ভূ-রাজনীতির পেক্ষাপটে বিরোধী পক্ষ এগিয়ে !

লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১০:৪৯:৩২ সকাল



----------------------------------------------------

(একটু লম্বা হয়েছে। ধৈর্য্য নিয়ে পড়ার অনুরোধ রইলো। তবে সময়ের অভাবে অনেক কিছু বাদ পড়েছে লেখায়)

বাঙ্গালী এক অদ্ভূত জাত। অদ্ভূত এদের ইতিহাস। সেই মুখল আমল থেকেই দিল্লীর বাদশাহরা পর্যন্ত এদেরকে বুঝতে পারত না। এদের বিরুদ্ধে কোনো নীতি বেশিক্ষন টিকে থাকত না। লাঠি দিয়ে শায়েস্তা করলে কিছুদিন চুপ থাকত,,আবার জেগে উঠত। এরা শৃঙ্খলিত হতে পারেনি,জানেনা। এরা এমন এক জাতি, যাদের ব্যাপারে পূর্ব ধারনা প্রায় সময়ই মিথ্যা প্রমানিত হয়েছে। বীরের জাতি হোক আর গোলামের জাতি হোক, এরা আলাদা ধরনের বৈশিষ্টমন্ডিত। মুঘলরা এ অঞ্চলের নাম দিয়েছিলো বুলঘগপুর, মানে সুযোগ পেলেই বিদ্রাহ করে। অতীতে বহুবার এরা জেগে উঠেছে, কিন্তু এরা জানেনা ছক বেধে ,হিসেব কষে কিভাবে জেগে উঠতে হয়। তবে এরা জেগে ওঠে।

যাইহোক প্রসঙ্গের দিকে যাওয়া যাক। বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্তিতির মত পরিস্থিতি বাংলার ইতিহাসে, অন্তত বলা যায় ১৯৪৭ সালের পর থেকে আর কখনই এমন আকার ধারন করেনি। এখানে শাসক মরিয়া তার শাসন যে কোনো মূল্যে টিকিয়ে রাখতে। সেটা করতে এমন কোনো ব্যবস্থা নেই যা তারা নিতে বাকী রেখেছে। অপরদিকে বিরোধী মতের মানুষেরাও তাদের সর্বোস্ব নিয়ে বিরোধীতা করছে। উভয়ের অবস্থা পুরো বাংলাদেশকে স্পষ্টভাবে দুটি ভাগে ভাগ করে ফেলেছে।

কেন শাসক এরকম মাটি কামড়ে পড়ে থাকার নীতি গ্রহন করেছে এবং কেন তারা ভাবছে যে, বিরোধীমত ক্ষমতায় আসলে এরা শেষ হয়ে যাবে ?

এর পেছনে বেশ কিছু জ্লজ্যান্ত কারন আছে।

১. বোদ্ধারা মনে করেন- ২০০৯ সালের ২৫শে এপ্রিল ঢাকার পিলখানায় বিডিআরের দরবার হলে বিডিআর কর্তৃক বিদ্রোহের ঘটনা ছিলো একটি সাজানো নাটক। শান্তিপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাঝে হঠাৎ করেই কিছু সদস্য বিনা কারনে ইত্তেজিত হয়ে ওঠে এবং অত্যন্ত আকস্মিক ও অনাকাঙ্খিতভাবে বহিরাগত কিছু প্রশিক্ষিত বাহিনী আর্মী অফিসারদের উপর গুলি শুরু করে। কোনো রকম কথা বলার সময় না দিয়েই ৫৭ জন উচ্চপদস্ত আর্মী অফিসারকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। হত্যার পর লাশ বিকৃত করে পুতে ফেলা হয় এবং পুড়িয়ে দেওয়া হয়। অনেক লাশ গুম করা হয়। অনেক অফিসারের স্ত্রীকে ধর্ষন ও হত্যা করে লাশ গুম করা হয়।

