আওয়ামীলীগের উচ্চতর রাজনীতির নাম রাজনৈতিক মাকড়শার জাল।

লিখেছেন লিখেছেন তরবারী ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ০৫:৩৩:১৪ বিকাল

এন্টি আওয়ামীলীগের রাজনীতি আটকে গেছে রাজনৈতিক মাকড়শার জালে।হরর মুভির মত যতই সন্তর্পণে মাকড়শার জাল ছাড়াতে যাক না কেন বিরোধী লোকজন ততই জাল খাল হয়ে দম বন্ধ করে মেরে ফেলতে যাচ্ছে।

এদেশের রাজনীতিতে একনায়কতন্ত্র বা স্বৈরতন্ত্র আমলে গণতন্ত্রের উত্থান হলেও গণতান্ত্রিক আমলে ভয়ঙ্কর ধরনের স্বৈরতন্ত্রের ভুত ঝেঁকে বসে কাজ শুরু করেছে। পালাক্রমে যেই এসেছে সেই থেকে যাওয়ার প্রবণতা আওয়ামীলীগকে উচ্চতর শিক্ষা দিয়েছে।আর যে কারণে আওয়ামীলীগ শুধু শিখেনি প্রয়োগিক ক্ষেত্রেও সফলভাবে তার নিরীক্ষণ উৎক্ষেপণ করে এখন দুনিয়ার দেশের হিসেবের একচ্ছত্র ক্ষমতাশীল রাজনৈতিক সরকারে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

আগেরকার মাধ্যমিক/উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের মত হঠাত স্টাইল চেঞ্জ করে প্রশ্ন করতে থাকায় বিরোধীজোট উত্তর দিতে হিমশিম খেতে খেতে খেই হারিয়ে এখন প্রশ্নই খুঁজে বেড়াচ্ছে।উত্তর তো অনেক পরের বিষয়।

সাধারণ রাজনীতিতে সভা-সমাবেশ,মিছিল-মিটিং,হরতাল,পিকেটিং এসব হরহামেশাই হতে থাকলেও হঠাত করে রাজনীতির প্রতিটি কার্যক্রমের আগে পরে নাশকতা খুঁজে অথবা করিয়ে তার দায়ে দায়ী করে নেতাকর্মীদের গ্রেফতার এবং সভা-সমাবেশ কিংবা মিছিল-মিটিং কেই নাশকতার নাম দিয়ে দেয়া হয়েছে।যে কারণে হালকা একটা ঘরোয়া বৈঠক করতে গেলেও তার জন্য ঘোষণা দিতে হয় যে নাশকতাবিহিন বৈঠক।যার সর্বশেষ নজির দেখা গেছে বিএনপি নেত্রীর গ্রেফতারের পরবর্তী সময়ে।মির্জা ফখ্রুল সহ বিএনপির সকল স্তরের নেতাদের বারবার বলতে হচ্ছে যে কোন রকম নাশকতাবিহিন এটা করতে যাচ্ছি বা ওটা করতে যাচ্ছি।

মাকড়শার জালের এটা একটা অংশ যেখানে সামান্য রাজনৈতিক অধিকারকেই নাশকতা বানিয়ে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডকেই বিরোধী জোটের কাছে ভীতিকর করে ফেলেছে।আর তাতেই প্রকাশ্যে দৃশ্যমান হতে পারছে না জনক্ষোভ।

দ্বিতীয়ত যুক্তি কিংবা তর্কে কোনভাবে হেরে গেলেই সেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কিংবা যে কোন রচনা সম্পর্কে লিখার ধরনের কৌতুক এর মত (রবীন্দ্রনাথের একটি গরু ছিল।নদীর পারে বাঁধা ছিল-- শুরু হল গরুর রচনা/কিংবা চাঁদ সম্পর্কে রচনা লিখতে গিয়ে -চাঁদের আলোতে দাড়িয়ে ছিল একটি গরু --- ব্যাস শুরু)স্বাধীনতা আর মুক্তিযুদ্ধকে টেনে এনেই বক্তার শুরু।জেন রেসকোর্সের ময়দান আর শুরু এক শ্রেণীর মাতাল জনগণকে আবেগের তালে আরও ভাসিয়ে দেয়া।আর এ কথা অস্বীকার করার উপায় কি,যখন আপনি দেশ সম্পর্কে আবেগঘন কথা বলবেন তখন স্বাভাবিকভাবেই তা মানুষের মন কে নাড়া দিবেই।আপনি যে মিথ্যা বলছেন তা তো আর ইতিহাস ঘেঁটে দেখার সময় নেই।

ব্যাস এই মাকড়শার জালের এমন সব প্রশ্ন,উত্তর দিলেও কালার করতে ব্যাস্ত,চুপ থাকলেও কালার করতে ব্যাস্ত।

