লেখা নয় যেনো তথ্য বোমা!!!

লিখেছেন লিখেছেন চেতনাবিলাস ০৪ এপ্রিল, ২০১৮, ০৭:৫০:২৩ সন্ধ্যা

খালেদাকে নিয়ে কী কী ঘটবে?

মিনা ফারাহ

রাজনীতির হিমালয় থেকে সঙ্কুচিত করতে করতে বিএনপিকে বানিয়েছে- ভিক্ষা চাই না, কুত্তা সামলাও। আসলেই খালেদার ক্ষেত্রে ভোট চাই না, কুত্তা সামলাও বলাই যুক্তিযুক্ত। ১০ নম্বর সতর্কসঙ্কেতের খাদে এবং ফাঁদে পড়া বিএনপির অশনিসঙ্কেত বোধহয় সবচেয়ে বেশি আমিই লিখেছি। নির্বাচন কমিশন, নির্বাচন এবং আইনের শাসন বাস্তবে বহু আগেই অকার্যকর। ডিজিজ টার্মিনাল নাকি নরমাল- প্রসঙ্গটি তুলে বিএনপি ধ্বংসের শেষ ধাপ জানিয়ে দেয়া হলো। আন্দোলনের হিমালয় থেকে নেত্রী এখন সুস্থ-অসুস্থতার আলোচনায় সঙ্কুচিত। অন্যজন ভোট চেয়ে সরকারি টাকায় সারা দেশ চষে বেড়াচ্ছেন। এটা নাকি তার অধিকার। অধিকার শুধু আওয়ামী লীগেরই। সত্য কঠিন হলেও সত্যেরই জয়। Vulgarism জাতির বিবেক ও নীতি-নৈতিকতা ধ্বংস করেছে। বাস্তবে গণতন্ত্র নেই, স্বেচ্ছাচারী শাসন। মূল প্রসঙ্গে যাওয়ার আগে কয়েকটি কথা।

১.

২০১৮ সালের ২৬ মার্চ অবিশ্বাস্য ঘটনা ঘটালেন হাইকমান্ড। সেক্টর কমান্ডারের স্ত্রীকে জেলে ভরে, সদলবলে সে দিন সাভারে! ২১ ফেব্র“য়ারিতেও তাই। ২) ৪৭ বছরে এই প্রথম সোভিয়েত ইউনিয়নের মতো স্বৈরশাসকের তালিকায় বাংলাদেশ। ’৭১-এর মৌলিক গণতন্ত্র এখন যেন ‘কমিউনিস্ট গণতন্ত্র’।

জিয়া মুক্তিযুদ্ধের বীর উত্তম পদকপ্রাপ্ত সেক্টর কমান্ডার; সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং বিএনপির প্রতিষ্ঠাতাও। তার স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং বিরোধীদলীয় নেত্রীও। ২০১৮ সালে একা হাইকমান্ডের স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে লজ্জিত নই। লজ্জিত এ কারণে, সে দিন গোটা জাতিই চুপ।

মুক্তিযুদ্ধে অবদান নিয়ে সামান্য আলোচনা। সত্যি হলো, আওয়ামী লীগের বেশির ভাগ নেতাই প্রতিরোধ যুদ্ধ না করে পালিয়ে গিয়েছিলেন। ওপারে অনেকেই কলকাতায় বিলাসী জীবনযাপনে ব্যস্ত ছিলেন। এমনকি এ দিকে, সেই ৯০ লাখ ছাড়া বাকিরা দেশেই। অনেক চিহ্নিত রাজাকার এখন মুক্তিযোদ্ধার পরিচয় দেন। অভিযোগ পার্লামেন্টেও নাকি তাদের উপস্থিতি।

