কারবালায় সৌন্দর্য ছাড়া অন্য কিছুই দেখিনি।

লিখেছেন লিখেছেন পাথরের প্রতিবাদ ১৫ নভেম্বর, ২০১৩, ০৭:২০:০৫ সকাল



হুসাইন বিপ্লব কি ? হুসাইন এর হুসাইন বিপ্লব এর উদ্দেশ্য কি ? ক্যান তাঁকে এই বিপ্লবের ডাক দিতে হল ? হুসাইন এর মহান বিপ্লব কে আমারা বিপ্লব বলব নাকি কেবল একটা শাসক এর বিরুদ্ধে কিছু বিক্ষুব্দ মানুষের বিদ্রোহ ? এ সকল বিষয়ে বিবেগবান , স্বাধীনচেতা মানুষের সাথে আলোচনার দরজা খোলা রইল কারণ যেখানে হুসাইন নিজেই বলেছেন ‘ if you do not believe in religion at least be free in your life’ .



হুসাইন যে বিপ্লব করেছেন তা কি তিনি তিনি একাই করেছেন । অনেকে তো বলেছে ক্যান এত অল্প শক্তি নিয়ে ইয়াজিদ এর বিশাল বাহিনীর সামনে যাবে । হুসাইন এর উত্তর সহজ , সরল । কেবল ইব্রাহীম একা নমরুদ এর বিরুদ্ধে , মুসা তার ভাই হারুন কে নিয়ে সাম্রাজ্যবাদী অত্যাচারী শাসক ফেরাউন এর বিরুদ্ধে , মোহাম্মদ সঃ একা বিপ্লব এর ডাক দিয়েছে আর জনগণ আত্মিক শক্তিতে বিজয়ী হয়েছে । এর পর ষড়যন্ত্র হয়েছে , বিকৃত করেছে কিন্তু কিছু মানুষ তাঁকে তুলে ধরেছে । কিন্তু হুসাইন এমন সমায়ে এসে উপস্থিত যেখানে মুসলমানদের খলিফা হিসাবে ইয়াজিদ । যে ইসলামি সকল বিধান পদদলিত করল আর সেখানে রাজতন্ত কায়েম করল । মানুষের অবস্থা এমন হল যে নবী করিমের মৃত্যুর ৫০ বছর পরই ইয়াজিদ এর মত শাসক কে উম্মত মেনে নিচ্ছে । ধন – সম্পদ এর লোভ , ক্ষমতার লোভ দেখায়ে অধিকাংশও সাহাবীকে পকেট বন্দী করে ফেলল ইয়াজিদ যা শুরু করেছিল তার বাবা মুয়াবিয়া । ইসলামের মূলনীতি “ সৎ কাজের আদেশ অসৎ কাজের নিষেধ “ ইয়াজিদ এর ইচ্ছায় পতিপালন হবে । তাই হুসাইন সাহাবিদের সাথে কথা বললেন , মানুষকে দীর্ঘ দিন তার যুক্তিপূর্ণ ভাষণের মাধ্যমে বুজাতে চেস্টরা করলেন । তিনি মানুষকে বললেন , ইয়াজিদ এর মত লোক যদি উম্মতের রক্ষক হয় তাহলে এখানেই ইসলাম এর ক্ষান্তি “



তাই ইমাম হুসাইন উম্মতের সংস্কারে বেরিয়ে পরলেন সুপরিকল্পনা নিয়ে , লক্ষ্য নিয়ে ।যে লক্ষ্য মহান । উদ্দেশ্যহীনভাবে নহে , পরিকল্পনা অনুযায়ী । প্রথমে মানুষের কাছে তার পরিচয় তুলে ধরলেন, প্রচারে নামলেন । ইয়াজিদ এর শাসন কে মানুষ মেনে নিয়ে কিভাবে দাসত্তের পথে বেছে নিয়েছে । সব সমায় মানুষকে এই খোদা দ্রোহী শাসক এর বিপরীতে আল্লাহ্‌র বিধান এর দিকে আওবান করলেন । কিন্তু মানুষ এর কি হল তারা মুমূর্ষু হয়ে গেছে । এই সমাজ আজ রক্ত শূন্যতায়ে ভুগছে । সমাজের মানুষকে সংস্কার করতে হবে জাগাতে হবে । যেটা বিপ্লবের কাজ ।



রক্ত শূন্য সমাজের মানুষের উদ্দেশে ইমাম হোসাইন বলেন, “আমি কোন যশ বা ক্ষমতার লোভে কিংবা কোন ফেতনা-ফেসাদ সৃষ্টি করার জন্য বিদ্রোহ করছি না । আমি শুধুমাত্র আমার নানার (মুহম্মাদ [সাঃ] ) উম্মতের মধ্যে সংস্কার করতে চাই । আমি চাই সৎকাজে আদেশ দিতে আর অসৎকাজে নিষেধ করতে [ সুকৃতির প্রতিষ্ঠা এবং অন্যায়ের মূলোচ্ছেদ ] । আর আমার নানা ও পিতা আলী ইবনে আবিতালিব এর পথ ধরেই চলতে ।’’

ইমাম হোসাইন বলেন, “ হে মানুষ ! জেনে রেখো যে, জগতে একমাত্র আল্লাহ্‌ ছাড়া আর কিছু নেই যার কাছে তুমি নিজেকে সোপর্দ করতে পারো । যার কাছে তুমি নিজের আত্মা ও জীবনকে বেঁচে দিতে পারো । তোমরা দুনিয়ার কাছে নিজেকে বেঁচে দিও না, স্বাধীন ও মুক্ত মানুষ হও, দাসত্বের শৃঙ্খলে নিজেকে বেঁধে ফেলো না । ইসলামের অনুসারী হও । একমাত্র আল্লাহ্‌র ইবাদত কর । তাহলেই পরাধীনতার শৃঙ্খল তোমাকে স্পর্শ করতে পারবে না । একমাত্র আল্লাহ্‌ ছাড়া অন্য কেউই উপাসনার যোগ্য নয় । একমাত্র আল্লাহ্‌কে উপাসনা করো তাহলে দুনিয়া নিজেই তোমাদের পদতলে সমাহিত হবে । ”



যুগে যুগে যারা ক্ষমতা , অর্থ লোভ ,দুনিয়ার লোভে যারা দাসত্তের শিকলে বন্দীত্ব বরন করছে তাদের কাছে এই বিপ্লবী আওবান করছেন ।তার তার বিপ্লবের পরিধি কাল চাপিয়ে সকল মানুষের । যা ঐতিহাসিক । কিন্তু আমাদের সমাজে হুসাইন কেবল আশুরা কেন্দিক । বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সুকৌশলে তুলে দেয়া হয়েছে হুসাইন এর বিপ্লবী পাঠকে সেখানে স্থান হয়েছে মার্ক্স , চে দের । আমাদের কাছে কারবালা মানে রক্ত আর নির্মম হত্যা তুলে ধরা হয় কিন্তু কারবালার সাক্ষী হযরত জয়নাব (সা.) বলেছিলেন,'কারবালায় সৌন্দর্য ছাড়া অন্য কিছুই দেখিনি।



বিষয়: বিবিধ

১৮৩৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File