আতশবাজির রাতে !!

লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ০৬ জুলাই, ২০১৫, ১২:০৩:৪৪ দুপুর



গতকাল ইফতারির পর বাই সাইকেল নিয়ে বাইরে বের হলাম। রাস্তায় গাড়ি নেই বললেই চলে। রেসিযেন্সিয়াল এরিয়ার প্রত্যেকটি রাস্তায় অধিকাংশ পরিবার আতশবাজি পোড়াচ্ছে। আমার বাসার আশপাশে যে মাত্রার আতশবাজি পোড়ানো হচ্ছে,তা রেখে বড় দুটি স্থানে যাওয়া হল না। সেখানে অবশ্য বিশাল কারবার হয়,হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়। রোজার মাসের কারনে আর দূরে গেলাম না।

আমি এক রাস্তা থেকে আরেক রাস্তায় চলতে লাগলাম ধীর গতিতে। প্রতি সেকেন্ডে বিভিন্ন রাস্তা থেকে আকাশ আলোকিত করে আতশবাজি উঠছে। যদিও ওরেগনের আইন আকাশে বিনা অনুমতিতে আতশবাজি ওঠানোর বিপক্ষে কিন্তু অধিকাংশই এটা মানছে না,মানেও না। পুলিশ টহল দিয়ে যাচ্ছে,তারাও কিছু বলছে না।

আমার বাসা থেকে প্রায় দেড়শ মিটার দূরে বেশ কয়েকজন প্রিতিবেশী মিলে এক ট্রাক আতশবাজি পোড়াচ্ছে। সেখানে গেলাম। গতবার কাছাকাছি যাওয়াতে তারা সকলে আমন্ত্রন করে নানান খাবার খেতে অনুরোধ করেছিলো। খেয়েছিলাম ও বেশ গল্পও করেছিলাম। তারা খুব আন্তরিক। এসময়ে তারা মদ পান করে থাকে। এবার আমি একটু দূরে দাড়িয়ে উপভোগ করলাম। নানান রকমের আতশবাজি,দেখতে ভালো লাগে।

খানিক পর দেখলাম দুই প্রতিবেশীর মধ্যে ঝগড়া শুরু হল। এরপর দেখলাম আরও দুই লোক মারামারি করতে গেল। দূর থেকে বুঝলাম উভয়ের স্ত্রী নিয়ে কি যেন সমস্যা হয়েছে। একজনের স্ত্রীকে দেখলাম মাটিতে বসে স্বামীর দুপায়ে ধরে বসে আছে। মিনতি করছে থামতে। বেশ বিরল দৃশ্য বলা যায়।

বাসার অন্য পাশে গেলাম। সেখানে বড় ও দামী আতশবাজি পোড়ানো হচ্ছে। আমার এই ছোট্ট এলাকাতেই মিলিয়ন মিলিয়ন ডলারের আতশবাজি পুড়েছে। তাহলে সারা আমেরিকায় কত হাজার কোটি টাকার আতশবাজি পুড়েছে তা অনুমান করা যায়।...পার্শ্ববর্তী স্টেট ওয়াশিংটে যে কেউ আকাশে আতশবাজি ছুড়তে পারে। সেখানে আরও বেশী পুড়েছে। ভ্যাঙ্কুভারের একটি বিশাল মাঠে এত পরিমান আতশবাজি পুড়ানো হয়েছে যে ফায়ার সার্ভিস ঘটনার পর পুরো মাঠ পানি দিয়ে ভিজিয়ে দিয়েছে,যাতে আগুনের অস্তিত্ব বিলিন হয়।

এসময়ে মাতাল হয়ে অনেকে সীমা লঙ্ঘন করে। তবে ৩১মে ডিসেম্বর রাত'ই মুলত মাতলামীর বড় আসর। আমি এলাকার লোকদেরকে দেখলাম আতশবাজি পুড়িয়ে রাস্তাটা সুন্দর করে পরিষ্কার করে রাখছে। পুলিশও ঘোষনা করেছে,আপনারা আপনাদের কমন সেন্স ব্যবহার করে আতশবাজি পোড়াবেন। বেশীরভাগ লোকই নিরিহ আর ভালো মনের। কিছু খারাপ ঘটনা ছাড়া এরা শান্তিপূর্ণভাবেই এ বিষয়টি সম্মন্ন করেছে।

এরা এমন এক জাতি,যারা ফুর্তি ছাড়া আর কিছু বোঝে না। জীবনের সবকিছুকে ফুর্তি দিয়ে হিসেব করে। প্রতিদিন এদেরকে দেখে নতুন নতুন বিষয় শিখছি। মানুষের চরিত্রের বৈচিত্রতা দেখছি।

বিষয়: বিবিধ

১১৮৯ বার পঠিত, ১৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

328840
০৬ জুলাই ২০১৫ দুপুর ০১:৫৪
চাটিগাঁ থেকে বাহার লিখেছেন : কি উপলক্ষে ওরা আতশবাজি পুড়াচ্ছিল ?
০৭ জুলাই ২০১৫ দুপুর ১২:৪৬
271213
দ্য স্লেভ লিখেছেন : স্বাধীনতা দীবস।
328849
০৬ জুলাই ২০১৫ দুপুর ০২:৪৭
ছালসাবিল লিখেছেন : ওরা তো মারা যাবার পরেও কফিনে রেখে আবার আসবাব পত্র সাথে দিয়ে দেয় Day Dreaming Big Grin ইশশশ কি যে আররররাম Big Grin Thumbs Up

