নারী অধিকার ও ইসলামী আইন- ১
লিখেছেন লিখেছেন ভিনদেশী ১৪ অক্টোবর, ২০১৪, ১১:২৭:২৮ সকাল
ইসলাম প্রতিটি মানুষকে পূর্ণ ধর্মীয় স্বাধীনতা প্রদান করে। প্রত্যের ধর্মের অনুসারীদের প্রতি সম্মান দেখানো ইসলামি আইনে অবশ্য করণীয়। তাই কোন ধর্ম-বর্ণকে হেয়-প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে নয় বরং নারী অধিকারের ব্যাপারে একটি চিরন্তন সত্যকে স্পষ্ট করার লক্ষেই প্রথমে বিভিন্ন ধর্ম ও সভ্যতায় তাদের অবস্থান সম্পর্কে সামান্য আলোচনা করা প্রয়োজন।
প্রাচীন গ্রীক সভ্যতায় নারীকে ব্যবসায়ী পণ্য মনে করা হত। পরিবারের পুরুষদের ছিল ইচ্ছা করলেই তাকে বিক্রি করার আইনগত অধিকার। রোমান জাস্টিয়ান কোডে নারীকে সবধরনের অধিকারের অযোগ্য বলে বিবেচনা করা হয়। তাই তার ছিল না কোন নাগরিক ও সামাজিক অধিকার। হামুরাবি কোডে নারীকে মেষপালের সাথে তুলনা করা হয়। বিকৃত ইহুদী ধর্মে নারীকে মনে করা হয় সৃষ্টার অভিশাপ! আর ৫৮৬ খৃষ্টাব্দে খৃষ্ট-ধর্মের পোপদের মধ্যে নারীদের মনুষত্য নিয়ে ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি হয়, শেষ পযন্ত তাদের মনুষত্য শিকার করা হয়। তবে তাদের সৃষ্টি হয়েছে পুরুষের ভোগের জন্য। তাই তার কোন আর্থিক অধিকার ছিল না। এমনকি ১৮০৫ সাল পযন্ত বৃটিশ আইনে স্ত্রীকে বিক্রির অধিকার ছিল স্বামীর! ফরাসি আইনে ১৯৩৮ সাল পযন্ত মেয়েদের সম্পদে মালিকানার কোন অধিকার ছিল না। আর হিন্দু আইনের কথা তো সবার জানা। হিন্দু ধর্মে বাবার মৃত্যুর পর তার সম্পদে মেয়ের যৌতুক ব্যাতীত বেশিভাগ ক্ষেত্রে কোন অধিকার থাকে না। তাদের মধ্যে গত শতাব্দী পযন্ত সতিদাহ প্রথার প্রচলন ছিল। এমনকি এখনো ভারতের কোন অঞ্চলে এর প্রচলন রয়েছে। আরব জাহিলিয়াতের যুগে নারীকে অত্যন্ত লজ্জার বিষয় মনে করা হত। তাই তাদের অনেক গোত্রই নিজেদের শিশুকন্যাদের জীবন্ত মাটি চাপা দিত।
পূর্ববর্তী বিভিন্ন ধর্ম ও সভ্যতায় এটাই ছিল নারীর অবস্থান। এবার আসা যাক ইসলামে তাদের অবস্থানের আলোচনায়। পবিত্র কোরআন ও হাদীস শরীফে নারী-পুরুষের সাম্যতার কথা অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। আল্লাহ তা’য়ালা ইরশাদ করেন- ‘‘এবং মুমিন নর-নারীদের মধ্যে যে কেউ সৎকাজ করবে তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে। ( প্রতিদানের ক্ষেত্রে) তাদেরকে কোনরুপ জুলুম করা হবে না।’’ তিনি আরো বলেন- ‘‘নিয়মানুসারে তাদের (মেয়েদের) জন্য রয়েছে তাদের দায়িত্বের সমানুরূপ অধিকার।’’।
হাদীস শরীফে পুরুষদের উদ্দেশ্যে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন- ‘‘তোমরা নারীদের ব্যাপারে সর্বোত্তম কল্যাণ কমনা কর।’’ (বুখারী ও মুসলিম)। তিনি আরো বলেন- ‘‘তোমাদের মধ্যে সে ব্যক্তিই সর্বোত্তম যে তার স্ত্রীর সাথে সর্বোত্তম ব্যাবহার করে থাকে।” (ইবনে হিব্বান)।
#চলবে ইনশা আল্লাহ#
বিষয়: বিবিধ
১৭৭৬ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আর আজকের পৃথিবীতে একমাত্র ইসলাম ধর্মেই নারীর সম্পুত্তি অধিকার পুরুষের অর্ধেক।
