আপনি ঈদুল মিলাদুন নবী(সঃ) পালন করবেন নাকি শোক দিবস পালন করবেন?

লিখেছেন লিখেছেন হৃদয় আমার তলোয়ার ০৪ জানুয়ারি, ২০১৫, ০১:৪৩:১২ রাত

আমাদের প্রিয় নবীজী সাঃ এর মৃত্যু দিবসে এ কোন

ইবলীসী আনন্দে মেতে উঠে কথিত

আশেকে রাসূলরা? -

মুফতি লুৎফুর রহমান ফরায়েজি

অধিকাংশ ঐতিহাসিক এবং সীরাত বিশেষজ্ঞগণ

একথার উপর একমত যে, ১২ ই রবিউল আউয়াল

তারিখে রাসূল সাঃ এ দুনিয়া থেকে আল্লাহর

সান্নিধ্যে চলে যান।

যেসব ঐতিহাসিক এবং সীরাত গবেষকগণ এমত পোষণ

করেন, তাদের কয়েকজনের নাম নিচে উদ্ধৃত করা হল-

১- ইবনে সাদ হযরত আয়শা রাঃ এবং হযরত আব্দুল্লাহ

বিন মাসউদ রাঃ থেকে নকল করেছেন যে, রাসূল

সাঃ ১২ ই রবিউল আউয়াল ইন্তেকাল করেছেন।

{তবাক্বাতে ইবনে সাদ-২/২৭২}

২- হাফেজ যাহাবী রহঃ ও তাই বলেন-

{তারীখে ইসলাম লিয যাহাবী-৫৬৯।

৩- হাফেজ ইবনে কাসীর রহঃ ও একই কথা নকল

করেছেন- {আলবিদায়া ওয়ান নিহায়া-৫/২৫৫।

৪- ঐতিহাসিক ইবনে আসীর রহঃ ও তাই লিখেছেন-

{আসাদুল গাবাহ-১/৪১, আলকামেল-৪/২১৯}

৫- ইবনে হাজার আসকালানী রহঃ ও ১২ ই রবিউল

আউয়াল ইন্তেকালের কথা বলেছেন। {ফাতহুল

বারী-১৬/২৬১}

৬- মুহাদ্দিস ইবনে হিব্বান রহঃ এর মতও তাই।

{আসসীরাতুন নাবাবিয়্যাহ লিইবনে হিব্বান-৪০৪}

৭- ইমাম নববী রহঃ একই কথা বলেছেন।

{শরহে মুসলিম}

৮- ঐতিহাসি ও মুফাসসির ইবনে জারীর তাবার

তাবারী রহঃ ১২ ই রবিউল আউয়াল ওফাতের

কথা উল্লেখ করেছেন। {তারীখে তাবারী-৩/২০৭}

৯- ইমাম বায়হাকী রহঃ এরও একই রায়। {দালায়েলুন

নবুয়্যাহ-৭/২২৫}

১০- মোল্লা আলী কারী রহঃ ও এই ফায়সালাই

দিয়েছেন। {মিরকাত শরহে মিশকাত-১১/১০৪}

১১- সীরাত বিশেষজ্ঞ মাওলানা শিবলী নূমানী ও

তাই ফাতাওয়া দিয়েছেন। {সীরাতুন নবী-২/১৮৩}

১২- কাযী সুলাইমান মানসূরপূরী একই কথা বলেছেন।

{রাহমাতুল্লিল আলামীন-১/২৫১}

১৩- আররহীকিল মাখতুমের লেখক সফীউর রহমান

মুবারকপুরীও তাই বলেন। {আর রহীক-৭৫২}

১৪- মাওলানা আবুল হাসান আলী নদবীও তাই

লিখেছেন। {আসসীরাতুন নববিয়্যাহ-৪০৪}

১৫- আহমাদ রেজা খাঁ বেরেলবীও তাই

ফায়সালা করেছেন। {মালফুযাতে আহমদ রেজা}

এবার পাঠকদের কাছে আমার জিজ্ঞাসা। পৃথিবীর

কোন ধর্মের মূল ব্যক্তির মৃত্যু দিবসে তার প্রকৃত

অনুসারীদের কখনো আনন্দ উল্লাস করতে দেখেছেন?

নাকি সেই মহান ব্যক্তিত্বের শত্রুরা আনন্দ উল্লাস

করে থাকে?

রাসূল সাঃ এর মৃত্যুর দিনে কোন ব্যক্তি আনন্দ

করতে পারে না। আনন্দ করতে পারে কেবল শয়তান।

আর তার দোসররা।

রাসূল সাঃ এর মৃত্যুর খবর শুনে সেদিন সাহাবাগণ

বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। যে যেই স্থানে ছিল,

সেখানেই নিথর হয়েছিল। চোখ দিয়ে বয়েছিল অশ্রুর

বন্যা।

আর নিশ্চয় শয়তান হাসছিল। বগল বাজাচ্ছিল। ইহুদী-

খৃষ্টান আর মুশরিকরা হাসছিল।

মনে মনে আনন্দে নাচছিল।

ঠিক একই কাজটাই কি করা হচ্ছে না রাসূল সাঃ এর

মৃত্যু দিবসে?

৯০ ভাগ মুসলমানের রাষ্ট্রে আমাদের মহান নবীর মৃত্যু

দিবসে এভাবে জশনে জুলুস বের করে আনন্দ করা,

হুল্লোড় করা, মিষ্টি বিতরণ করা, আনন্দ র্যালী বের

করা দেখেও রাসূল সাঃ এর

সাচ্চা অনুসারীরা কি করে চুপ করে বসে থাকে?

