আগামী কালকের এই কর্মসূচী কি আগামী পরশুর আরেকটা বিক্ষোভ কর্মসূচীর জন্ম দেবেনা ??

লিখেছেন লিখেছেন মেজর জলিল ২৭ অক্টোবর, ২০১৫, ০৪:৫৮:৫৬ বিকাল

২৮ শে অক্টোবর ২০০৬ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে সবথেকে জঘন্য ,নৃসংশ ও বর্বরতা ঘটনো হয়েছিল। সেদিন আমরা দেখেছি কিভাবে বাম ছাত্র নেতা বাপ্পাদিত্য বসু লাশের উপর নৃত্য করেছে, সেদিন আমরা দেখেছি কিভাবে মেধাবী নিরীহ ছাত্রদের সাপের মত পিটিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

এরই প্রতিবাদ স্বরুপ জামায়াত ইসলামী ও ইসলামী ছাত্র শিবির আগামীকাল বিক্ষোভ কর্মসূচী ঘোষনা করেছে। বিক্ষোভ কর্মসূচীর পন্থা ও কৌশল নিয়ে ঘোরতর আপত্তি আছে আমার (ব্যক্তিগত)। জ্বি জনাব আমিও ক্ষুব্ধ, আমিও মর্মাহত। তবুও আমি এই বিক্ষোভ কর্মসূচীর নামে ঝটীকা মিছিল, পটকা ফুটিয়ে নিরাপদ প্রস্থান ও কিছু ছাত্রদের গ্রেফতার ও নির্যাতন, জেল জরিমানার ঘোরতর বিরোধী।

জনাব এই বিক্ষোভ কর্মসূচীর লাভ-ক্ষতির অংকটা কি বাসায় বসে খাতায় একটু করে দেখেছেন??? আগামী কালকের এই কর্মসূচী কি আগামী পরশুর আরেকটা বিক্ষোভ কর্মসূচীর জন্ম দেবেনা ??

জনাব রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন না করলে আপনাদের মান-সম্মান কমবেনা, তবে কিছু নিরীহ ছাত্র হামলা-মামলা, জেল-জরিমানা থেকে রক্ষা পাবে হয়ত। দয়া করে একটু ভেবে দেখুন।

জনাব একজন জনশক্তি তৈরি করতে যে কত পরিশ্রম, সময়, মেধা ব্যয় হয় তা আপনারা আমার থেকে অনেক বেশি জানেন। তাই এই অস্তিত্ব জানান দেবার কথিত বিক্ষোভ প্রদর্শন করে মূল্যবান এই জনশক্তিকে হুমকীর মুখোমুখী করা আমার কাছে আত্মহত্যার সমান মনে হয়।

আমার ধারণা হলো বরাবরের জামায়াত তার নিজের শক্তি-সামর্থ নিয়ে এবং প্রতিপক্ষের শক্তিসামর্থ সম্পর্কে ভুল মূল্যায়ন করেছে । আর সেভাবেই সিদ্ধান্তও নিয়েছে । পরিস্থিতি মূল্যায়ন, কর্মসূচী নির্ধারণ অর্থাৎ রণকৌশলে প্রচুর ভুলভ্রান্তিতে রয়েছে বলেই আমি মনে করি। যা বাস্তবতাবিমুখ এবং ক্ষতিকর হয়েছে । জামায়াত এর বর্তমান অবস্থান নৈতিকভাবে ঠিক হলেও রাজনৈতিক চিন্তাধারা ও কর্মসূচী-পদক্ষেপের দিক থেকে নানান ভুলে ভরা ।

জনাব মজুমদারের নয়া দিগন্তে লিখেছেন-

“রণকৌশল যুদ্ধনীতির অংশ। চেয়ারম্যান মাও বলতেন, দশ কদম এগোনোর স্বার্থে তিন কদম পেছনে যাওয়া পরাজয় নয়, কৌশল। তা ছাড়া যুদ্ধ একধরনের ধোঁকা । প্রতিপক্ষকে ধোঁকা দিয়ে বোকা বানানো সব যুগেই রণকৌশল হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। চেয়ারম্যান মাও বলেছেন, বিপ্লব ধ্বংস নয়, সৃষ্টির প্রসববেদনা। কোনটা ধ্বংস, কোনটা প্রসববেদনার বিষয় সেটা বোঝা নেতৃত্বের প্রজ্ঞার ওপর নির্ভর করে। কর্মীদের ওপর দোষ চাপিয়ে নেতৃত্ব রেহাই পেতে পারে না” ।

এই প্রজ্ঞার জায়গায় চরমভাবে মার খেয়েছে জামায়াতের নেতৃত্ব । জামায়াতের নেতাদের বর্তমান বিক্ষোভ কর্মসূচীর স্টাইলকে বোকামীর পরিচয় বলেই মনে হয় । তারা তাদের সীমিত সংখ্যক নিবেদিতপ্রাণ জনশক্তিকে রাষ্ট্রশক্তির বিপক্ষে খালি হাতে যুদ্ধে নামিয়ে শুধু অপচয় ও ক্ষতির পাল্লাটাই ভারী করতেছেন।

“রাষ্ট্রশক্তি ও সরকারের মধ্যে যারা তফাৎ ঘুচিয়ে দেয় তারা নিজেরাই নিজেদের বিপদ ডেকে আনে। যারা সাত-পাঁচ না ভেবে, ভূতভবিষ্যৎ চিন্তা না করে রাষ্ট্রশক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধ বাধায় তারা আহাম্মক, বোকার হদ্দ। ক’টা টাকা সঞ্চয় থাকলে যেমন বেহিসাবি হতে হয় না, তেমনি ক’গণ্ডা জনশক্তি থাকলেই রাষ্ট্রশক্তির অপব্যবহারে সিদ্ধহস্ত চিহ্নিত দুশমনদের মুখের গ্রাস বানাতে হয় না” ।

দলের অস্তিত্বের জানান দিতে জীবনের অস্তিত্ব বিলীন করবেননা দয়া করে। হাত জোর করে বলছি- দাম্ভিক হবেননা, একটু মানবিক হউন। আপনারা অনেক বিচক্ষণ, বুদ্ধিমান ও জ্ঞানী মানুষ। কথায় আছে –বুদ্ধিমানের জন্য নাকি ইশারাই যথেষ্ট।

বিষয়: বিবিধ

১২৯৩ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

347419
২৭ অক্টোবর ২০১৫ বিকাল ০৫:১৪
বার্তা কেন্দ্র লিখেছেন : সুন্দর অনুভুতির বহি:প্রকাশ ঘটেছে-আপনার সুচিন্তিত লেখায়। ধন্যবাদ আশাকরি আরো পােস্ট লিখবেন...
২৭ অক্টোবর ২০১৫ বিকাল ০৫:১৭
288449
মেজর জলিল লিখেছেন : ধন্যবাদ মতামত দেবার জন্য।
347425
২৭ অক্টোবর ২০১৫ বিকাল ০৫:৪৬
ব্লগার শঙ্খচিল লিখেছেন : আপনার সব কথায় একমত হতে পারলাম না.....।
২৭ অক্টোবর ২০১৫ বিকাল ০৫:৪৯
288452
মেজর জলিল লিখেছেন : মতের ভিন্নতা থাকবে এটাইতো স্বাভাবিক। আপনার মতামতটা তুলে ধরলে আরো ভালো লাগত।
347449
২৭ অক্টোবর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:৫১
শেখের পোলা লিখেছেন : সহমত রইল৷

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File