জীবনের বাস্তবতা আর উপায়!

লিখেছেন লিখেছেন সিয়াম মেহরাফ ১২ আগস্ট, ২০১৬, ১১:৪৯:৫২ সকাল

আমাদের প্রত্যেকটা মানুষের জীবনেই কিছু না কিছু চাওয়া থাকে।যেটা আসলে আমাদের প্রাপ্য।মাঝে মাঝে প্রকৃতির কাছে হার মেনেই বা বাস্তবতার কাছ হার মেনেই আমরা আমাদের সেই প্রিয় জিনিস বা প্রিয় মানুষটাকে দূরে সরিয়ে দেই।ফ্যামিলির সুখ বা বাবা মায়ের মুখের দিকে তাকিয়েই এট করতে বাধ্য হই।বিশেষ করে মেয়েরা তাদের বাবা মাকে খুব ভালবাসে।সেই ভালবাসা থেকেই নিজের সবটা ত্যাগ করে হলেও তাদের সুখী করবার চেস্টায় কমতি রাখেনা সে।অন্যদিকে যে কেউ একজন কষ্ট পাবে সেটার দিকে লক্ষ্য রাখার সময় নেই। আসলে আমরা অবুঝ।সাধারনভাবে বুঝিনা।আমরা অদ্ভুত।বুঝার চেস্টা করিনা।যেটা আমাদের বুঝে নেয়া উচিত সেটা বুঝে নেয়ার আগেই জীবনের শুরুটা করি আমরা।লাভটা শেষে গিয়ে হয় অশান্তি।পুরানো ক্যালেন্ডারের সাথে তাল মিলালে আর ভালবাসা হলোনা।পুরানো সেই যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ভালবাসলে সেটাও ভালবাসা হলোনা..!!

..

যে মেয়েটার বুকের মধ্যে জমে থাকা কষ্ট তার পরিবার বুঝতে চায়নি,যেই মেয়েটাকে জিজ্ঞেস করার প্রয়োজন মনে করেনা যার সাথে বিয়ে দিচ্ছে তার সাথে সে সুখী হতে পারবে কিনা।অথবা তার কেউ পছন্দ করাই আছে কিনা।যাকে সে খুব ভালবাসে।মেয়েটাও হয়ত এসব না বলে ছেলেটাকে কষ্ট দিয়ে আজ দূরে সরে এসেছে বাবা মায়ের জন্য। আর ভাবছে বাবা মা যদি একটাবার জিজ্ঞেস করে দেখতো আমি সুখী হবো কিনা!! আমার উত্তরটা নাই হতো।ঠিক এমনটাই।সেঁজেগুজে আয়নার সামনে বসে মেয়েটা ভাববে সেই ছেলেটার কথা যাকে সে নিষ্ঠুরের মত কষ্ট দিয়েছে শুধু তার পরিবারের হাসির জন্য।নিজের সুখের জন্য নয়।ছেলেটা ঠিক তখন কি করছে এগুলো তার চোখের সামনে ভাসতে থাকবে।বাবা মায়ের সম্মান রক্ষার্থে সে চুপসে যাবে।ভিতরটা তার পঁচে যাচ্ছে তবুও সে প্রকাশ করতে পারবেনা।কাউকেই না।বারবারই মনে পরবে সেই অসহায় ছেলেটার কথা যার হয়ত কোন চাকরী নেই ঠিকই কিন্তু মেয়েটাকে পাগলের মত ভালবাসতো।মন বারবার জানতে চাইবে সেই পাগলটা কি এখনো আবার কোন পাগলামী করছে? নাকি ভুল কিছু করে বসলো।যে ছেলেটা তাকে এত ভালবাসতো তাকে ছেড়ে আজ যাকে সে চিনেইনা বা জানেনা তার সাথে হ্যাপি হবে কিনা এটাও না জেনেও রাজী সে বিয়েতে।বাবা মায়ের খুশি আর নিজের ইচ্ছের মৃত্যু ঘটাবে তখুনি.!!

...

