অভিযোগ ও অপবাদের কেন্দ্রে ছাত্রীসংস্থা

লিখেছেন লিখেছেন FM97 ০৩ ডিসেম্বর, ২০১৩, ১১:৫৬:৩৪ সকাল

কিছু ব্লগার ও ফেসবুক ফ্রেন্ডদের দেখি- জামায়াতের female wing ছাত্রীসংস্থাকে তুলোধ্বনি করতে। আরো অবাক করার মতো বিষয় হলো- যারা এমনটি করেন তারা আওয়ামী লীগ/সেক্যুলার/বিএনপি নন, বরং এনারা ইসলামি মাইন্ডেড এবং সংস্কার কর্মী। তবে মাঝে মাঝে মনে হয়- তাদের অপবাদ হয়ত শুধু ছাত্রীসংস্থাকে নয়-বরং ইসলামী মাইন্ডেড প্রত্যেক মেয়েকে অনলাইনে টিজ করার যেন সুযোগ করে দেয়। বিস্তারিত বলার আগে ছাত্রীসংস্থার সাথে আমার সম্পর্কের প্রসঙ্গ তুলে তারপর তাদের বিরুদ্ধে করা কিছু অভিযোগের জবাব দিবো। আশাকরি ধৈর্যের সাথে পড়বেন।

আমি ছাত্রীসংস্থার কর্মী, সাথী কিংবা সদস্য নই। নাই বা আমি জামায়েতের কেউ। তবে ইসলামকে ভালোবাসি, তা প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখি। আর ইসলাম নিয়ে যারা কাজ করে তাদের শ্রদ্ধা করি। সেই হিসাবে আমি ছাত্রীসংস্থাকে শ্রদ্ধা করি। আমার দেখা অনুযায়ী, ছাত্রীসংস্থার মেয়েরা বেশ ভদ্র, শালীন ও সভ্য। তবে সেই সাথে কিছুটা ভীরুও বটে। হ্যা, ভীরু। কারণ, তাদের মধ্যে আমি সংগ্রামী, বিপ্লবী মনোভাব দেখতে পাই নি। যেমনটি আমি আশা করে ছিলাম। কিন্তু তাই বলে লাগামহীন ভাবে আমি তাদের বদনাম করে বেড়াই না, কারণ তাদের প্রতি আমার মায়া লাগে। তবে মাঝে মধ্যে হতাশা এবং ক্ষোভও কাজ করে। ক্যাম্পাসে ফ্রেন্ডদের সাথে আড্ডা দেয়ার সময় তাদের দাওয়াত পাই। আমি দাওয়াত কুবুল করি। যেহেতু তারা ইসলামের কথা বলে- সেহেতু শুনতে অসুবিধা কোথায়? বরং একদিন সমাজতান্ত্রিকও আমাকে ধরে ছিলো, তাদের প্রোগামে যাওয়ার জন্য। গিয়েছিলাম তাদের সমাবেশে (কারণ, তারা ভালো একটি উদ্দ্যোগ নিয়ে ছিলো, এক ছাত্রী হত্যার বিচার চেয়ে মানববন্ধন-যেমনটি ছাত্রীসংস্থাকে কখনো করতে দেখি নি। And I think, this is the fault of Chatrisongstha).

