জার্মানরা কেন ইহুদিদের ঘৃণা করে? ==========================

লিখেছেন লিখেছেন আলোর পথে আলোকিত ০১ নভেম্বর, ২০১৩, ১১:২৭:০৫ রাত

প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয় ১৯১৪ সালের গ্রীষ্মকালে। যুদ্ধে জার্মানি, অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি, তুরস্ক একপক্ষ আর বৃটেন, রাশিয়া ও ফ্রান্স অন্যপক্ষ। যুদ্ধের দুই বছরের মধ্যে জার্মানি জিতে যাচ্ছিল। জার্মানির ইউবুট (Uboot অর্থাৎ Undersea Boat যেটা বর্তমান সাবমেরিনের প্রোটেটাইপ) শত্রুপক্ষের একের পর এক জাহাজ ডুবিয়ে দিচ্ছিল ফলশ্রুতিতে ইংরেজরা তাদের সৈন্যদের কাছে কোন ধরণের নতুন অস্ত্রের চালান বা রসদ সরবরাহ করতে পারছিল না। তারা পড়েছিল মহাবিপদে। যুদ্ধে পরাজয় তাদের প্রায় নিশ্চিত। ঠিক এই সময় ১৯১৬ সালের গ্রীষ্মে জার্মানি বৃটেনকে শান্তির প্রস্তাব দিল এবং প্রস্তাব এও দিল যে শান্তির পর তারা আগের মত শান্তভাবেই থাকবে।

ঠিক এই সময় ১৯১৬ সালের অক্টোবরে, জায়োনিস্ট ইহুদিরা বৃটেনের ওয়ার ক্যাবিনেটে প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করে এবং প্রস্তাব দেয় যে যদি বৃটেন ইহুদিদের ফিলিস্তিন দিতে রাজি হয় তবে তারা যুক্তরাষ্ট্রকে বৃটেনের পক্ষে লড়াই করাতে রাজি করাবে! বৃটেনের জন্য অর্থনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল জার্মানি। কারণ জার্মানি ছিল পৃথিবীর সবচেয়ে সফল রপ্তানীকারক দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম এবং বৃটেনকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে টক্কর দিয়ে যাচ্ছিল। তাই বৃটেন চাচ্ছিল যে যেভাবেই হোক না কেন এই যুদ্ধ তাদের জেতা-ই লাগবে!!

উল্লেখ্য, এর আগে জায়োনিস্ট ইহুদিরা জার্মানির পক্ষে সমর্থন করছিল। এর দুটি কারণ ছিলঃ

১| তারা রাশিয়ার সম্রাটকে [Czar] ভীষণ ঘৃণা করতো কারণ তিনি অর্থোডক্স খৃষ্টান ধর্মের অনুসারী ছিলেন এবং ১৯০৫ সালে কমিউনিস্টরা [নেতাদের বেশিরভাগই ইহুদি] তাকে উচ্ছেদ করার যে আন্দোলন করেছিল তিনি সেটাকে সফলভাবে প্রতিহত করেছিলেন। শুধু তাই নয় তিনি কমিউনিস্ট আন্দোলনের পক্ষের ইহুদিগুলোকে রাশিয়া থেকে বিতাড়িত করেছিলেন। সেই সময়ে রাশিয়ার ইহুদিগুলো জার্মানিতে আশ্রয় নিয়েছিল এবং জার্মানি তাদের সাদরে আশ্রয় দিয়েছিল। তারা যুদ্ধে জার্মানিকে অর্থ দিয়ে সাহায্য করছিল। শুধুমাত্র রাশিয়া, বৃটেন-ফ্রান্সের সাথে ছিল বলেই ইহুদিরা জার্মানিকে আর্থিক সাহায্য দিয়েছিল, তারা রাশিয়ার পরাজয় দেখতে চাচ্ছিল।

২| যুক্তরাষ্ট্রের সফল যে ব্যাংকার, শিল্পপতি বা প্রেস/সংবাদপত্রের মালিক যারা ছিল তারা প্রায় সকলেই জায়োনিস্ট ইহুদি ছিল এবং তাদের বেশিরভাগই জার্মানি থেকে এসেছিল। অবশ্য ইহুদিরা কোন দেশের প্রতিই বিশ্বস্ত নয়, এটা তাদের চরিত্র!!

