এরশাদ কোন পথে

লিখেছেন লিখেছেন শিক্ষানবিস ২৯ মার্চ, ২০১৩, ০২:৪১:১৫ দুপুর

দৈনিক ইনকিলাব

২৯.০৩.২০১৩

বিশেষ সংবাদদাতা : ‘হৃদয়ের কথা বলিতে ব্যাকুল; সুধাই লো না কেহ’ রবীন্দ্র সঙ্গীতের এক পংক্তির মতো জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের হৃদয়ের কথা বলার ‘ব্যাকুলতা’ থাকলেও শোনার যেন কেউ নেই। দলটির ২০ জেলার শেকড় পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বললে তারা নিজেদের ‘হৃদয়ের রক্তক্ষরণের’ কথা প্রকাশ করেন। জাতীয়তাবাদী ও ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী দলটির অধিকাংশ নেতাই মনে করেন গণতন্ত্রের টলটলায়মান অবস্থায় দলের শীর্ষ নেতা নির্যাতিত, প্রান্তিক ও মজলুমের পক্ষে কঠোর অবস্থান নেবেন। ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী শেকড়ের নেতারা গর্ব করেন জাতীয় পার্টির শাসনামলে সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংযোজনের জন্য। ‘নবী (সা.)কে কটূক্তিকারীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা’ দলীয় চেয়ারম্যানের এ অবস্থানকে ‘সময়ের সাহসী উচ্চারণ’ হিসেবে অবিহিত করে গর্ববোধ করেন। কিন্তু বিরোধীদলীয় নেতার ভাষায় ‘গণহত্যা’র দায়ে অভিযুক্ত এবং নেপথ্যে থেকে ইসলাম বিদ্বেষী শাহবাগীদের ‘ছায়া’ দানকারী এ সরকারের পক্ষে থাকার দলীয় চেয়ারম্যানের ঘোষণায় আশাহত হন। জাতীয় পার্টির শেকড় পর্যায়ের প্রায় অর্ধশত নেতার সঙ্গে এ নিয়ে কথা বললে তারা মনে করেন এইচএম এরশাদ শেষ পর্যন্ত শোষকের নয়; শোষিত মজলুমের পক্ষেই থাকবেন। শেকড় পর্যায়ের এক নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বললেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির লেজুড়বৃত্তি করা মিডিয়াগুলো এরশাদকে ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ বলে অপপ্রচার করছে। আরেক নেতা বলেন, ধর্মের ব্যাপারে এরশাদ কখনো আপোষ করেননি; করবেনও না। তিনি সময়মতো মহাজোট ছাড়ার ঘোষণা দেবেন। কারণ তিনি বিশ্ব রাজনীতিতে বন্ধুহীন এ সরকারের লাগামহীন দুর্নীতি, রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটপাট ও সীমাহীন ব্যর্থতার দায় নেবেন না। সময় হলেই সেটা দেখা যাবে। তবে কৌশলগত কারণে এখনো তিনি সরকারের সঙ্গে রয়েছেন। অন্য এক নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সময় থাকতেই সরকারের সঙ্গ ছাড়তে হবে। অসময়ে ছাড়লে কোনো লাভ হবে না। এ সরকারের সঙ্গে দেশ-বিদেশের কেউ নেই। আমেরিকা নেই, ইউরোপীয় ইউনিয়ন নেই, ক্যানাডা নেই, চীন-জাপান নেই, সউদী আরবসহ মধ্যপ্রাচ্য নেই; বিশ্বব্যাংক নেই, এডিবি নেই, ভারত এই আছে এই নেই, এমনকি নামসর্বস্ব যেসব দল নিয়ে জোট করেছেন সেই জোটের অনেক দলই নেই (১৪ দলীয় জোটের কয়েকটি শরীক ১০ দলীয় বাম জোট গঠন করেছে)। তাহলে জাতীয় পার্টি থাকে কোন দুঃখে? মীরপুর-বিমানবন্দর ফ্লাইওভার উদ্বোধনের সময় এরশাদের দেয়া বক্তব্য নিয়ে নেতাদের মধ্যে এ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। ওলামা-মাশায়েখ ও তৌহিদী জনতার সমর্থন নিয়ে এরশাদ আগামী নির্বাচনী বৈতরণী পার হবেন বলে বিশ্বাস প্রত্যাশা করছেন তারাও হোঁচট খেয়েছেন। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে শাহবাগী ব্লগারদের নিয়ে ‘তরুণ প্রজন্মের উচ্ছ্বাস’ বলে যারা মাতামাতি করছেন তাদের ভুল ভেঙে যাবে ৬ এপ্রিল হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা অভিমুখে লংমার্চে। ওই কর্মসূচির পর রাজনীতির হিসেব পাল্টে যাবে।