আমি হোস্টেলে থাকি নি, তাই ক্যাম্পাসেই তাদের সাথে দেখা হতো। কয়েকদিন তাদের ‘ক্যাম্পাস মাহফিলে’ গেলেও, হঠাৎ দেখি তারা উধাও। পুরো ক্যাম্পাসের আনাচে-কানাচে তাকাই। কোথাও জটোলা বেধে হিজাবী মেয়েরা বসে আছে কিনা। তবে না, আমি হতাশ। তাদের খুঁজে পাওয়া যায় না। যাই হোক, আলহামদুলিল্লাহ, আমি আমার কু’রআন-হাদিস পড়া চালিয়ে যাই। যেহেতু এক মুসলমানের এটাই দায়িত্ব যে, সে তার ধর্মগ্রন্থকে অর্থ সহকারে পড়ে বুঝবে। আল্লাহ এগুলো দিয়েছেন তাকের ওপর রাখতে না, বরং পড়ে অন্যকে বুঝাতে। যাই হোক, বহুদিন পর ক্যাম্পাসে বোরকা পড়া, নাকে নিকাব দেয়া দুটি আপুকে দেখে আমি চিনে ফেলি (যদিও উনারা আমাকে চিনে নি)। এগিয়ে গিয়ে সালাম দিলাম। তাদের অনুপস্থিতির কারণ জিজ্ঞাস করলাম। বললো- ছাত্রলীগ (তথা ছাত্রীলীগের) জ্বালায় বসতে পারেন না। হ্যা, কয়েকবার নামাজ রুমে বই সাফাই করে (ইসলামী বইকে জঙ্গি বই নাম দিয়ে), ছাত্রীসংস্থার মেয়েকে বহিষ্কার ও লাঞ্ছিত করার ঘটনায় ক্যাম্পাসে ছাত্রীসংস্থা নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছে। যদিও আমার কথা হলো- বিপদ দেখে পালিয়ে যাওয়া নই। তুমি যদি সত্য থাকো তবে থেমে যেও না। সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে যারা বিজয় ছিনিয়ে আনে তারাই বীর। ইডেন মহিলা কলেজ-এত বড় মহিলা ক্যাম্পাস, প্রায় ৩০,০০০ মেয়ের পদচারণা, যাকে ছোট একটা মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় বললে ভুল হবে না-সেই প্রতিষ্ঠানে তোমরা নেতৃত্ব দিতে পারলে না? আমি জানি, মাঠ পর্যায়ে কাজ করা ওতো সোজা নয়। আমি স্বীকার করি। তবে তাই বলে- মনে কি হয় না যে, কোথাও ভুল আছে? ইসলাম প্রচারের পলিসির কি কমতি ছিলো? বুদ্ধিমত্তা কেনো দেখালে না? পুরো ক্যাম্পাস দিয়ে দিলে লীগ আর কমিউনিস্টদের কাছে? মার খেয়ে মরে যেতে, কিন্তু কিছু করে তো যেতে। মার দিয়েছে, চুল টেনেছে, বই তছ-নছ করেছে, বহিষ্কার করেছে-তো কি হয়েছে? তোমাদের বাকী সদস্যরা কেন চুপ রইলো? This is the fault of Chatrisongstha).