আজ মেয়েটার যে ছেলেটার সাথে বিয়ে হচ্ছে তাকে সে চিনেইনা,জানেওনা।সুখী হতে পারবে কিনা সেই ধারনা তো দূরে থাক।এভাবে একটা নতুন জীবনের শুরু কখনো হতে পারেনা।এটা নিজের প্রতি অন্যায় করা হয়।মেয়েটার বাবা ভালবেসে এমন একজন ছেলে নিয়ে এসেছে, যার ভাল ইনকাম,আমেরিকা নামক উচ্চ দেশে থাকে।বর্তমানে আমেরিকা সিল পেলেই যেন বুকট ফুলে যায় তাদের।কেউ যদি জিজ্ঞেস করে জামাই কি করে।গর্ব করে বুক ফুলিয়ে বলবে আমেরিকা থাকে...!!! আসলে প্রত্যেকটা বাবা মায়েরাই চায় তাদের সন্তান সুখে থাকুক যেখানে থাকুক।আর এইজন্যে তাদের কাছে সিদ্ধান্ত না নিয়েই করে ফেলে বিশাল ভুল।বাস্তবিক সুখ কি কখনো টাকা পয়সায় হয়? কক্ষনো নয়!! দু চারটা ভাল জামা,গহনা পড়া মানেই সুখ নয়।সুখ মানে মনের সুখ।মেয়েটা যে ছেলেটার সাথে এতদিন ছিল তার সাথে তার এডজাস্ট হয়ে গেছে।প্রত্যেকটা মানুষ আলাদা।সম্পর্কে জড়ালে আস্তে আস্তে ধারনা এক হয়।মিলগুলো এক হয় আর অমিলগুলো আলাদা।তিলে তিলে যে ছেলেটার সাথে দুষ্টু মিষ্টি ঝগড়ায় মেয়েটা খুঁজে পেয়েছিল সুখ আর তার সাথে মিল সেইসব সুখ কখনো আমেরিকা ফেরত কোন পাত্র দিতে পারেনা।নতুন পরিচয়ে যাদের বিয়ে হয় তাদের সম্পর্কটা নতুন তৈরি দেয়াল।গড়ার পরেই ধাক্কা দিলেই যেটা ভেঙ্গে পরবে..!!!

...

মেয়েটা যাকে ভালবাসতো তার সাথে সম্পর্কটা দারুন ছিল।এতদিনের সম্পর্কে একজন অন্যজনকে বুঝতে শিখেছে, একজন অন্যজনকে জেনেছে।এরপরে সেই সুখটাকে বাদ দিয়ে,মনের মধ্যে চাপা রেখে যখন নতুন টাকা আর বাড়ি গাড়ির সুখগুলো এনে দেয়া হয় সেগুলো পেলেই ভালবাসার পুর্নতা কখনো পুর্ন হয়না এটাই বাস্তব।গাড়ি বাড়ি পেলেও যার সাথে আজ বিয়ে হচ্ছে তার ব্যস্ততা কাবু করে রেখে দিবে সেই মেয়েটাকে।যখন বৃষ্টিরাতে মেয়েটার স্বামী অফিস থেকে ক্লান্ত হয়েই সুয়ে পরবে তখন মেয়েটার মনে পরবে পুরোনো সেই কথা।সে যাকে ভালবাসতো আজ এক বছর আগেওতো বৃষ্টিভেজা রাতে ছেলেটার সাথে খুঁনসুটি চলছিল তার।আর মিষ্টি প্রেমালাপ।যা বাড়ি গাড়ি থাকার পরেও মেয়েটা পাবেনা।ওর মনে পরবে।ওর ফাঁকা ফাঁকা লাগবে।ও চাইবে সেই ছোট্ট কুঁড়েঘরটাকেই যেখানে সে মনে মনে সুখে থাকতে চেয়েছিল।বাবা মা তার কথা বুঝার চেষ্টা করেনি।মনটাকেও না।ছেলেটা হয়ত আমেরিকায় থাকত না তবুও তার সেই ফুটো চাল দিয়ে টপটপ করে পানির শব্দ পরবে।একে অপরকে জরিয়ে রাখবে তারা। আর এমন সময় মেয়েটার আর তার ফ্যামিলির একটা ভুলে মেয়েটা আর সেই ছেলেটা যাকে মেয়েটা ভালবাসত তার জীবনটা নষ্ট হয়ে যাবে।মেয়েটা এখন আছে সিমেন্ট দিয়ে গড়ে তুলা ৫ তলা বিল্ডিং-এর নিচে যেখানে টাকা আছে,গাড়ি বাড়ি আছে শুধু সুখটাই নেই!! সুখ!! সেই সুখ!! যা বাঁচতে প্রয়োজন।যা আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাসের চাইতেও বেশি কিছু ।মেয়েটার খুব রাগ হবে বাবা মায়ের উপর।কিন্তু কিছুই বলতে পারবেনা।সময়টা সে শেষ করে ফেলেছে।তার অনেক আগেই এটা বলা উচিত ছিল।তবুও সে বলেনি।ভয়ে,কিংবা সে হয়ত ভেবেছিল তার চুপ থাকাটার অর্থ ফ্যামিলি বুঝে নিবে।বাবা মাও তার ভাষা বুঝেনি আজ।সবাই ব্যর্থ!! সাথে মেয়েটাও!!!

