আন্দোলনের সাতকাহন

লিখেছেন লিখেছেন তরবারী ০৩ জুন, ২০১৭, ০৬:১৫:৩১ সকাল

আজকে থেমিস মূর্তি,কাল লালন শাহ,পরশুদিন সুলতানা কামাল,তরশুদিন ইমরান বা আসিফ মহিউদ্দিন।

এবং এই বিষয়গুলো নিয়ে আন্দোলনগুলো প্রত্যেকটা পৃথকভাবে শুধু মাত্র সাময়িক ভাবে হচ্ছে।কখনো অপসারণ কখনো বিচার চেয়ে কখনো বা প্রতিস্থাপন চেয়ে বিচার চেয়ে একধরনের আন্দোলন হচ্ছে।দিনশেষে যা হট্টগোল হিসেবেই রয়ে যাচ্ছে।আন্দোলন গুলোর প্রতিটির উস্কানি দাতাদের দিকে তাকিয়ে দেখুন।কোন এক আঁধারে তারা কাজটা করে আমাদের আন্দোলনে নামাচ্ছে এবং শেষে তাদের মদদদাতা আর তাদের আইন আদালত বিচার দিয়ে কয়েকদিনের হট্টগোল শেষ করিয়ে আইনের মাধ্যমে বা জোর খাঁটিয়ে অথবা চুপ করিয়ে দিয়ে তাদের কাজ বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।

দিনের পর দিন একইভাবে হট্টগোল বাধিয়ে মূলত এক ধরনের বৈধতা কিন্তু তারাও নিয়ে যাচ্ছে।আলটিমেটলি এই সময়টুকুতে তারা আবার এটাও প্রমাণ করছে যে আন্দোলনকারীরা অসহিস্নু বা সাম্প্রদায়িক এবং গোলযোগ সৃষ্টিকারী।

এর মাধ্যমে আমাদের লাভ কি হচ্ছে?

কয়েকটা জিনিষ বুঝতে হবে।

= কেন আন্দোলন করছি?

= কার বিরুদ্ধে করছি?

= কার কাছে নালিশ দিচ্ছি?

= কি প্রত্যাশা করছি?

= বাস্তবতা আসলে কি?

= অবস্থান পরিবর্তনের গ্রাফ কোন দিকে যাচ্ছে?

আন্দোলনগুলোর উদ্যেশ্য সৎ তাতে কোন সন্দেহ নাই কিন্তু যাদের বিরুদ্ধে করছি তাদের সাথে নালিশ শ্রোতার সম্পর্ক টা কি,তা কিআমরা ভেবে দেখেছি?

ময়লা লেগেছে এই বলে নর্দমায় গোসল করলে কতটা পরিষ্কার হতে পারে বলে আপনার ধারনা?

যদি বাস্তবতাটা তাই হয় তবে প্রতিনিয়ত একই কাজ একইভাবে করে যাচ্ছেন কোন যুক্তিতে?

আন্দোলন ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য না,কিন্তু মাথা নত করে ধংসালয়কে মেনে নেয়ার নাম আদর্শও না।৩৬০ মূর্তি অনেক আগেই ভাঙ্গার উদ্যোগ নেয়া যেত কিন্তু সেটি না করে মক্কাকে দখলের উদ্যোগ নেয়া হল আর এই দখলদারিত্ব মানে শোষণের জন্য নয়,ন্যাবিচার প্রতিষ্ঠার জন্য।জনগণ নিজ ইচ্ছায় মূর্তি ভাংলো এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হল।এখন ক্ষমতার মসনদে না থেকে ন্যাবিচারক হওয়া যায় কি না বা ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা যায় কি না?

আবার রাজনীতির জন্য আমরা না হলেও রাজনীতি নিয়ে তো কোন না কোনভাবে মাথা ঘামাতেই হয়,তাই না?কাউকে না কাউকে সাপোর্ট করতেই হয় এই লিখিতের মাধ্যমে যে সুমহান আদর্শের নীতির বিরুদ্ধে কোন আইন হবে না এবং এর মাধ্যমে আমরা আপনাদের সমর্থন দিবো।আবহমান কাল ধরেই এভাবেই যখন চলমান তখন মৌখিকভাবে "না" সূচক কথাটি কি মুনাফিকি বক্তব্য হয়ে যাচ্ছে না?

