"ডাল মে কুচ কালা নেহি, ডাল মে সবই কালা হ্যায়"।

লিখেছেন লিখেছেন জেরিন সরকার ১১ জানুয়ারি, ২০১৫, ০৫:২৯:৩৭ বিকাল

গত ক'দিন ধরেই হট টপিক হয়ে আছে "অমিত সাহার ফোনালাপ"। আমার দৃষ্টিকোন থেকে এই ফোনালাপের পোষ্ট মর্টেমঃ

১) যে মূহুর্তে প্রেসকে জানানো হলো অমিত সাহা, খালেদা জিয়াকে ফোন করে তার শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিয়েছেন। কিছুক্ষণ পরই হানিফ সাহেব ঘোষনা দিলেন মিথ্যা কথা, খালেদা জিয়াকে অমিত সাহা ফোন করেননি। আচ্ছা তর্কের খাতিরে আমি যদি ধরেই নিই "খালেদা জিয়াকে অমিত সাহা ফোন করেননি"। তো এত তাড়াতাড়ি হানিফ সাহেব কিভাবে এটা জানলেন যে, খালেদা জিয়াকে অমিত সাহা ফোন করেননি? আর ফোন করুক আর না-ই করুক, তাতে আওয়ামীলীগের কি আসে যায়? আমার তো মনে হয় "ডাল মে কুচ কালা হ্যায়"।

২) একটি দেশের বড় একটি পার্টির প্রধান, প্রতিবেশী একটি দেশের বড় আরেকটি পার্টির প্রধানকে ফোন করতেই পারে, অসুস্থতার খবর জানতে চেয়ে খোঁজ নিতেই পারে। তাই বলে সেই ফোনালাপ নিয়ে আওয়ামীলীগের এত মাথা ব্যাথার কারন কি? আমার তো মনে হয় "ডাল মে কুচ কালা হ্যায়"।

৩) বুঝলাম আওয়ামীলীগের এত মাথা ব্যাথার কারন হলো, যাকে তারা অবরুদ্ধ করে রেখেছে, বিষয়টি তাকে ঘিরেই। তাই আওয়ামীলীগের মাথায় এত ব্যাথা। কিন্তু হুট করে "একাত্তর টিভি" হানিফ সাহেবের মতো বলে বসল নাহ্ তাদের কাছে খবর আছে, খালেদা জিয়াকে অমিত সাহা ফোন করেননি। আচ্ছা আওয়ামীলীগের সাথে সাথে একাত্তর টিভিরও এ বিষয়ে মাথা ব্যাথা কেন? আমার তো মনে হয় "ডাল মে কুচ কালা হ্যায়"।

৪) যাই হোক বিএনপির পক্ষ থেকে একাত্তর টিভির খবরের প্রতিবাদ করে প্রেস নোটিশ দেওয়া হলো। এবার "চ্যানলে ২৪" সরাসরি কথিত অমিত সাহাকে ফোন করে তার ফোনালাপ দেশবাসীকে শোনালো যে, খালেদা জিয়াকে অমিত সাহা ফোন করেননি।

এইখানেই আমার প্রশ্নঃ

আমরা তো দেখি, একটা ছোট দলের পাতি নেতাও একজন সহকারী রাখেন। কেউ ফোন করলেই সেই ব্যক্তিগত সহকারী ফোন রিসিভ করে আগে জেনে নেন কে ফোন করেছে। এবং অপরিচিত হলে কি কারনে ফোন করেছে তাও জেনে নেন।

অমিত সাহা ভারতের ক্ষমতাসীন পার্টি বিজেপি'র সভাপতি। এত বড় একজন নেতা, অথচ তিনি কি কোন সহকারী রাখেন না? কোন পারসোনাল এসিষ্টেন্ট রাখেন না? যে কেউ ফোন করলেই তিনি সরাসরি রিসিভ করেন?