...

যাকে আপনি চেনেন না জানেন না।যার ভাল লাগা মন্দ লাগা বুঝেন না তার সাথে সারাজীবন নিজের সংসার করতে চলেছেন আপনি।হয়ত একদিন এই ভুলের সাজাও আপনি পেয়ে যাবেন।আজ নয়ত কাল!!! অথচ যার সবটাই আপনার জানা, যাকে আপনি বুঝেন আর যে আপনাকে বুঝে তাকে ছেড়ে আজ দূরে যেতে চাইছেন।সেই মানুষটাকে ছেড়ে যে কিনা আপনাকে ছাড়া একটা মুহুর্ত জীবনকে কল্পনা করতে পারেনা।নিজের ভয়ের কারনে,ফ্যামিলির কারনে। দোষটা আপনারো কম নয়।অন্যায়কে প্রশ্রয় দেওয়াটাও একটা অন্যায়।আর অন্যায়ের শাস্তি আজ বা কাল পাওয়াই যাই।আপনি সুখটাকে হারিয়ে ফেলছেন আজ।রুখে না দাঁড়ালে চিরতরে অন্যের হয়ে যেতে পারেন।যাকে আপনার দরকার ছিল মানুষট সে নয়।মানুষটা অন্য কেউ!! আমেরিকা প্রবাসী!!!! অনেক টাকা!!! বাড়ি গাড়ির মালিক!!! বিশেষ করে আপনার বাবা মায়ের পছন্দ..!!

...

নিজের মধ্যে ভালবাসাটা পুষে রাখলে,গোপন করলে তাকে হারানোর জন্য বাধ্য একমাত্র আপনিই।নিজের জীবনটা আল্লাহর দেয়া একটা দান।বিশেষ নেয়ামত।সেটাকে ভালবাসা গোপন করে চিরদিনের মত নষ্ট করে দেয়ার কোন মানে নেই।এতে স্বার্থকতা নেই।মনে রাখবেন,আপনি নিজে ভুল করলে সারাজীবন কাঁদবেন, পস্তাবেন।নিজের একটা ভুলে নিজের কথাটা নাহয় নাই বা ভাবলেন যাকে ভালবাসতেন, বা যে আপনাকে ভালবাসতো তার জন্যে হলেও বুকের ভালবাসাটা মুখে এনে ফেলুন।তার তো এটা প্রাপ্য।ভালবেসেছেন। তার প্রাপ্য তাকে দেয়াটাই আপনার কর্তব্য।যারা ভালবাসে তারা ভয় পায়না, আর যারা ভয় পায় তারা ভালবাসতেই পারেনা। পরিবারের থেকে গোপন করলে চাওয়ার আগেই তাকে হারাবেন।যদি ভেবে থাকেন বাবা মা আপনাকে বুঝবে এই আশায় আছেন তাহলে ঠিক আপনি।তারা বুঝবে। ঠিকই বুঝবে।কিন্তু তবুও তারা মনে করবে আপনার সুখটা সেটাই তারা যেটা বেছে নিয়েছে..!! নিজের জীবনের সাথে অবিচার হতে দেয়া ঠিকনা।সেটাকে অন্যক্ষেত্রেও অবিচার দেয়া যেতে পারে।তবে ভালবাসা নামক এই মধুর সম্পর্কের ক্ষেত্রে অবিচার হতে দেয়া কখনোই ঠিকনা।ভালবেসেছেন সাহস করে,সেই সাহসটাকে জাগিয়ে তুলুন।চোখ বুঝে বলে দিন পরিবারকে কাউকে ভালবাসেন।কিসের ভয়! কিসের পিছুটান!! আজ বাবা মায়ের পছন্দে বিয়ে করলে কাল মন খারাপ হলে বাবা মা কষ্ট পাবে।আর সেই কষ্টটা তাদের না দিতে চাইলে বুঝানোর সময়টা নষ্ট করলে আর পাবেননা!!! কাউকে ভালবেসে যদি তাকে পাওয়ার জন্য লড়তেই না পারেন তাহলে কিসেরই বা ভালবাসেন?!?! কেমনই বা ভালবাসেন?!?!