পুরো বিষয়টা ছিলো অমানবিক,রোমহর্ষক এবং অযৌক্তিক। জাতিকে অন্ধকারে রেখে গোপনে দেশের মূল শক্তিকে শেষ করার চক্রান্ত হয়। উক্ত ঘটনায় রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের অংশগ্রহন ছিলো চরমভাবে বিতর্কিত। প্রতিকার,প্রতিরোধের স্থলে অপরাধীদের নিরাপদে মিশন সম্পন্ন করে ফিরে যেতে দেওয়া হয়।

পুরো আর্মী ক্ষেপে ওঠে। তারা কমান্ডো হামলার অনুমতি না দেওয়ার কারনে সরকারের উপর অগ্নীমূর্তী ধারন করে। রাজনৈতিক নেতাদের বিতর্কিত ও সন্দেহপ্রবন অংশ গ্রহনে তারা প্রধানমন্ত্রীর উপর ক্ষোভে ফেটে পড়ে। প্রবল সম্ভাবনা দেখা দেয় সেনা বিদ্রোহের। সরকার নিজের ক্ষমতা হারানোর ভয়ে কম্পমান থাকে। এই ঘটনা চলতে থাকার কয়েক সপ্তাহের ভেতর আরও কিছু উচ্চ পদস্থ আর্মী অফিসারকে গোপনে হত্যা করা হয়। বেশীরভাগ আর্মী অফিসার ঝুঁকি বুঝতে পেরে রাতে নিজের অবস্থান পরিবর্তন করে অজ্ঞাত স্থানে থাকতে শুরু করেন। একটি ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হয় দেশ জুড়ে।

পরবর্তী পর্যায়ে বিডিআরের ভেতরকার চাক্ষুস সাক্ষীগনের অনেককে হত্যা করা হয়। অনেককে চাকুরীচ্যুত করা হয়। সরকার নিজেকে সামলে নেয় প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সহায়তায়। এরপর শুরু হয় আর্মী নিধন। সেনাদের ভারত বিরোধী অংশকে এবং বিদ্রোহী হয়ে উঠতে চাওয়া অংশকে জোর করে বসিয়ে দেওয়া হয় ও কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। সেনা,গোয়েন্দাসহ সকল বাহিনীতে একান্ত অনুগতদের বসানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়। একসময় ঘটনা শান্ত হয়ে আসে কিন্তু মানুষের মনে তা সর্বদা তরতাজা হয়ে অবস্থান করতে থাকে।

লক্ষ্যনীয় বিষয় হল এই যে, অতীতের আওয়ামী সরকার এবং বিডিআর বিদ্রোহের পরবর্তী আওয়ামী সরকারের ভেতর ব্যপক পরিবর্তন দেখা যায়। ওই ঘটনার পর থেকে তারা একরোখা হয়ে ওঠে এবং নিজেদেরকে সর্বসের্বা ভাবতে শুরু করে, যা চলমান রয়েছে। তারা বলতে শুরু করে ২০৫০ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে হবে ,তা না হলে তাদেরকে মেরে ফেলা হবে এবং দেশকে ধ্বংস করা হবে। বিরোধী মতের উপর ব্যপক দমন পীড়ন চলতে থাকে,যা অতীতে তারা এভাবে করেনি, অন্য কোনো সরকার করেনি। জসমনে ভীতি ধরানোর সকল প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখে।

বর্তমান ক্ষমতাসীনরা মনে করে, তারা কোনোভাবে ক্ষমতা থেকে সরে গেলে পরবর্তী সরকার ২০০৯সালের ৫৭ জন আর্মী অফিসার হত্যার বিষয়টির নিষ্পত্তি করতে চাইবে। হতে পারে বর্তমান সরকারের বহু কর্তাব্যক্তি ওই ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হবে। এমনকি প্রতিহিংসার কারনেও তাদেরকে বিচারিক প্রক্রিয়ায় মৃত্যুদন্ড দেওয়া হতে পারে বলে সরকারের ভয় রয়েছে।

