আমার জীবনের ৬ই ডিসেম্বরগুলো

লিখেছেন লিখেছেন মিশেল ওবামা বলছি ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৩, ০১:২৫:৩০ দুপুর



৫ই ডিসেম্বর দিনগত রাত, ঠিক ১২টার পরে, অর্থাৎ যখন ৬ই ডিসেম্বর শুরু, তখনি দেখি বাবার ফোন। কুশল বিনিময় সেরে হটাৎ বাবা বলছে, মামানি আজকে না আমার খুব কেক খেতে ইচ্ছে করছে। আমি খুব অবাক হয়ে বললাম, তাহলে তো তোমাকে চিনি ছাড়া কেক বানিয়ে দিতে হবে। কারন বাবার ডায়বেটিস। আমাকে আরো অবাক করে দিয়ে বাবা বলতে লাগলো, ''আজকের দিনে আমাদের ঘর আলোকিত করে কে যেন এসেছিলো তার জন্য অনেক অনেক দোয়া আর শুভকামনা থাকলো।''

আমি দুস্টুমি করে বললাম, ''বাবা তোমার কন্যাদ্বয় তো হসপিটালের ঘর আলোকিত করে পৃথিবীতে এসেছে, তোমাদের ঘর আলোকিত করে নয়। বরং বলতে পারো, তোমাদের জীবন আলোকিত করে এসেছি।''

আমার কথায় বাবা হেসে ফেললেন, আর আমার শৈশবকালীন সৃতী রোমন্থন করতে লাগলেন। শুনতে শুনতে চোখটা ভিজে আসলো, বুঝলাম বাবার গলাটাও ভার। কখনই বাবা-মামনীকে ছেড়ে একদিনের জন্যও দূরে থাকি নাই। আর আজ বছরে দু'মাসের জন্য দেখা পাই। এটাই বাস্তবতা...।

আসলে যেহেতু জন্মবার্ষিকী পালন করিনা, তাই বিশেষ কিছু মনেও হয় না। কিন্তু বাবা-মামনীর কাছে এই দিনটা হয়তো অনেক কিছু। দাম্পত্য জীবনের দীর্ঘ আট বছর পর এই দিনেই তো আমি এসছিলাম উনাদের কোল আলোকিত করে, আল্লাহ প্রদত্ত উপহার হিসেবে। সেজন্যই হয়তো এই দিনে আমাকে দোয়া আর শুভকামনা জানাতে ভুল করেন না।

অতীতের দিনগুলোতে বাবা আমার জন্মবার্ষিকীতে দোয়া আর শুভকামনা জানিয়ে চিরকুট লিখে আমার টেবিলে রেখে যেতেন। কোন একবার লিখে রেখেছিলেন, ''দোয়া করি আল্লাহপাক যেন এমন কাউকে তোমার জীবন সাথী হিসেবে মিলিয়ে দেন যে তোমাকে আমাদের মত করে ভালোবাসবে।''

সেদিনের দোয়ার ফলাফলটা সবসময় অনুভব করি আলহামদুলিল্লাহ। বাবা-মামনীর দোয়া যেন আজীবন আমাদের পাথেয় হিসেবে থাকে।

''রাব্বির হামহুমা কামা রাব্বা ইয়ানী সাগীরা''

বিষয়: বিবিধ

২৪৪০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File