...

আপনার বাবা মা হয়ত আপনাকে খুব ভালবাসে কিন্তু তারা নিজের জায়গা থেকে কখনো আপনার মনের জায়গা বা অবস্থাটা বুঝতে পারবেনা আপনার মত করে।ভুলটা থেকে নিজেই সুধরে যান।তাদেরকে সুধরে দিন।বাস্তবতার কাছেও জয় পাওয়া সহজ যদি ইচ্ছেটা প্রবল থাকে।সাহস এনে বলে ফেলুন। আজকে যে বাবা মায়ের সুখের জন্য বা ভয় পেয়ে আপনি নিজের ভালবাসার কথা তাদের বলছেন না, কাল তাদের সেই সুখ ঠিকই ধুলোয় মিশে যাবে যখন জানবে আপনি তাদের পছন্দ করা পাত্রের সাথে সুখে নেই।তখন তো তারা এমনিই কষ্ট পাবে।আজ ভালবাসার মানুষটার কথা বলে ফেললেও নাহয় কষ্ট পাবে, বকবে, তবুও যার সাথে আপনি মনে করেন যে আপনি সুখী হতে পারবেন তার সাথে আপনি হয়ত থাকতে পারবেন..!!সবসময় মনে রাখবেন আপনার যেটা ঠিক বলে মনে হবে সেটাই ঠিক।বাকিরা ভুল।সমাজ অনেক কথা বলবে।যথেস্ট বলবে। বলতে বলতে কান অবোস করে ফেলবে।কিন্তু তখন কানে তুলো দিয়ে চিৎকার করে তাদেরকেও বলে দিন "আই লাভ...." মন থেকে চিৎকার করুন।মনকে জিজ্ঞেস করুন কাকে আপনি চান!!তাকে ছাড়া যদি নাই থাকতে পারবেন তবে বৃথা চেষ্টা কেন করবেন? যাকে ছাড়া থাকতে পারবেন না তাকে ছেড়ে দূরে যাবেন কেন! আমেরিকা দিয়ে কি হবে? আমেরিকা আর সুখ এক নয় কখনো।টাকা পয়সা, গাড়ি বাড়ি সুখ হয়না কখনো।সুখ হয় ভালবাসায়।আসল ভালবাসা।ভালবাসাকে কবর দেয়া মহৎ কাজ হতেই পারেনা কখনো।ভালবাসাকে প্রকাশ করা,সাহস নিয়ে বলে ফেলাটাই মহৎ।আপনি ভালবাসেন।এটা কোন অন্যায় নয়।চুপ করে কেনই বা থাকবেন..!!

....

এটা পড়ার পরেও আপনার হাতে কবুল বলার আগ পর্যন্ত সময় আছে।আপনি এখনো অন্যের হয়ে যাননি।এখুনি নিজেকে সুধরে নিন।বলে ফেলুন ভালবাসেন কাউকে।কিসের পিছুটান!! কিসের অপরাধ..!! সারাজীবনের জন্য কারো হয়ে যাওয়ার আগে নিজের উদ্দাম দিয়ে নিজে যাকে ভালবাসেন তাকে পাওয়ার চেষ্টা করে যান।নয়ত পরে আফসোস করবেন।নিজের উপর ঘৃনা চলে আসবে।কেন সেদিন বলতে পারলেন না।আর কেনই বা কষ্ট পেলেন!! কেনই বা সুখটাকে নিজের জন্যই হারালেন।নিজেকে খারাপ মনে হবে।ওই মানুষটার চেহারা ভাসবে চোখের সামনে সেটা আরো অন্যায়, আরো ঘৃনা এনে দিবে আপনার নিজের প্রতি..!! বদলে এখন না দাঁড়ালে পরে সেটা খুব দেরি হয়ে যাবে...!!!

...