কিছু জুজুর ভয়ে সন্মুখে অগ্রসর না হয়ে কি অপবাদ থেকে বেঁচে যাওয়া যাচ্ছে?

বরং সর্বসাকুল্যে দিনে দিনে সবকিছুকেই তো মানে মহাগ্রন্থকেই তো সরাসরি জঙ্গি বানিয়ে দেয়া হয়েছে,তাই না?

যাদেরকে ময়দান ছেড়ে দিয়েছেন চুক্তির বিনিময়ে তারা কি একদিন সাপ হয়ে দংশন করছে না?

জুজু থেকে কি তারা মুক্তি দিয়েছে বা দিবে বলে মনে হচ্ছে?বরং দিনে দিনে শক্তি পরীক্ষা করে মঙ্গল থেকে শনির মিছিল সবই করছে হুঙ্কার দিয়ে।রাখঢাক রেখে রতদিন যারা বর্ণচোরার মত মুখ লুকিয়ে রাখতো তারা এখন প্রকাশ্যে সামনে আসার হিম্মত শুধু দেখায় না বরং তাদেরকে দেবতা মানতে বাধ্য করার চেষ্টা করছে।

এক মূর্তি বা এক নাস্তিক এই সব ধরে ধরে আন্দোলনের ফলাফল দেশের বর্তমান চিত্রের মধ্যে বিরাজমান।চারদিকে অবমাননা আর অপদস্থতা।ধর্ম ভুলন্ঠিত,মানবতা বিপর্যস্ত,স্বাভাবিক জীবন যাত্রা পর্যদুস্ত। সেই সাথে এতদিন যারা মুখ গুঁজে চুপ থেকে এড়িয়ে গিয়ে ভালো সেজে ছিল তারাও কিন্তু আস্তে আস্তে অপবাদের শিকার হচ্ছেন।রেহাই পাবেন বলে যে ধারনা ছিল সেটি উবে যাচ্ছে দিন দিন।আর সেই সাথে শুধু আন্দোলনকেই কিছু নামে চিত্রায়িত করছে না বরং সমস্ত ব্যাবস্থাকেই সেসকল বাজে নামে চিত্রায়িত করে মহাগ্রন্থকেই মুল টার্গেট করে ফেলেছে।

মূলত কৌশল এর নাম করে এড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা বহুলাংশে শয়তানের ধোঁকা।আর শয়তান শুধু খারাপ কাজ করিয়ে ক্ষান্ত হয় এমন না মাঝে মাঝে ভালো কাজের উদ্যেশ্যে খণ্ডিত আন্দোলন করিয়েও ধোঁকা দেয়।যার কিছু অর্থ উপরেই দিয়েছি।

মূর্তি নয় ব্যাক্তি নয়,মসনদে ইলাহ এর দানকৃত সংবিধান কে বাস্তবায়নই যদি এক এবং নিরবিচ্ছিন্ন আন্দোলন হত তবে সত্য প্রকাশিত হয়ে জঙ্গি ট্যাগ লাগতো না।আর তখন অপদস্থের বদলে আস্তে আস্তে স্বীকৃতির মাধ্যমে মক্কা বিজয়ের মত ইতিহাস তৈরি হত যার মাধ্যমে নতুন কোন মূর্তি নয় বরং পুরাতনগুলোও (উপাসনার জন্য উপাসনালয়ের গুলো বাদে) অপসারিত হত শাসকের বা আন্দোলনকারীদের ইচ্ছায় নয় মানুষের নিজের ইচ্ছায়।

আর ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হত আপন মহিমায়,কারো সাথে বছর বছর চুক্তি করা লাগতো না।

বিষয়: বিবিধ

৮১২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File