শুধু একটা প্রশ্ন করবো, ইসলাম ও নারী অধিকার সম্পর্কে কি কি বই বই আপনার পড়া হয়েছে। দয়া করে জানালে কৃতার্ত হবো। যেন আমরাও উপকৃত হতে পারি।
এ ক্ষেত্রে আমার কোন কোন রেফারেন্স সামনের পর্বগুলোতে আসবে। পড়ার অনুরোধ রইলো।
আপনি (for women) কি নিজ বাড়িতে আপনার স্বামীর সঙ্গে তার দাসীদের (sex slaves) যৌন সম্পর্ককে মেনে নেবেন ? কেন নয় যখন তার অনুমোদন এসেছে আল্লাহর কাছ থেকে (Quran 23:5-7, 70:29-30 Malik’s Muwatta hadis 2:23:90, 28:14:33, 28:14:38) এবং যার চর্চা নবী মুহম্মদও করে গেছেন (Sahih Bukhari 9:89:321
(Quran 4:3), উপপত্নি, দাসী (Quran 23:5-7, 70:29-30, Malik’s Muwatta hadis 2:23:90, 28:14:33, 28:14:38), যুদ্ধ বন্দিনি (Sahih Muslim 8:3373, 8:3383, 8:3432, Sahih Bukhari 7:62:137, 9:93:506, 5:59:459, Abu Dawud 11:2166) -দের সাথে যৌন সম্পর্ক করা বৈধ ।
যুদ্ধ বন্দিনিদের সাথে যৌন সম্পর্ক কে (Sahih Muslim 8:3373, 8:3383, 8:3432, Sahih Bukhari 7:62:137, 9:93:506, 5:59:459, Abu Dawud 11:2166) আপনার দৃষ্টিতে কি ধর্ষন বলে মনে হয় না ? নিশ্চই কোন নারী নিজের স্বামী হন্তকের সাথে স্ব-ইচ্ছায় যৌন সম্পর্ক করতে চাইবে না !
ইসলাম নারীর কেমন মর্যাদা দেয় দেখা যাক
১ নারীর অবস্থান পুরুষের নিচে (Quran 4:34, 2:228)
২ তাদের মর্যাদা পুরুষের অর্ধেক (Quran 2:282, 4:11 Sahih Bukhari 3:48:826, 1:142)
৩ নারী পুরুষের যৌন দাসী (Ibn Hisham-al-Sira al-nabawiyya, Cairo, 1963)
৪ তারা পুরুষের অধিকৃত সম্পত্তি (Sahih Bukhari 5:59:524)
৫ তারা কুকুরের সমতুল্য (Sahih Bukhari 1:9:490, 1:9:493, 1:9:486 Sahih Muslim 4:1032, 4:1034, 4:1038-39 Abu Dawud 2:704)
৬ ভালোবাসার অযোগ্য (Sahih Bukhari 7:62:17 Abu Dawud 41:5119)
৭ তাদের বন্ধক রাখা যায় (Sahih Bukhari 5:59:369)
৮ রজ্বচক্র চলাকালীন তারা অপবিত্র (Quran 2:222 Al-Tabari Vol.1 p.280) হজ্ব করার অযোগ্য (Sahih Bukhari 1:6:302)
৯ তারা নিকৃষ্ট (Sahih Bukhari 9:88:219) বুদ্ধিহীন (Sahih Bukhari 2:24:541) অকৃতজ্ঞ (Sahih Bukhari 1:2:28) খেলার পুতুল (Al-Musanaf Vol.1 Part 2 p.263) হাড়ের মত বক্রতা যুক্ত (Sahih Muslim 8:3466-68 Sahih Bukhari 7:62:113, 7:62:114, 4:55:548)
১০ তারা পুরুষের চাষযোগ্য ক্ষেত্র (Quran 2:223 Abu Dawud 11:2138)
১১ তারা শয়তানের রূপ (Sahih Muslim 8:3240)
১২ তাদের মাঝে নিহিত আছে যাবতীয় খারাপ (Sahih Bukhari 4:52:110, 4:52:111)
১৩ তারা বিশ্বাস ঘাতক (Sahih Bukhari 4:55:547)
১৪ পুরুষের জন্যে ক্ষতিকারক (Sahih Bukhari 7:62:33)
১৫ নেত্রিত্ব দেওয়ার অযোগ্য (Sahih Bukhari 9:88:219)
১৬ প্রার্থনা ভঙ্গ হওয়ার কারন (Sahih Bukhari 1:9:490, 1:9:493)
১৭ স্বামীর যৌন আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে তারা বাধ্য (Sahih Muslim 8:3368)
