আপনাকেও অসংখ ধন্যবাদ ভাইয়া
273309
১২ অক্টোবর ২০১৪ রাত ০২:০৮
আবু সাইফ লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ..

পাগুড়ী = ওটা পাগড়ী বা পাগড়ি হবে মনে হয়

৩নং মন্তব্য যথার্থ

জাযাকুমুল্লাহ
১২ অক্টোবর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:২৪
217588
এ এম ডি লিখেছেন : আপনাকে ধন্যবাদ
273321
১২ অক্টোবর ২০১৪ রাত ০৩:৩৪
ভিশু লিখেছেন : ভীষণ মর্মান্তিক!
১২ অক্টোবর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:২৪
217589
এ এম ডি লিখেছেন : অতি সত্যকথা বলেছেন।
273357
১২ অক্টোবর ২০১৪ সকাল ০৮:৪২
আবু আশফাক লিখেছেন : মর্মান্তিক!
১২ অক্টোবর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:২৫
217590
এ এম ডি লিখেছেন : অতি সত্যকথা বলেছেন।
273358
১২ অক্টোবর ২০১৪ সকাল ০৮:৪৮
মামুন লিখেছেন : খুব দুঃখজনক সমাপ্তি হলেও, লিখাটি সাধারন কিছু জিনিস আমাদের সামনে তুলে ধরেছে। দুর্ঘটনা যে কোনো সময়েই হতে পারে, কিন্তু আমাদেরকে চলার পথে আরো সতর্ক হতে হবে। রাস্তায় বের হলে ড্রাইভ করার সময়ে ব্রেইনকে অন্য সব কিছু থেকে একবারে মুক্ত রেখে ড্রাইভিং এর কাজেই মনোনিবেশ করতে হবে। তখন ব্রেইনের কাজ একটিই- গাড়ি বা যার যার বাহন চালানো। সবাই এমন হলে এরকম দুঃখজনক ঘটনা খুব কমই হবে। ট্রাফিক আইন মেনে চলতে হবে। "কায়ুম ডানে বামে খেয়াল করলেন না । কাইয়ুম মটরসাইকেলটি নিয়ে সোজা বিশ্বারোডে উঠিয়ে দিলেন । " ট্রাফিক আইনটি মেনে চলে সতর্ক হলে কাইয়ুমের এমন পরিণতি হতো না ইনশা আল্লাহ।
ভালো লিখেছেন। জাজাকাল্লাহু খাইর। Thumbs Up Thumbs Up Thumbs Up Good Luck
১২ অক্টোবর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৩২
217594
এ এম ডি লিখেছেন : প্রিয় মামুন ভাই আমার হয়ে আপনি গুছিয়ে যে মন্তব্যটি করেছেন আসা করি সকলে মন যোগ দিয়ে ব্যপারটি বুঝার চেষ্টা করবে ।
আমার পক্ষ থেকে আপনার প্রতি আমার শ্রধা ও ভালোবাসা সব সময় থাকবে ।
এই ছোট ভাইটির জন্য দোয়া করিবেন যেন আর ভালো লেখতে পাড়ি
১০
273657
১২ অক্টোবর ২০১৪ রাত ০৮:৪৬
মাহবুবা সুলতানা লায়লা লিখেছেন : মামুন লিখেছেন : খুব দুঃখজনক সমাপ্তি হলেও, লিখাটি সাধারন কিছু জিনিস আমাদের সামনে তুলে ধরেছে। দুর্ঘটনা যে কোনো সময়েই হতে পারে, কিন্তু আমাদেরকে চলার পথে আরো সতর্ক হতে হবে। রাস্তায় বের হলে ড্রাইভ করার সময়ে ব্রেইনকে অন্য সব কিছু থেকে একবারে মুক্ত রেখে ড্রাইভিং এর কাজেই মনোনিবেশ করতে হবে। তখন ব্রেইনের কাজ একটিই- গাড়ি বা যার যার বাহন চালানো। সবাই এমন হলে এরকম দুঃখজনক ঘটনা খুব কমই হবে। ট্রাফিক আইন মেনে চলতে হবে। "কায়ুম ডানে বামে খেয়াল করলেন না । কাইয়ুম মটরসাইকেলটি নিয়ে সোজা বিশ্বারোডে উঠিয়ে দিলেন । " ট্রাফিক আইনটি মেনে চলে সতর্ক হলে কাইয়ুমের এমন পরিণতি হতো না ইনশা আল্লাহ।
ভালো লিখেছেন। জাজাকাল্লাহু খাইর।

সহমত
১৩ অক্টোবর ২০১৪ দুপুর ০২:০৫
217851
এ এম ডি লিখেছেন : ধন্যবাদ আপু

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File