আর আমরা কি দেখলাম, চ্যানলে ২৪ এর একজন অখ্যাত ও আনাড়ী সাংবাদিক সরাসরি অমিত সাহাকে ফোন করেই পেয়ে গেলেন? যে সাংবাদিক ইংরেজিতে ঠিকমতো কথাও বলতে পারেনা, সে কিনা বিনা বাধায় অমিত সাহার সাথে ফোনে সাক্ষাত পেয়ে গেলেন? মনে হলো "চ্যানলে ২৪", আল জাজিরা বা বিবিসির মতো বিশ্ব বিখ্যাত একটি টিভি চ্যানেল, পরিচয় দেওয়া মাত্রই অমিত সাহা ওই সাংবাদিককে চিনে ফেললেন, আর জবাব দেওয়া শুরু করলেন! কি বুঝলেন জনগন?

আমার তো মনে হয় "ডাল মে কুচ কালা নেহি, ডাল মে সবই কালা হ্যায়"।

কেয়া কেয়া কালা হ্যায়ঃ?

১) আওয়ামীলীগের সবচেয়ে বড় ভয়, আওয়ামীলীগ সারাবিশ্বে তাদের প্রায় সব মিত্র হারিয়েছে। অবশিষ্ট ছিল রাশিয়া ও ভারত। এ অবস্থায় বিজেপি যদি বিএনপির সাথে সখ্য গড়ে তোলে তবে, মিত্র হিসেবে ভারতও তাদের হাত ছাড়া হয়ে যাবে। ফলে দেশের প্রশাসন, পুলিশ, RAB ও অন্যান্য বাহিনীর উপর ভারতীয় "র" এর যে কর্তৃত্ব রয়েছে এবং এর যে সমর্থন আওয়ামীলীগ পেয়ে থাকে, বিজেপি ও বিএনপির সাথে সখ্য গড়ে উঠলে আওয়ামীলীগ প্রশাসনের পক্ষথেকে সেই সুবিধা আর পাবেনা। ফলে যে কোন সময় ক্ষমতা হাতছাড়া হতে পারে আওয়ামীলীগের।

২) চরম পর্যায়ে পৌছে যাওয়া ২০ দলীয় জোটের চলমান আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে, একটা বিতর্ক সৃষ্টি করে যদি জণগনের দৃষ্টি ভিন্নদিকে ফেরানো যায় তবে তো মন্দ হয় না, এ যাত্রায় পার পাওয়া যেতে পারে পূর্বে যেমন পেয়েছিল!

বিষয়: বিবিধ

১৬৫৩ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

300168
১১ জানুয়ারি ২০১৫ সন্ধ্যা ০৬:১২
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : মানুষ কে গাধা ভাবার প্রবনতা যেমন সরকারি অফিসার ও রাজতিনিবিদ দের মধ্যে আছে। তেমনই মিডিয়ার তথাকথিত বুদ্ধিবেশ্যারাও নিজেদের অতি চালাক ভেবে আমাদের বোকা ভাবে।
300173
১১ জানুয়ারি ২০১৫ সন্ধ্যা ০৬:২৮
অনেক পথ বাকি লিখেছেন : আমি মনে করি বিএনপির এসব সস্তা রাজনীতি করা উচিত না। তাদের জনগণের সাথে সম্পৃক্ত থাকা উচিত।
300193
১১ জানুয়ারি ২০১৫ রাত ০৯:০৮
আবরণ লিখেছেন : নুতন নুতন কল্প কাহিনী তৈরী ও চিত্রায়িত করার কাজে আওয়ামী লীগ সবসময়ই পারদর্শী। এ ক্ষেত্রেও অমনটা হলে আমরা আশ্চার্য্যান্বিত হব না। ধন্যবাদ জেরিন সরকারকে তার লেখার জন্য।
300279
১২ জানুয়ারি ২০১৫ দুপুর ০১:৫৬
হতভাগা লিখেছেন : বিএনপির রাজনৈতিক দেউলিয়াত্ব প্রমান হয়ে গেছে ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File