ভাইয়া, পুটির খালামমা জানের খবর জানতে চাই Loser Eat Love Struck
০৭ জুলাই ২০১৫ দুপুর ১২:৪৭
271214
দ্য স্লেভ লিখেছেন : আপনাকে দাওয়াত করেছে পুটির খালা। আপনাকে একটা বড় ইলিশ মাছ নিয়ে যেতে বলেছে। মাছের সাইজ দেখে কথা হবে....Smug Smug
০৭ জুলাই ২০১৫ দুপুর ০৩:৫৭
271233
ছালসাবিল লিখেছেন : ভাইয়া, Day Dreaming শুধু কি ইলিশে হবে MOney Eyes
এই নিন ইলিশ MOney Eyes



আর আমার পক্ষথেকে একটি অনিরিক্ত নাজরানা গ্রহণ করবেন Love Struck

০৭ জুলাই ২০১৫ রাত ১০:২৯
271258
দ্য স্লেভ লিখেছেন : এইবার হবে মনে হচ্ছে....ছাই দিয়ে ধরব,বৌ পালিয়ে যাবে কই!!!
০৮ জুলাই ২০১৫ সকাল ০৭:০০
271272
ছালসাবিল লিখেছেন : আপনার বউকে আপনি ধরবেন অন্যরটির দিকে যেন নজর না পড়ে হুমমম Smug Smug Rolling on the Floor Tongue
328882
০৬ জুলাই ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:৫৮
শেখের পোলা লিখেছেন : জন্ম ও মৃত্যুর মধ্যেই এরা সীমাবদ্ধ, তাই প্রতি মুহূর্তকে ইনজয় করে৷ আর এদের সবচাইতে বেশী ইনজয় হয় মদ্যপানে৷ ধন্যবাদ৷
০৭ জুলাই ২০১৫ দুপুর ১২:৪৯
271215
দ্য স্লেভ লিখেছেন : ওইটাতেই তো যত মজা। সমস্যা নাই ইনশাআল্লাহ আমরাও শরাব খাব জান্নাতে...আপনাকে দাওয়াত করব। আমার শরাবের নহরের কাছে নিয়ে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেব...Rolling on the Floor Rolling on the Floor
328919
০৭ জুলাই ২০১৫ রাত ০১:১৮
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : স্বাধিনতা দিবস স্বাধিন ভাবে পালন করছে!!
তবু ভাল তারা স্বাধিনতার কিছু স্বাদ পাচ্ছে। তবে যে ঘটনার কথা লিখেছেন তার দ্বিতিয় অংশ এখন বাংলাদেশেও বিরল!!
এই দিনটির উদযাপন এর অন্যতম অনুষঙ্গই বোধহয় কামান চালান ও আতশবাজি পুড়ান। আমেরিকানদের লিখা যত উপন্যাসই পরেছি তাতেই এই ফোর্থ জুলাই এর বণর্না থাকলে এই দুইটা বিষয় আছে।
০৭ জুলাই ২০১৫ দুপুর ১২:৫২
271216
দ্য স্লেভ লিখেছেন : জি সত্য। গত এক মাস থেকে দেখছিলাম প্রত্যেকটা স্টোর বিশাল বিশাল স্তুপ করে রাখা আতশবাজি বিক্রী করছে। এখানে বন্দুক,বাজি পটকা কেনা ব্যাপার না। এসব গোলাবারুদ দিয়ে অঘটনও ঘটে। আমেরিকায় বহু গ্যাং রয়েছে যারা সেনাবাহিনীর মত প্রশিক্ষিত। পুলিশের সাথে নিয়মিত গোলাগুলি করে তারা। তবে সেটা সকল স্টেটে সমান বলবৎ নয়।
329497
১১ জুলাই ২০১৫ রাত ০২:৪১
বৃত্তের বাইরে লিখেছেন : আমাদের ছিল ১লা জুলাই। খালি চোখে দেখতে যতটা সুন্দর ভিডিওতে তেমন আসেনা। দেখলে মনে হয় কোটি কোটি ডলার নিমিষেই পুড়ে শেষ
১২ জুলাই ২০১৫ সকাল ০৯:৪৬
271924
দ্য স্লেভ লিখেছেন : ঠিক বলেছেন। বাজি পোড়ানো আর টাকা পুড়ানো সমান। একজন আবার তার স্ত্রী মরার পর চুল্লিতে পুড়িয়ে যে ছাই পেয়েছিলো সেই ছাই ওই আতশবাজির সাথে উড়িয়ে দিয়েছে। কি আজব !! তা আপনি এতদিন ছিলেন কোথায় ? পুটির মা আপনাকে কতবার দাওয়াত করল....Tongue Tongue
১৪ জুলাই ২০১৫ রাত ০২:০৮
272091
বৃত্তের বাইরে লিখেছেন : পুটির মা কে ধন্যবাদ। কিন্তু খাব কি করে! খাবার তো আপনার পাহারায় ছিলWorried
১৪ জুলাই ২০১৫ রাত ০৪:৪২
272100
দ্য স্লেভ লিখেছেন : আমি অত খারাপ নই। আর পুটির মা তো আরো ভালো। আমরা গরিব মানুষ। একটু পান্তা ,পেয়াজ মরিচ ছাড়া আর কিছু তো দিতে পারব না। কিন্তু আমাদের অতিথী সেবার ইচ্ছা কখনও নষ্ট হয়না Happy Happy

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File