হসপিটাল!!!

লিখেছেন লিখেছেন শারিন সফি অদ্রিতা ১১ মার্চ, ২০১৬, ০৯:৫৯:১৭ সকাল



হসপিটালের ভিতরে যেন অন্য আরেক জগত! আর ডাক্তার-রা যেন অন্য আরেক প্রাণী। এই দেখছি তো কাটাকুটি করে কারো টিউমার বের করে আনছে তো ঐ দিকে একটা ফুটা করে কারো মধ্যে লম্বা টিউব ঢুকিয়ে দিচ্ছে। আবার কোন সিগারেট ফুঁকা রোগীর লাংসের এক্স-রের দিকে অসহায়ের মতন তাকিয়ে আছে, তো এই কারো মারা যাবার খবর পরিবারকে দিতে যাচ্ছে। আমাকে ইন্সট্রাকশন দিয়ে যাচ্ছেন আর আমি রোগীদের হিস্ট্রী টাইপ করে যাচ্ছি। এলকোহল, সিগারেট, পার্টি- সব করে বমি করতে করতে এমার্জেন্সি ডিপার্টমেন্টে শোয়া! এক্সরে আর সিটি স্ক্যানে তো লাংসের ব্লক আর গর্তগুলি ধরা পরলো, কিন্তু পুরো অন্তর টা-ও যে শুণ্য গর্তের মতই খাঁ খাঁ করছে এটা এক্সরে ছাড়াই বেশ দেখা যাচ্ছিল। সেটা ভরতে দুনিয়ার শত রঙের এন্টারটেইনমেন্ট্ - সব-ই তো ট্রাই করা হয়ে গেল! লাগামহীন ঘোড়ার মতন “আমার লাইফ, যা ইচ্ছা তাই করি, ফুর্তি করি”। কি লাভ হল এতে? হসপিটাল বেডে শুয়ে শুয়ে সেই শূণ্যতা কি হল পূরণ?

সুবহানআল্লাহ্‌ দেখি আর ভাবি, আল্লাহ্‌ আমাকে গাইড না করলে আমিও কি ঐ জায়গায় হতাম না! আলহামদুলিল্লাহ্‌ আল্লাহ্‌ আমাকে ইসলাম দিয়েছেন! গাইডেন্স আল্লাহ্‌র কত বড় নিয়ামত! গাইডেন্স ছাড়া মানুষ হয়ে যায় লাগামহিন ঘোড়ার মতন, কোথায় বাদ দিয়ে কোথায় গিয়ে আনন্দ খুঁজবে! অথচ সে বোঝে না যে সেই আল্টিমেট আনন্দ তো আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকেই আসবে। অন্তরের সেই শূণ্যতা শুধু আল্লাহ্‌র যিক্‌রের মাধ্যমেই পূরণ করা সম্ভব, আর কিছুই এটা পূরণ করবেনা। হসপিটালের বেড গুলোই তার প্রমাণ!

সেদিন ক্রিটিকাল একটা পেশেন্ট এর এক্সিডেন্টের পর দৌড়ে সবাই “ট্রমা” রুমে গেল। গাড়ির নিচে পরে কয়েকটা টুকরো হয়ে গেছেন, বাঁচার আশা প্রায় শূন্য! সবাই মিলে কি না করলো রোগীকে বাঁচাতে! বিকাল হতে হতে সে চলে গেল ওপারে! কে জানে সে কোন অবস্থায় তার রবের কাছে ফিরে গেল। সে কি তার ভিতরের শূণ্যতা অপূর্ণ রেখেই চলে গেলো? ফেরেস্তারা কোন রূপ ধরে তার আত্মাকে দেহ থেকে বের করতে এসেছিল? আচ্ছা তার কি কবরের অন্ধকারের ভিতর ভয় লাগছিলো? সে কি জান্নাতের সুসংবাদ পেয়েছিলো, নাকি জাহান্নামের অভিশাপ?

