কবে তুমি সবার হবে?

লিখেছেন লিখেছেন ইছমাইল ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৫, ১১:৪৮:০১ রাত



পতাকা এমন এক খন্ড বস্ত্র বিশেষ যা কোন জাতি, দেশ বা সংগঠনের পরিচয় বহন করে হয়। পতাকার বস্ত্র খন্ডে বিশেষ কোনও রং, নকশা বা চিহ্নের দ্বারা কোনো জাতির আদর্শ বা গৌরবময় শক্তিশালি ইতিহাসের প্রকাশ পায়। আধুনিক বিশ্বের প্রতিটি রাষ্ট্রের একটি করে স্বতন্ত্র পতাকা আছে যা জাতীয় পতাকা হিসাবে পরিচিত।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর ১৯৭২ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার রূপটি সরকারীভাবে গৃহীত হয়। সবুজ রং বাংলাদেশের সবুজ প্রকৃতি ও তারুণ্যের প্রতীক, বৃত্তের লাল রং উদীয়মান সূর্য, স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারীদের রক্তের প্রতীক। সে হিসেবে লাল সবুজের পতাকাতেই বাংলাদেশেকে চিনে আসছে বিশ্ববাসী।

১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বরে দেশ স্বাধীন হলে ও দেশের সব জনগন এখনো স্বাধীনতার প্রকৃত স্বাদ এখনো পায়নি। ৪৪ বছরে দেশ যখন সামনের দিকে এগিয়ে যাবে ঠিক তখনি স্বাধীনতার পক্ষে বিপক্ষের কথা বলে দিনে দিন বিভাজনের রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে। যাদের সাহায্যের দোহাই দিয়ে দেশ স্বাধীনের আওয়াজ তোলা হয় তারা আমাদের ফেলানীকে কাটা তারে ফ্লাগ বানিয়ে রাখলে ও দেশের মান ক্ষুন্ন হয়না! অথচ স্বাধীনদেশের নাগরিক হয়েও আমার হাতে জাতীয় পতাকা স্হান পায়না। হালখাতা আসলে মুক্তিযুদ্ধার সংখ্যা হালনাগাত হয়, প্রকৃত মুক্তিযুদ্ধারা অনাহারে দিন কাটায় আর দালালেরা মুক্তিযুদ্ধার ভুয়া সার্টিফিকেট নিয়া সরকারি অফিসে কাজ পায়।

পতাকাতার প্রতি ভালবাসা দেখাতে কোটি টাকায় মানব নির্মিত পতাকা বানাই, চেতনার দোহায় দিয়ে কেউ কুকুরের গায়ে পতাকার জড়ালে বা পতাকার উপরে বসলে সমস্যা হয়না বা পতাকার মর্যাদা নষ্ট হয়না। পতাকা ইবাদতের মাধ্যম বা জায়নামাজ হলে মৌলবাদের গন্ধ খুঁজি।

আমার পরনে পানজাবি আর মুখে দাঁড়ির কারনে আমি কথিত যুদ্ধ অপরাধী, তাই আমি পতাকা উড়াতে পারিনা । জানিনা ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ কি শুধু ক্লিন সেভ করা মানুষে করেছিল কিনা! দাঁড়ি ওয়ালারা কি মুক্তিকামী মানুষের দলে ছিল না! কথিত যুদ্ধ অপরাধের অভিযোগে বাবার ফাঁসি হলে রাজাকারের সন্তান হিসেবে আমার উপর ও ক্রসফায়ারের হুমকি আসে। যোগ্যতায় কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকুরী মিললে ও চেতনাবাজরা আমার চাকুরী নিয়ে টানাটানি করে।

একটা স্বাধীন দেশে জন্ম নিয়ে বাবার অপরাধের দায়ভার গাড়ে নিয়ে আজ আমি প্রবাসি। প্রবাসের রেমিটেন্স দেশের সমৃদ্ধ অর্থনীতির অন্যতম উৎস হলেও প্রবাসিরা নিজ দেশের এয়ারপোর্টে হয় লাঞ্চিত। এভাবে দেশ বা দেশের মানুষের ভালবাসা বঞ্চিত হয়ে প্রবাসিদের নিকট দেশের চাইতে নিজের বর্তমান অবস্হান প্রবাসকেই খুব নিরাপদ মনে হয়।

প্রবাসে স্হানীয় জনগনের পাশাপাশি অভিবাসীদেরকে তাদের বিজয় দিবসে পতাকা হাতে নিতে নিরুতসাহিত করা হয়না, বলা হয়না তোমারা লেবার, এই পতাকা তোমাদের হাতে মানায় না, বরং জাতিয় দিবসে স্হানীয় ও অভিবাসীরা মিলে বিজয়ের পতাকা উড়ায়, সবাই মিলে প্যরেড করে। পতাকা নিয়ে আনন্দের সীমা থাকেনা। সেই আনন্দের মাজেই কেন যেন মন বলে উঠে হে আমার স্বাধীনতার পতাকা , কবে তুমি সবার হবে?

মুহাম্মাদ ইসমাইল।



বিষয়: বিবিধ

১৫২১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File