গন আন্দোলনে থাইল্যান্ড প্রধানমন্ত্রীর পলায়ন.... আছে কি হাসিনার জন্য কোন শিক্ষা???????????????

লিখেছেন লিখেছেন গুডলাক ০১ ডিসেম্বর, ২০১৩, ০৮:৩২:১০ রাত





ঐতিহাসিকভাবে সমর্থিত না হলেও জনশ্রুতি আছে, রোম যখন পুড়ছিল সম্রাট নীরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিলেন। এতে কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। এঁদেরও বোঝা উচিত জনগণই হচ্ছে আসল শক্তি। সময় লাগলেও এর কাছে আর সবকিছুই তুচ্ছ। এরা ক্ষেপলে কেউ তাদের রক্ষা করতে পারবে না।

চারদিকে এখন দম বন্ধ করা পরিবেশ। বুকের ওপর জগদ্দল পাথরের চাপ। মানুষ শংকিত। কি হবে কেউ জানে না। যে একজন জানেন বলে অনেকেই মনে করেন তিনিও কি তা নিশ্চিত জানেন? শেষ পর্যন্ত সবকিছুর ওপর কি তার নিয়ন্ত্রণ থাকবে? সর্বত্র অনিশ্চয়তা। উৎকণ্ঠা। কোথায় যাচ্ছি আমরা? সবাই সন্ত্রস্ত। দেশ অগ্নিগর্ভ। মানুষ নির্ঘুম। কি করে ঘুমাবেন তারা? বারুদের গন্ধ। খুন-গুম-নির্যাতিত হওয়ার নিত্য আতঙ্ক। ঘুম আসবে কি করে তাদের চোখের পাতায়? অথচ যারা এই নৃশংসতা চালাচ্ছেন, দেশটাকে ছারখার করে দিচ্ছেন তারা কি দিব্যি নাকে তেল দিয়ে ঘুমাচ্ছেন? তাদের কথায়-বার্তায়, বক্তৃতা-বিবৃতিতে, চেহারার চাকচিক্যে কোথাও অনুশোচনারও লেশমাত্র নেই। নির্ঘুম হওয়া তো দূরের কথা। এ ধরনের হন্তারক অপরাধী শেক্সপিয়রের নাটকে ঘুমাতে পারে না। রাজা ডানকানকে হত্যা করার পর ম্যাকবেথের ঘুম হারাম হয়ে যায়। যদিও সরাসরি তিনি হত্যা করেননি। স্ত্রীকে প্ররোচণা দিয়ে হত্যা করিয়েছিলেন। আধুনিক ইংরেজিতে এ নাটকের যে ভাষ্য দেয়া হয়েছে তাতে অনুশোচনাদগ্ধ ম্যাকবেথ বলছেন,

I thought I heard a voice cry, Sleep no morel

Macbeth is murdering sleep. Innocent sleep.

Sleep that soothes away all our worries.

Sleep that puts each day to rest.

Sleep that relieves the Weary laborer and heals hurt minds.

sleep, the main course in lifes feast, and the most nourishing.

..............

The voice kept crying, Sleep no more! to everyone in the house.

Macbeth has murdered sleep, and therefore Macbeth will sleep no more.

নাটকের এই অংশটি অনেক বড়। সংক্ষেপে এর বাংলা হবে এরকম- ‘আমি শুনতে পেলাম একটি কণ্ঠ আমাকে বলছে, ম্যাকবেথ আর ঘুমিও না। ম্যাকবেথ ঘুমকে হত্যা করেছে।’.... কে যেন সমস্ত বাড়ি ঘুরে ঘুরে বলছে, ‘আর ঘুমিও না, ম্যাথিস ঘুমকে হত্যা করেছে। কডোরের অধিপতি আর ঘুমাবে না। ম্যাকবেথ আর ঘুমাবে না।’ কারণ হত্যাকারী ঘুমাতে পারে না। সাগরের সমস্ত পানি দিয়ে ধুইলেও হাত থেকে হত্যার রক্তের দাগ মুছে না। মোছা যায় না।