অন্য দিকে, প্রথম দিন থেকেই সশস্ত্র সংগ্রামে লিপ্ত হওয়ার অপরাধে জিয়াউর রহমানের গোটা পরিবারকেই ক্যান্টনমেন্টে বন্দী করে রেখেছিল পাকিস্তানিরা। প্রধান নেতা তখন কী কারণে ৯ মাস পাকিস্তানে, ৪৭ বছরেও পরিষ্কার নয়। ঢাকায় পুরো পরিবারের সাথে পাকিদের নমনীয়তা রহস্যপূর্ণ। সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ, আহমদ ছফা, বদরুদ্দীন উমরসহ অনেকেই বিষয়টির ওপর জোর আলোকপাত করলে বইগুলো হয় নিষিদ্ধ, নয় উধাও। হুমায়ূনের সর্বশেষ ‘দেয়াল’ বইটি কয়েক দফা কাটাছেঁড়ার আগে তৃতীয় সংস্করণটি আমার হাতে। সেখানে ড. ওয়াজেদ মিয়া এবং রাওফরমান আলীর একসাথে চা-নাশতা খাওয়ার কথা পড়ে দুই চক্ষু চড়কগাছ। এগুলো অনেকের অবস্থান পরিবর্তনের কারণ। ১৯৭১ সালে নিজে কিশোরী ও রিফিউজি হওয়ায় সত্যতা খুঁজে পেতে কষ্ট হয়নি। বরং নিজেকে বলেছি, পাকিরা খুঁজে খুঁজে শুধু হিন্দু আর মুক্তিযোদ্ধাদের মারল; কিন্তু শহরে এত বড় টার্গেটকে আদর-যতনে রাখা হলো? পরিবারটির প্রতি পাকিদের যে দরদ, কিঞ্চিৎ পেলেও সংখ্যালঘুদের অবস্থা হলোকাস্টের হতভাগ্য রিফিউজিদের মতো হতো কি?

২৬ মার্চ থেকে পুরো ৯ মাস জিয়া কোথায় ছিলেন; সবাই জানে। রণাঙ্গনের সৈন্যদের গড়ৎধষ অটুট রাখতে, নেতৃত্বহীনতার উৎকণ্ঠা দূর করতে ২৭ মার্চ কালুরঘাটে কী করেছিলেন, সামাল দিতে আওয়ামী লীগ হিমশিম খেলেও পাবলিকের কষ্ট হয় না। নেতা ছাড়া যুদ্ধ হয় না। অনাদিকাল থেকেই যার প্রমাণ। উদাহরণস্বরূপ, ‘দ্বাপর’ যুগে কুরুপাণ্ডবের যুদ্ধে, দোটানা মনের অর্জুনকে যুদ্ধে গড়ঃরাধঃবফ করতে স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণের মুখ থেকে নিঃসৃত যুদ্ধের আধ্যাত্মিক নির্দেশনাই, ভগবত গীতা। সুতরাং ৯ মাস রণাঙ্গনে জিয়া ঘুমিয়েছিলেন নাকি কালুরঘাটে যাওয়ার পথে ভুলে কলকাতায় উপস্থিত হয়েছিলেন, এই বিতর্ক অতীত।

‘বীর উত্তম’ পদকটি সশস্ত্র সংগ্রামের পুরস্কার। এটি নিজ হাতে দিয়েছিলেন বরং মুজিব। জাদুঘর থেকে পদকটি সরিয়ে প্রমাণ করা হলো, পদকটি যেমন ভুল; যিনি দিয়েছিলেন তিনিও ভুল। বিএনপির জন্মের পর থেকে স্বাধীনতা দিবসসহ প্রতিটি ঐতিহাসিক দিবসেই সব দল এক কাতারে। ব্যতিক্রম এবারের ২০১৮। যখন একাই জাতীয় দিবস ২১ ফেব্র“য়ারি এবং ২৬ মার্চ উদযাপন করা হয়, তখন মুক্তিযুদ্ধের এক রকম অমর্যাদাই ঘটে। তাতেও লজ্জিত নই। লজ্জিত এ কারণে, সে দিন একজন মুক্তিযোদ্ধাও তাদের সহ মুক্তিযোদ্ধাকে অপমানের বিরুদ্ধে সাভারে যাওয়া থেকে বিরত থাকেননি। একজন নারী মুক্তিযোদ্ধাওÑ বিধবা, বয়স্ক, পুত্রশোকাকুল নারীকে কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের মতো অবস্থায় রাখার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেননি। একজন পুরুষও নারীর প্রতি অসম্মানের লজ্জায় মুখে কালো কাপড় দেননি।

একটি ঐতিহাসিক উদাহরণ। ’৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের প্রতিবাদে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের হিন্দুরা সিদ্ধান্ত নিলেন, মূর্তির বদলে ঘটে দুর্গাপূজা হবে। এই খবরে বিচলিত স্থানীয় প্রশাসন আমার পিতাসহ অন্য হিন্দু নেতাদের সাথে বৈঠক করলেও কাজ হলো না। এভাবেই অত্যাচারীদের বিরুদ্ধে নীরব প্রতিবাদ করেছিলেন সংখ্যালঘুরা।