মেয়েদের নিয়ে প্রত্যেকটা ফ্যামিলিতেই সমস্যা থাকে।বাবা মায়েরা খুব কম ঝামেলায় তাকে অন্যের করে দিতে চায়।এমনকি পর্যাপ্ত বয়স হয়ার আগেও।মেয়েটা ভালবাসে কাউকে জানা স্বত্তেও।এটাকে কখনো একজন ভালো বাবা মায়ের আচরন বলেনা।তাদের উচিত নিজেদের আর সন্তানের সুখ দুটোর দিকেই নজর দেয়া।সন্তানের সুখের দিকে বেশি নজর দেয়া।কাউকে এত ভালবাসার পরেও একটা মেয়ে বাধ্য হয় অন্য নতুন সম্পর্কে জরানোর।একটা বন্ধনে যাওয়ার। যেখান থেকে বেরুনো সম্ভব না।নিজের সামান্য ভুলে আবার পরিবারের সামান্য ভুলে।মাঝে মাঝে ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল করে হলেও তাদেরকে বিয়ে করতে বাধ্য করে।হার্টএটাক্ট সহ নানা অসুখের বাহানায় বা অন্যকোনভাবে।মেয়েটা না পারে ছেলেটাকে কষ্ট দিতে আর না পারে বাবা মাকে কষ্ট দিতে।তার কিছু করার থাকেনা।সে নিজের হাসিমুখ ভুলে যায়। বাবা মায়ের হাসিমুখটাই দেখতে চায়..! সে স্বীকার পরিস্থিতির।সে হার মেনে যায়...!! আর সে তখন এটা মনে রাখেনা তার কান্না মুখটাই সে শুধু বেঁছে নিল না, তার সাথে আরেকটা মানুষকেও অসহায় করে দিলো।তাকেও কাঁদাতে চলেছে।ওই মানুষটা তো আপনাকে খুব ভালবাসে,তার প্রাপ্য শোধ করলেন আপনি তার চোখের পানি দিয়ে!!!! এটা কি আসলেই তার প্রাপ্য ছিল? একটাবার মনটাকে জিজ্ঞেস করুন।শুধুই একবার।সেই আপনাকে বলে দিবে সব!!!

...

যে ছেলেটাকে আজ আপনার বাবা মা সোনার টুকরো বলছে আপনি জানেন তার সাথে আপনি সুখী হতে পারবেন না।তবুও জরাচ্ছেন।বিশাল ভুল এটা।মারাত্মক ভুল! নিজের ভালবাসাকে ত্যাগ করা মানেই আপনি ভালবাসতে জানেন না।ভালবাসার প্রমান সাহস দিয়ে করতে হয়।সবটা জানিয়ে ভালবাসতে হয়।সে রিকশা চালায়।তাকে ভালবেসে যদি বুকে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে বাবা মায়ের সামনে ওর নাম উচ্চারন করতে না পারেন।ওর পেশা বলতে না পারেন।ওকে ভালবাসেন তা বলতে না পারেন তাহলে কেমন ভালবাসেন?! কিসের এত ভয়? ও রিকশাচালায় তাই?সেটা জেনেই ভালবেসেছেন।আজ তাহলে বলতে ভয় পাচ্ছেন কেন? বলে দিন এই রিকশাচালককেই আপনার দরকার।এর সাথেই দুবেলা ভাত,ডাল খেয়ে আপনি সুখী হতে পারবেন।আর এটাই চান।আপনার আমেরিকা থেকে আসা কাউকে দরকার নেই..!! এমনটা না পারলে সেটাকে ভালবাসা বলে না..! আর সেটাকে যা বলে সেটার কখনো নামই হয়না।হতে পারে আপনার এটা ভালবাসাই ছিলনা, ছিল আবেগ...!!!শুধুই আবেগ!!! নয়ত আজ এভাবে ভালবেসেও ভয় পেতেন না।সে মানুষটা যাই হোকনা কেন,যে পেশাদারই হোকনা কেন আপনার কাছে সেই কেবল সেরা এটা বুঝাতে পারতেন..!!ভালবাসার মানুষটাকে যদি বাবা মা সহ সবার সামনে সেরা বানাতে নাই পারেন, সে ছোটলোক বলে লজ্জা পান তার কথা বলতে, তাহলে আসলেই আপনি তাকে কখনো ভালবাসতেই পারেননি.!

...