আমি অতীত টানতে চাই না। তবু বর্তমানের অপরাধীরা অতীত টেনে এনে নিজেদের পাপের বোঝা লাঘব করার অপেচষ্টা চালাবেন। অতীত টানতে হলে তো ’৭৪/৭৫ কিংবা তারও আগে থেকে শুরু করতে হয়। রক্ষীবাহিনীর মাধ্যমে কতো হাজার জাসদ কর্মীকে হত্যা করা হয়েছিল তা হাসানুল হক ইনুরা ভুলে যেতে চাইতে পারেন। কেননা, তাদের রক্তের ওপর দিয়ে পা মাড়িয়ে তারা ক্ষমতার স্বাদ পেয়েছেন। দেশবাসী তাদের মতো এতোটা বেইমান এবং নির্লজ্জ নন। চারদলীয় জোট আমলের অন্যায়-অবিচার-নির্যাতনের কথাও মানুষ বিস্মৃত হননি। কিন্তু তাদের দুর্নীতি-অপকর্ম অনেক ক্ষেত্রেই এখনকার অধিকতর দুর্নীতি-অপকর্মের কৈফিয়ত বা সাফাই হতে পারে না। র‌্যাবের ক্রসফায়ার কমেছে বটে। কিন্তু যোগ হয়েছে রাষ্ট্রীয় অপহরণ, গুম ও খুন। এই যে রাষ্ট্রীয়ভাবে এতো মানুষকে খুন-গুম করা হচ্ছে তার জন্য যারা দায়ী তারা কী নিশ্চিন্তে রাতের বেলা ঘুমাতে পারেন? ভয়াবহ দুঃস্বপ্নে মধ্যরাতে তাদের ঘুম ভেঙে যায় না কি? আমাদের দেশে রিমান্ড মানেই তো ভয়াবহ আতঙ্ক, অকল্পনীয় নির্যাতন। বিবেকের কণ্ঠস্বর বলে পরিচিত ব্যক্তিদের রিমান্ডে নির্যাতন চালানোর জন্য যারা নেপথ্যে নির্দেশ দেন এবং যে প্রসিকিউটর ও বিচারকবৃন্দ চোখ বন্ধ করে এসব বেআইনি নির্দেশ তামিল করেন তারা রাতের বেলা দু’চোখের পাতা এক করেন কি করে? রাজনৈতিক কারণে রিমান্ডে নির্যাতিত মানুষদের আর্তচিৎকার তাদের ঘুমের মধ্যে হানা দেয় নাকি? অথবা যে বিচারপতি দেশের প্রায় সকল নামকরা সংবিধান বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ও মতামতকে উপেক্ষা করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিল করে দিয়ে দেশকে অগ্নিগর্ভ করে তুলেছেন, গৃহযুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে এসেছেন তিনি বা তারা কি রাতের বেলা দুঃস্বপ্ন দেখা ছাড়া ঘুমাতে পারছেন?

কি বিচিত্র এই দেশ। রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের মালিক জনগণ। সেখান থেকে একটি গোষ্ঠী চার হাজার কোটি টাকা লুট করে নিয়ে গেল। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী বললেন, চার হাজার কোটি টাকা এমন কিছু বড় অংক না। হলমার্কের পর ডেসটিনির কয়েক হাজার কোটি টাকার কেলেংকারি বের হলো। অর্থমন্ত্রীর বিবেচনায় নিশ্চয়ই তাও এমন কিছু বড় ব্যাপার নয়। কাজ শুরু হবার আগেই পদ্মা সেতু প্রকল্প থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অপচেষ্টায় বিশ্বব্যাংকসহ দাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর কয়েক হাজার কোটি টাকা অনুদান-বিনিয়োগ থেকে দেশ বঞ্চিত হলো। দক্ষিণবঙ্গের ৩ কোটি লোকের উন্নয়ন এবং স্বপ্ন ভেঙে গেল। তবুও রাবিশ তথা আবর্জনাখ্যাত মন্ত্রী এবং সংশ্লিষ্টদের ঘুমের কোন ব্যাঘাত হয়েছে বলে মনে হলো না। হায়রে অভাগা দেশ, মসনদ বহাল রাখার জন্য এরা আধিপত্যবাদী একটি দেশের কাছে নিজ দেশের ন্যায্য স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে কি দিব্যি নাকে তেল দিয়ে ঘুমান। এরা বিভীষণের মতো কাজ করেন, হনুমান হয়ে লংকা পোড়ানোর মতো বাংলাদেশ পোড়ান এবং ক্রুড় হাসিতে দেশবাসীকে বিদ্রুপ করেন এবং বাকি বিশ্বকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখান। ঐতিহাসিকভাবে সমর্থিত না হলেও জনশ্রুতি আছে, রোম যখন পুড়ছিল সম্রাট নীরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিলেন। এতে কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। এঁদেরও বোঝা উচিত জনগণই হচ্ছে আসল শক্তি। সময় লাগলেও এর কাছে আর সবকিছুই তুচ্ছ। এরা ক্ষেপলে কেউ তাদের রক্ষা করতে পারবে না। আর গণরায় এবং দেয়ালের লেখন কি তারা পড়তে পারছেন না?

দেশ ও দেশবাসীর এই ভয়াবহ অবস্থার জন্য দায়ী ব্যক্তিরা কেবল তখনই আরামে ঘুমাতে পারেন যখন তারা হন মানসিক ভারসাম্যহীন। এটা ব্যাখ্যা করার জন্য আরেকটি নিবন্ধ রচনা করতে হবে।উৎসঃ মানবজমিন

বিষয়: বিবিধ

১৪৯৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File