নজরুলকে নিয়ে যত বিতর্ক...

লিখেছেন লিখেছেন ইনতেহাব হোসাইন জাওয়াদ ২৬ মে, ২০১৫, ০৮:০৪:৩৮ রাত



অনলাইনে নজরুলকে নিয়ে বিতর্ক বেশ জমে উঠেছে! চলছে ত্রিমুখী রশি টানাটানি! মুসলিম-হিন্দু-নাস্তিক সবাই নজরুলকে নিজেদের দলে টানতে তৎপর।

★ হিন্দুরা বলছে- নজরুল ছিলেন তাদের কবি, কারন তিনি নাকি অনেক শ্যামা সঙ্গীত রচনা করেছেন।

★ নাস্তিকরা বলছে- নজরুল তাদের দলে, কারন তিনি অসাম্প্রদায়িক, মুক্তমনা, সাম্যের কবি।

★ এদিকে মুসলমানদের এক পক্ষ বলছে- নজরুল অসংখ্য ইসলামী কাব্য ও সঙ্গীতের রচয়িতা, অতএব নজরুল মুসলমানদের কবি।

★ মুসলমানদের আরেক পক্ষ বলছে নজরুল একজন নাস্তিক কবি, তাকে বর্জন করা উচিৎ।

★ একপক্ষ বলছে নজরুলের সমালোচনার করার যোগ্যতা আমাদের নেই। তার সমালোচনা করা যাবে না।

★ আরেক পক্ষ বলছে- নজরুল ছিলেন সুবিধাবাদী এবং খ্যাতির জন্য লালায়িত। তিনি হিন্দু-মুসলিম উভয়ের সেন্টিমেন্ট ব্যবহার করে জনপ্রিয়তা অর্জন করতে চেয়েছিলেন।

আমার বিশ্লেষনঃ প্রথমেই বলবো, নজরুল কোন নবী-রাসূল নন যে তার সমালোচনা করা যাবে না। কবি নজরুলের সমালোচনা করার যোগ্যতা আমাদের না থাকতে পারে, কিন্তু ব্যক্তি নজরুলের সমালোচনা করার অধিকার আমাদের আছে।

নিঃসন্দেহে বাংলা সাহিত্যে আমার সবচেয়ে পছন্দের সাহিত্যিক নজরুল। তার বিদ্রোহী ও বিপ্লবী চেতনার জন্য তাকে রবীন্দ্রনাথের চেয়েও অনেক এগিয়ে রাখি আমি। কিন্তু দূর্ভাগ্যজনকভাবে তার অনেক লেখাই গ্রহণযোগ্য নয়। উদাহরনস্বরূপ বলা যায়- "মোরা ঝঞ্ঝার মত উদ্দ্যম" গানটির কথা। এটি আমার সবচেয়ে পছন্দের একটি গান হতে পারতো। কেবলমাত্র একটা লাইন (মোরা বিধাতার মত নির্ভয়) পুরো গানটির আবেদন নষ্ট করে দিয়েছে। নজরুল কবি হিসেবে যে মাপের প্রতিভাবান ছিলেন, তাতে করে তিনি খুব সহজেই এই লাইনটিকে অন্য কিছু দিয়ে রিপ্লেস করে দিতে পারতেন। কেন তিনি সেটা করলেন না সেটা আশ্চর্য্যের বিষয়। এমন নয় যে, তিনি ইসলাম সম্পর্কে অসচেতন ছিলেন। যে লোক মসজিদে মুয়াজ্জিনের দায়িত্ব পালন করেছে, সেই লোকের তো এইটুকু সেন্স থাকা উচিৎ কোনটা করলে শিরক হয় আর কোনটা করলে তা হয় না।

স্ত্রীকে খুশি করার জন্য নজরুলের শ্যামা সঙ্গীত রচনা করাটাই বা কতটুকু যুক্তিযুক্ত ছিল? প্রমীলা দেবী তো ঠিকই নিজের ধর্মীয় স্বকীয়তা বজায় রেখেছিলেন, নজরুলকে খুশি করার জন্য তিনি নিজের ধর্ম বিসর্জন দেননি। তাহলে নজরুল কেন স্ত্রীকে খুশি রাখার জন্য ধর্মের সাথে এতটা কম্প্রোমাইজ করতে গেলেন? যে হাত দিয়ে তিনি মুহম্মদের বন্দনাকাব্য রচনা করলেন- সেই একই হাত দিয়ে তিনি কেমন করে দূর্গার প্রশংসাস্তুতি করতে পারেন!? তাহলে কি সব ছিল অভিনয়? একইসাথে দুই নৌকায় পা দিয়ে তিনি কি উভয় পক্ষকে সন্তুষ্ট করতে চেয়েছিলেন? একদিকে মুহাম্মদ (সা) এর প্রশংসা সম্বলিত অগনিত কাব্য, অন্যদিকে কৃষ্ণের মত একজন বিতর্কিত কাল্পনিক দেবতার নামের সাথে মুহম্মদ (সা) এর নাম (কৃষ্ণ মুহম্মদ) জুড়ে দিয়ে মহানবীকে অবমাননা। অবশ্যই এর সমালোচনা হওয়া উচিৎ।

