থমকে গেছে আজ অভিমানী খুনসুটি(প্রিয় মা)

লিখেছেন লিখেছেন নূর আয়েশা সিদ্দিকা জেদ্দা ১৯ এপ্রিল, ২০১৩, ০৫:৫৯:৪৭ বিকাল

ভালোবাসার অনুভূতি প্রকাশের ক্ষেত্রে আমি বড় বেশী মুখচোরা। প্রতিবারই দেশ হতে চলে আসার সময় আমাকে বিদায় দিতে গিয়ে আমার মা ভীষণ কাঁদেন। কিন্তু সবার সামনে আমি কাঁদতে পারিনা। তাই হয়তো আমার সেই অপ্রকাশিত কান্নাগুলো প্রবাসী জীবনে আমার অবগুন্ঠিত কষ্টের পথ বেয়ে আমাকে প্রতিদিনই কাঁদায়।

পরিবারের সর্ব কনিষ্ঠ সন্তান হিসেবে আমি ছোট বেলায় খুব জেদী, অভিমানী আর একগুঁয়ে ছিলাম। আমার সেই আচরণের পথ ধরে মা'কে সারাক্ষণ অবিবেক অভিমানে কত যে ক্ষত বিক্ষত করেছি।

শুনেছি,আমি যখন আমার মা'য়ের শরীরে ছিলাম তখন আম্মুর খুব কষ্ট হত। কিছুই খেতে পারতেন না। সেই সময় ডাবের পানিটাই শুধু মা খুব তৃপ্তি করে খেতেন। একদিন মা'র কোন এক বয়ষ্কা আত্নীয়া এসে চোখ কপালে তুলে বললেন- করছো কি তুমি? এত ডাবের পানি খেলে তোমার বাচ্চার চোখের রং যে ঘোলা হয়ে যাবে। ব্যাস সন্তানের অমঙ্গলের ভয়ে মা তার একমাত্র প্রিয় খাবারটি বাদ দিয়ে দিলেন। আমার চোখের মণি খানিকটা ব্রাউন। আমি বড় হবার পর আম্মু আমার দিকে তাকিয়ে আফসোস করে প্রায়ই বলতেন- ইস আমি যে তোমার জন্মের আগে কেন এত ডাবের পানি খেয়েছিলাম। মজার ব্যাপার হল এই নিয়ে আমার কখনো মনে কোন প্রশ্ন জাগেনি। কিন্তু বর্তমানে কালারিং লেন্সের যুগে আমার বড় মেয়েটি প্রায়ই বলে- আম্মু, তোমার চোখের রংটা কি সুন্দর! তুমি ও যদি নানুর মত ডাবের পানি খেতে তবে আমার চোখের রংও তোমার মত হত। আমি নিরবে ভাবি, একসময় আমার স্নেহময়ী মায়ের জন্য যা অনুশোচনার ছিলো। সময়ের পরিবর্তনে তাই আজ কাম্য হয়ে উঠেছে অনেকের কাছে।

আমার বিয়ের ব্যাপারে মায়ের উপর আমার খুব রাগ ছিলো। সবে অনার্স ফাস্ট ইয়ারে উঠেছি। এর মাঝে 'উঠ ছুড়ি তোর বিয়ে' আমার জন্য অনেক বড় ধাক্কার মত ছিলো। প্রায়ই মনে হত ইস আমার সহপাঠীরা কত নির্বিঘ্নে পড়তে বসেছে আর আমি..। তাই আম্মুর সাথে রাগ করে প্রায়ই খেতাম না। এমনকি বিয়ের দিন সকাল বেলা আম্মুকে শুনিয়ে শুনিয়ে ছোট আপুকে বললাম- আমি খেয়ে খেয়ে বাবার টাকা সব শেষ করে ফেলছি তো। তাই আমাকে বিড়াল পার করা হচ্ছে। আম্মুকে বল, আজ আমি যাবার সময় এ বাড়ির কিছু মুখে দেব না। ব্যাস আমার জিদের কাছে হার মেনে সবাই চেষ্টা করেও আর কিছু মুখে দেয়াতে পারল না।

