স্থাপিত কাল্পনীক দেবী থেমিস প্রসঙ্গে

লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ০১ জুন, ২০১৭, ১২:২৭:১৪ রাত

সম্প্রতি একটি টেলিভিশন বিতর্ক দেখলাম,যেখানে হেফাজতের একজন আলেমকে টক শোতে ডাকা হয়েছিলো এবং উপস্থি ছিলো সুলতানা কামাল,অপু উকিল আর ইমরান এইচ সরকার। পুরো বক্তব্যে যা দেখলাম তা হল হাইকোর্টের সামনে স্থাপনকৃত গ্রীক দেবীর ভাষ্কর্যটি স্থাপন করলে সমস্যা কোথায়,,এটা নিয়ে নানান যুক্তি।

"বি:দ্র: হাজার হাজার বছর পূর্বে গ্রীক পুরানে থেমিস নামক এক দেবীকে ন্যায়ের প্রতিক বলা হয়েছিলো। এই থেমিস ইহুদী বা খিষ্ট্রানদের কাছে থাকা আল্লাহ প্রদত্ত কিতাবের বিকৃত অংশ থেকেও আসেনি,ফলে কিতাবীদের কাছেও এর মূল্য নেই। এই দেবী এসেছে স্রেফ এক কল্প কাহিনী থেকে,যার ভিত্তি হল স্রেফ কল্পনা। আর এই কল্পলোকের দেবীকে ন্যায়ের প্রতিক বানানো হয়েছে এবং সেই প্রতিক ৯০% মুসলিমের দেশে ন্যায়ের প্রতিক হিসেবে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানের পাশে স্থাপন করা হয়েছে। "

বৃহৎ মুসলিম গোষ্ঠীর অবেগ অনুযায়ী যদি ন্যায়ের প্রতিক নির্ধারন করতে হয় তাহলে সেই ন্যায়ের প্রতিক হবে সাহাবায়েকেরাম,যুগশ্রেষ্ঠ মুসলিম শাসকগণ,স্মানিত বীরগণ। ইসলামে এমন হাজার হাজার ন্যায়ের বাস্তব প্রতিক রয়েছেন,যারা প্রতিক হবার যোগ্য এবং এটি ইতিহাস,কাল্পনীক নয়। কিন্তু এসবকে আইডল বানিয়ে মূর্তী স্থাপন করা ইসলামের আকীদা নয়,ফলে তা করা হয়নি। কিন্তু এরকম বিশ্বাসী মুসলিমদের বিচার বিভাগ ও নামাজের স্থানের সামনে ভিনদেশী ও কাল্পনীক এক দেবীর মূর্তীকে ন্যায়ের প্রতিক হিসেবে গ্রহন করে স্বসম্মানে স্থাপন করা অধিক সঙ্গত,এমনটাই সুশীল সমাজ বলে গেল এবং কর্মকান্ড সম্পাদন করে গেল। আর এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলা নাকি সাম্প্রদায়ীকতা,অন্ধকারাচ্ছন্নতা,অজ্ঞানতা,অসহিষ্ণুতা !

টক'শোতে দেখলাম অপু উকিল,সুলতানা কামাল ও ইমরান সাহেব ত্রিমুখী আক্রমন করছে উক্ত আলিমকে আর উক্ত আলিম দৃঢ়তার সাথে যুক্তিনিষ্ঠ কথা বলে যাচ্ছেন। কিন্তু কথা হল যে দেবীর আদৌ কোনো অস্তিত্ব নেই,তাকে ন্যায়ের প্রতিক হিসেবে অস্তিত্বে আনা কোন বৈজ্ঞানিক কর্মকান্ড ? এটা কি ইমরান সরকার,অপু আর সুলতানা কামালদের মত অসাম্প্রদায়িক বাঙ্গালী ওরফে বাম নাস্তিকদের বুদ্ধিবৃত্তিকতা ! এরা কি এসব দেবীতে বিশ্বাস করে বা ধর্মে !! আসলে এরা এসব দেবী টেবী মানো। এরা অসাম্প্রদায়ীকতাকে মানে,যদিও তাদের পরিচয় কথার মাধ্যমে তারা প্রকাশ করে কখনও কখনও কিন্তু আমরা নি:সন্দেহে বলতে পারি এরা অন্তত এসব পুরান বা কাল্পনিক কাহিনী বিশ্বাস করেনা। তাহলে এরকম অবাস্তব ন্যায়ের প্রতিক উক্ত ভাষ্কর্যের ব্যাপারে এত এতটা সিরিয়াস কেন ???