বিয়ে হয়াটাই যেন আসল।কার সাথে হচ্ছে,কিভাবে হচ্ছে,ইচ্ছের বিরুদ্ধে হচ্ছে কিনা এটার যেন কোন প্রয়োজনই নেই। এটা শুধুই জীবনের খেলার মধ্যে পরে।আর কিছুইনা।জাস্ট এ গেইম।এই খেলার চাল আপনার হাতে।আজ চাল না দিলে কাল অন্যজন হারিয়ে দিয়ে চলে যাবে।এখানটায় হারলে আর সুযোগ নেই দ্বিতীয়বার।সবটা এখানেই শেষ...!! টাকা পয়সা,বাড়ি গাড়ি, আমেরিকান পাত্রে ভবিষ্যৎ থাকেনা কখনো যেখানে আপনিই ভাল থাকতে পারবেননা।এটা ভবিষ্যৎ নয়।এটা জেদ, ইমোশন আর ভয়ের কাছে হার মানা ছাড়া আর কিছুই নয়..!! এই হারে সুখ নেই।এর চাইতে প্রিয় মানুষটার কাছে হারাতেও সুখ থাকে।এখানে একটা ভুলে জীবনটাই শেষ হয়ে যায়।আপনি হয়ত দুদিন বাদে নিজেকে গুছিয়ে নিতে পারবেন কিন্তু গতকাল যাকে ভালবাসতেন? যে আপনাকে ভালবাসে? সেই মানুষটা কি খুব সহজে এটাকে মেনে নিতে পারবে? তাকে কষ্ট দিয়ে বাবা মাকে ভয় পেয়ে বা তাদের সুখের জন্য সেই মানুষটাকে কাঁদানো কি খুব ভাল কাজ হবে? মহৎ কাজ হবে..??!!

...

আপনি হয়ত নিজের করে চেয়েছিলেন একজন মানুষকে আর আজ নিজের ভুলে বাধ্য হয়ে বিয়ে করছেন একজন বড়লোককে,একজন চাকুরীজীবী কে।আচ্ছা মানুষ ভাল নাকি চাকুরীজীবী?? প্রশ্নের উত্তর কি জানা?!!? কারোই জানা নেই। একজন মানুষ আর চাকুরীজীবী এর মধ্যে বিশাল পার্থক্য।যেই মানুষটাকে আপনি চাইবেন তার সাথে আপনি সুখী কিন্তু চাকুরীজীবীর কাছে আপনি সুখী নন! ব্যাপারটা বেশ অদ্ভুত তাইনা?!?!!!

....

...

....

আজ একটা সুত্র শিখিয়ে যাই।এটা বীজগণিত বা পাটিগণিতের কোন সুত্র নয় জীবনের সুত্র। সুখী হয়ার,ভাল থাকার সুত্র।কাউকে ভালবাসলে মন থেকে বাসুন।যোগ্যতা দেখে ভালবাসবেন না।আগেই ভেবে দেখুন মানুষটাকে সারাজীবন ভালবাসতে পারবেন কিনা।ভালবাসতে যদি পারেন তাহলে তার জন্য সমাজ,ফ্যামিলির সাথে লড়তে পারবেন কিনা।যদি না পারেন তাহলে আপনার ভালবাসার অধিকার নেই।ভালবাসলে সেখানে কেবল একটাই ভয় থাকা উচিত।সেটা হলো মানুষটাকে হারিয়ে ফেলা।আপনি মানুষটার নাম বলতে যদি ভয় করে সেই ভালবাসা মুল্যহীন।ভালবাসা এমন এক জিনিস যেটাকে হাজার মানুষের সামনে বসেও জোর গলায় বলায় যায় আমি ওকেই ভালবাসি।হ্যা হ্যা ওকে।ওই মেয়েটাকে বা ওই ছেলেটাকে।এইটাই ভালবাসা।ভয়ে চুপসে যাওয়া ভালবাসা নয়।হতেই পারেনা।কেননা ভালবাসা এমন একটা শব্দ যা হাজারটা ভয়ের ফাঁকেও কথা বলার জন্য উন্মুক্ত করে দিবে আপনার কন্ঠ।জোর গলায় বলতে পারবেন ভালবাসি।খুব জোর গলায়।এটাই ভালবাসা..!!

...