জেলে এমনকি পকেটমারও স্বাধীনতা দিবসে ভালো আচরণ পায়। দিবসগুলোতে সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে কয়েক ঘণ্টার জন্য জামিন দেয়া যেত না, বিশ্বাস করি না। এমনকি ‘আগরতলা’ এবং ১/১১-এর হন্তারাও জামিন দিত। বর্তমান ফিন্যান্সিয়াল ক্রিমিনালদের তুলনায় খালেদা কত বড় ক্রিমিনাল- প্রশ্ন দুদক ও অ্যাটর্নি জেনারেলকে।

দুদক জানে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৮০ মিলিয়ন ডলার মেরে দেয়া হয়েছে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায়। রিপোর্ট এফবিআই-এর। আইনমন্ত্রী এবং অ্যাটর্নি জেনারেল জানেন, এতিমের টাকা অ্যাকাউন্টেই। প্রতিটি ফিন্যান্সিয়াল ক্রিমিনালের দেশে-বিদেশে বাড়ির ঠিকানা দুদকের হাতে; অথচ প্রমাণবিহীন মামলায় খালেদাকে জেলে পাঠানো নিশ্চিত করল দুদক। একই আইনে বার্ষিক গড়ে ৭৬ হাজার কোটি টাকা পাচারকারী ফিন্যান্সিয়াল ক্রিমিনালরা মুক্ত কিভাবে- টক অব দ্য টাউন। অর্থমন্ত্রীকে মিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন- জনতা ব্যাংক বারকাত শেষ করে দিলেন, কার বিচার জরুরি? তারপরও খালেদা জেলে। ৯ বছর ধরে একমাত্র জোট সরকারের ওপরেই তারা যেন বিশ্বযুদ্ধে কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের মতোÑ বিচার বিভাগের অস্তিত্ব পরীক্ষায় লিপ্ত।

বিচার বিভাগের ওপর সরাসরি হস্তক্ষেপ নিয়ে দু’কথা না বললে কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের উদাহরণটি পরিষ্কার হবে না। ‘এস কে সিনহা যখন দৈত্য, যখন দেবতা।’ সুপ্রিম কোর্টের সর্বোচ্চ রায়মাফিক ১৫৪ জন অবৈধ এমপির পদত্যাগসাপেক্ষে সংসদ ভেঙে দিয়ে অস্থায়ী সরকারের অধীনে ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা। একজন ছাড়া সব অ্যামিকাস কিউরি এবং বিজ্ঞ বিচারকদের অকুণ্ঠ সমর্থনে রায়, ‘১৫৪ জন এমপি অবৈধ।’ আপিল, রিভিউ পিটিশন চলতেই পারে। আদালতের সর্বশেষ গণ্ডি পার হলে উভয় পক্ষকেই রায় মানতে হবে। অর্থাৎ সংসদ বাতিল করে নির্বাচন। খালেদার বেলায় আদালতকে যারাই মাথায় তুললেন, তারাই কিন্তু আপিল খারিজ হওয়ার সাথে সাথে সংসদে এবং বাইরে এস কে সিনহার বিরুদ্ধে রীতিমতো যুদ্ধ ঘোষণা করেন। ওইসব ফুটেজ আর্কাইভে। এরই ফলে সিনহার দেশত্যাগ। এরপর আকাশ থেকে পদত্যাগপত্রের অবতরণ। দুদককে প্রশ্ন- বিচার মানি, কিন্তু তালগাছটা কি অ্যাটর্নি জেনারেলের? স্বৈরশাসকের তালিকার আগেই সরকারের রেকর্ড, ৯ বছরে দুই প্রধান বিচারপতি ভুল। সিনিয়রিটি ডিঙিয়ে ওয়াহ্হাব মিঞার বদলে প্রধান বিচারপতি অন্যজনকে। বলছি, এস কে সিনহার রায় পক্ষে গেলে শতভাগ ঠিক। সংসদে সুবিচারক সিনহার প্রশংসায় গর্জন হাইকমান্ডের। অমুক নেতাকে ফাঁসিকাষ্ঠে ঝোলানোয় আদালতের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ইনুরা। কিন্তু পক্ষে না গেলে সেই সিনহাই নাকি রাজাকার, চোর, মিথ্যাবাদী, গুণ্ডা-বদমাশ, অর্থ জালিয়াত! অথচ তিনিই কিন্তু বিতর্কিত ট্রাইব্যুনালের ফাঁসির রায় লেখকদের নেতৃত্বে। তাহলে? ভোট যাই হোক, বিএনপির অবস্থা যে ‘ভোট চাই না, মাগার কুত্তা সামলাও।’