সে দিন ছিলো-১৩ই ফেব্রুয়ারি। আপু দুটাকে বললাম-“আমি একটা বিষয়ে আইডিয়া দিতে চাই”। উনারা বেশ উৎসুক হয়ে বললেন- বলো! আমি- “দেখুন, কাল ভেলেন্টাইন ডে। তো,আমি মনে করি, এই দিবস উপলক্ষ্যে সকল মেয়েদের উদ্দ্যেশে ভালোবাসা নিয়ে লেকচার দেয়া উচিত। সুস্থ ভালোবাসা। প্রকৃত ভালোবাসা। আমার কাছে এ বিষয়ে লেকচার রেডি আছে”। তবে তারা আমার কথায় সম্মত হলেও তাদের ধারণা- এই দিবস তো পালন করাই উচিত না। হ্যা, তাদের ধারণা ঠিক। পালন করা উচিত না। কুন এক মি.ভেলেন্টাইন কি করসে- তা নিয়া আমগো কি? এক দিনের এমন ফালতু-মালতু দিন মাইনা কি করুম? খায়া-দায়া কাম নাই? তবুও একটা বিষয় হচ্ছে- যে দিবসটি বিশ্ব জুড়ে প্রতিষ্ঠিত ও প্রচারিত হয়ে গেছে, সেই দিবসকে এই দেশ, এই সমাজ থেকে দূর করা বা বিমুখ করা এতটা সহজ নয়- যতটা সহজ হবে মানুষকে এ দিনের আকাম-কুকাম থেকে দূরে রাখা (ইনশাআল্লাহ)। তাই এ দিনে কোনো অবৈধ সম্পর্কের কথা মনে না করে যুবসামাজ যাতে নিজের স্বামী/স্ত্রী’র সাথে মজা করে-সেই দিকে যুবসমাজের দৃষ্টি আকর্ষণ করাতে হবে। যাই হোক, আমার ধারণা ও বিবেচনা তাদের সাথে না মিলার কারণে তারা এ ব্যাপারে আমার সাথে আর আলোচনা করে নি। যোগাযোগ রাখে নি। তবে আমি একটা জিনিস লক্ষ্য করে দেখেছি- শিবিরের অনেক কার্যক্রম যেখানে simple একটা phone call এর মাধ্যমে হয়, এমনকি তারা নতুন কোনো সমর্থককে যেভাবে খোজ-খবর রেখে আপন করে নেয়-সেই আপন করে নেয়ার tendency ছাত্রীসংস্থার মধ্যে দেখিনি। তাই একজন শুভাকাঙ্ক্ষী হিসাবে আমি মনে করি পুরো ছাত্রীসংস্থার কার্যক্রমকে change করা দরকার। খুবই দুঃখের সাথে বলতে হয়- যারা ইসলামের কথা বলে- তারা এদেশের মানুষকে প্রতিনিধিত্ব করতে পারছে না। তেমনি ছাত্রীসংস্থা ইসলামের কথা বললেও এটাই সত্য তারা বাংলাদেশের পুরো নারী সমাজের প্রতিনিধিত্ব করতে পারে নি। বরং এখানে প্রতিনিধিত্ব করেন সুলতানা ও সারা জাকের গং রা। এদিকে ঢাকার উচ্চবিত্তের পরিবারের হিজাবী মেয়েদের সাথে কয়েকদিন মেলামেশার সুযোগ হয়েছিলো, গিয়েছিলাম তাদের ইসলামী প্রোগ্রামে, ধানমন্ডিতে। প্রায় সবাই ইংলিশ মিডিয়াম থেকে আসা। মন দিয়ে তারা ইসলামের মৌলিক বিষয়গুলো সম্পর্কে জানছে। কথা বলে জানতে পারলাম- তারা ছাত্রীসংস্থাকে like করে না। কারণ- ছাত্রীসংস্থা পলিটিক্যাল করা বলে- যেটা তাদের ভালো লাগে না। তাই, আমি মনে করি- যারা পলিটিক্স বুঝে না। (যেহেতু আমাদের পরিবার থেকে ছোটবেলাতেই ব্রেনে ঢুকিয়ে দেয়া হয় যে- এদেশের রাজনীতি-নোংরা রাজনীতি। তাই অনেক পরিবারের ছেলে-মেয়েরা রাজনীতিকে ভয় পায়, তারা জড়াতে চায় না, তবে তাদেরকে যদি রাজনীতি ছাড়া লেকচার দেয়া যায়- তখন দেখা যায় তারা খুব পছন্দ করে), তাই শুরুতেই তাদের সামনে সেই প্রসঙ্গ না তোলাই উত্তম। আমরা এটা জানি যে, সর্বশেষ সমাধান হলো রাজনীতিতে ইসলাম প্রতিষ্ঠা- তবে যারা এখন পর্যন্ত এটা বুঝলোই না, তাদের সামনে আগে থেকেই সেই শেষ থেকে না শুরু করে সহজ কথাগুলো উপস্থাপন করা উচিত। সবাই যে, প্রধানমন্ত্রী হবে তাও কিন্তু না, কেউ হবে সমাজ সংস্কারক, তো কেউ হবে লেখক, ইত্যাদি ইত্যাদি। তাই সেই হিসাবে ইসলামকে উপস্থাপন করতে হবে।

এবার আরেকটা সিরিয়াস বিষয় এর ব্যাপারে আসি। অনেক সময় রাস্তায় লাঞ্চিত হওয়ার ভয়ে simple একটা মানববন্ধন পর্যন্ত করতে ছাত্রীসংস্থার মেয়েরা রাজি থাকেন না-অথচ মিশরে আমাদের ইসলামী বোনেরা বন্দুকের গুলি উপেক্ষা করে অন্যায়ের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলে দলে দলে জেলে যেতে এমনকি হাসিমুখে মরে যাতে দ্বিধা করে না। আমরা কি সেই ভাবে চিন্তা করে দেখছি? ইন্দোনেশিয়ায় আমাদেরই মুসলিম বোনেরা প্ল্যাকার্ড নিয়ে সুন্দরী প্রতিযোগিতা বন্ধের জন্য নাড়া লাগিয়েছে। শেষে ইন্দোনেশিয়া সরকার মানতেও বাধ্য হয়।