তত্ত্বাবধায়ক ইস্যু নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের গোয়ার্তুমি আর বিরোধী দলের একগুঁয়েমিতে নির্বাচন নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। দাবি আদায়ে রাজপথে সহিংসতা আর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার নামে পুলিশের অমানবিক নিষ্ঠুরতায় মানুষ আতঙ্কিত, অবরুদ্ধ। গণতান্ত্রিক স্বাধীন দেশে ঘর থেকে বের হতে মানুষ ভয় পায়। কারো জীবনের নিরাপত্তা নেই। ক্ষমতাসীনদের আবার ‘যেনতেন প্রকারে’ ক্ষমতায় আসার কৌশল এবং বিরোধী দলের নির্বাচনে ক্ষমতায় যাওয়ার দৌড়ে ‘তত্ত্বাবধায়ক’ ইস্যুও আন্দোলনে ‘ইনসাফের’ রাজনীতি উধাও (যদিও অধিকাংশ মানুষ ও সংবিধান বিশেষজ্ঞরা আরো দুটি নির্বাচন তত্ত্বাবধায়কের অধীনে হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন)। দেশের প্রায় সবকিছুই দুই ভাগে বিভক্ত। শীর্ষ দুই নেত্রীর ‘চরম বৈরিতায়’ বিপন্ন গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে বিশিষ্টজন, সমাজবিজ্ঞানী, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, সুশীল সমাজ যখন আশা ছেড়েই দিয়েছেন; তখন সাধারণ মানুষের আলোচনায় হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নাম উচ্চারিত হচ্ছে। ’৯০ পরবর্তী ২২ বছর শীর্ষ দুই নেত্রীর শাসনামলের উন্নয়ন, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং প্রশাসনিক কর্মকা- বনাম ’৯০ পূর্ববর্তী ’৮২ পর্যন্ত ‘তথাকথিত’ স্বৈরশাসকের ৯ বছরের উন্নয়ন, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও প্রশাসনিক কর্মকা-ের তুলনামূলক বিশ্লেষণ করায় তার নাম আসছে। টেলিভিশনের টকশো থেকে শুরু করে বাস-ট্রেন, পথঘাট, অফিস-আদালত পাড়া সবখানেই নামটি আলোচিত হচ্ছে। সাধারণ মানুষতো বটেই তথাকথিত প্রগতিশীল এবং স্যুটেট-বুটেট মানুষজনও দুই নেত্রী ‘যুদ্ধংদেহী কর্মকা-ে’ অতিষ্ট হয়ে মনের অজান্তে ‘এরশাদই ভাল ছিল’ বলে থাকেন। আর ব্যবসায়ী, কলকারখানার শ্রমিক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও গ্রাম বাংলার কৃষকরা সব সময়ই এরশাদের শাসনামলকে দুই নেত্রীর শাসনামলের চেয়ে ‘উত্তম’ সার্টিফিকেট দেন। যার প্রতি মানুষের এতো আগ্রহ সেই এরশাদ কি করছেন? কোনদিকে যাবেন তিনি? বর্তমানের রাজনৈতিক বাস্তবতায় তিনি শোষকের সঙ্গে থাকবেন না শোষিত মজলুমের পক্ষ নেবেন সেটাই এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে।

