আল্লাহর রাস্তায় জিহাদের ফজীলত অন্য যে কোন নফল এবাদতের চেয়ে অধিক

লিখেছেন লিখেছেন আব্দুল্লাহশাহেদ ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৩, ১০:৫১:১৯ রাত

হাফেয ইবনে আসাকির আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারকের জীবনীতে উল্লেখ করেছেন যে, তিনি ১৭৭ হিজরীতে ভূমধ্যসাগরের তীরবর্তী শহর তারসুসে অবস্থান কালে মুহাম্মাদ বিন ইবরাহীম বিন আবু সুকায়নাকে সাত লাইন কবিতা আবৃত্তি করে শুনালেন। তিনি লাইনগুলো লিখে ইবরাহীমের মাধ্যমে কাবা শরীফে এবাদতরত ফুযাইল বিন ইয়াযের জন্য পাঠিয়ে দিলেন। কবিতার লাইন সাতটি এইঃ

১) يا عابد الحرمين لو أبصرتنا

لعلمت أنك بالعبادة تلعب

২) من كان يخضب خدّه بدموعه

فنحورنا بدمائنا تتخضّب

৩) أو كان يُتْعِب خيله في باطل

فخيولنا يوم الصبيحة تتعب

৪) ريح العبير لكم، ونحن عبيرنا

رهج السنابك والغبار الأطيب

৫) ولقد أتانا من مقال نبينا

قول صحيح صادق لا يكذب

৬) لا يستوي غبار خيل الله في৬

أنف امرئ ودخان نار تلهب

৭) هذا كتاب الله ينطق بيننا

ليس الشهيد بميت لايكذب

১) ওহে হারামাইনে (মক্কা-মদীনায়) এবাদতকারী! তুমি যদি আমাদেরকে দেখতে, তাহলে অবশ্যই জানতে যে, তুমি এবাদত নিয়ে খেলতামাশায় লিপ্ত।

২) কোন ব্যক্তি যখন (আল্লাহর ভয়ে কেঁদে) চোখের পানিতে স্বীয় গাল ভিজিয়ে ফেলে আমরা তখন রক্তের মাধ্যমে স্বীয় বক্ষসমূহকে রিঙ্গন করি।

৩) কোন ব্যক্তি যখন বাতিলের পথে দৌড়িয়ে স্বীয় ঘোড়াকে ক্লান্ত করে, তখন আমাদের গোড়াসমূহ কেবল যুদ্ধের সময়ই দুর্বল হয়।

৪) তোমাদের জন্য মিস্ক-আম্বারের সৌরভ। আর আল্লাহর রাস্তায় আমাদের সুবাস আসে রক্তমাখা ঘোড়ার খুর ও পবিত্র ধূলিবালি হতে।

৫) আমাদের কাছে আমাদের নবীর বাণীসমূহ থেকে এমন একটি কথা পৌঁছেছে, যা সঠিক সত্য, তাতে মিথ্যার লেশমাত্র নেই।

৬) আল্লাহর রাস্তায় ঘোড়ার খুরের ধূলি এবং জাহান্নামের আগুনের ধোঁয়া কখনই মুজাহিদের নাকে একত্রিত হবেনা।

৭) আল্লাহর কিতাব আমাদেরকে বলছেঃ আল্লাহর রাস্তায় কোন শহীদই মৃত নয়। তাঁর কিতাবের কোন কথাই মিথ্যা নয়।

মুহাম্মাদ বিন ইবরাহীম বলেনঃ আমি চিঠিসহ মাসজিদুল হারামে (কাবা শরীফে) পৌঁছে ফুযাইল বিন ইয়াযের সাথে সাক্ষাত করলাম। পত্রটি পড়েই ফুযাইল বিন ইয়ায কাঁদতে লাগলেন এবং তাঁর চোখ থেকে অশ্র“ প্রবাহিত হল। অতঃপর তিনি বললেনঃ আবু আব্দুর রাহমান (আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারক) সত্য বলেছেন এবং আমাকে নসীহত করেছেন। অতঃপর তিনি ইবরাহীমকে লক্ষ্য করে বললেনঃ তুমি কি হাদীছ লিখো? মুহাম্মাদ বিন ইবরাহীম বলেনঃ আমি বললামঃ হ্যাঁ। এরপর ফুযাইল বললেনঃ এই হাদীছটি লিখে নাও। এই বলে ফুযাইল আমাকে লিখালেনঃ আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ

أن رجلاً قال: يا رسول الله، علمني عملاً أنال به ثواب المجاهدين في سبيل الله فقال: هل تستطيع أن تصلي فلا تفتر وتصوم فلا تفطر؟ فقال: يا رسول الله أنا أضعف من أن أستطيع ذلك ثم قال النبي صلى الله عليه وسلم: فوالذي نفسي بيده لو طوقت ذلك ما بلغت فضل المجاهدين في سبيل الله أو ما علمت أن فرس المجاهد ليستن في طوله فيكتب له بذلك حسنات

“এক লোক নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বললেনঃ আমাকে এমন কতিপয় আমল শিখিয়ে দিন, যার দ্বারা আমি আল্লাহর রাস্তায় মুজাহিদদের ছাওয়াব অর্জন করতে পারবো। তিনি তখন বললেনঃ তুমি কি এমন করতে পারবে যে, সর্বদা নামায পড়তেই থাকবে এবং কোন প্রকার ক্লান্তিবোধ করবেনা? প্রতিদিন রোযা রাখতেই থাকবে এবং কখনই রোযা ছাড়বেনা? লোকটি তখন বললঃ হে আল্লাহর রাসূল! আমি দুর্বল। আমি এর ক্ষমতা রাখিনা। অতঃপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ ঐ সত্তার শপথ! যার হাতে আমার প্রাণ রয়েছে, তুমি যদি এমন করতেও পার তথাপিও আল্লাহর রাস্তায় মুজাহিদদের ফজীলত পর্যন্ত পৌঁছতে পারবেনা। তোমার কি জানা আছে যে, মুজাহিদের ঘোড়া রশিতে বাঁধা অবস্থায় যতবার নড়াচড়া করে, ততবারের বিনিময়ে মুজাহিদের জন্য ছাওয়াব লিখা হয়।

দেখুনঃ তারিখে দিমাস্ক, (৪/৩৮৫), কুররাতুল উয়ুনঃ ৩১৩।

বিষয়: বিবিধ

১৬০৬ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

157839
০১ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ১২:০৯
ঘুম ভাঙাতে চাই লিখেছেন : আজ গোটা উম্মাহ কোন বিষয়ে একমতে পৌছাতে পারেনা তবে একটি বিষয়ে তারা একমত তা হল, "জিহাদ না করা।"
০১ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০১:০৪
112659
আব্দুল্লাহশাহেদ লিখেছেন : আমি এমন একমত হওয়ার কথা জানিনা। মনে হচ্ছে আপনি রাগান্বিত হয়েই এমন মন্তব্য করে থাকবেন। ধন্যবাদ।
০১ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০১:৫২
112671
ঘুম ভাঙাতে চাই লিখেছেন : কথাটা আমার না "আনোয়ার আল আওলাকি(রঃ)-এর।তবে উনি হুবহূ এমন বলেননি।"জিহাদকে আমরা কিভাবে এড়িয়ে যাচ্ছি" উনি তার সুন্দর ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন।
157981
০১ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০২:৩৯
ভিশু লিখেছেন : সুন্দর ও পালনীয় শেয়ার!
Praying Praying Praying
০১ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ১১:৩১
112817
আব্দুল্লাহশাহেদ লিখেছেন : Praying
158072
০১ জানুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:৫৫
আরাপপুর লিখেছেন : আল্লাহর রাস্তায় জেহাদ করা ফরজ. তাই কোন নফল ইবাদাতের সাথে তা তুলোনীয় নয়.

আপনি আপনার পোস্টের নাম পরিবর্তন করলে ভাল হবে/
৩০ মার্চ ২০১৪ রাত ০৯:০৫
150246
আব্দুল্লাহশাহেদ লিখেছেন : পরিস্থিতিতি অনুযায়ী জিহাদের হুকুম একেক সময় একেক রকম হতে পারে।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File