২. গত ১০ বছরে দক্ষিন এশিয়ার ভূ-রাজনীতিতে পরাশক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তেমন আওয়াজ পাওয়া যায়নি। বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই তাদের দাপট প্রকাশিত হয়নি যা পূর্বের তুলনায় ব্যতিক্রম। এর কারন হল দক্ষিন এশিয়ার এক উদীয়মান শক্তি ও স্বার্থের কাঙাল ভারতের প্রতি বাংলাদেশের নি:শর্ত এবং নি:স্বার্থ সমর্থন। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ভারতের তেমন ক্ষমতা নেই জেনেও দেশী সরকার নিজেকে উজাড় করে ভারতের পূজা করেছে। ভারতও যেকোনো মূল্যে বাংলাদেশের পাশে থাকতে অঙ্গীকারাবদ্ধ হয়েছে। ফলশ্রুতিতে আন্তর্জাতিক যেকোনো বিষয়ে বাংলাদেশ চোখ বন্ধ করে ভারতকে খুশী করে গেছে। বিষয়টি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চক্ষুশূল হলেও তারা ধৈর্য্য ধারন করেছে। যেহেতু ভারতের সাথেও তাদের ব্যপক স্বার্থ জড়িত, তাই আন্তর্জাতিক স্বার্থের কারনে এ এলাকার বহু ঘটনাকে তারা পাশ কাটিয়ে গেছে। তবে বাংলাদেশের উপর ভারতের একক কর্তৃত্বে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চায়না চরমভাবে নাখোশ হয়।

বহু পরিস্তিতি তৈরী হয়, যখন বাংলাদেশকে ভারতের বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্র অথবা চায়না,অথবা আরব বিশ্ব, অথবা ইউরোপীয় ইউনিয়নের যে কোনোটিকে বেছে নেওয়ার প্রয়োজন হয়ে পড়ে। সেই মুহুর্তেও বাংলাদেশ চোখ বন্ধ করে ভারতের পাশে থাকে। প্রয়োজন থাকুক বা না থাকুক, যুক্তি ও স্বার্থ থাকুক বা না থাকুক বাংলাদেশ ভারতের পেটের ভেতর অবস্থান করেই সার্বিক নিরাপত্তা চেয়েছে। কোনো রকম কারন ছাড়াও অযথা ভারতের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করেছে। দেশী প্রায় প্রত্যেকটা গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বা ক্ষেত্রে ভারতকে টেনে আনা হয়েছে অথবা ভারতের স্বেচ্ছা অন্তর্ভূক্তীকে সাধুবাদ জানানো হয়েছে। এ বিষয়টাকে অন্য ক্ষমতাধর রাষ্ট্রগুলো মোটেও ভালো চোখে দেখেনি।

যেকোনো রাষ্ট্রে অন্য রাষ্ট্রের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সে দেশের জনগনের সরকারের প্রতি সমর্থন বা সন্তুষ্টি প্রয়োজন হয়। নইলে অন্য দেশের নীতি,আদর্শ,পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হতে পারেনা। কিন্তু বাংলাদেশ এই অবস্থা হারিয়েছে। কারন সরকার নিজেকে চরম অনিরাপদ ভেবে, জীবন বিপন্ন হতে পারে এমনটা ভেবে বিরোধী মতের উপর ব্যপক দমন পীড়ন করেছে। তারা ভেবেছিলো মানুষ ভয়ে চুপসে গিয়ে জাগতে ভুলে যাবে। কিন্তু ফলশ্রুতিতে জনগনের অরাজনৈতিক অংশও সরকারের উপর থেকে মানসিক সমর্থন তুলে নিয়েছে। সম্প্রতি কোটা আন্দোলন ও ছাত্রদের নিরাপদ সড়ক আন্দোলন তার প্রমান। অবস্থা এমন আকার ধারন করেছে যে, স্বয়ং ভারতও বিব্রত হয়েছে। কারন জনমানুষের সমর্থন সরকারের প্রতি না থাকলে ,সরকারের পছন্দনীয় বিদেশী রাষ্ট্রের উপরও থাকবে না। এতে বিদেশী রাষ্ট্রের পররাষ্ট্রীয় নীতি প্রনয়ন বাধাপ্রাপ্ত হবে। এবং মানুষ বেশী বিরোধীমনভাবাপন্ন হয়ে উঠবে। এমতাবস্থায় সরকারের উচিৎ জনগনের সাথে অধিক পরিমানে সুআচরণ করা এবং বিরোধী দলগুলোর সাথে সুসম্পর্ক রেখে চলা। সম্পর্কে স্বচ্ছতার পরিচয় দেওয়া। কিন্তু তারা এর স্থলে কঠোর নীতি গ্রহন করে এবং অধিকাংশ জনগনের বিরাগভাজন হয়ে ওঠে। তাদের এ সংক্রান্ত হিসাব ভুল হয়ে যায়।

