ইতিহাস কথা কয়!!

লিখেছেন লিখেছেন চেতনাবিলাস ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৯, ০৭:০৪:২৭ সন্ধ্যা

রাজাকার লিস্টে জামাআতের নাম না থাকা নিয়ে খুশি হবার কিছু নেই।

এমনটা হওয়া স্বাভাবিক। আসলে যুদ্ধের সময় জামাআত গুরুত্বহীন ছিলো।

একইসাথে জামাআত ছিলো অনেক ছোট রাজনৈতিক দল।

৭০ বা তার আগের নির্বাচনী ফলাফল দেখলেই তা বুঝা যায়।

তবে দল হিসেবে জামাআত পাকিস্তানপন্থী ছিলো।

অধ্যাপক গোলাম আজম এ বিষয় স্বীকার এবং ব্যাখা দুটোই দিতে পারবো।

(এটিএন বাংলায় গোলাম আজমের সাক্ষাতকার রয়েছে)

দল হিসেবে আওআমী লীগ স্বাধীনতার পক্ষে ছিলো।

তবে সেখানে মতবিরোধ ছিলো।

তাজউদ্দীন আহমেদ এবং তার অনুসারীরা চাচ্ছিল যুদ্ধ করে স্বাধীনতা আনতে।

এরা মূলত রুশ ও ভারতপন্থী ছিলো।

অপরদিকে মোস্তাক আহমেদ সহ অন্যান্যরা চাচ্ছিল সরকারের সাথে সমঝোতা করে গৃহযুদ্ধ বন্ধ করতে।

এরা ছিলো মূলত আমেরিকা ও চীনপন্থি আওআমী লীগ নেতা।

ভারত এই বিষয়টি বুঝতে পেরে দ্বিতীয় গ্রুপকে দেশে ফিরতে বাধা সহ চলাচল সীমাবদ্ধ করে দেয়।

আর মিডিয়া সহ সব জায়গায় তাজউদ্দীন আহমেদ দের ফ্রন্টে রাখে।

তবে সেই সময় পাকিস্তানপন্থী বৃহৎ দল ছিলো মুসলিম লীগ পাকিস্তান।

মুসলিম লীগ বিভক্ত হয়।

এক অংশের নেতা ছিলো সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পিতা ফজলুল কাদের চৌধুরী।

অপর অংশের নেতা ছিলো খুলনার খান এ সবুর।

মাঝখানে ঢাকার নবাব পরিবার আরেকটি গ্রুপ করলেও পরবর্তীতে তারা ফজলুল কাদেরের সাথে যোগ দেয়।

এই গ্রুপিংকেই মুসলিম লীগ ৭০ এর নির্বাচনে পরাজয়ের কারন হিসেবে গ্রহন করে।

মুক্তিযুদ্ধকালে এই গ্রুপ এক হয়ে পাকিস্তান রক্ষার শপথ নেয়।

রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনী মূলত মুসলিম লীগের সৃষ্টি। এবং এই বাহিনীর নেতাও তারাই ছিলো।

মুসলিম লীগ অল্প আসন পেলেও তাদের অধিকাংশ অল্প ব্যবধানে হারে।

তাই বাহিনী করতে তাদের বেগ পেতে হয়নি।

স্বাধীনতার পর শুরু হয় ব্যাপক ধরপাকড়।

মুসলিম লীগের অধিকাংশ এ দেশীয় নেতা বন্দি হয়।

ফজলুল কাদের চৌধুরীকে জেলে বিষ প্রয়োগে হত্যা করা হয়।

তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর মোনায়েম খানকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

সব মিলিয়ে পাকিস্তান পন্থীরা চরম হতাশ হয়।

অধিকাংশ আমলা যারা ইচ্ছাকৃত ভাবে পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো, তারা বাদ্য হয়ে কাজ করছে এসব বলে পার পেতে চেষ্টা করে।

ব্যতিক্রম ছিলো ঢাকার নবাবরা,,,তারা স্বীকার করেছে,,,পাকিস্তান তারা সৃষ্টি করেছে,পাকিস্তান তাদের আবেগে মিশে আছে,তাই তারা চায়নি পাকিস্তান ভেঙ্গে যাক।

মুসলিম লীগ ছিলো সারাদেশ বিস্তৃত সংগঠন।

বঙ্গবন্ধু নিজেও একসময় মুসলিম লীগ করতো।

পরবর্তীতে তিনি ভাষানীর আমন্ত্রনে আওআমী মুসলিম লীগ এবং আওআমী লীগ গঠন করে।

মূল কথায় আসি,রাজাকার বেশির ভাগ মুসলিম লীগের নেতা কর্মি।

পরবর্তীতে তারা দলবদল করে আওআমী লীগে ডুকে।

বিএনপি গঠিত হলে শহীদ জিয়াউর রহমানও মুসলিম লীগ নেতাদের কাছে টানে।

এমনকি খান এ সবুর কেও জিয়াউর রহমান আমন্ত্রন জানায়।

সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী আ লীগ নেতা এইচ এম মাহমুদ আলীর পিতা মুসলিম লীগ এমপি ছিলো,উনি পরবর্তীতে আ লীগের থেকে এমপি হন।

বিএনপি নেতা শাহ আব্দুল হান্নানের পিতাও মুসলিম লীগ থেকে আওআমী লীগে আসেন।

এরকম কমপক্ষে ৫০ জন আছে যারা মুসলিম লীগের এমপি ছিলো,পরবর্তীতে আওআমী লীগ এবং বিএনপির এমপি হয়।

তথ্যসূত্র :উপমহাদেশের রাজনীতি:মুসলিম লীগ অধ্যায়।

একাত্তরের স্মৃতি :ড.সাজ্জাদ হোসাইন

অসমাপ্ত আত্মজীবনী :বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

(যেহেতু মুসলিম লীগের রাজনীতি বেশি আলোচিত হয়েছে প্রথম বইটি থেকেই বেশি তথ্য নেয়া হয়েছে)

বিষয়: বিবিধ

৭৫৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File