সুতরাং খালেদার অসুস্থতার খবরে কতটা উৎকণ্ঠিত বিএনপি? লক্ষণ অশুভ। এমনকি মহাসচিবকেও ঢুকতে দেয়া হয়নি। ব্যক্তিগত চিকিৎসক টিমকে অনুমতি দেয়নি। এটাই ঝড়ের আগে মেঘের গর্জন। নেত্রীর ওপর যে ধরনের প্রশ্নবোধক পরীক্ষা-নিরীক্ষা, পরিষ্কার করলেন বাচাল কাদের। এমনকি গুয়ানতানামো বে কারাগারের বন্দীরাও মানবাধিকার পায়। খালেদার অসুস্থতা নিয়ে গোপনীয়তায় জনমনে মিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন- কী খেলা চলছে পর্দার অন্তরালে?

মিশন- জিয়া পরিবারের কাউকেই রাজনীতিতে থাকতে দেয়া হবে না। আজো অনেকে স্মরণ করেন, ভারত থেকে ফেরত আসার কিছু সময় পরই জিয়া হত্যা। মানসিক চাপে রেখে কোকোর মৃত্যু। প্রধান প্রতিপক্ষকে চিরতরে নির্বাসন। খালেদাও অন্তিমের পথে। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর সুপার আত্মবিশ্বাসী হাইকমান্ড- ‘খালেদার মৃত্যু হলেও কিছুই হবে না।’ যেমন হয়নি গত ৯ বছরে, জোট সরকারের ওপর লাগাতার রাজনৈতিক বোমা বর্ষণ করে ধ্বংস করে দেয়ার পরও।

গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ। অতীতে প্রতিবারই ওয়াশিংটন থেকে দিল্লি এ ধরনের ঘটনায় সরব। ১/১১-তে দুই বেগমকে নামমাত্র জেলে ঢোকানোর পরই সরগরম। মইনু-ফখরুল অবস্থা হয়েছিল- ‘ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি।’

জিম্বাবুয়ে-মালদ্বীপের মতো অথচ দেশে পটপরিবর্তনের খবরও পশ্চিমা মিডিয়ায় গুরুত্ব পায়। খালেদার বেলায় সুনসান নীরবতা! বলছি, ভারত-রাশিয়া-চীনের সমর্থন ছাড়া এই কাজ অসম্ভব। আমেরিকাকে ম্যানেজ করেছে ভারত। ভারতের ওপর নির্ভরশীল আমেরিকা। কারণ ছাড়া কিছুই হয় না। উপনিবেশবাদীদের রক্তের ভেতরে ঢুকে পড়েছে আওয়ামী লীগ।

২.

এবার পরিবর্তিত বিএনপির ভুল আন্দোলন নিয়ে কিছু কথা। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একমাত্র বিএনপি অনুমতি না পেলেও রাজনৈতিক দুর্বৃত্তদের অনুমতি দেয় প্রশাসন। তারপরও পল্টনের অদ্ভুত আচরণ। লজিক্যাল প্রতিবাদটুকুও দেখাতে ব্যর্থ। অতীতেও Motivated না নেয়ায় অবমাননার সাথে ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি থেকে উৎখাত করেছিল। অথচ তাদের দলেই ব্যারিস্টারের সংখ্যা নাকি বেশি।

বিএনপির বক্তব্য কাটাকুটি করে প্রচার করে ‘নিরপেক্ষতা’ প্রমাণ করতে চায় সরকার নিয়ন্ত্রিত মিডিয়া। এই সুযোগটুকুও নেয়া যেত। নেত্রী যখন মৃত্যুপথে তখনো গান্ধীবাদের কোনো মানে হয়?

গান্ধী নিজেই গান্ধীবাদ বুঝতে ব্যর্থ। অন্য দিকে ভারতে এসে দুই বছর অহিংস আন্দোলন গবেষণা শেষে আমেরিকায় ফিরে গিয়ে বাঘ আর ছাগলকে এক ঘাটের পানি খাইয়ে ছেড়েছেন ড. লুথার কিং। তখন মার্কিন প্রেসিডেন্টও ড. কিংয়ের অহিংস আন্দোলনে বিচলিত হয়ে ‘সিভিল রাইটস অ্যাক্ট’ পাস করেছিলেন। এর কারণ, অহিংস কিন্তু অসহায় ছিলেন না। সাথে লাখো জনতার শক্তি। ড. কিং হাঁচি দিলেই হাজার হাজার সাদা-কালো রাস্তায়। কথায় কথায় ‘মিলিয়ন মেন মার্চ’। ‘প্রশ্ন, কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে খালেদা- বিএনপি কর্মীরা কোথায়?’