আমাকে যখন বিয়ের সাজে সাজানো হল তখন বড় আপু আম্মুকে শুনিয়ে বললেন- আম্মা, দেখেন ওকে কেমন সুন্দর লাগছে। আম্মু আমাকে জড়িয়ে ধরতে গেলেন আমি আমার দিকে বাড়িয়ে দেয়া আম্মুর হাতটা ঠেলে দিয়ে বললাম- বড় আপু, তোমরা ছোট বেলা ঠিকই বলতে। আমাকে তোমরা কুড়িয়ে পেয়েছো। আমার তো কোন মা নেই। আমি আড়চোখে দেখলাম দু'চোখের পানিতে আম্মুর মুখটা ভেসে যাচ্ছে।

আমাকে বিদায় দিয়ে আম্মু বিয়ের ক্লাবেই বেহুশ হয়ে পড়ে গেলেন। রাতে আমার সাথে কথা বলার জন্য আমার শ্বশুর বাড়িতে ফোন করলেন। আমি ফোন ধরে অবিনীত অভিমানী গলায় বললাম- আমি তো বলেছি আমার কোন মা নেই। আমি কারো সাথে ফোনে কথা বলব না। আমি জানি, আম্মু সেদিন খুব মনে কষ্ট পেয়েছিলেন।

অনেকে বলে সন্তানের নাড়ি কেটে আলাদা করে ফেলার সাথে সাথে প্রতিমুহূর্তে তিল তিল করে মায়ের সাথে সন্তানের দূরত্বটা বেড়েই চলে। কিন্তু আমার তা মনে হয়না। আজ প্রবাসী জীবনের বহমান যন্ত্রনাময় বিচ্ছেদে মা আমার কাছ হতে অনেক দূরে। থেমে গেছে মায়ের সাথে আমার অভিমানী খুনসুটি গুলো ও। আজ আর অভিমানে না খেয়ে কাটালে ও মা'য়ের মত করে কেউ বলতে আসেনা- মা, তুই না খেয়ে থাকলে আমার যে খুব কষ্ট হয়। স্বজনহারা এই নিষ্ঠুর প্রবাসে আজ আমার চারিধারে কেবল ছেয়ে আছে মুঠো মুঠো কষ্টের রোদ্দুর। সেই রোদ্দুরে আমি আমার চোখভরা অশ্রুগুলো নিজেই শুকিয়ে নিই। কেউ আমাকে আমার মায়ের মত করে সেই অশ্রু মুছে দিতে আসেনা। অনেক পূর্ণতার মাঝে ও মায়ের সান্নিধ্যের জায়গাটা যে টুকরো টুকরো শূন্যতায় ভরা থাকে সব সময়।

আজ মাকে বুঝলাম, আমি নিজেই যখন মা হয়ে গেলাম। আমি আমার কষ্টকর মাতৃত্বে পলে পলে মা'কে বুঝেছি। এক একটি সন্তানকে পৃথিবীর আলোয় আনতে আমার মৃত্যুর মুখ হতে ফিরে ফিরে আসার মধ্য দিয়ে আমার মা'কে অনুভব করেছি। নবজাতক সন্তানের জন্য নির্ঘুম রাতজাগা প্রতিক্ষণে স্মরেছি আমার মা'য়ের কষ্টকে। আমার সন্তানের নিরাপদ জীবন বির্নিমাণে আমার কঠোর পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে অনুভব করলাম আমার মায়ের ত্যাগকে। তারুণ্যের উম্মাদনায় নিজেরই সহপাঠীদের কিছু জীবনকে নষ্ট হয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে থাকতে দেখে বিস্মিত হই আমার মায়ের শিক্ষা,নৈতিকতার । যা আমার তারুন্যের আবেগকে সঠিক বেগ দিতে সাহায্য করেছিলো প্রতিটি সময়ে। আজ আমার মায়ের মায়াময় মুখখানি আমার মনের আকাশে স্নিগ্ধ আলোয় ভরা মায়াবী রাতের চাঁদের মতই জেগে থাকে সারাদিন, সারাবেলা।

