আমাদের মাহফিলেরা ভালো নেই

লিখেছেন লিখেছেন শিক্ষানবিস ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, ০৮:৩৫:১০ রাত

মাহফিল ; ইসলামী ধর্মসভা সাধারণ মানুষের ইসলাম শেখা ও ইসলাম সম্পর্কে সচেতনা সৃষ্টির একটি বড় উপকরণ। সাথে সাথে এর মাধ্যমে ইসলামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে মানুষের একটা সুসম্পর্ক সৃষ্টি হয়।

গতকাল একটি মাহফিলের দাওয়াত-নামা নিয়ে কয়েকজন আসলেন। কিছু সহযোগিতা চাইলেন। দাওয়াত-নামা পড়ে আমি বললাম, দু:খিত, আমি পারবো না। কারণ, আপনারা মাহফিলের প্রধান অতিথি করেছেন একজন এম,পি কে। বর্তমান সময়ের এমপি মানে একটিমাত্র রাজনৈতিক দলের অসহায় সদস্য। যাকে মানুষ ভোট দেয়নি। যিনি একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব-কোন সন্দেহ নেই। কাজেই ঐ মাহফিলকে আমি রাজনৈতিক অনুষ্ঠান হিসাবে গণ্য করবো। আর বর্তমান এই গোলমেলে সময়ে আমি কোন রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে টাকা পয়সা দিয়ে সাহায্য করতে পারি না।

আরেকটি মাহফিল থেকে লোকজন আসল। তাদের দাওয়াত-পত্র দেখলাম। দাওয়াত-নামাটা আপনাদের জন্য এখানে দিয়ে দিলাম। বিশেষ অতিথি যে সংখ্যায় কত, তা শেষ পর্যন্ত গোনা হলো না। জিজ্ঞেস করলাম, মাত্র ছয় ঘন্টার মাহফিলে এত অতিথি কিভাবে বক্তব্য দেবে?

বলল, না স্যার, এরা বক্তা নয়, সবাই শ্রোতা। বললাম, দুর্ভাগ্য আমাদের, এক সময় মাহফিলের পোষ্টারে বক্তাদের নাম থাকতো এখন মাহফিলের শ্রোতাদের নামও পোষ্টারে স্থান পাচ্ছে। বর্তমান সময়ের মানুষগুলো যে কতটা আত্নপ্রচার-কেন্দ্রিক ও সেলফী হয়ে উঠেছে, এই দাওয়াত-নামাটা তার একটি ক্ষুদ্র নজির। ধর্মটাকে এখন পণ্যে পরিণত করা হচ্ছে। এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, একটা সময় আসবে যখন মানুষ সকালে মুমিন থাকবে আর বিকালে কাফের হয়ে যাবে। মানুষ তার ধর্মটাকে বিক্রি করে দেবে দুনিয়ার সামান্য বস্তুর বিনিময়ে।

এ হাদীসে তিনি ধর্মকে পণ্য বানানোর দিকে ইঙ্গিত করে সাবধান করে দিয়েছেন। পণ্যকেই কেনা-বেচা যায়। কোন ধর্ম বা আদর্শকে নয়।

উলামায়ে কেরাম, আইম্মায়ে মাছাজিদ, ওয়ায়েজীনে যমান, খুতাবায়ে এজামদের দায়িত্ব হল, মানুষকে এ সকল কলঙ্ক থেকে সাবধান করা। ইখলাসের দিকে আহবান করা। ধর্মসভাগুলোকে রাজনীতির কলঙ্ক থেকে মুক্ত রাখা। কিন্তু তারা তা না করে যদি গর্ব করে বলেন, আমি যে মাহফিলে প্রধান বক্তা ছিলাম সেখানে অমুক মন্ত্রী বা অমুক এমপি প্রধান অতিথি ছিলেন। তাহলে সে তো আরেক হতাশার কথা, রূহানী পরাজয় ও আদর্শিক দেওলিয়াপনা। গর্ব নয়, তাদের প্রতিবাদ করা উচিত। স্পষ্ট করে বলে দেয়া উচিত, একটি আদর্শিক ইসলামী সভায় ঐ সব ফকীর-মিসকীনদের উৎপাত সহ্য করা হবে না। দেশের সব প্রতিষ্ঠানগুলোকে রাজনীতির কালিমায় কালো করে দেয়া হয়েছে। মসজিদ-মাদরাসা, মাহফিল-ধর্মসভাগুলোকেও এই কালিমা থেকে মুক্ত রাখার ব্যবস্থা করা না হলে অন্ধকার শুধু বাড়বেই।

বিষয়: বিবিধ

১২১৭ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

303839
১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ০৯:২৫
শেখের পোলা লিখেছেন : ধর্মকে ব্যবসায়ী পণ্য মনে করার ওলামাই আমাদের সমাজে বেশী৷ তাদেরকে পথে না আনতে পারার কারণেই অন্যেরা মার খাচ্ছে৷ আসুন আমরা সবাই সোচ্চার হই৷ আপনাকে উচিৎ কাজটির জন্য ধন্যবাদ৷
303840
১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ০৯:২৯
তোমার হৃদয় জুড়ে আমি লিখেছেন : ভালো বলেছেন ধন্যবাদ
303851
১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ১০:১৬
sarkar লিখেছেন : এ সব বলে লাভ নাইরে ভাই।নীতিহীন সমাজে যেখানে দূর্নীতিই একমাত্র ভরসা সেখানে নীতি বাক্যের দাম রইল কোথায়।যেখানে দেশের সরকারই অবৈধ সেখানে বৈধতা আশা করা নিরাশারই দোলাচর। বিবাহ বহির্ভুত সন্তান যেমন, বর্তমান সরকার ও তেমন।তাই যা হচ্ছে সেটাই স্বাভাবিক।যেটা হবার কথাছিল সেটাই অস্বাভাবিক।কারণ খারাপের কাছ থেকে ভাল কিছু আশা করা হতাই বাড়ায়।
304039
১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ১০:৫৯
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : এভাবেই আমরা এখনও আছি!!

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File