তার মত আমাকেও চলে যেতে হবে। ইয়া রব!! শূন্য অন্তর আর শূন্য আমল নিয়ে তোমার সামনে কিভাবে দাঁড়াবো জানি না! আল্লাহ্‌ আমাদের সবাইকে “নাফসুল মুত্‌মায়িন্যা” (প্রশান্তকারী আত্মা) হয়ে তার কাছে ফেরত যাবার তাওফিক দিন।

আমিন।

বিষয়: বিবিধ

১৩০০ বার পঠিত, ১১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

362161
১১ মার্চ ২০১৬ দুপুর ০২:২৭
গাজী সালাউদ্দিন লিখেছেন : আমি অনেক আমল করে ফেলেছি, অথবা শেষ জীবনে আমল করে আল্লাহে নামিয়ে ফেলবো, তাই এখন যা করার করে নেই, পরে ক্ষমা চেয়ে নিলেই সব মাপ, এই ধ্যান ধারণাই মানুষকে আল্লাহ্‌কে ভুলিয়ে রাখে, তাই মৃত্যুটা যখন হঠাৎ করেই চলে আসে,আর কিছু করার থাকেনা, আপনার ভাষ্যমতে শুধুই শূন্যতা।

ধন্যবাদ, লেখাটা খুব শিক্ষণীয়।
১৩ মে ২০১৬ দুপুর ০২:১৯
306223
শারিন সফি অদ্রিতা লিখেছেন : আল্লাহ্‌ তা'আলা আমাদেরকে সেই শূণ্যতা থেকে তাঁর কাছে আশ্রয় দিন! আমিন
জাঝাকাল্লাহু খইর সময় এবং ধৈর্য্য নিয়ে লিখাটি পড়ার জন্যে।
362184
১১ মার্চ ২০১৬ রাত ০৮:১৫
শেখের পোলা লিখেছেন : আমিন৷
১৩ মে ২০১৬ দুপুর ০২:১৯
306224
শারিন সফি অদ্রিতা লিখেছেন : জাঝাকাল্লাহু খইর সময় এবং ধৈর্য্য নিয়ে লিখাটি পড়ার জন্যে।
362204
১২ মার্চ ২০১৬ রাত ০৪:০২
আবু তাহের মিয়াজী লিখেছেন : আমীন
১৩ মে ২০১৬ দুপুর ০২:১৯
306225
শারিন সফি অদ্রিতা লিখেছেন : জাঝাকাল্লাহু খইর সময় এবং ধৈর্য্য নিয়ে লিখাটি পড়ার জন্যে।
362224
১২ মার্চ ২০১৬ দুপুর ১২:১৩
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
১৩ মে ২০১৬ দুপুর ০২:১৯
306226
শারিন সফি অদ্রিতা লিখেছেন : জাঝাকাল্লাহু খইর সময় এবং ধৈর্য্য নিয়ে লিখাটি পড়ার জন্যে।
362227
১২ মার্চ ২০১৬ দুপুর ১২:৪০
আবু জান্নাত লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আপনার লিখা পড়ে অন্তরাত্মা কেঁপে উঠলো। আহা! কোন অবস্থায় যে আমি আমার রবের সাক্ষাৎ পাবো! হে আল্লাহ! আমাকে راضية مرضية অবস্থায় তুলে নিও। এটাই তোমার নিকট চাওয়া।

সুন্দর পোষ্টটির জন্য শুকরিয়া। জাযাকাল্লাহ খাইর
১৩ মে ২০১৬ দুপুর ০২:২০
306227
শারিন সফি অদ্রিতা লিখেছেন : ওয়াআলাইকুমআস সালাম ওয়ারহমাতুল্লহ্‌!
আল্লাহ্‌ আমাদের সবাইকে তাঁর কাছে প্রশান্ত আত্মা হিসেবে ফিরে যাবার তাওফিক দিন। আমিন

জাঝাকাল্লাহু খইর সময় এবং ধৈর্য্য নিয়ে লিখাটি পড়ার জন্যে।
376345
১৬ আগস্ট ২০১৬ সকাল ১০:২৪
আবু নাইম লিখেছেন : ইয়া রব!! শূন্য অন্তর আর শূন্য আমল নিয়ে তোমার সামনে কিভাবে দাঁড়াবো জানি না! আল্লাহ্‌ আমাদের সবাইকে “নাফসুল মুত্‌মায়িন্যা” (প্রশান্তকারী আত্মা) হয়ে তার কাছে ফেরত যাবার তাওফিক দিন।

আমিন।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File