আমার বিয়ের পর দু'টি সন্তান নিয়ে আমার শিক্ষা জীবন শেষ করতে আমাকে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। সে সময় প্রতিটি মুহুর্তে বাবাকে পেয়েছি বন্ধুর মত। সব সময় সাহস আর অনুপ্রেরণা দিয়ে আমার মনটাকে ভরিয়ে রাখতেন। কিন্তু আম্মুর আচরণে কেমন যেন একটি নির্লিপ্ততা প্রকাশ পেত। এক জায়গা হতে আর এক জায়গায় আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে বাচ্চাদের ক্রমাগত অসুস্থতা, সেশন জটের বিরক্তি সব মিলিয়ে আম্মু তো একদিন রাগ করে বললেন-তোমরা বাবা মেয়ে দু'জন মিলে কি শুরু করেছো? এম.এ পাস করে সার্টিফিকেটটা রান্না ঘরে ঝুলিয়ে রাখবে নাকি? মাসুম বাচ্চাগুলোর রুহের বদদোয়া পড়বে।

একে তো নিজের নাকানি চুবানি অবস্থা। তার উপর আম্মুর এই ধরণের আচরণে আমার তো মনে মনে আম্মুর উপর অভিমানটা বেড়ে যেত। আমার মাষ্টার্স এর রেজাল্ট আউটের পর এক সকালে আম্মু রেজাল্ট জানিয়ে ফোন করলেন। আম্মুর সে কি খুশী! আমি তখন আমার চিরাচরিত অভিমানী গলায় বললাম- আম্মু, আপনি তো তখন আমাকে খুব বকতেন কেন আমি লিখাপড়া করছি। আর আজ? আম্মু তখন মমতার বিন্দু বিন্দু শিশির কণায় সিক্ত গলায় বললেন- মাগো, পৃথিবীতে এমন কোন মা নেই যে সন্তানের ভালো চায় না। তুমি যে মানুষটি নিজের খাবারটি পর্যন্ত নিয়ে খেতেনা। সে বিদেশ বিভুঁয়ে আনাড়ি হাতে ঘর সংসার সামলে দুটি ছোট বাচ্চা নিয়ে কতখানিই আর পড়ার সুযোগ পেয়েছো। তাই আমার মনের মাঝে ভয় ছিলো যদি তুমি না পার। সেজন্য আমি সব সময় একটি নিউট্যাল ভাব দেখিয়েছি। যাতে আল্লাহ না করুন,তুমি হেরে গেলে আমি সান্ত্বনা দিয়ে পাশে থাকতে পারি। কিন্তু আমি সর্বাত্নকরণে আল্লাহর কাছে তোমার সাফল্যের দোয়াই করেছি। আমার কল্যাণ কামনায় আম্মুর এই সুদূর প্রসারী চিন্তা আমাকে অবাক করলো সেদিন। অথচ এই নিয়ে আমি কত রাগই না আম্মুর সাথে দেখিয়েছি। খুব ইচ্ছে হচ্ছিলো মা'কে জড়িয়ে ধরি ছোট বেলার মত। কিন্তু হায় নিষ্ঠুর প্রবাস মা আর আমার মাঝে পুঁতে দিয়েছে দুস্তর ব্যবধান। তাই শুধু লাজুক গলায় বললাম- আম্মু, আজ থেকে আপনার উপর আমার কোন রাগ নেই।

