হাজ্বীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কিছু লক্ষ্যণীয় বিষয়-

লিখেছেন লিখেছেন মাই নেম ইজ খান ০৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ০৬:৪১:১১ সন্ধ্যা



সাধারণতঃ হজ্বের সফরে প্রায় ৪০-৪৫ দিন মক্কা-মদীনায় থাকতে হয় প্রায় সকল হাজ্বীকে। (ভিআইপি বা অতি ব্যস্তদের কথা আলাদা)।

এই দীর্ঘ সময়ের সর্বোত্তম ব্যবহার করা দরকার। এজন্য আমাদের করণীয়/বর্জনীয় কিছু বিষয় সম্পর্কে নিম্মে আলোচনা করা হচ্ছে-

হাজ্বীদের অবশ্যই যা বর্জন করা উচিত-

১। হজ্বে এসে অনেকেই তাদের মূল্যবান সময় দামী হোটেলে বা ভাড়া বাসার রুমে শুয়ে, বসে গল্প করে বা অতিরিক্ত ঘুমিয়ে নষ্ট করেন। এটা ক্ষতিকর।

২। মক্কা-মদীনার বিভিন্ন মার্কেট, দোকানে ঘোরাফেরা করে, মার্কেটিং এর পেছনে অনেক হাজ্বীর অনেক সময় নষ্ট হয়।

-এগুলো খুবই দূর্ভাগ্যজনক ব্যাপার।

৩। কাবা ঘর তাওয়াফ করার সময় বা হজরে আসওয়াদ চুমো দেয়ার জন্য অন্য হাজ্বীদেরকে কষ্ট না দেয়া।

(নিয়ম হলো কাবার ডান পাশ দিয়ে তাওয়াফ করা। অর্থাৎ তাওয়াফ করার সময় কাবা আপনার বাম পাশে থাকবে।)

তাওয়াফ শেষে বের হওয়ার জন্য উল্টো দিকে সবাইকে ঠেলে, তারাহুরো করে বের হবার চেষ্টা না করা। বরং তাওয়াফ শেষে আস্তে-ধীরে ডান দিকে চলে আসা।

৪। সেলফির অতিরঞ্জন, অহেতুক বেশী ছবি তোলা পরিহার করা আবশ্যক।

করণীয়-

১। অধিক সময় বায়তুল্লাহ ও মাসজিদে নববীতে থাকা।

২। পানাহার যথা সম্ভব কম করা। (তাহলে বাথরুমে যাবার প্রয়োজনও কম হবে।

৩। অধিক পরিমাণে তাওয়াফ, সায়ী, কুরআন তিলাওয়াত, সালাত, যিকির, তাসবীহ পাঠ করা। কাবাকে সামনে রেখে বেশী বেশী দুআ করা।

৪। দ্বীনী তা'লীমের মাজলিস ও হালাকায় অংশ গ্রহন করা।

৫। ভালো কোনো একজন ক্বারীর তত্বাবধানে কুরআন মশকের আয়োজন করা ও তাতে শামিল হওয়া।

৬। একটি সুন্দর দৈনন্দিন টাইমফ্রেম করে নেয়া। যা এমন হতে পারে-

শেষ রাত তথা ২ টা বা ২:৩০ এর মধ্যে ঘুম থেকে জাগ্রত হয়ে দ্রুত পবিত্র হয়ে সম্ভব হলে হালকা নাস্তা কেক/কলা বা সামান্য ফল ও পানি খেয়ে এবং সামান্য সাথে নিয়ে বাইতুল্লায় চলে আসা। কারণ দেরী করলে কাবার মূল অংশে প্রবেশপথ বন্দ হয়ে যাবে। (প্রতি ওয়াক্ত সালাতের অন্ততঃ ১ ঘন্টা আগেই অনেক সময় ভীড়ের কারণে কর্তৃপক্ষ মূল দরজা বন্ধ করে দেন।)

শেষ রাতে কাবার চত্বরে তাহাজ্জুদের সালাতে অংশগ্রহণ করা। ফজর পর্যন্ত ইবাদত করা। ফজরের পর হালকা নাস্তা ও যমযমের পানি পান করা। এরপর তাওয়াফ, ইবাদত করা।

ঘুমানোর প্রয়োজন হলে মাসজিদুল হারামের কোনো এক কোনায় কিছু সময় ঘুমিয়ে নেয়া। ঘুম থেকে উঠে আবারও ইবাদতে মগ্ন হওয়া। একেবারে যোহর পর্যন্ত (১২:৩০) এভাবে ইবাদত করা।

যোহরের সালাত আদায় করে বাসায় বা হোটেল রুমে এসে দ্রুত ইস্তেন্জা, গোসল, আহার, হালকা ঘুম। (১:৩০ থেকে ৩:০০ টা বা ৩:৩০।)

এরপর আবার কাবায় চলে আসা এবং অবশ্যই আসর, মাগরিব, ইশা সালা পর্যন্ত ইবাদতে নিজেকে মগ্ন রাখা।

ইশার সালাতের পর (৮:৩০) যত দ্রুত সম্ভব বাসায়/হোটেল রুমে চলে আসা। ইস্তেন্জা, রাতের খাবার খেয়ে যত দ্রুত সম্ভব শুয়ে পরা। ঘুমিয়ে যাওয়া। রাত ২ টার দিকে জাগ্রত হওয়া...