ফখরুলদের আন্দোলনের উদাহরণ। যখন এক হাত কেটে নিলো, ভাবলেন, আরেক হাত তো আছে। এক পা কেটে নেয়া হলে তখনো ভাবলেন, আরেক পা আছে। এরপর অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলো বিচ্ছিন্ন করতে থাকলে তাদের ধারণা, মাথা তো আছে। মাথা কেটে নিলে ভাববেন, কবরে নামফলকটি তো পাওয়া যাবে।

তারপরও ভালো মানুষ আছে। না থাকলে চার দেয়ালের ভেতরে বন্দী খালেদার দিন কিভাবে কাটত? একবার ভাবুন, আমাদেরই কারো বয়স্ক ও অসুস্থ দাদী বা নানী চার দেয়ালের ভেতরে দিনের পরদিন একা এবং দরজায় তালা। এর পরিণতি কী হতে পারে?

বলছি, এ মুহূর্তে সবচেয়ে বড় ফেমিনিস্ট ফাতেমার কথা, যিনি আওয়ামী কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে বন্দী খালেদার পক্ষে ১৬ কোটির মধ্যে একাই লড়ছেন। তার তুলনায় ফেমিনিস্ট, মানবাধিকারবাদী, বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায় তুচ্ছ। আমার অর্থনৈতিক অবস্থা ফাতেমার মতো হলে, মাসে পাঁচ লাখ টাকা বেতন দিলেও চার দেয়ালে বন্দী থাকার মতো চাকরিই করতাম না; বরং ভিক্ষা করতাম। মুক্ত হাওয়ায় ভিক্ষাও আনন্দদায়ক। আমেরিকায় বিনা পয়সায় শেল্টার, কিন্তু গৃহহীনদের পছন্দ ফুটপাথ। কারণ, মুক্ত বাতাসে মানুষের ছন্দ। সুতরাং ২০১৮ সালে ফাতেমাকে শান্তির জন্য নোবেল পুরস্কার দেয়া হোক।

‘প্রয়োজনে খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠিয়ে চিকিৎসা দেয়া হবে’- কাদেরের এই বক্তব্যের সাথে নিউ ইয়র্কের একটি আওয়ামী সমর্থিত পত্রিকার মিল খুঁজে পেলাম। ৩১ মার্চ ওই পত্রিকার হেডলাইন- ‘ষড়যন্ত্রের ছক, তারেক, সিনহার পথে খালেদা জিয়া।’ যারা বোঝার বুঝে গেছে, দেশে-বিদেশে অগ্রিম জানান দেয়ার প্রস্তুতি এগুলো।

সেদিনের পর থেকে খালেদাকে কেউ দেখেনি। অথচ তার সমর্থক কয়েক কোটি। নেত্রীর স্বাস্থ্য বিষয়ে জানার অধিকার সবার। নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞের মাধ্যমে দ্রুত নিয়মিত স্বাস্থ্যবিষয়ক বুলেটিন প্রচারের দাবি সময়োপযোগী।

১৬ জানুয়ারি নয়া দিগন্তে লিখেছিলাম, আওয়ামী নেতাদের সাথে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে সজীবের চার নির্দেশনা। ১) ব্যাপক হারে জোট সরকারের দুর্নীতি প্রচার, ২) মিডিয়াসহ রাস্তা ও প্রচারযন্ত্র দখলে রাখা, ৩) ব্যাপক হারে ক্ষমতাসীনদের উন্নয়ন প্রচারে বাধ্যবাধকতা, ৪) যেকোনো মূল্যে আওয়ামী লীগকেই আবারো ক্ষমতায় আনা।

সারমর্ম : ৪৭ বছরে এই প্রথম স্বৈরাচারের তালিকায় বাংলাদেশ। তারেক, সিনহার পর খালেদাকেও বিদেশে পাঠানোর গুঞ্জন। স্বৈরাচারের প্রতিবাদে A-to-Z সবাই রাস্তায় না নামলে আগামী নির্বাচন কমিউনিস্ট দেশগুলোর মতোই হতে পারে। ভিন্ন আদলে হলেও ‘কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের’ প্রসঙ্গটিকে গুরুত্ব দেয়ার অনুরোধ সবাইকে।

উৎসঃ নয়াদিগন্ত

বিষয়: বিবিধ

৬৬৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File