আমি যখন প্রবাসে বাংলাদেশী এলাকা ছেড়ে বাসা শিফট করলাম তখন আমার প্রতিবেশীরা সবাই এক সাথে আমাকে ফেয়ার ওয়েল দিল। সবাই খুব কাঁদছিলো। আমার পাশের বাসার প্রতিবেশী তো ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে বলছিলেন- বেচারী আমাদের সবার ছোট। কিন্তু প্রতিবেশী হিসেবে এত উত্তম ছিলো...... ভাবীদের প্রশংসায় বিশ্বাস করুন পাঠক আমার মাঝে এতটুকু অহংকার হল না। বরং আমি বিস্মিত হয়ে লক্ষ্য করছিলাম আমার মায়ের মাঝে আমার শৈশবে দেখা গুণগুলোই উনারা আমার মাঝে খুঁজে পেয়েছেন। প্রতিবেশী, আপন- পর সবার সাথে নিজের ক্রোধের উপর ক্ষমাকে বিজয়ী করার এক অসাধারণ গুণ আমার মায়ের মাঝে দেখেছি। সূরা মাউনে নির্দেশিত অন্যকে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস দেবার বাস্তব অনুশীলন করতে আমার মা'কে সবচেয়ে বেশী দেখেছি। আমার মায়ের দানে কত দরিদ্র পরিবার খেয়ে পরে বাঁচার সুযোগ পেয়েছে। ওদের সন্তান সেই অ, আ হতে গ্রাজুয়েশন পর্যন্ত এসেছে আজ। আমার দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন 'দানের অনুপম নজীর' বইটির প্রথম পাতায় লিখেছিলাম' উৎসর্গ আমার প্রিয় মা'কে যিনি আমার কাছে দানের অনুপম আদর্শ।'

আম্মুর হাতে যখন বইটি তুলে দিলাম তখন আম্মু আমাকে জড়িয়ে ধরে বললেন'- মা, আল্লাহ যেন তোমাকে আয়েশা (রাঃ) এর যোগ্য উত্তরসূরী বানান।' আমার বই পড়ার প্রচন্ড নেশাটা মায়ের কাছ হতেই পাওয়া। বাংলা সাহিত্যে আমার ভাষার ব্যবহার আর নতুন শব্দের হাত খড়িতে বাবা - মা কারো অবদানই কম নয়। অবসরে বসে নানা রকম হাতের কাজের হাতখড়ি ও পেয়েছি মায়ের কাছ হতে। ইদানিং পরিচিতরা আমার আনাড়ি হাতের রান্নার যেভাবে প্রশংসা করেন তাতে মনে হয় আম্মুর রান্নার দক্ষতার সুবাতাসটা বুঝি আমাকে ও খানিকটা ছুঁয়ে যাচ্ছে আজকাল।

আম্মু যখন আমাকে কিছু গিফট করেন তখন আপুরা দুষ্টমি করে ফোঁড়ন কেটে বলে- মা'তো তাঁর ছোট মেয়েকেই বেশী ভালোবাসে'। যদিও আমি জানি মায়ের অসুস্থতার জন্য এই গিফট গুলো আপুরাই কিনে অনে। তাই আমি ও মা'কে বলি- থাক মা আমাকে কিছু দিলে শত্রু গুলোর যখন চোখ টাটায় তখন আমার কিছু চাইনা। আর মনে মনে বলি- ওগো প্রভু, জাগতিক কিছু নয়। আমার মায়ের, তোমার প্রতি আনুগত্য আর তোমার সৃষ্টির প্রতি ভালোবাসার বিশাল মনটাই আমায় দাও। আমার মায়ের নৈতিক শিক্ষার মধুর ঝাপটায় যেন বিশুদ্ধ হয় আমার এই জীবন।

আমার মা আমাকে আদর করে ডাক নামের প্রথম দুটো অক্ষরকে একসাথ করে ডাকতেন। সেই গানটির মত- দরজাটা খুললেই খেয়ে যাই ধোঁকা/ মা বুঝি বললেন এলি নাকি খোকা... আমার প্রবাসী জীবনের একাকিত্বে কতবার যে চমকে উঠে ধোঁকা খেয়েছি। মনে হত আম্মু বুঝি আমার নাম ধরে ডাকছেন। তখন নিজকে খাঁচায় বদ্ধ পাখিটার মতই অসহায় মনে হত। যাকে প্রচন্ড নির্মমতায় বিচ্ছেদ ঘটানো হয়েছে তার স্বজনদের কাছ হতে। কি যে ভীষণ কান্না পেত।

