সৌদি আরবে ১৫ দিন (৩য় পর্ব)

লিখেছেন লিখেছেন মিশেল ওবামা বলছি ১২ মে, ২০১৩, ১২:৫৮:৪২ দুপুর



সৌদি যাবার কয়দিন পরেই গেলাম ওমরাহ করতে। আব্বু-আম্মুরা যে সিটিতে থাকেন ওখান থেকে বাসে করে মদীনা যেতে সময় লাগে প্রায় ছয় ঘন্টা, আর মক্বা যেতে আরো দু'ঘন্টা মোট আট ঘন্টা সময় লাগে। দুপুর তিনটায় বাস ছাড়ার কথা। আমরা যোহোরের নামাজ আদায় করে রওনা দিলাম। তারাহুরো করে গিয়ে দেখি অনেকে এসে পৌছায় নাই, তাই বাস ছাড়তে দেরি হবে। যাক আমরা বাসে উঠে ছাড়ার অপেক্খা করতে লাগলাম। বাসে হোক, প্লেনে হোক আর কারেই হোক আমাকে জানালার পাশে বসা চাই ই চাই। এ নিয়ে আমার ছোট আপিটার সাথে মিষ্টি-মধুর ঝগড়া তো প্রায়ই হতো। কিন্তু আমার হাসব্যান্ড সব সময় জানালার ধারের সিটটা আমাকেই ছেড়ে দেয়, তাই বসলাম জানালার ধারে। আমরা বাদে বাকী সবাই প্রায় আরব। দেখলাম একেকজন বাসে ওঠার সময় দু'হাত ভরে খাবারের ব্যাগ নিয়ে উঠছে, ভাবলাম এক মাসের খাবার হবে বোধহয়, কিন্তু পরবর্তি স্টপেজেই ভুল ভাংলো। দেখলাম ওগুলো খেয়ে শেষ করে ফেলেছে, আবার বাকালা থেকে দু'হাত ভরে খাবার কিনে বাসে উঠছে।

যাক, বাস চলতে শুরু করলো, রাস্তার মাঝের আইল্যান্ডের ওপরে লাগানো সারি-সারি খেজুর গাছগুলো আমার ভীষণ ভালো লাগছিলো। ছবি ওঠানোর চেস্টা করলাম কিন্তু চলন্ত গাড়ী থেকে ভালো ছবি আসছিলো না। তাই ভিডিও করলাম বেশ চমৎকার ভিডিও হলো। আমাদের দেশের বাসের তুলনায় খুব আস্তে চলে ওখানকার বাসগুলো। আমার মনে হচ্ছিলো দ্রুত চালাচ্ছে না কেন, তারাতারি গন্তব্যে পৌছে যেতাম...।



চলন্ত বাস থেকে ওঠানো ছবি।





লোকালয় ছেড়ে যখন এমন ধূ-ধূ মরুভুমি দিয়ে বাস ছুটে চলছিলো তখন আমার হাসব্যান্ডকে বললাম যে আচ্ছা এমন জায়গায় যদি বাস নস্ট হয়ে যায় আমাদের কি উপায়টা হবে বলতো। আমি রসিকতা করে বললাম আর আমার মনে হলো ও একটু ভয় পেয়েছে। ও যখন এমন সামান্য বিষয়ে ভয় পায় আমার তখন বেশ মজা লাগে, সেদিনও তার ব্যাতিক্রম হলো না।

তবে এমন নিরেট পাথুরে পাহাড় বেশ সুন্দর লাগছিলো আমার কাছে।

চলতে চলতে যখন রাত নামতে শুরু করলো, মনে মনে ভাবছিলাম এই ধূ-ধূ মরুভূমিতে চাদনী রাত দেখতে পেলে বেশ মজা লাগতো। ঘটনাক্রমে, সেদিন পূর্ণিমা রাত ছিলো, আকাশে চাদও ছিলো। আস্তে আস্তে বাস চলছে, পাশে প্রিয়জন, দূ'পাশে যতদূর চোখ যায় শুধুই মরুভূমি আর বাড়তি পাওনা হিসেবে চাদনী রাত....। অনুভূতিটা এক কথায় দারুন ছিলো।

এত বড় একটা জার্নিতে একটা ওয়াক্ত নামাজও ক্বাজা হয়নি। এই বিষয়টা মালয়শিয়া থাকতেও আমাকে খুব আকর্ষণ করতো, সৌদিতেও তেমনি আকর্ষণ করলো। ঐসব দেশের মাসজিদে যদি মেয়েদের নামাজের জায়গা রাখতে পারে আমাদের দেশেও তো পারতো। কিন্তু আফসোসের বিষয় মাসজিদ থাকলেও মেয়েদের নামাজের জায়গা খুব কমই পাওয়া যায়।

পরবর্তি পর্বে ইনশাআল্লাহ ওমরাহর বিষয় আসবে।

বিষয়: বিবিধ

৩০৮২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File