দেশের মানুষ চরম অনিশ্চয়তায় দিনযাপন করছে। ‘সত্তুর’ দশকে এক বামপন্থী নেতার ‘স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই’ শিরোনামে লেখা ব্যাপকভাবে আলোচনার ঝড় তোলে। অতপর রাজনৈতিক দলগুলোর সবচেয়ে জনপ্রিয় শ্লোগানে পরিণত হয় সে লেখার শিরোনামটি। বর্তমানে সেই শ্লোগান ঘরে ঘরে উচ্চারিত হচ্ছে। স্বাধীনতার ৪২ বছর পর এখন মানুষ আবার স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাচ্ছে। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা এনেও মানুষ স্বভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারছে না। ঘর থেকে বের হলে অজানা ভয়, অজানা আতঙ্ক মানুষকে তাড়া করে। সহিংসতা আর পুলিশের গুলিতে দেড় শতাধিক লোকের প্রাণহানিকেও ‘গণহত্যা’ মনে করা হয় না। কতজন একসঙ্গে মারা গেলে গণহত্যা হয় হিসেবে গণ্য করা হবে ভুক্তভোগীদের পরিজনরা সে প্রশ্নের উত্তরও পাচ্ছে না। সাদা চোখে দেখলে মনে হয় দেশ কার্যত দুই ভাগে বিভক্ত। একদিকে শোষক। সাংবিধানিকভাবে জনগণের ভোটে নির্বাচিত একনায়কতন্ত্র। আইন আদালতের বদলে ব্যক্তির ইচ্ছায় সবকিছু চলছে। রাষ্ট্রের সম্পদ লুণ্ঠনের পাশাপাশি ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা’র দোহাই দিয়ে প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক শক্তি ও মজলুমদের দমিয়ে রাখার নিরন্তর চেষ্টা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে জঙ্গি দমন এবং মওদুদীবাদী জামায়াত-শিবিরকে ‘সাইজ’ করার নামে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিয়ে বিষোদগার করছে এবং ওলামা-মাশায়েখদের উপর জুলুম নির্যাতন চালাচ্ছে। তারা মুখে ধর্ম প্রীতি দেখালেও ইসলাম বিদ্বেষী নবী (সা.)কে কটূক্তিকারী ব্লগারদের ‘ছায়া’ দিয়ে আসছে। ধর্মনিরপেক্ষতার নামে ধর্মভিক্তিক রাজনীতি নিয়ে নেতিবাচক প্রচারণা চালাচ্ছে। অন্যপক্ষ নিপীড়িত, নির্যাতিত এবং শোষিত। কারো কারো শাসনামলের ‘অপকর্ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা’ নিয়ে বিতর্ক থাকলেও মজলুমের পক্ষে অবস্থান নেয়ায় মানুষ তাদের প্রতি সহানুভূতি জানাচ্ছে। দেড় শতাধিক মৃত্যুকে ‘গণহত্যা’ বলে মজলুমের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া। দেশের বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, আইনজীবী, শিক্ষক, প্রকৌশলী, চিকিৎসক, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, সুশীল সমাজ সবখানেই এই বিভক্তি। কেউ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষে কেউবা বিএনপির পক্ষে। আওয়ামী লীগ আর বিএনপির অন্ধভক্ত হওয়ায় ‘ইনসাফে’র রাজনীতি চর্চার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর উপর চাপ প্রয়োগ করবেন সেই পেশাজীবী নেই। বঞ্চিত, অবহেলিত নাগরিকের অধিকার নিয়ে কথা বলার কেউ নেই।

বর্তমানে দুই দলের বাইরে বিকল্প শক্তি, তৃতীয় ধারা ইত্যাদির কথা হরহামেশাই উচ্চারিত হচ্ছে মানুষের মুখে মুখে। সময়ের প্রয়োজনে বিকল্প শক্তির উদ্ভব হচ্ছে না। অনেকেই যাকে নিয়ে এ চিন্তাভাবনা করছেন সেই এরশাদ কোন দিকে যাচ্ছেন তা কেউ পরিষ্কার বলতে পারছেন না। এমনকি তার দল জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরাও নিজেদের নেতার ‘গতিবিধি’ বুঝতে অপারগ। সম্প্রতি এক টকশোতে সাবেক প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেছেন, ‘এরশাদ সাহেব যা বিশ্বাস করেন তাতে যদি স্থির থাকতেন তাহলে মানুষের আস্থারস্থল হতে পারতেন।’ দু’দিন আগে একই চ্যানেলের অপর টকশোতে এইচএম এরশাদ নিজের অবস্থান দেশবাসীর কাছে পরিষ্কার করেছেন। দলের নীতি নির্ধারণী ফোরাম প্রেসিডিয়ামের সভায় অধিকাংশ সদস্যই মহাজোট ছাড়ার জন্য তার উপর চাপ প্রয়োগ করেন। কেউ কেউ দেশের সার্বিক অবস্থা তুলে ধরে মহাজোট ত্যাগের অনুরোধও করেন। এক পর্যায়ে এরশাদ তাদের আশ্বস্ত করেন সময় মতো তিনি সঠিক সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে ফ্লাইওভার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তাঁর বক্তব্যে অনেকেই হোঁচট খেয়েছেন।