বর্তমানে আমার আমিময় জীবনে সংসারের ব্যস্ততায় ভরাট একজন মানুষ আমি। আমার প্রবাসী জীবনের শুরুর দিনটিতে আম্মু দোয়া করেছিলেন- হে আল্লাহ! আজ হতে আমার মেয়ের মাথার উপর হতে আমার স্নেহের ছায়া দূরে সরে গেল। তুমি তার নতুন জীবনে অসংখ্য ভালোবাসা আর স্নেহের ছায়া ওর মাথার উপর বিছিয়ে দিও। আলহামদুলিল্লাহ আমার মায়ের দোয়ার বদৌলতে আমার প্রবাসী জীবন শত হৃদয়ের ভালোবাসায় রৌদ্রস্নাত থাকে সারাবেলা। আমার বড় মেয়েটি তো মাঝে মাঝে অবাক হয়ে বলে- আম্মু, তোমাকে সবাই এত ভালোবাসে কেন?

মা'কে নিয়ে আমার খুব প্রিয় একটি গান আছে। কথা গুলো এরকম-আমারই মা/ মা জননী/ আমারই সুখের ঠিকানা/ কান্নাকে হায় আঁচলে লুকায়/ দুঃখকে হায় শুধু ভুলে যায় / সাজাতে আমার আঙ্গিনা/ ছিলাম আমি কি যে অসহায়/ দিয়েছো ছায়া মাগো কত মমতায়..... গানটি সাধারণত গাড়িতেই উঠলেই শোনা হয়। শুনতে গিয়ে প্রতিবারই আমার স্মৃতিতে কেঁপে কেঁপে উঠে আমার মায়ের মুখ খানি। গানটি শুনে আমি কাঁদি। প্রতিবারই কঁদি। একসময় অশ্রুগুলো শুকিয়ে ফেলি চোখের উঠোনে। কিন্তু আমি জানিনা। গাড়িতে বসে থাকা বাকী ৪জন আমার সেই কষ্ট অনুভব করে কিনা।

মা'কে নিয়ে স্মৃতির বিবাগী হাওয়া তোলপাড় করে প্রতিনিয়ত বুকের ভেতরটা। অনুশোচিত মনটা কষ্টের চাবুক কষায় ফেলে আসা দিনগুলোয়। দিনান্তের আলো শেষে ঝাঁক বেঁধে পাখিদের নীড়ে ফেরার মত স্মৃতিরা ফিরে ফিরে আসে হৃদয়ের আদালতে। সেখানে মায়ের সাথে করে আসা অবাধ্যতার শাস্তি দিই আমি নিজেই নিজকে। কেন এমন হয়? জীবনে যখন উপলব্দির দরজাটা খুলে যায়। তখন অন্য দিকে সুযোগ গুলো হারিয়ে যায় সময়ের চোরাপথে। স্বর্ণলতার মত কেবল চুষেই নিয়েছি। মায়ের অগনন স্নেহের কোন ক্ষুদ্রতম দায় ও যে মেটাতে পারিনি আমি। কি যে নিদারুণ অক্ষমতার গ্লানি কুঁড়ে কুঁড়ে খায় আমাকে প্রতিনিয়ত।

মা'কে নিয়ে মনের শিকড়ে গেঁথে থাকা অব্যক্ত কিছু মান অভিমানকে খুঁড়ে তুললাম আমার কলমের নিড়ানি দিয়ে। আজকের এই স্মৃতি রোমন্থনের সাথে যে মুঠি মুঠি কষ্টের চোরাকাঁটা মিশে আছে। কেননা আজকের এই নষ্টালজিয়ায় যে উপলব্দির বৈপরীত্য আছে। অনুশোচিত মনটায় খানিকটা হলেও আত্মতৃপ্তি পেতাম যদি শৈশবের চপলতায় মা'কে দু'হাতে গলা জড়িয়ে ধরে বলতে পারতাম- মা গো, আমি তোমায় অনেক ভালোবাসি।

বিষয়: Contest_mother

২৪৬৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File