ইসলামী সংগঠনে উদারতার ব্যালেন্সঃ অতি ধার্মিকতা বা অতি রাজনতিকতার বিষমুক্তি

লিখেছেন লিখেছেন সময়ের কথা ১৯ নভেম্বর, ২০১৩, ১০:৩৬:২৩ রাত

আমার চোখ কান খোলা একটু কম। তাই বেশী কিছু দেখি না। তবে ইসলামী ছাত্রশিবির করা কালীন সময়ে সামান্য যা দেখেছি তাতে কিছু বিষয় মনে আসছিল। যদিও প্রকাশটা বুঝতে পারছিলাম না।

পরে জামায়াতের স্থায়ী কর্মনীতি বা বৈশিষ্ট্য এই দুটি বইয়ের কোণ একটি বইতে একটি কথা পেয়েছিলাম যা আমার মনে হয়েছে ছোট কথায় অনেক কিছু প্রকাশ করে। তা অনেকটা এই রকম, সংগঠনে অতি সাংগঠনিক (ধার্মিক) বা অতি রাজণৈতিক এই দুইধরনের মানষিকতার কিছু মানুষ পাওয়া যায়।

অতি সাংগঠনিকদের ভিউ হল কেউ না আসলে একলা চলব, কিন্তু নিয়মের কোন ছাড় হবে না। ১২০ টা ইসলামী বই আছে শিবিরের সদস্য সিলেবাসে, একটাও পড়া মিস হলে সদস্য শপথ হবে না, অর্থাৎ সদস্য হতে পারবে না। নামাজ গত ৬ মাসে ১ ওয়াক্ত কাজা হলেও শপথ হবে না। দাড়ী না রাখতে পারলে শপথ দেয়ার কি দরকার। যে দাড়িই রাখতে পারে না সে কিভাবে ইসলামী আন্দোলনের বোঝা না হয়ে কর্মী হবে, ইত্যাদি।

অন্যদিকে, অতি রাজনৈতিক যারা তাদের দৃষ্টীভঙ্গী হল, মানুষের জন্যেই এই ইসলাম, এই সংগঠন। তাদেরকে আনার জন্যে প্রয়োজনে কিছু ছাড় দিতে হবে। সহজ করতে হবে। রাসুল (স) উদার ছিলেন, ইসলামও উদারভাবে মানুষকে ডেকেছে। ক্লোজড না হয়ে ওপেন হতে হবে। প্রয়োজনে প্রাথমিকভাবে মানুষের মন জয় করার জন্যে কিছু মৌলিক বিষয়েও ছাড় দিতে হবে। এই জাতীয় কথা বার্তা।

কিন্তু বইটিতে উপসংহার টানা হয়েছিল এইভাবে যে, সংগঠন সব সময় এই দুটী এক্সট্রিমের (বা বাড়াবাড়ির) মাঝামাঝিতে থাকে, এবং সে ধরনের কর্মীরাই সংগঠনের মেরুদন্ডের মত যারা এই দুটোর মাঝে ব্যালেন্স করে চলে।

ফিকহী এখতেলাফ (শরীয়তের বিধানের মতপার্থক্য) বা ইসলামী স্কুল অফ থটের কিছু কিছু পার্থক্যকে একোমোডেট করার ক্ষমতা ইসলামী ছাত্রশিবির বা জামায়াত ইসলামীর আছে। দাড়ির মাসায়ালা, বা আরো অনেক মাসালায়া সংগঠনের এক এক জন এক এক ভাবে পালন করে। কেউ ভিন্ন স্কুল অফ থট ফলো করে করেন, কেউ ব্যক্তিগত দুর্বলতার কারনে তা করেন। তাই বলে এগুলো নিয়ে সংগঠনের সাথে বিতর্ক হবে, বা দায়িত্বশীল কেন মানে না এই জন্যে আমি আলাদা হয়ে গেলাম ধরনের চিন্তা যারা করে তারা আসলে ইসলামী সংগঠনের মর্মকথাই বুঝে না। রাসুল (স) এর বিস্তারিত জীবনী তারা কখনো পড়েছে বলেও আমার বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়।

