স্বরাস্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশ মানছেনা পুলিশ!

লিখেছেন লিখেছেন মোস্তফা মোঘল ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৩, ১২:০৬:৪৬ রাত



জামায়াতের ডাকা সর্বশেষ দুই দিনের হরতালে পিকেটারদের হাতে দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ মার খাওয়ার পর স্বরাস্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, “এরপর জামায়াত-শিবির পুলিশের ওপর আক্রমন করলে পুলিশও প্রতিআক্রমণ করবে।” মন্ত্রীর ঘোষনার পর সবাই অবাক হয়েছিলেন। কথায় কথায় বিরোধী দলের নেতাকর্মিরে ওপর হামলা করা যাদের স্বভাবে পরিনত হয়ে সেই পুলিশকে প্রতিআক্রমণের নির্দেশ দিতে হচ্ছে এটা বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছিল। তবে, সরকারের শাসনামলের শেষ ভাগে এসে পুলিশ শাসক দলের কথা ঠিকমত শোনেনা অতীতের এমন অভিজ্ঞতার কারনে অনেকেই স্বরাস্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশ পালনের ব্যাপারে সন্দিহান ছিলেন। বাস্তবেও দেখা গেল তাই। মন্ত্রীর নির্দেশের পরেও পুলিশ জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক ভূমিকা গ্রহন করেনি। বরং জামায়াত-শিবিরের হাতে মার খেয়ে মার হজম করেছে। কিন্তু কেন? ক’দিন আগেও যে পুলিশ জামায়াত-শিবির দেখলেই গুলি চালাতো আজ তারা এতোটা ধৈর্য্যশীল হলো কেন? কি রহস্য লুকিয়ে আছে পুলিশের এমন আচরণে? অনেকে অনেক কথাই বলছেন। তবে, পুলিশের একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র আসল রহস্যের সন্ধান দিয়েছে।

আওয়ামীলীগ এবার সরকার গঠনের পর থেকেই পুলিশকে অতিমাত্রায় আগ্রাসী ভূমিকায় দেখা গেছে। অপরাধ দমনের চাইতে সরকারবিরোধী শক্তি দমনে তারা সর্বশক্তি নিয়োগ করেছে। শুধুমাত্র পুলিশের কারনে গত পৌনে ৫ বছর রাজপথে তেমন কোন আন্দোলনই খাড়া করতে পারেনি বিরোধী দল। এককথায় বিরোধী দলকে রাজপথে দাঁড়াতেই দেয়নি পুলিশ। এমনকি মানববন্ধনের মত নিরীহ কর্মসূচিতেও শক্তি প্রয়োগ করতে দ্বিধা করেনি পুলিশ। পুরস্কার হিসেবে সরকারের পক্ষ থেকে পুলিশের পদবী, বেতন ভাতা এবং ঝূঁকি ভাতাসহ নানাবিধ সুবিধা দেয়া হয়েছে। সর্বশেষ পুলিশের কনস্টেবল থেকে শুরু করে দারোগ পর্যন্ত ৩০ শতাংশ ঝাুঁকি ভাতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এই বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করেই এখন পুলিশের অভ্যন্তরে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। বিশেষ করে যাদের ঝুঁকি ভাতা বেড়েছে তারা রাজপথে তৎপর হলেও তাদের উপরওয়ালা অর্থাৎ ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তারা কোন প্রকার ঝুঁকি নিচ্ছেন না। ফলে নির্দেশ না থাকায় মাঠ পর্যায়ের পুলিশ রাজপথে কোন এ্যাকশনে যেতে পারছেনা। তাছাড়া সরকারের শেষ সময়ে এসে নিচের সারির পুলিশ কর্মকর্তারাও বাড়তি কোন ঝুঁকি নিতে চাচ্ছেনা। একারনে স্বরাস্ট্রমন্ত্রীর কঠোর নির্দেশের পরেও মাঠ পর্যায়ে পুলিশকে মারমুখি ভূমিকায় দেখা যাচ্ছেনা।

এদিকে, ছাত্রশিবিরের একটি সূত্র জানিয়েছে, স্বরাস্ট্রমন্ত্রী পুলিশকে পাল্টা আক্রমণের নির্দেশ দেয়ার পর পুলিশের প্রতি শিবির কর্মিদের ক্ষোভ বহুগুণ বেড়েছে। গত পৌনে ৫ বছর পুলিশি নির্যাতনের শিকার শিবির কর্মিরা স্বরাস্ট্রমন্ত্রীর ঘোষনাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে। তারা যেকোন মূল্যে স্বরাস্ট্রমন্ত্রীর হুঙ্কারকে মিথ্যা প্রমান করতে চাই। এজন্য সারাদেশে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত একদল কর্মিকে মাঠে নামানোর পরিকল্পনা করছে তারা। গতকাল সোমবার সেই এ্যাকশন প্রোগ্রামের ট্রায়াল রাজধানীতে হয়েছে বলে শিবিরের একটি সূত্র দাবি করেছে। মাত্র ১০/১২ জন শিবির কর্মি খালি হাতে অস্ত্রধারী পুলিশকে পিটিয়ে আহত করেছে। এভাবে সারাদেশে পুলিশেল ওপর অতর্কিত আক্রমণ হতে পারে বলে সূত্রটি আভাস দিয়েছে। সেক্ষেত্রে পুলিশ কি করবে? নিরবে সব সহ্য করবে নাকি মন্ত্রীর নির্দেশ মত পাল্টা আক্রমণ করবে? পরিস্থিতি অবশ্য শেষের কথাকে সমর্থন করছেনা। সরকারের বিদায় বেলায় পুলিশ বাড়তি কোন ঝুঁকি নেবে বলে মনে করছেনা অভিজ্ঞ মহল।

বিষয়: বিবিধ

১৩৮৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File