সাম্য এবং সম্প্রীতিতে বিশ্বাসী হওয়ার মানে এই নয় যে, নিজের ধর্মীয় চেতনা বিক্রি করে দিতে হবে। নিজস্ব ধর্মীয় স্বকীয়তা বজায় রেখেই সাহিত্যচর্চা করা যায়, সাম্যের গান গাওয়া যায়। সেটা করলে হয়তো তিনি হিন্দু ও নাস্তিকদের কাছে আজকের মত এত সমাদৃত হতেন না। তবু আমি মনে করি সর্বজনীন হওয়ার জন্য তার এধরনের বিতর্কিত ও সুবিধাবাদী ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া উচিৎ হয়নি। তার মত একজন দৃঢ়চেতা ও আপোষহীন সিংহপুরুষের কাছে এধরনের নমনীয়তা কিংবা কম্প্রোমাইজ মোটেও প্রত্যাশিত নয়।

---সর্বপ্রথম আমার ফেসবুক আইডিতে প্রকাশিত, যার লিংক- এখানে

বিষয়: বিবিধ

৩৭৮৩ বার পঠিত, ১৭ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

322712
২৬ মে ২০১৫ রাত ০৮:২২
এ,এস,ওসমান লিখেছেন : আলহামদুল্লিলাহ। ভাল লাগলো।
২৬ মে ২০১৫ রাত ০৮:২৮
263882
ইনতেহাব হোসাইন জাওয়াদ লিখেছেন : আপনাকেও ধন্যবাদ
322782
২৭ মে ২০১৫ রাত ০২:০১
চিরবিদ্রোহী লিখেছেন : আপনি নিশ্চয়ই জানেন নজরুল ইতিহাসের কোন সন্ধিক্ষণের কবি ছিলেন। তিনি এমন একটা সময় জন্ম নিয়েছিলেন যখন অভিশপ্ত ব্রিটিশ শোষনে সমগ্র উপমহাদেশ জর্জরিত। শোষিত মানুষের ভিতরে ক্রমে সঞ্চার হচ্ছিল দ্রোহের বারুদ, শুধু প্রয়োজন ছিলো বিপ্লবের স্ফুলিঙ্গটা ছুঁয়ে দেয়ার।
এসবের সাথে নজরুলের শ্যামা সঙ্গীত রচনার যুক্ত কি?
যুক্তিটা খুবই সহজ। নামজাদা ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনকারীদের (আমি প্রকৃত আন্দোলনকারী বুঝাতে চাচ্ছি, সুবিধাবাদী নয়)মতো নজরুলও উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন উপমহাদেশের বৃহৎসংখ্যক হিন্দুদের বাদ দিয়ে শুধুমাত্র মুসলমানদের দ্বারা আন্দোলনের চরম সাফল্য কখনোই সম্ভব নয়। কিন্তু চিরকাল অচ্ছুৎ কুসংস্কারগ্রস্থ হিন্দুদের বড় অংশই মুসলমানদের ধর্ম শত্রু মনে করে থাকে। সেই ধারনা থেকে সরিয়ে আনতেই নজরুল রচনা করেছিলেন শ্যামা-কীর্তন ইত্যাদি হিন্দুয়ানা গান, কবিতা ইত্যাদি। উদ্দেশ্য, যাতে এইগুলোর মাধ্যমে হিন্দুদের মনে জমে থাকা বিদ্বেষের পাহাড় কিছুটা হলেও হ্রাস পাবে, যা ভারতের স্বাধীনতার পথকে সুগম ও ত্বরান্বিত করবে। তিনি কিন্তু একাই এই পথের পথিক নন, নেতাজি সুভাস চন্দ্র বোস এই একই প্রচেষ্ঠার অংশ হিসেবে শুরু করেছিলেন আযাদ রেডিও, শাইখ উবাইদুল্লাহ সিন্ধি (রহ.) অসংখ্য হিন্দু তরুণদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছিলেন, এমনকি তার প্রস্তাবিত অখন্ড ভারত সরকারের প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত করেছিলেন রাজা মহেন্দ্র প্রতাপকে। এমন নজির আরো ভুরিভুরি বিদ্যমান।