আমাদের মাঝে অনেকেই মুক্ত চিন্তা করতে পারে না। অথচ, মুক্তচিন্তা ছাড়া ক্রিয়েটিভিটী আসবে কিভাবে! সংগঠনও সবসময়ই মুক্তচিন্তাকে প্রাধান্য দেয়ার দায়িত্ব নিয়ে থাকে। এটিই ইসলামী ছাত্রশিবির বা জামায়াত ইসলামীর মত সংগঠনগুলোর সাথে ট্রেডিশনাল সংগঠন যেমন তাবলীগ, হিজবুত, সালাফী বা কওমী চিন্তাধারার পার্থক্য।

পরিশেষ, অতি ধার্মিকতা এবং অতি রাজনৈতিকতার ব্যালেন্স করতে হবে, ব্যালেন্স। এটিই ইসলাম, এটিই সংগঠন, এটিই দ্বীনের উদ্দেশ্য। ব্যালেন্স এবং ব্যালেন্স। যারা এটি করতে পারে তারা ইসলামেও মজবুতভাবে থাকে, সংগঠনেও মজবুতভাবে থাকে। যারা সরে যায় বা না বুঝে সমালোচনা করে তাদের মাঝে ব্যালেন্সের বা জ্ঞানের ঘাটতি রয়েছে।

Rose Rose Rose

---------------------------

ইসলামী সমাজ কায়েমে যারা বাস্তবতা নয় বরং অলীক স্বপ্নকে আকড়ে থাকে আর মুসলিমদের মাঝে উগ্রতা বা বুজদীলীর বিষবাষ্প ছড়ায় তাদের উদ্দেশ্যে একটি পোষ্টঃ যেদিকে তাকাই ফতোয়াবাজদের বসন্তঃ মিশর নাকি ফেইলড কেস, আসলেই কি তা? তাহলে সাকসেস কেস কোনটা?

একটি বারুদ পোষ্ট, চিন্তাকে কিছুটা নাড়া দেবে আশাকরিঃ মুসলিম হিসেবে ডাঃ জাকির নায়েককে শ্রদ্ধা করা গেলে, মাওলানা মওদুদী বা নিজামীকে নয় কেন?

তামীম ইকবালের বিয়েতে মাওলানা নিজামীর উপস্থিতি নিয়ে একটি স্বপ্নচিত্র আকা হয়েছে এই পোষ্টটিতেঃ তামিমের বিয়েতে সপরিবারে মাওলানা নিজামীঃ কেসস্টাডি

ইসলামে গোড়ামীর কোন স্থান নেই। তাই গোড়ামীর জাল ছিন্ন করে সঠিক চিন্তায় ইসলামের সৌন্দর্যকে তুলে ধরার প্রচেষ্টা দেখুন এই পোষ্টেঃ গোঁড়াদের ঘোড়সওয়ারী ও তীরন্দাজীর ইসলাম বনাম বুঝদারদের ক্রিকেট-ফুটবল সমেত ইসলাম

ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান নিয়ে অনেকের প্রশ্নের অন্ত নেই। শিয়া-সুন্নীর বিভেদ কেবল নয়, বরং কাফির-মুসলিমের বিভেদে গিয়েও আলোচনা শেষ হয় না। ইরান নিয়ে কিছু চিন্তাকর্ষক কথা পড়ুন এক নিঃশ্বাসেঃ ইসলামী ঐক্যের ভিত্তিঃ ইরান প্রসঙ্গে আলোচনা

ইসলামের সঠিক বুঝ পাওয়ার ক্ষেত্রে এই পোষ্টটিতে কিছু চিন্তাকর্ষক পয়েন্ট তুলে ধরা হয়েছেঃ ইসলামের যুগ বা জাতিবদ্ধতার বিশ্লেষনঃ ইসলাম কি আরবীয়, মধ্যযুগীয় বা প্রাচীন যুগীয়

আমার ফেসবুকঃ Mohamad Ahsanul Haque Arif

বিষয়: বিবিধ

১৪৩০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File