কিন্তু যখন বৃটেন ইহুদিদের ফিলিস্তিন দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় তখন হিসাব নিকাশ সব পাল্টে যায়। এখন জায়োনিস্টরা যুক্তরাষ্ট্রের মিডিয়াতে [প্রেস/সংবাদপত্র] জার্মানিকে ভিলেন হিসাবে দেখানো শুরু করে। হটাৎ করেই জার্মানির বিরুদ্ধে সবুজ বাতি থেকে লাল বাতি তারা জালিয়ে দেয়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন জার্মানির বিপক্ষে যুদ্ধ ঘোষণা করে। কারণ জার্মানি, ব্রিটিশ প্যাসেঞ্জার জাহাজ— লুসিটানিয়াকে [যেটাতে ১৫৯ জন মার্কিন নাগরিক ছিল] ডুবিয়ে দেয় এবং এতে ১,১৯৮ জনসহ ১২৮ জন মার্কিন মারা যায়! যদিও এটা ছিল কারসাজি!! জাহজের মধ্যে বিস্ফোরক রাখা ছিল এবং সেগুলো বিস্ফোরিত হয়েই জাহাজ ডুবে যায় আর বেচারা জার্মানিকে দোষারোপ করে মিডিয়া!!

যাইহোক, যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধে আসলে যুদ্ধের ফলাফল পাল্টে যায় ও জার্মানি লজ্জাজনকভাবে পরাজিত হয়। ১৯১৯ সালে ফ্রান্সের ভার্সাই নগরীতে জার্মানির সাথে একটা চুক্তি হয় যেটা ভার্সাই-এর চুক্তি নামে পরিচিত। সেই চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, বৃটেন ও জার্মানির পাশাপাশি ১১৭ জন ইহুদি যোগ দেয় এবং সেই ইহুদিরা সেখানে তাদের চেক দেখায় [Balfour Declaration, ১৯১৭ সালের ২রা নভেম্বর] যেটাতে বৃটেন সই করেছিল যে যুক্তরাষ্ট্রকে এই যুদ্ধে আনলে বৃটেন ফিলিস্তিনকে তাদের হাতে দিয়ে দিবে!!

জার্মানরা এসবের কিছুই এতদিন জানতো না। কিন্তু তারা এখন জানলো যে কি কারণে যুক্তরাষ্ট্র তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করলো! আর এসবের পিছনে ইহুদিরা!! সেই ইহুদিরা যাদেরকে তারা রাশিয়ার সম্রাটের হাত থেকে আশ্রয় দিয়েছিল!! সেই ইহুদিরা যারা জার্মানিতে পৃথিবীর যেকোন দেশের চেয়ে ভাল অবস্থানে আছে, তারা একাজ করলো!! সেই ইহুদিরা যারা জার্মানির জনসংখ্যার ১% এর চেয়ে কম হয়েও জার্মানির ব্যাবসা-প্রতিষ্ঠান, মিডিয়া, সরকারি উচ্চপদে খুব ভালভাবেই প্রতিষ্ঠিত তারা!! যাদেরকে জার্মানি এতকিছু দিয়েছে এত সুযোগ সুবিধা দিয়েছে তারা এই কাজ করলো!!

এত কিছুর পরও জার্মানরা ইহুদিদের গায়ে আঁচড় পর্যন্ত দেয়নি। তারা তাদের সমালোচনা করেছে কিন্তু কোনভাবে আঘাত করিনি। কিন্তু হিটলার যখন ১৯৩৩ সালে জার্মানির চ্যান্সেলর ও প্রেসিডেন্ট উভয় পদই নিয়ে নেয় তখন সারা বিশ্বের ইহুদিরা জার্মানির বিরুদ্ধে ভয়ানক ব্যবস্থা গ্রহণ করে!! তাদেরকে শেষ করে দেওয়ার পরিকল্পনা করে!!

চলবে...

সৌজন্যেঃ

https://www.facebook.com/pages/%E0%A6%A6%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A7%8D%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%B2-Antichrist-%E0%A6%87%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%AE-%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%B9%E0%A6%A6%E0%A6%BF-%E0%A6%8F%E0%A6%AC%E0%A6%82-%E0%A6%87%E0%A6%B8%E0%A6%BE-%E0%A6%87%E0%A6%AC%E0%A6%A8%E0%A7%8D-%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%87%E0%A7%9F%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%86%E0%A6%97%E0%A6%AE%E0%A6%A8/616065658409674?ref=hl

বিষয়: বিবিধ

২৮৬৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য