হয়তো নজরুলের এই চিন্তা পুরোপুরি বাস্তবসম্মত বা ধর্মীয় দিক থেকে শতভাগ সমর্থণ যোগ্য নয়, কিন্তু একথা কি অস্বীকারের উপায় আছে যে, তৎকালীন পরিস্থিতির খাতিরে নজরুলের এই প্রচেষ্ঠা, এবং পরবর্র্তীতে এর ফলস্বরুপ যে সফলতা ও প্রভাব এসেছে তা একেবারেই মূল্যহীন? নজরুল
কি কখনো কোন কীর্তন-কবিতায় বলেছেন যে, হে দেবতা অমুক, হে মা তমুক, তুমি আমার সৃষ্টিকর্তা, আমার প্রভু, আমি তোমার উপাসনা করি ইত্যাদি ইত্যাদি? যে সমাজে ইংরেজ তোষক ধর্ম ব্যবসায়ী ঈদ-উল-আযহায় কুরবানী করাকে অনর্থক বলে ফাতওয়া দিয়ে বসে, ইংরেজদের বিরুদ্ধে জিহাদ করকে হারাম করে বসে, সে সমাজে নজরুলের মতো দু একজন যদি বৃত্তের কিছুটা বাইরে বেরিয়েও আসে তাতে ক্ষতি কি?
শেষে বলতে চাই, "হিন্দু তোষক", "নাস্তিক" "সুবিধাবাদী"- নজরুল সম্পর্কে এমন উক্তি দুই ধরণের লোকই করে থাকে- এক. যারা নজরুল সম্পর্কে কিছুই জানে না, জানতে চায় ও না বা জানার যোগ্যতা নেই, দুই. ঈষাপরায়ণ। নিরপেক্ষ ও সত্যসন্ধানীদের অবশ্যই উচিত হবে, এমন কিছু বলার আগে নজরুল জীবন ও সাহিত্য সম্পর্কে আরেকটু গভীর ভাবে জেনে নেয়া।