এ বিষয়টি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যরা খুব ভালোভাবে বুঝতে পারছিলো,যার কারনে তারা কেবল ধৈর্য্যধারন করে বসে ছিলো কোনো একটি সময়ের অপেক্ষায়। তারা বুঝতে পারছিলো শিঘ্রই আপনা আপনি জনগন এই সরকার ও ভারতের বিরোধী হয়ে উঠবে এবং এমন পরিস্তিতি সৃষ্টি হবে, যখন ওরাই দাওয়াত করে ভারতের বিরোধী ব্লককে বাংলাদেশের কান্ডারী হিসেবে পছন্দ করবে।

৩. বিরোধীদের প্রতি সরকারের কঠোর নীতির বাস্তবায়নে সরকার দলীয় লোকেরা এলাকাভিত্তিকভাবে চরম স্বেচ্ছাচারী হয়ে ওঠে। বহু সংখ্যক বিরোধি নেতা ঘরবাড়ি ছাড়া হয়, অনেককে হত্যা করা হয়,অনেকে বিনা কারনে অথবা তুচ্ছ কারনে জেলে আটকে রাখা হয়, নানামুখী অত্যাচার নির্যাতন করা হয়। জনগনের সেবায় নিয়োজিত সরকারী বাহিনী কর্তৃক ন্যাক্কারজনকভাবে বিরোধী জনমতকে দমন করা হয়। সাদা পোষাকে রাষ্ট্রীয় বাহিনী প্রতিপক্ষ নেতা-কর্মীদেরকে তুলে নিয়ে নির্যাতন অথবা হত্যা করতে থাকে। জনগনের সাথে সম্পর্কনান্নায়ন এর স্থলে সরকার ক্রুদ্ধ হয়ে ওঠে। নিজের শক্তিরমত্তার উপর প্রবলভাবে আস্থাশীল হয়ে স্বেচ্ছাচারিতা শুরু করে। অবস্থা এমন আকার ধারন করে যে, তার অনুভব করতে পারে যে, ক্ষমতা থেকে চলে গেলে ওরা তাদেরকে মেরে ফেলবে। কিন্তু তারপরও বিরোধী মতকে কবর দিতে মরিয়া হয়ে ওঠে। মূলত: এই আচরণটি নিজেদের আতঙ্কগ্রস্ততার ফল।

৪. সরকার অধিকাংশ মিডয়া ও মিডিয়া ব্যক্তিত্বদেরকে নিজেদের পক্ষে আনতে সক্ষম হয়। আর তারা যে আচরণ শুরু করে,তাতে মিডিয়ার উপর জনমানুষ আস্থা হারায়। তাদের সত্য কথাও বিশ্বাস করেনা। সংবাদপত্র,সাংবাদিকদের বিরাট অংশ জনগনের কাছে অত্যন্ত নিকৃষ্ট প্রানীর মর্যাদা প্রাপ্ত হয়। ফলে এদের মাধ্যমে সরকারী ভাবমূর্তী ধরে রাখা সম্ভব হয়নি।