জাতীয়তাবাদী ও ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী এইচএম এরশাদ রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকাবস্থায় সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংযোজন করেছেন। মসজিদ এবং অন্যান্য উপাসনালয়ের বিদ্যুতের বিল মওকুফ করেন। ধর্মীয় শিক্ষার প্রসারের জন্য মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটান। ‘ধর্মের ব্যাপারে কোনো ছাড়-সমঝোতা নয়’ প্রায়ই এ বক্তব্য দিয়ে তিনি ওলামা-মাশায়েখদের ‘কাছের মানুষ’ পরিগণিত হন। ব্লগারদের নেতৃত্বে শাহবাগ মঞ্চ প্রতিষ্ঠার সময় দেশের বাইরে ছিলেন। দেশে ফেরার পর বিমানবন্দর থেকে তাকে দলের একনেতা তথাকথিত ‘গণজাগরণ মঞ্চ শাহবাগে’ নেয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু বিমানবন্দরে নেমে শাহবাগীদের সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে সেখানে যাওয়ার কর্মসূচি বাতিল করে সরাসরি বারীধারার বাসায় চলে যান। ৬ মার্চ গুলশানে দলের একটি যোগদান অনুষ্ঠানে তিনি যে বক্তৃতা করেন তাকে ‘সময়ের সাহসী উচ্চারণ’ হিসেবে অবিহিত করা হয়। তিনি বলেন, ‘দেশে ইসলাম বিদ্বেষীদের নবী (সা.)কে কটূক্তি ও অবমাননা মেনে নেয়া হবে না। যারা ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করবে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করছি।’ দেশের আলেম ওলামা, তৌহিদী জনতা থেকে শুরু করে ধর্মপ্রাণ মানুষ এবং নিরাপদে জীবন যাপনে অভ্যস্তরা এরশাদের এ বক্তব্যে আশাবাদী হয়ে উঠেন। তারা আশায় বুক বাঁধেন এরশাদ মজলুমের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তাকে কেন্দ্র করেই দেশের তৌহিদী জনতা সামনে এগিয়ে যাবে। পরবর্তীতে কয়েকটি অনুষ্ঠানে তিনি নবী (সা.)কে কটূক্তিকারী ব্লগারদের বিচারের দাবি করেন জোড়ালোভাবে। কিন্তু কেউ জানেনা তিনি কোন দিকে যাবেন।

দেশের রাজনীতিতে এরশাদ বিশাল ফ্যাক্টর। দেশের মোট ভোটের ১৩ শতাংশের সমর্থন প্রাপ্ত জাতীয় পার্টির সমর্থন ছাড়া কারো পক্ষেই সরকার গঠন করা সম্ভব হয় না। দিবালোকের মতো সত্য এটা। ব্যক্তি এরশাদও ব্যাপক জনপ্রিয়। কারাগারে থেকে ’৯১ ও ’৯৬ সালের নির্বাচনে তিনি ৫টি করে আসনে বিজয়ী হন। তার দলও যথাক্রমে ৩৫ ও ৩২ আসন পায়। ২০০১ সালে আইনি জটিলতার কারণে এরশাদ প্রার্থী হতে না পারায় নির্বাচনে অপ্রত্যাশিতভাবে মাত্র ১৪টি আসন পায়। তবে ২০০৮ সালের নির্বাচনে মহাজোট গঠন করে ৪৬টি আসনে প্রার্থী দেয় দলটি। কিন্তু মহাজোটের চুক্তি ভঙ্গ করে ১৭টি আসনে আওয়ামী লীগ নৌকা প্রতীকের আলাদা প্রার্থী দেয়। ফলে জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে ২৯টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। সবক’টি আসনে লাঙ্গলের প্রার্থীরা বিজয়ী হয়। এরশাদও সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে এবং প্রতিদ্বন্দ্বির থেকে সর্বোচ্চ ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়। মহাজোটের সঙ্গে জোট গঠনের সময় যে চুক্তি হয় নির্বাচনের পর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ তা পূরণ করেনি। এ নিয়ে জাতীয় পার্টির নেতারা আওয়ামী লীগের উপর ক্ষুব্ধ। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ সম্মেলনে রাজনৈতিক ইয়াতিম বাম নেতা দীলিপ বড়–য়ার সঙ্গে সংসদে ২৯ আসনের প্রতিনিধিত্বকারী দলের নেতা সাবেক প্রেসিডেন্ট এরশাদকে বসতে দেয়ার ঘটনা মেনে নিতে পারেননি দলের নেতাকর্মীরা। এসব কারণে এরশাদ বিভিন্ন ইস্যুতে দু’একবার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করলেও সেটা ধর্তব্যের মধ্যে পরেনা। কিন্তু বর্তমানে যে অবস্থায় মতপথের অদল-বদল করার সুযোগ নেই। ‘রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই’ প্রবাদটি ব্যাপকভাবে চালু থাকলেও মজলুমের বিপক্ষে গেলে তা হবে রাজনৈতিক আত্মহত্যার নামান্তর। তবে জাতীয় পার্টির নেতারা এখনো বিশ্বাস করেন তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে ডালিয়ায় লাখো জনতার সমাবেশে এরশাদের সেই উচ্চারণ ‘আমি সৈনিক। কখন ফায়ার করতে হয় আমি জানি। সময় মতোই ফায়ার করবো।’

বিষয়: রাজনীতি

১৩১৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File