আজ যে মানুষটাকে ভালবাসেন তাকে নিজের ভুলেই হারালে কাল যখন মনে পরবে তাকে নিজেকে ক্ষমা করতে পারবেন তো? নিজেরটা নাহয় নাইবা দেখলেন তার কান্নার প্রত্যেকটা চোখের পানির মধ্যে থাকা নোনতা জলের লবনের পরিমান নির্নয় করে তার দাম তাকে দিতে পারবেন তো? আপনি কেন ভয় পাচ্ছেন? কেন হাত ছাড়ছেন? যে এত ভালবাসে, তাকে ছেড়ে কেন যাবেন? ভয় কিসের? অপরাধ তো করেননি।শুধুই ভালবেসেছেন।আজ তাকে ছেড়ে চলে গেলে কাল মনে পরবে তাকে কষ্ট দিয়েছেন।কষ্ট দিয়েছেন বা দিচ্ছেন এটা যখন বুঝতেই পারছেন তখন তাকে কেন সেই নরকে ফেলে রাখবেন? তুলে নিন।আপনিও তাকে ভালবাসেন অনেক! কিভাবে বুঝলাম? প্রিয় মানুষটাকে কষ্ট দিয়ে যে বুঝতে পারে সত্যিই কষ্ট দিয়েছি সে তো মানুষটাকে ভালবাসে।ভাল না বাসলে কষ্ট দিয়েছেন এটা মনেই হবেনা।আপনার সিদ্ধান্ত তখন আপনার কাছে ঠিক মনে হবে।কষ্ট দিলে সেটাকেও মনে হবে যা করেছেন ভালোই করেছেন।এইযে শুনছেন!! হ্যা আপনাকেই বলছি,প্রিয় মানুষটার হাত কখনোই ছাড়বেন না।যতই ঘুর্নিঝড়,টর্নেড

ো আসুক।শক্ত করে ধরে রাখুন।প্রতিজ্ঞা করুন বাঁচলে এই হাতটা ধরেই বাঁচবেন।এই হাত দুটো পাওয়ার জন্য যা করতে হবে আপনি করবেন।বুকে হাত দিয়ে বলুন তাকে ছেড়ে যাবেন না।বুকে হাত দিয়েই বলুন তাকে পাওয়ার জন্য যা যা দরকার, যত কিছু দরকার, সব আপনি করবেন।এই দুটো জিনিস বুকে হাত দিয়ে বলার সময় যদি হাত না কাঁপে, কেবল তাকে পাওয়ার চিন্তাটাই মাথায় আসে তবেই আপনি সেই মানুষটাকে খুব ভালবাসেন।অন্তত এই ভালবাসেন বলেই তার বুকের মধ্যে মাথা গুজে দিন।আর এদুটি কথা বুকে হাত দিয়ে বলার সময় হাত কাঁপলে বুঝে নিবেন আপনি তাকে ভালবাসেনই না বা বাসতেই পারেননি বা পুরোপুরি পারেননি।সত্যিকারের ভালবাসা টিকে থাকবে আপনার জন্যেই।এক হবে আপনার জন্যেই। আবার সেটা নষ্টও হয়ে যেতে পারে আপনার ভুলের জন্যেই।এসব ভুলে পা না বাড়িয়ে,আজ চুপসে না গিয়ে, প্রিয় মানুষটির সাথে ভাল থাকুন সবসময়.....!!

....

...

....

সুত্রঃ ভালবাসা পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যাওয়ার আগেই মনের মধ্যের ভয়গুলো তাপ দিয়ে গ্যাসীয় অবস্থায় উড়িয়ে দেয়ার পরে বুকের মধ্যে সর্বনিম্ন ১২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা উৎপন্ন করে ভালবাসা নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারনগুলোকেও উত্তপ্ত করে গ্যাসীয় অবস্থায় এনে বাতাসে উড়িয়ে দেয়ার প্রক্রিয়াকেই জীবন বা সুখ বলে।

বিষয়: বিবিধ

২১৪৮ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

376159
১২ আগস্ট ২০১৬ সন্ধ্যা ০৭:১৪
দুষ্টু পোলা লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ পিলাচ
376171
১৩ আগস্ট ২০১৬ রাত ০২:৩৭
কুয়েত থেকে লিখেছেন : ভিতরটা তার পঁচে যাচ্ছে তবুও সে প্রকাশ করতে পারবেনা ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
377384
১০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ রাত ০১:০০
সিয়াম মেহরাফ লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File