টিভি চ্যানেল কিংবা যে কোন মিডিয়া সরকারের মুখ এবং পাছা দিয়ে বের হয়েছে আর স্বভাবতই তারা ২০০৬ এর ২৮শে অক্টোবরের লগি বৈঠার হুকুম কিংবা তাণ্ডব কে ভুলে যায়,গুম খুন ভুলে যায় কিংবা আদালতের বিরুদ্ধে নাসিমের নেতৃত্বে লাঠি মিছিল কিংবা শাহবাগের বিরিয়ানির বিনিময়ে আদালতের পিঠে লাথি মেরে আইন উলটিয়ে ফেলার ইতিহাস ভুলে এখন শুধু বর্তমানের যে কোন গণতান্ত্রিক অধিকারকেই নাশকতা বলে চালানোর কারণে এগুলোর সামনে কেউ পরতে চায় না এবং নিজেদেরকে সাধু বানাতে বানাতে ঘর মুখো হয়ে আন্দোলনকে বানিয়ে ফেলেছে বিবৃতি আর নিন্দার উপজীব্য বিষয়।

যে কোন উপায়ে কোরআন এবং হাদিসকে সরাসরি নামে উল্লেখ না করে জিহাদি নামে ভূষিত করায় আস্তে আস্তে এর চেয়ে ভয়ঙ্কর বই আর নেই এটা প্রমাণিত করে ফেলেছে।যে কারণে লোকজন এর থেকে ডুরে শুধু থাকছে না বরং নানা আধুনিক বই কিনে প্রমাণ করতে চাইছে যে তারা জিহাদি না।অথচ জিহাদের মূল বিষয়বস্তুকেই সম্পূর্ণ আড়াল করে এই মাকড়শার জাল হল আরেক ভয়ানক জাল।

এর পর পুলিশকে দিয়ে কাঁদানো গ্যাস বা লাঠি চার্জ করে ধস্তাধস্তি শুরু করে পুলিশের উপর আক্রমণ হয়েছে এমন তথ্য দিয়ে খবর প্রকাশ করায় মিছিলে গিয়ে ধস্তাধস্তিও এড়ানোর চেষ্টায় ব্যাস্ত মানুষ।আরেক মাকড়শার জালের নমুনা হল এটি।

সর্বশেষ সরাসরি গুলি করার যে নজিরবিহীন একনায়কতন্ত্র তার ধারনা কারো মধ্যে না থাকায় নিশ্চিত বেহুদা মৃত্যু থেকে বাঁচতে এবং নিজেকে উপরিউক্ত মাকড়শার জাল থেকে বাঁচাতে সাধু বানাতে নিরন্তর চেষ্টা করতে করতে বিরোধী রাজনতিক দলগুলোই আষ্টেপৃষ্ঠে আটকে এখন নিঃশ্বাস বদনহের দ্বারপ্রান্তে উপস্থিত হয়েছে।

এগুলো ছিন্ন করে যখন বেড়িয়ে আসতে আর পারছে না তখনি খালেদা জিয়ার মত নেত্রীকেই খাঁচায় আটকে ফেলেছে।(জামাতের কথা আর নাই বা বললাম)।

অথচ কোন বিপ্লব নিয়ম মেনে হয় না,অহিংস কিংবা শান্তিপূর্ণ হয় না।মুসলিমদের বিপ্লব বাদ দিলাম,কোন অমুসলিমদের বিপ্লব কর্পূরের মত মিলিয়ে মিলিয়ে হয়নি।

লুটপাট,গুম,খুন,হত্যা,ধর্ষণ এসব কিছু যদি নিয়মের কিছু না হয় তবে এসে থেকে দেশকে পরিত্রাণ দিতে অহিংস হতে হবে এমন টা কোন গাধাও বিশ্বাস করে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ আছে।

রাজনীতি শিখতে গেলে আওয়ামীলীগ থেকে শিখতে হবে।আওয়ামীলীগের কোন ইতিহাস অস্ত্র ছাড়া রচিত হয় নি।লগি বৈঠার সরাসরি হুকুম দিয়েই আজ তারা এই জায়গায়।সেখানে বিএনপি সহ বিরোধী দলগুলো যে অহিংসা আন্দোলন শুরু করেছে তাতে এক দল এক দেশের দেশ হতে বেশী দেরি নাই প্রাণের বাংলাদেশের।

কাদুম্বিনি মরিয়াই যদি প্রমাণ করতে হয় যে সে আগে মরে নাই তাতে শুধই মৃত্যু হবে সত্য প্রতিষ্ঠায় তার কোন ভূমিকাই থাকবে না।

শত্রুর শিখানো ভাষায় রাজনীতি করা একমাত্র দেশ মনে হয় এই বাংলাদেশ।যার অস্তিত্বই এখন হুমকির মুখে।মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে ঘুমাতে ঘুমাতেই অস্তিত্বের নতুন ইতিহাস রচিত হয়ে যাচ্ছে।

নিয়মতান্ত্রিক কোন আন্দোলন এর নাম বা শিরোনাম হতে পারে না।কারণ কোন নিয়ম ভাঙার জন্য আন্দোলন হতে যাচ্ছে না বরং অনিয়ম খতম করে নিয়ম প্রতিষ্ঠার আন্দোলন নিন্দা আর শোক প্রকাশে আবদ্ধ থাকতে পারে না।

বিষয়: বিবিধ

১০০২ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

384787
১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ সন্ধ্যা ০৬:২৩
মনসুর আহামেদ লিখেছেন : চমৎকার ,চালিয়ে যান।
384811
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ রাত ০১:২০
সন্ধাতারা লিখেছেন : Salam. Nice explanation mashallah

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File