কারন হল এই যে, এরা মনে প্রানে প্রকৃতপক্ষেই ইসলাম বিদ্বেষী। আর তাই কাল্পনীক দেবীর পক্ষ নিয়ে যদি ইসলামের বিরুদ্ধাচারন করা যায় ,তাহলে তার পক্ষ কেন নেব না !!! এটাই মূল বিষয়বস্তু,আর কিছু নয়। উক্ত টক'শোতে তারা স্পষ্টভাবে এই ভাষ্কর্য ও সকল ভাষ্কর্য মূর্তীর পক্ষে কড়া অবস্থান নিয়েছে। বারবার বলেছে এটা রাখাই উচিৎ,রাখলে সমস্যা কোথায় ইত্যাদী। বৃহৎ সংখ্যক মুসলিমের মানুষিকতা,তাদের বিশ্বাসের প্রতিফলন অনুযায়ী সমাজের নানান কর্মকান্ড চলুক তা এরা কোনোভাবেই পছন্দ করেনি। বরং এই ভাষ্কর্যকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে সুলতানা কামাল বলেছেন, এগুলো না থাকলে তো মসজিদও থাকা উচিৎ নয় ! মসজিদ থাকবে না এটা বলেননি,কিন্তু যুক্তি প্রদান করতে গিয়ে উনি এটা বলেছেন। এবং উপস্থিত উক্ত ৩ জনের বক্তব্য,আবেগ,অনুভূতী দেখে মনে হচ্ছিলো তারা মূর্তি বা ভাষ্কর্য্য এগুলোকে হেফাজত করতে মরিয়া। বারবার তাদের ভেতরের আবেগ অত্যন্ত আক্রমনাত্মকভাবে প্রকাশিত হয়ে পড়ছিলো।

হেফাজতে ইসলামের উক্ত আলিমকে ধন্যবাদ,তিনি যুক্তিনিষ্ঠভাবে দৃঢ়তার সাথে কথা বলেছেন। যতবার তিনি কুরআন সুন্নাহ থেকে কথা বলে উক্ত ভাষ্কর্য,মূর্তী ইত্যাদীর বিরোধীতা করেছেন। এসব স্থাপনকে শিরকী আকীদা বলেছেন,ঠিক ততবারই ওরা প্রবল আক্রোশে তাদের যুক্তি দিয়ে বাধা প্রদান করেছেন। আফসোস সেসব রং বদলকারী অন্ধকারের মানুষগুলোর জন্যে,যারা ইসলামকে হেয় প্রতিপন্ন করার ক্ষুদ্র একটি প্রচেষ্টাকেও হাতছাড়া করতে চায়না !

"আসমানসমূহ আর যমীনে তিনিই আল্লাহ, তোমাদের গোপন বিষয়াদি আর তোমাদের প্রকাশ্য বিষয়াদি সম্পর্কে তিনি জানেন, আর তিনি জানেন যা তোমরা উপার্জন কর।"(সূরা আনআম:৩)

"আর তাদের কাছে তাদের রবের আয়াতসমূহের কোন আয়াত আসলেই তারা তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়।"(সূরা আনআম:৪)

"অতঃপর অবশ্যই তারা সত্যকে অস্বীকার করেছে, যখন তা তাদের কাছে এসেছে।অতএব অতি সত্ত্বরই তাদের নিকট সেই বিষয়ের সংবাদ(শাস্তি) এসে পৌঁছবে, যে ব্যাপারে তারা ঠাট্টা-বিদ্রুপ করত।"(সূরা আনআম:৫)

বিষয়: বিবিধ

১০০১ বার পঠিত, ১১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

383188
০১ জুন ২০১৭ রাত ০১:০৭
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : শুধু মিডিয়ার মাধ্যমে এই পরগাছাগুলি বেচে আছে। দুর্ভাগ্য আমাদের
০১ জুন ২০১৭ রাত ১০:০২
316466
দ্য স্লেভ লিখেছেন : দূর্ভাগা জাতি
383190
০১ জুন ২০১৭ সকাল ০৫:২৯
পললব লিখেছেন : ভালো লাগল। ধন্যবাদ
383193
০১ জুন ২০১৭ সকাল ১১:২৮
জিহর লিখেছেন : মিডিয়ার অভাবই এখন বড়ো অভাব...! :'(
০১ জুন ২০১৭ রাত ১০:০২
316467
দ্য স্লেভ লিখেছেন : জি তাই হবে
383195
০১ জুন ২০১৭ দুপুর ০২:২৩
মোঃ ওহিদুল ইসলাম লিখেছেন : এদের নির্লজ্জতা দেখে শয়তানও বমি করে। ৪ জন মিলে একজনের কাছে বোল্ড হওয়ার পরও যেভাবে দাঁত কেলিয়ে হাসলে তাতে পতিতারাও লজ্জা পায়।
০১ জুন ২০১৭ রাত ১০:০২
316468
দ্য স্লেভ লিখেছেন : জি,লজ্জা নাই
383199
০১ জুন ২০১৭ বিকাল ০৪:৩৭
ইয়াফি লিখেছেন : এরা শেখ হাসিনার গোঁড়া শুভাকাংখী। অন্য়দিকে শেখ হাসিনা বলছেন ভাস্কর্য অপসারণ করা হয়নি, স্তানান্তর করা হয়েছে।
০১ জুন ২০১৭ রাত ১০:০৩
316469
দ্য স্লেভ লিখেছেন : হুমম
383214
০২ জুন ২০১৭ বিকাল ০৫:০২
স্বপন২ লিখেছেন :
ভালো লাগলো , অনেক ধন্যবাদ
২৩ জুলাই ২০১৭ সন্ধ্যা ০৭:৪৪
316642
দ্য স্লেভ লিখেছেন : জাজাকাল্লাহ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File