আমাদের রাসূল প্রেম গেল কোথায়?

যে ব্যক্তি নিজের মায়ের মৃত্যু দিবসে আনন্দ

উল্লাসের আয়োজন করতে পারে না। মন সাড়া দেয়

না।

নিজের সন্তানের মৃত্যু দিবসে আনন্দ করতে পারে না।

স্বজনের মৃত্যু দিবসে আনন্দ র্যালি বের

করতে পারে না।

সেই ব্যক্তি কি করে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের

শ্রেষ্টতম সৃষ্টি, যাকে সমগ্র জগতের জন্য রহমাত স্বরূপ

আল্লাহ তাআলা প্রেরণ করেছেন, যার নাম আমাদের

কালিমার অংশ। যার নাম না বলে কবরে মুক্তি নেই,

হাশরের ময়দানে যার সুপারিশ ছাড়া উপায় নেই।

যার হাতে হাউজে কাউসারের পানি পান

করা ছাড়া আমাদের গত্যান্তর নেই।

সেই নবীজী সাঃ এর মৃত্যু দিবসের দিন কতিপয় নবীর

দুশমন আনন্দ র্যালি বের করবে, আনন্দ উল্লাস করবে,

ঈদের আনন্দ করবে। এটি কি করে একজন নবী প্রেমিক

বরদাশত করতে পারে? কি করে মিষ্টি বিতরণ

করতে পারে?

সাড়ে চৌদ্দশত বছর আগে ১২ই রবিউল

আউয়ালে আমাদের প্রিয় নবীর ইন্তেকালের এ

দিনে সাহাবারা ছিলেন অশ্রুসজল। আর ইবলিশ ছিল

হাস্যোজ্জল। সাহাবাগণ ছিলেন কান্নারত আর

ইবলীশ এবং ইহুদী খৃষ্টানদের ছিল ঈদের দিন।

আজ সাড়ে চৌদ্দশত বছর পর এসে সেই ইবলীশ

এবং ইহুদী খৃষ্টানদের ঈদ আমাদের দেশে পালিত হয়

মহা আড়ম্বরের সাথে। কতিপয় নবীর দুশমনদের এ

দৌরাত্ম কি এতটাই বেশি হয়ে গেছে যে, এমন ভয়াবহ

নবী দুশমনদের প্রতিহত করার মত ঈমানী শক্তি কোন

নবীর আশেকের নেই?

আমি কার কাছে যাব? কার কাছে মাতম করবো? কার

কাছে বিচার জানাবো? এ কেমন জুলুম ভাই? এ কেমন

অবিচার ভাই? তুমি তোমার মায়ের মৃত্যু দিবসে ঈদ

করতে পারো না। বাবার মৃত্যু দিবসে আনন্দ

করতে পারো না। সন্তানের মৃত্যুর দিন মিষ্টি বিতরণ

করতে পারো না, তাহলে তোমার পরিবারের চেয়েও

কি আমার নবী কম মোহব্বতের হয়ে গেল?

কি করে এসব নবীর আশেক দাবী করে রাসূল সাঃ এর

মৃত্যু দিবসে আনন্দ উল্লাস আর ঈদ পালন

করতে পারে এ নবী বিদ্বেষীরা?

বিষয়: বিবিধ

২০৮৪ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

299057
০৪ জানুয়ারি ২০১৫ রাত ০২:১৮

A PHP Error was encountered

Severity: Notice

Message: Undefined offset: 10348

Filename: views/blogdetailpage.php

Line Number: 764

"> মুক্তিযুদ্ধের কন্যা লিখেছেন : ইসলাম ধর্মের এসব হানাহানি/মারামারি অনুষ্ঠান বাদ দিয়ে ইংরেজী নববর্ষ পালন করা অনেক ভাল।
299067
০৪ জানুয়ারি ২০১৫ রাত ০২:৪৪
এলিট লিখেছেন : মিলাদুন্নবী - কথাটার অর্থ "নবীর জন্মদিন"। আমাদের প্রচলিত ধারন অনুযায়ী রাসুল (সা) এর জন্ম ও মৃত্যু এই একই তারিখে হয়েছিল।
দেড় হাজার বছর আগে রাসুল (সা) যখন জন্মেছিলেন তখন তিনি ছিলেন সাধারন একজন শিশু। তিনি যে বড় হয়ে নবী হবেন এটা কেউ জানত না। তাই তার জন্মদিন কেউ মনে রাখেনি। রাসুল (সা) এর জন্ম তারীখ কেউ সঠিক জানে না, সবাই জানে তার মৃত্যু দিবস।
মিলাদুন্নবী (জন্ম বা মৃত্যু দিবস যাই হোক না কেন) পালন করার কোন পদ্ধতি ইসলামে নেই। এটি একটি বিদাত। বিদাত হল সেই সব কাজ যা আমরা সাওয়াবের আশায় করি কিন্তু পাপ বয়ে আনি। বিস্তারিত - ঈদে মিলাদুন্নবী - বিদাত থেকে সাবধান
299116
০৪ জানুয়ারি ২০১৫ সকাল ০৯:৪৫
হতভাগা লিখেছেন : এটা খৃস্টানদের অনুকরণে করা হয়েছে । সাহাবীরা যারা নবীজীর এত ঘনিষ্ট ছিল তারাও তো এরকম কিছু পালন করে নি ।তাদের চেয়ে নবীজীর প্রতি আমাদের দরদ কি বেশী হতে পারে?

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File