৭। দুপুরবেলা কাবায় ঢুকতে না পারলে বারান্দায় রোদের মধ্যে কষ্ট না করে ক্লক টাওয়ারের পাশে আবূ বকর রাযি. এর বাড়ির স্থানে নির্মিত বিল্ডিং এর ৪র্থ তলায় বিদ্যমান স্থানে (মসজিদে আবূ বকর নামে অনেকে যা প্রসিদ্ধ) নামাজ আদায় করা।

বয়স্ক, দূর্বল, মহিলা, শিশু-কিশোর হাজ্বীদের জন্য লক্ষনীয়:

১। ভীড় এড়িয়ে চলা। বিশেষভাবে আফ্রিকান এবং কৃষ্ণাঙ্গদের থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা।

২। পরিচিত কয়েকজন সক্ষম যুবকের মাঝখানে থাকা।

৩। রোদের তাপ এবং তীব্র গরমের সময় তাওয়াফ, সায়ী না করা।

৪। হাজরে আসওয়াদ চুমো দেয়ার জন্য বড় রিস্ক না নেয়া। এজন্য ভীড় কম এমন সুবিধাজনক সময়ের অপেক্ষা করা।

হাজ্বীগণ দ্বীনী কোনো প্রয়োজন, পরামর্শের জন্য যে কেউ চাইলে হোয়াটস আপে যোগাযোগ করতে পারেন- +8801781903128

আল্লাহ সুবঃ আমাদের সবাইকে হজ্বে মাবরুর নসীব করুন। আমীন।

-মুহাম্মাদ ইসহাক খান।

০১-০৯-২০১৬।

বায়তুল্লাহ, মক্কাতুল মুকাররমা। সউদী আরব।

বিষয়: বিবিধ

১৪১৫ বার পঠিত, ১১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

377268
০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬ রাত ০৮:১৭
ফখরুল লিখেছেন : জাযাকআল্লাহ খায়ের সুন্দর পোষ্টের জন্য। কিন্তু একটা বিষয় খেয়াল করা দরকার তা হলো আপনার লেখায় হাজিদের করনিয়তে ১মেই রয়েছে।

অধিক সময় বায়তুল্লাহ ও মাসজিদে নববীতে থাকা।
মানলাম বায়তুল্লায় থাকতে হবে, মসজিদে নববীতে থাকার ব্যাপারে দলিল কি।
শুধু জানার জন্য।
জাযাকাল্লাহ খায়ের।
০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ রাত ১০:৫৭
312795
মাই নেম ইজ খান লিখেছেন : বেশি আমলের জন্য মসজিদে থাকার কথা বলা হয়েছে এখানে।

কেউ চাইলে না থাকলেও হজ্বের মূল কাজে তার কোনো সমস্যা হবে না। তবে সময় কিছু বেশি নষ্ট হবে এই আর কি।
377274
০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬ রাত ১০:৩৯
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
পাশাপাশি ঐতিহাসিক স্থানগুলি যতদুর সম্ভব দেখাও উচিত মনে হয় আমার।
377287
০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬ রাত ০১:০৭
আবু সাইফ লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ..

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, জাযাকাল্লাহ
০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ রাত ১০:৫৭
312796
মাই নেম ইজ খান লিখেছেন : জাযাকাল্লাহ। বারাকাল্লাহ।
377288
০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬ রাত ০৩:৩৮
সাদিয়া মুকিম লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ ।

জাযাকাল্লাহু খাইর।
দোয়ার আবেদন রইলো ।
০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ রাত ১০:৫৮
312797
মাই নেম ইজ খান লিখেছেন : ইনশাআল্লাহ।
377300
০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬ দুপুর ১২:২৭
মোঃ ওহিদুল ইসলাম লিখেছেন : সুন্দর পোস্ট। রিদওয়ান কবির সবুজ ভাইয়ের সাথে একমত।
০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ রাত ১০:৫৮
312798
মাই নেম ইজ খান লিখেছেন : শুকরান।
377319
০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬ রাত ১০:০৬
হতভাগা লিখেছেন : আমার সাথে মুরুব্বী মহিলারা ছিলেন বিধায় রাত দেড়টা দুইটার দিকে বের হতাম তাওয়াফ করতে । তখন ভিড় খুব একটা থাকে না। হুইল চেয়ারে করাতে হত সেজন্য উপরের রিং এ তাওয়াফ করতাম ।

এখন রিংগুলো নেই , সরিয়ে নিয়েছে ।

ওমরাহ একবারই করেছিলাম । আমাদের সাথে এমন কেউ কেউ ছিল যারা দিনে ২টা ওমরাহও করেছিল।

হজ থেকে আসার পর মন টানে আবারও আল্লাহর ঘর তাওয়াফ করার জন্য । ইন শা আল্লাহ ইচ্ছা আছে আবারও যাবার।
০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ রাত ১০:৫৮
312799
মাই নেম ইজ খান লিখেছেন : ঠিক বলেছেন। আল্লাহ আবারও তাওফীক দিন। আমীন।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File