জানি, আমাকে বলা হবে- “এটা ইন্দোনেশিয়া না, এটা বাংলাদেশ। হ্যা, ঠিক আছে তবে নিজের চোখের সামনে অন্যায় হতে দেখে কি চুপ করে থাকবো? যে ইসলাম শিখিয়েছে- হাত দিয়ে না হয় মুখ দিয়ে করো, তাও যদি না পারো মন দিয়ে অন্যায়কে ঘৃণা করো-তবে শুধু মন দিয়ে ঘৃণা করা দূর্বল ঈমান। তবে আমরা কি দূর্বলই থেকে যাবো? আমরা কি সবল হবো না? আমি তো গাড়ি ভংচুড়, অগ্নিসংযোগ কিংবা রাস্তায় ধস্তাধস্তির কথা বলছি না, অন্তত নিজের অধিকার নিয়ে একটা মৌন মিছিলই না হয় হোক, প্ল্যাকার্ড, ব্যানার নিয়ে দাঁড়াতে সমস্যা কোথায়? কে বলেছে নিজস্ব ব্যানারে দাঁড়াতে? নাম বদল করে হলেও নিজের কথা জাতির কাছে পৌঁছাতে হবে। কিন্তু এসবে ছাত্রীসংস্থা চুপ। This is the fault of Chatrisongstha.

এতক্ষণ ছাত্রীসংস্থা সম্পর্কে নিজের মন্তব্য আলোচনা করছিলাম- এবার তাদের ওপর যেসব অপবাদ দেয়া হয়- যেগুলোকে আমার কাছে অতিরিক্ত, অতিরঞ্জিত ও অহেতুক মনে হয়- তা নিয়ে বলবো। ইসলামপন্থি ও তথাকথিত সংস্কারকর্মীরা যারা সুষ্ঠ সমাধান না জেনে একতরফাভাবে উত্তেজিত হয়ে ফেবুতে স্ট্যাটাস বা ব্লগ লিখে জনগণ ও সাধারণ ইসলামীমনা ছেলে-মেয়েদের বিভ্রান্ত করছেন- তাদের অভিযোগ হচ্ছে-

১/ ইসলামী মাইন্ডেড মেয়েরা social network এ active না।

২/তাদের সাথে খোলা মন নিয়ে ফেবুতে কথা বলতে চাইলে, তারা reserve থাকে।

৩/ছাত্রীসংস্থার মেয়েরা নফল পর্দা তথা নিকাব দেয়া নিয়ে ব্যস্ত থাকে।

তাদের অভিযোগগুলো নিয়ে আলোচনা করার আগে আমি একটা জিনিস পরিষ্কার করে বলতে চাই যে, আমাদের সমাজে একটা বিষয় বেশ লক্ষ্যণীয় যে- কোনো ছেলে যদি টাখনুর উপরে প্যান্ট পড়া শুরু করে, মুখে দাড়ি রাখা শুরু করে, হাদিস-কু’রআন পড়ে সেই আলোকে জীবন গড়তে শুরু করে, তখনই শিবির না করলেও সমাজের লোকেরা তাকে ‘শিবির’ নাম দিয়ে দেয়। তেমনি একটা মেয়ে যখন হাদিস-কু’রআন পড়ে জীবন গড়তে শুরু করে, হিজাব পরে, নিজের অধিকার নিয়ে ইসলামের আলোকে বলতে শুরু করে-তখন সে ছাত্রীসংস্থার না হলেও তাকে ‘ছাত্রীসংস্থা’ বলে দেয়া হয়। এই কথাগুলো বললাম এই কারণে যে, উপরের অভিযোগগুলো শুধু ছাত্রীসংস্থার উপর নয় বরং ইসলামী মাইন্ডেড মানুষের উপর ও বর্তায়।