জাযাকাল্লাহু খইর।
২৭ মে ২০১৫ সকাল ১১:০৬
264009
ইনতেহাব হোসাইন জাওয়াদ লিখেছেন : নজরুল সম্পর্কে আপনার আরেকটু স্টাডি করা প্রয়োজন। বিশেষ করে তার লেখা শ্যামা সঙ্গীতগুলো ঘেটে দেখুন। উনি দূর্গা, কালী ও কৃষ্ণকে প্রভূ ডেকেছেন, তাদের কাছে সাহায্যও কামনা করেছেন, অকূণ্ঠচিত্তে তাদের বন্দনা করেছেন
২৭ মে ২০১৫ বিকাল ০৪:৫৭
264062
চিরবিদ্রোহী লিখেছেন : দয়া করে একটু রেফারেন্স দিতে পারবেন?
০৭ নভেম্বর ২০১৫ দুপুর ০১:৩১
289506
ইনতেহাব হোসাইন জাওয়াদ লিখেছেন : কিসের রেফারেন্স চাচ্ছেন আরেকটু পরিস্কার করে বলুন। নজরুল যে শ্যামা সঙ্গীতগুলো লিখেছেন তা আপনি গুগলে সার্চ দিলে খুব সহজেই পেয়ে যাবেন। দূর্গা, কালী, কৃষ্ণ ইত্যাদি দেব-দেবীর যে বন্দনা তিনি রচনা করেছেন সেটি দুষ্প্রাপ্য কিছু নয়। গুগল মামার সাহায্য নিলে দুই মিনিটও লাগবে না
322784
২৭ মে ২০১৫ রাত ০২:০২
লজিকাল ভাইছা লিখেছেন : থাকুক না সে গবেষণার বস্তু হয়ে, আসুন গবেষণা করি তাকে নিয়ে টানা টানি নয়।
যেমন ছিলেন হাজ্জাজ ইবনে ইউসুফ, একদিনে পবিত্র কুরআনে হরকতের সংযোজন করেছেন অন্যদিকে কাবা শরীফে গোলা মেরেছেন। একদিকে তারই প্রচেষ্টায় আজ ভারত বর্ষে আমরা ৬০ কোটি মুসলমান অন্যদিকে বহু সাহাবী, তাবেঈন এর রক্তে তাঁর হাত রঞ্জিত। ছেঁড়ে দেই না তাদের কে তাদের রবের ফয়সালার উপর। আর যদি ভালবাসি তবে দোয়া করি তাদের জন্য,পরম ক্ষমাশীল আল্লাহ্‌র দরবারে।
আপনার প্রতি শুভেচ্ছা এবং দোয়া থাকল।
২৭ মে ২০১৫ সকাল ১০:৪৪
264007
ইনতেহাব হোসাইন জাওয়াদ লিখেছেন : সহমত আপনার সাথে
322797
২৭ মে ২০১৫ রাত ০২:৪৭
নুর আয়শা আব্দুর রহিম লিখেছেন : ভালো লাগলো, যুক্তি আছে আপনার সমালোচনায়, ধন্যবাদ।
২৭ মে ২০১৫ সকাল ১০:৪২
264004
ইনতেহাব হোসাইন জাওয়াদ লিখেছেন : আপনার মতামতের জন্য ধন্যবাদ
322805
২৭ মে ২০১৫ সকাল ০৫:০০
কাহাফ লিখেছেন :
কবিরা আবেগে চলে বেশি!
বিবেকের তাড়না কম অনুভব করে!
নজরুলও এর ব্যতিক্রম নয়!
নজরুল বিষয়ে শ্রদ্ধেয় 'চিরবিদ্রোহী এবং লজিকাল ভাইছা'র মন্তব্য গ্রহনযোগ্য খুবই!
উপস্হাপনার জন্যে অনেক ধন্যবাদ ও জাযাকাল্লাহ!!
২৭ মে ২০১৫ সকাল ১০:৪৩
264006
ইনতেহাব হোসাইন জাওয়াদ লিখেছেন : সুচিন্তিত মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ
322856
২৭ মে ২০১৫ দুপুর ০৩:১৫
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : নজরুল এর সময় কে বিবেচনায় না এনে এরকম সমালোচনা ঠিক নয়। নজরুল শ্যামা সঙ্গিত লিখেছিলেন গ্রামোফোন কোম্পানির চাহিদা অনুসারে। তার জিবিকার জন্য। 'বিধাতার মত নির্ভয়' উপমাটিতে শিরক কোন কারন আমি দেখছিনা। নজুরল নাস্তিক ছিলেন না কখনই যদিও কমরেড মুজাফফর আহমদ তাকে নাস্তিক বানাতে চেষ্টা করেছেন। এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে আবুল মনসুর আহমদ এর 'আত্মকথা" এবং আব্বাসউদ্দিন আহমদ এর 'আমার শিল্পি জিবনের কথা' পড়ুন। নজরুল ই লিখেছিলেন আমরা এখন বিশ্বের চিন্তা বাদ দিয়ে বিবি তালাকের ফতোওয়া খুজছি। সেভাবে নজরুল এর দোষ খুজে বেড়াচ্ছি তার অবদান এর চিন্তা না করে।
৩০ মে ২০১৫ রাত ০১:০৫
264748
মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম লিখেছেন : নতুন তথ্য পেলাম..ধন্যবাদ।Good Luck Good Luck
০৭ নভেম্বর ২০১৫ দুপুর ০১:৩৪
289507
ইনতেহাব হোসাইন জাওয়াদ লিখেছেন : পেট চালানোর জন্য শ্যামা সঙ্গীত লেখা জায়েজ- এমন হাদিস কখনো শুনিনি। দেব-দেবীর বন্দনা না করেও তিনি অন্য বিষয় নিয়ে লিখতে পারতেন। কোন পরিস্থিতিতেই এধরনের শ্যামা সঙ্গীত লেখাটা গ্রহণযোগ্য নয় একজন মুসলিমের জন্য। মূলত ঐ সময় উনার ঈমান কম ছিল অথবা ইসলাম সম্পর্কে পরিস্কার ধারনা ছিল না। আর নয়তো তিনি ছিলেন মুনাফিক। আল্লাহ ভাল জানেন।
০৭ নভেম্বর ২০১৫ রাত ১০:১৫
289558
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : সে সময় এর পরিস্থিতি কি ছিল সেটা কি বিবেচনায় আনবেন না!!! গরু কুরবানি পর্যন্ত নিষিদ্ধ ছিল বর্তমান বাংলাদেশের বেশিরভাগ এলাকায়।
323370
৩০ মে ২০১৫ রাত ০১:০৪
মিনহাজুল ইসলাম মোহাম্মদ মাছুম লিখেছেন : কাজী নজরুল ইসলামের সর্বশেষ অবস্থান কি ছিল, তা-ই হিসাবে আনা দরকার। নজরুল আর যা-ই করুক তবে কারো তাবেদারী করেননি। সমকালীন সব কবি বৃটিশদের দালালি করেছেন তিনি ছাড়া।বৃটিশদের বিরুদ্ধে কারাগারে ৩৯ দিন অনশন করেছিলেন,রবীন্দ্রনাথ অনশন ভঙ্গের অনুরোধ জানিয়ে চিঠি লিখেছিলেন, অবশ্য চিঠি তিনি পাননি..

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File