৫. নানান নামে উপনামে সরকারী বাহিনী ব্যপক অপরাধমূলক কর্মকান্ডে লিপ্ত হয় এবং উদ্ভট কথা,যুক্তি উপস্থাপন করে সরকারের গুনগান করতে গিয়ে সরকারের মর্যাদা হানি করে। সামাজিক,সাষ্কৃতিক নানান সংস্থা,ব্যক্তিত্বের মাধ্যমে সরকার তার ভাবমূর্তী উদ্ধার করতে গিয়ে হিতে বিপরীত হয়ে যায়। ফলে দীশা না পেয়ে আবারও বেরোধীমতের লোকদের উপর দমন পীড়ন শুরু করে। তাদের কোনো পরিকল্পনাই সঠিক মাত্রা পাচ্ছেনা। ফলে তারা দ্রুতভীত সন্ত্রস্ত হয়ে উঠছে।

৬. সরকারী অর্থ লুন্টন হওয়া,সরকারী প্রতিষ্ঠানে হরিলুট হওয়া নিয়ে মানুষ ক্ষুব্ধ। নানান বাজে প্রকল্পে সরকারী টাকার শ্রাদ্ধ করা নিয়ে জনগন হতাশ ও ক্ষুব্ধ। সরকারী দলের লোকদের স্বেচ্ছাচারীতা,চরিত্রহীনতা ও অর্থ আত্মস্মাতের কারনে মানুষ বিতশ্রদ্ধ।

৭. তারা গতবারের মত নিজে নিজে নির্বচনের একটি ছক কষেছিলো, ভারতও সমর্থন দিয়েছিলো। কিন্তু এবার তাদের সেই পদ্ধতি কার্যকর করতে প্রবলভাবে বাধার সম্মুখিন হতে হয়েছে। এর কারন সে সময় জনমনে সরকারের প্রতি এত বিতৃষ্ণা ছিলোনা। বর্তমান অবস্থায় প্রায় ৭০/৭৫% লোক সরকারের ব্যাপারে সাংঘাতিক বিতশ্রদ্ধ। যার কারনে সরকার ক্ষমতায় থেকে জোর করে জনসমর্থন আদায়ে বদ্ধ পরিকর হয়েছে। তাদের পরিকল্পনাগুলো সঠিক মাত্রা পাচ্ছেনা, ফলে বার বার তারা দমন পীড়নের নীতিতে ফিরে যাচ্ছে।

৮. আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো, শক্তিধর রাষ্ট্রগুলো তাদের নিজস্ব নীতির বাস্তবায়ন করে জনগনকে খুশী রেখে। কিন্তু বর্তমান সরকারের উপর জনগনের বাস্তবিক আস্থা অনেক কম হওয়ায় এদেরকে তারা স্বার্থের পরিপন্থী ভাবছে। এমনকি ভারতও বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত। জোর সম্ভাবনা রয়েছে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ,আরবদেশগুলো এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশের বিরোধী দলকে প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিত প্রদান করবে। কারন তাদের মূলত স্বার্থ দরকার এই অংশে। তাদের আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক স্বার্থের কারনেই আওয়ামী সরকার এখন যথেষ্ট উপযোগী নয়। তারা চায় জনতার সরকার,যারা বৈদেশিক নীতির প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করবে সরকারের কর্মকান্ডে প্রশংসার অংশ হিসেবে।

সার্বিক বিচারে দেখা যাচ্ছে ২০১৮ সালের ইলেকশন মোটামুটি সুষ্ঠ হলে সরকারী দল ব্যপকভাবে হেরে যাবে। জনগনের যে অংশ রাজনীতির ভেতর নেই, তাদের বেশীরভাগই সরকারী নানান নীতির কারনে ব্যপকভাবে সরকার বিরোধী মনোভাবাপন্ন। এরাই জয় পরাজয় নিশ্চিত করতে যথেষ্ট। আর এ এলাকার মানুষেরা এক তরকারী দিয়ে বেশীক্ষন ভাত খেতে পছন্দ করেনা। এমনকি বিরোধীদলগুলো যদি আওয়ামী লীগের চাইতে খারাপও হয়, তবুও তারা সেদিকে যাবে। এটা হল বাংলার মানুষের মানসিকতা।