১ নং অভিযোগটা ছাত্রীসংস্থা নয়-পুরো নারী সমাজের জন্য সত্য। তবে একতরফা ভাবে নারীদের দোষ দিয়ে এমনটি বলা ঠিক নয়। কারণ- তাদের পরিবার, পরিবেশ এটার পিছনে দায়ী। সোস্যাল মিডিয়ায় মেয়েদের সংখ্যা কম আর থাকলেও অধিকাংশরা তথাকথিত আধুনিক মনা। কেউ আছেন ফোটোশেয়ারিং নিয়ে (পুরাই পাবলিক শেয়ারিং, যেটা তাদের জন্যই সেফটি নয়), কেউ আছেন ফ্যাশন জগত নিয়ে, তো কেউ আছেন বিনোদন নিয়ে, কেউ আছেন শুধু বন্ধুদের সাথে টাইম পাস। অর্থবহ কাজকাম খুব কম করেন। আবার কিছু মেয়ে আছেন- ফেবুতে অচেনা কারো সাথে লটর-পটর এ জড়িয়ে পড়েন। (যেখানে ছেলে-মেয়ে উভয়ই দায়ী)। তবে আমি কিছু ইসলামী মাইন্ডেড মেয়েদের দেখি অনলাইনে অবিরাম চেষ্টা করে যেতে, ফ্রেন্ডের ভালো কিছু বিষয়ের প্রতি আহবান করতে বা জানাতে। তারা সংখ্যায় কম হলেও আমি শুধু তাদেরকে দোষারোপ না করে, তারা যাতে অহেতুক ঝামেলা, অযুহাত ফেলে অনলাইনে শক্ত অবস্থান করতে পারেন, প্ল্যাটফর্ম পান, সেই দোয়া করি।

২ নং অভিযোগ যারা করে, তাদের ইসলামের জ্ঞান নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। তাদের অভিযোগ ইসলামী মাইন্ডেড মেয়েরা অসামাজিক, চাপা স্বভাবের, দিল খোলা টাইপের না। পরোক্ষভাবে তারা হয়ত বুঝাতে চান- তাদের সাথে কথা বলতে চাইলে তারা কেনো কথা বলে না। আসলে,জনসম্মুখে কথা বলা আর ফেবুতে মেসেজ দিয়ে কথা বলার মধ্যে অনেক পার্থক্য আছে। ফেবুতে যখন আপনি পরপুরুষ কিংবা পরমহিলার সাথে কথা বলতে যাবেন তখন তৃতীয় ব্যক্তি হিসাবে শয়তান আপনার সাথে থাকবে, যে আপনার আবেগ নিয়ে খেলবে। হয়ত আপনি ভালো মনোভাব নিয়ে কারো সাথে কথা বলা শুরু করেছেন, তবে কখন যে কি হয়ে যায়-সেটা বলা মুসকিল।বিশেষ করে অবিবাহিত জীবনে বিপদটা একটু বেশিই থাকে। বেশি দিক খোলা হইতে গেলে কোথায় যে দিল আটকে যায় সেটার কি ভরসা? জানি, অনেক সময় কিছু মানুষের স্ট্যাটাস বা নোট আমাদের আকর্ষণ করে।ইচ্ছা জাগে, আমার জীবনসঙ্গী যদি এমন হয়- তাহলে হয়ত ভালো হয়। সেই আগ্রহ নিয়ে অনেকে মেসেজ দিয়ে অপরপক্ষকে বুঝতে চেষ্টা করে, যদিও আমার কথা হলো আপনি যদি টেস্ট মিশনে নামবেন তাহলে একটা মানুষকে টেস্ট করার মিশন কখনোই সম্পূর্ণ হবে না। কারণ সারা জীবনেও একটা মানুষকে বুঝা যায় না। তাই কাউকে ভালো লাগলে সরাসরি বলে ফেলে মা-বাবা নিয়ে দেখা করার পক্ষেই আমি বলি। পছন্দ হলে হলো, না হলে না। ইসলামকে কঠিন মনে করে অবৈধ রাস্তায় না চলে জীবনটাকে সহজ করা উত্তম। এদিকে, সবাই যে, ফেবুতে নিজের সঙ্গী খুঁজে ফিরবে তাও না। সেই ক্ষেত্রে কাউকে যদি কিছু বলতেই হয়- পক্ষে কি বিপক্ষে তাতো স্ট্যাটাসেই বলা যায়। কিংবা নোটে। হ্যা, অনেক সময় কোনো বিষয়ে জরিপ চালাতে গিয়ে বা মতামত নিতে গিয়ে মেসেজ দিয়ে জিজ্ঞাস করা যায়- যে, “এ ব্যাপারে আপনার মতামত কি? বা কিভাবে এটা করা যায়। যেহেতু আপনাকে একটিভ দেখি”। তবে এটা মাথায় অবশ্যই রাখতে হবে, প্রয়োজন ছাড়া পরমহিলা/পুরুষের সাথে কথা বলা ঠিক নয়। এটাই ইসলামের পথ, শান্তির পথ। অহেতুক নিজের আবেগ নষ্ট করে কারো সাথে লারেলাপ্পা খেলার কোনো মানেই হয় না।