১৮ পুরুষ কত্রিক ধর্ষনের অনুমোদন (Quran 70:29-30 Abu Dawud 11:2153, 31:4006 Sahih Bukhari 5:59:459 Sahih Bukhari 8:77:600, 8:3432, 8:3371)
১৯ স্বামীর বাধ্য না হলে তাদের প্রার্থনা গৃহিত হবে না (Muslim Scholar Al-Suyuti while commenting on Quran 4:34 Mishkat al-Masabih Book I, Section ‘Duties of husband and wife’, Hadith No. ii, 60)
২০ পুরুষ পারবে চারজন নারীকে বিয়ে করতে (Quran 4:3)
২১ তালাকের অধিকার রয়েছে শুধু পুরুষেরই (Sahih Bukhari 8:4871-82 Mishkat al-Masabih, Book 1, duties of parents, Hadith No. 15)
২২ স্ত্রীর গায়ে হাত তোলার অধিকার রয়েছে পুরুষের (Quran 4:34 Sahih Muslim 4:2127) যার কারনে কোন জবাব চাওয়া হবে না (Abu Dawud 11:2142)
২৩ বেহেস্তে পুরুষের জন্যে রয়েছে বহু (Virgin) রমনী সম্ভগের ব্যাবস্থা (Quran 33:48, 44:51-54, 55:56-58, 78:31-35 Ibn Kathir Tafsir of 55:72 Sahih Muslim 40:6795, 40:6796 Sahih Bukhari 4:54:476 Al-Tirmidhi, Sunan. Vol. IV Chap. 21 Hadith: 2687 Sunan Ibn Maja, Zuhd-Book of Abstinence 39)
২৪ শুধুমাত্র নীরবতাই তাদের বিয়ের সম্মতি (Sahih Bukhari 9:86:100, 9:86:101, 9:85:79)
২৫ স্বামীর অনুমতি ব্যাতিত অন্য পুরুষের কাছাকাছি হওয়া নিষিদ্ধ (Sahih Bukhari 4:52:250)
২৬ তাদের একমাত্র কাজ পুরুষের সেবা করা (Mishkat al-Masabih, Book 1, Duties of Husband and Wife, Hadith Number 62 Mishkat al-Masabih, Book 1, duty towards children Hadith Number 43)
২৭ সর্বদা নিজেদের আবদ্ধ রাখতে হবে পর্দায় (Sahih Bukhari 5:59:462, 6:60:282)
২৮ মৃত্যুর পর তাদের অধিকাংশের জন্যে রয়েছে দোজখের আগুন (Sahih Muslim 36:6596, 36:6597 Sahih Bukhari 7:62:124, 1:2:29, 7:62:124, 2:18:161)
এর পরেও কি মনে হয় ইসলাম আপনাকে (for women) দেয় সামান্যতম সন্মান ?
সবচে মজার ব্যাপার হলো, অধিকাংশ ক্ষেত্রে কোরআন-হাদীসের কথাগুলোকে তার পূর্বাপর আলোচনা থেকে পৃথক করে উল্লেখ করা হয়েছে! গবেষণা এ পদ্ধতিটা এখনো বুঝে উঠার মতো যোগ্যতা নিজের মধ্যে খুঁজে পাচ্ছি না।
এর বিপরিতে নারীদের ব্যাপারে ইসলামের পূর্নাঙ্গ মতামত কি তাতো তুলে ধরা হলো না!
আমার আগের প্রশ্নের উত্তরটা কিন্তু পাইনি!
প্রশ্ন ছিল, ইসলাম ও নারী অধিকার নিয়ে আপনি কি কি বই পড়েছেন। যেন আমরাও এসব বই থেকে উপকৃত হতে পারি।
সাথে আরো একটা প্রশ্ন এড করছি, ইসলাম সম্পর্কে আপনি কোন কোন ভাষায় পড়াশোনা করেন। বিষয়টা একটু ক্লিয়ার হওয়ার জন্য প্রশ্নগুলো করা। অন্য কিছুই না। ভাল থাকুন।
আশাকরি আমার এ সিরিজে নিয়মিত থাকবেন।
কোরান-হাদীসের কোথাও দুষ্ট নারীর কথা বলা হয় নি, সমগ্র নারী জাতির কথা বলা হয়েছে। বিষয়গুলো এতোটাই স্পষ্ট এবং খোলামেলা যা থেকে পিছলে যাওয়ার সুযোগ নেই। ধন্যবাদ।
ফালতু মন্তব্যকারির সাথে বিতর্কে গিয়ে সময় নষ্ট করবেন না। কারন মুর্খকে আপনি কখনই যুক্তি গ্রহন করাতে পারবেননা।
মন্তব্য করতে লগইন করুন