আমি রাজনেতিক মনুষ নই তবে রাজনীতি সচেতন। আমি একজন সাধারন মানুষ। বাংলাদেশের সাথে আমার রক্তের সম্পর্ক ,নাড়ির টান। ফলে আমি চাই সেখানে এমন সরকার অবস্থান করুক যারা আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহর বিধান দ্বারা সবকিছু পরিচালনা করে। কিন্তু বর্তমান পরিস্তিতি এমন আকার ধারন করেছে যখন বলতে হচ্ছে, অন্তত ভিন্ন কেউ আসুক, তারপরও একটু ভিন্ন রকম দেখী ! এসব আর ভালো লাগেনা !

বিষয়: বিবিধ

৫৭২ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

386272
২৮ ডিসেম্বর ২০১৮ সন্ধ্যা ০৭:০৬
হতভাগা লিখেছেন : অবস্থা দেখে যা বোঝা যাচ্ছে তা হল - নির্বাচনে জেতার জন্য আওয়ামী লীগ সব কিছু সিস্টেম করে রেখেছে। এখন সব কিছুই সেরকমভাবে ঠিকঠাক মত কাজ করছে। নিজেরা ক্ষমতায় থেকে গিয়ে সব ফ্যাসিলিটিজ নিয়ন্ত্রন করছে। পুলিশ, র‍্যাব, সেনা বাহিনী, ব্যাংক, মিডিয়া, ইসি ... সবাই এক যোগে স্বতঃপ্রনোদিত হয়ে আওয়ামী লীগের জন্য মাঠ তৈরি করে দিচ্ছে যাতে ৩০ তারিখ আসার আগেই আওয়ামী লীগের ১৫১ সিট কনফার্ম হয়ে যায়।

এরপরেও যদি জনস্রোত নেমে আসে রাস্তায় এবং লাগাতার নৌকার বিপক্ষে ভোট দেয় তাতেও সমস্যা নেই। ভোট গণনা করবে যারা এবং যিনি ফলাফল ঘোষণা করবেন সেই রিটার্নিং অফিসার সংখ্যায় নৌকা কম ভোট পেলেও তাকেই বিজয়ী ঘোষণা করবে।

ভোট কেন্দ্রের আশে পাশে থাকা বিরোধীপক্ষের লোকেরা যদি এ নিয়ে হট্টগোল করে তাহলে র‍্যাব, পুলিশ, হেলমেট লীগ ও ছাত্রলীগ একশনে নেমে যাবে। ৩০ তারিখ রাত ১০ টার মধ্যেই জানা যাবে যে আওয়ামী লীগই ক্ষমতায় থেকে যাচ্ছে।

এরপরেও যদি বিএনপির প্রার্থীর জয়ের খবর একে একে আসতে থাকে তাহলে হুদা সাহেব নির্বাচন বাতিলের ঘোষণা দেবেন এবং পুনঃ নির্বাচনের ঘোষণা দেবেন । সেখানেও সমস্যা হলে অনুগত বাহিনী তো আছেই।

যেন তেন ভাবেই হোক আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে যাবেই এবং এজন্যই তারা সরকারে থেকে নেমে যায় নি।

এরকম পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ কখনই নির্বাচনে তো যেতই না উল্টো দেশে দাঙ্গা ফ্যাসাদ লাগিয়ে দিত।

তাই অবস্থাদৃষ্টিতে বোঝাই যাচ্ছে যে আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় আসা সময়ের ব্যাপার মাত্র।

যদি মহান আল্লাহ তায়ালা ভিন্ন কিছু নির্ধারন করে থাকেন তাহলে সেটা আল্লাহরই এখতিয়ারে।
৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ সকাল ১১:১৯
318169
দ্য স্লেভ লিখেছেন : বিজয় তাদের,,তবে এর পরিনতি ভালোনা
৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ সন্ধ্যা ০৭:৩৭
318176
হতভাগা লিখেছেন : সেনাবহিনী, পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব কর্মকর্তাদের ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত প্রধানমন্ত্রী - Mission accomplished

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File