৩ নং অভিযোগে যারা মেয়েদের নিকাবের পিছনে পড়ে থাকে। তারা ছাত্রীসংস্থাকে উদ্দেশ্য করে বললেও ছাত্রীসংস্থার বাইরে এমন অনেক নারীকে দেখেছি- যারা নিকাব দেন। এদিকে আমরা জানি, নিকাব নিয়ে আলেম সমাজে মতভেদ আছে। তাই অনেকে পড়েন আবার অনেকে পড়েন না। সেটা মেয়েদের ব্যাপার। তারা যদি নিকাবকে তাদের জন্য আরো উত্তম মনে করেন তাহলে করুন, এতে আমার বলার কিছু নেই। তবে আমি বুঝি না, মেয়েদের সমস্যা না হলেও সেই সব ভাইদের কি সমস্যা নিকাব নিয়ে? অনেকে তো নিকাবকে প্রগতির অন্তরায়, অন্ধত্ব ইত্যাদি নাম দিয়ে দেন, তবে আমার মতে- এটা কি নারীদের স্বাধীনতার উপর হস্তক্ষেপ নয়? অবশ্যই হস্তক্ষেপ। তাদের ইচ্ছা তারা পড়ুক না পড়ুক। হ্যা, আমরা তাদেরকে ফরজ পর্দার ব্যাপারে তাগিদ দিতে পারি, কিন্তু নিকাব পড়া নিয়ে বা খোলা নিয়ে জোর করার মতো কিছু দেখি না। যেহেতু নিকাব নিয়ে কথা উঠেছে- তাহলে বলবো- খুব খারাপ লাগে যখন দেখি হেভি মেকআপ দিয়ে কোনো পার্টিতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে একটা মেয়ে বাসা থেকে রাস্তায় বের হয়- সে মাথায় কাপড় দিয়ে থাকলেও তার মুখের হেভি মেকআপের সৌন্দর্য রাস্তায় থাকা সব ছেলেদের আকর্ষণ করে আর তারা তাকিয়ে থাকে। তো সেই ক্ষেত্রে আমার কাছে মনে হয়- মেকআপ দিয়ে পার্টিতে যাওয়ার সময় নিকাব দেয়া ভালো। শেষে পার্টিতে গিয়ে মেয়েদের সামেনে খুলে ফেললেই হয়। তাছাড়া এমনিতে নিকাব দিয়ে চলার তেমন প্রয়োজন মনে করি না।

পরিশেষে- শ্রদ্ধেয়, ছাত্রীসংস্থার আপুরা। কিছু সমালোচনা করার কারণে আমি যদি আপনাদের মনে কষ্ট দিয়ে থাকি তাহলে I am sorry.আমি চাই- এদেশের নারীরা যারা কু’রআন--হাদিস অধ্যয়ন করে, প্রকৃত অর্থে নিজেদের অধিকার বুঝে, সমাজকে সুন্দর পথে পরিচালনার স্বার্থে কাজ করতে চায়, সমস্যাগুলো উপলব্ধি করে- তারা যাতে অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। এগিয়ে যায়। নারীদের প্রতিনিধিত্ব করে। আপনাদের সংগঠনের মধ্যে সমস্যা দেখে তাই না বলে আর থাকতে পারলাম না। এদিকে মাঝে মধ্যেই মনে হয়- মেয়েদের একটা নতুন সংগঠন তৈরি করা উচিত। যাদের কাজের ধরণ ও ক্ষমতা হবে আকর্ষণীয়

বিষয়: বিবিধ

২৮২৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File