ভাল থাকার তিন কাল
লিখেছেন লিখেছেন চোরাবালি ১১ মার্চ, ২০১৭, ১১:০৭:৩১ সকাল
প্রথম কাল- ৮০দশকের আগেও দেখা যেত
একটি বাড়ী যার নূন্যতম সদস্য সংখ্যা ১১। দাদা-দাদি-মা-বাবা-চাচা-চাচী-ফুফু-চাচাতো ভাই-চাচাতো বোন-নিজে ভাই/বোন। এ চিত্র যারা নিতান্তুই ছোট পরিবার তাদের। আর যারা বড়!!! ২০/২৫/৩০জন। সবাই এক সঙ্গে বসবাস। বাবা-চাচা মিলে উপার্জন সবাই মিলে উপভোগ। পরিবারের প্রধান দাদা তার কথা মাথা পেতে নেয়া সবার। যে কোন সমস্যায় সবার সাথে আলাপ আলোপচনায় সমাধান। সকালের আলোয় বারান্দায় পড়তে বসা ভাইবোন সবাই। বিকেলের আলোতে খেলতে যাওয়া সবাই মিলে। আবার সন্ধ্যের সাথে সাথে পড়ার গুঞ্জন। পাশের কেও পড়তে না বসলে পাসের বাসার উদাহরণ, দেখছিস তারা সবাই পড়তে বসেছে কখন। বিভিন্ন সামাজি অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে উৎযাপন। সবাই গোল হয়ে বসে রেডিও বা কারো কারো সাদা-কালো টিভির সামনে ভির। দুষ্টামিতে শাসনে কাকা-চাচা সবাই ছিল কম বেশী বাবা-মা থেকেও। দাদা-দাদীরা বাচ্চাদের বাবা সম্পর্কে এমন ভয় দেখাতো বাবা মানেই বাঘ। তার সামনে দুষ্টামিতো দুরে থাক জোড়ে কথা বলাও অপরাধ। যত আবাদার দাদা-দাদি ফুফু চাচা-চাচীদের মাঝে। বাবা-মা' নিশ্চিন্তে থাকতেন বাচ্চা নিয়ে।
দ্বিতীয় কাল- ৮০দশকের পর থেকে লক্ষ্যনীয়-
আস্তে আস্তে পরিবার প্রথা বিলুপ্তির পথে। সুখ বলতে নিজের স্বামী আর সন্তান। আলাদা একটা বাড়ী অথবা নিজে রান্না করে নিজের ছেলে-মেয়েদের খাওয়ানো। সুগৃহিনী হলে শ্বশুর শ্বাশুরীর দিকে একটু আধটু নজর। তা না হলে কিছু টাকা পয়সা ধরিয়ে দেয়া। গৃহীনি ব্যস্ত সাজগোজে আর বাচ্চাদের আবদার নিয়ে। নিজেদের মত করে ছোট খাট অনুষ্ঠান যেখানে পরিবারের অন্যান্যদের আমন্ত্রণ। নিজের বাচ্চা মানে নিজের; সেখানে দাদা-দাদি চাচা-চাচি শাসন করবে এটা নিয়ে অন্তর দ্বন্ড। আর সেই দাদার গল্পের পাওরুটি আর দুধ খাওয়ার গল্পের মত করে বিদেশ নিয়ে বিভিন্ন খোশ গল্প, তারা এভাবে চলে ওভাবে চলে---------------।
বর্তমান সময়-
ভাল থাকা মানে। ফ্লাট বাসা, ঘর ঠান্ডা রাখার যন্ত্র। স্বামী-স্ত্রী দু'জনা মিলে ইনকাম। একজন নিয়মিত কাজের বুয়ার কাছে বাচ্চা কাচ্চা বড় হওয়া। শ্বশুর-শ্বাশুরী--- তারা আবার কি, তারা থাকবে নিজেদের পরিবারে, যত দুরে থাকা যায় ততই সম্পর্ক ভালো থাকবে। গাড়ী ছাড়া কি চলে। ছেলে-মেয়েকে নিয়ে টেনশনের শেষ নাই। সকালে স্কুল; দুপুরে টিউটর, বিকেলে কোচিং আর সন্ধ্যেয় আরেক টিউটর। রাতে একটু সময় পেলে ভিডিও গেম। তাদেরকে বড় হতে হবে না। পরীক্ষা শুরু হলে ছেলে-মেয়ে থেকে মা-বাবার ঘুম হারাম। সপ্তাহে একদিন শপিং, মাসে একদিন বন্ধুবান্ধব নিয়ে পার্টি যেখানে থাকবে না কোন বুড়োর দল।
বিষয়: বিবিধ
১৩০৮ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
কারণ বিয়ে করে স্বামীর পরিবারে চলে যাওয়া এবং স্বামীর কথা মত চলাকে একজন নারী (মূলত শিক্ষিত নারী)তার স্বাধীনতার পরিপন্হী বলে মনে করে।
আর পুরুষেরা দেখে - যেহেতু ভরণ পোষণ করেই সে তার প্রাপ্যটুকুর সামান্য পরিমানও পাচ্ছে না তখন যে এরকম লোকসানপূর্ণ প্রজেক্টে নামতে চায় না ।
তাই লিভ টুগেদার এখন বিয়েরই বিকল্প হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। কোন দায় দায়িত্ব নেই এবং কোন আলগা ফাঁপড়বাজিও নেই ।
নারীরা যত বেশী প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে ততই তারা সংসার বিমুখ ও বহির্মুখী স্বভাবের হচ্ছে। বাহিরে কাজ করার সুবাদে স্বামীর সংসারের হেফাজত করা হয় না আল্লাহর হেফাজতের মাধ্যমে এবং তারা তাদের আয় সংসারেও ব্যয় করে না । এর ফলে অন্যান্য যোগ্য যেসব পুরুষেরা চাকরি পেত তারা নারীর যোগ্যতা বহির্ভূত যোগ্যতার ফলে পিছিয়ে পড়ে।
এতে ৪/৫ সদস্যবিশিষ্ট একটা পরিবার পথে বসে কারণ একজন চাকুরিজীবী নারী তার সংসারের ভরন পোষণ করে না এবং তার বেতনের চেয়ে তার স্বামীর বেতন কম করে হলেও ১ হাজার টাকা বেশী হবে।
এই নারীটির জায়গায় যদি বেকার অথচ যোগ্য ছেলেটি চাকুরি পেত তাহলে সেই টাকা যে পরিবারের ভরণপোষনের জন্য সে ব্যয় করতো এটা হলফ করেই বলা যায়।
এসব বেকার অথচ যোগ্য পোলাপান চাকরি না পেলে কি হয় তা আমাদের সমাজে আমরা অহরহই দেখতে পাই।
আর যে সব নারীদের চাকুরী দেওয়া হয় তাদের খাজনার চেয়ে বাজনাই বেশী হয়। বিভিন্ন বাহানা ফেস করে তাদেরকে পুষতে হয় প্রতিষ্ঠানের। একজন পুরুষকে যে পরিমান কাজের লোড দেওয়া যায় সেটা ৫ জন মহিলাকেও দেওয়া যায় না , অথচ বেতন কিন্তু তারা কম পায় না। তাদেরকে নিয়ে বিভিন্ন ধরনের কেলেংকারীর খবরও খুব কম আসে না।
নারীদের এরকম প্রতিষ্ঠা পরিবার ,সমাজ তথা রাষ্ট্রের কোন উপকারেই আসে নাই।
আঁকড়ে থাকার প্রবনতাই এর ধ্বংসের জন্য দায়ি।
মন্তব্য করতে লগইন করুন