মা হিসেবে মুসলিম নারীর দায়িত্ব

লিখেছেন লিখেছেন সালমা ০৪ জানুয়ারি, ২০১৫, ০৬:০৬:৩৭ সন্ধ্যা



একজন মুসলিম জননীর প্রাথমিক দায়িত্ব হল সন্তানদেরকে কুরআন ও সুন্নাহর শিক্ষা অনুযায়ী অনুপ্রাণিত করা।

অনারবীয় এলাকায় যে সকল মুসলিম নারী প্রত্যহ সকালে ভক্তিভরে কুরআন পড়েন তাদের অধিকাংশই তার সামান্যতম অর্থও জানেন না, কিংবা জানার চেষ্টাও করেন না।

এক্ষেত্রে মুসলিম মায়েদের কর্তব্য তাদের বেড়ে ওঠা ছেলে-মেয়েদেরকে এ কথা বুঝানো যে, স্কুল-কলেজে তাদের অন্যান্য বন্ধু-বান্ধব যা করছে তা আসলে ঠিক নয়। মুসলিম নারী কুরআন-হাদীস পড়বেন এই উদ্দেশ্যে যেন তাদের দৈনন্দিন জীবনে তার শিক্ষা বাস্তবায়িত হয়।

অনেক মুসলমানের ঘরেই দেখা যায়, তাকের ওপরে সুন্দর সিল্কের কাপড়ে আবৃত করে কুরআন শরীফ রেখে দেয়া হয়েছে, যেন ময়লা পড়ার জন্যই। অব্যবহৃত এই অসংখ্য কুরআন আর্তি করে বলছে “ওহে মানুষ আমাকে বন্ধন মুক্ত কর, আমাকে পড়, আমাকে অনুসরণ কর।”

শিশুরা যখন কথা বলতে শিখে তখনই তাকে কালিমা শিক্ষা দেয়া উচিত এবং বিসমিল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ্‌, আল্লাহু আকবার, ইনশাআল্লাহ্‌, মাশাআল্লাহ প্রভৃতি ইসলামী ভাবাবেগপূর্ণ কথামালাও শিক্ষা দেয়া প্রয়োজন। শিশু যখনই দাঁড়াতে ও হাঁটতে শিখে তখনই মায়ের অনুকরণে তাকে নামাযের মহড়া করতে অনুপ্রাণিত করা উচিত। শিশুর বয়স যখন সাত বছর হবে তখন মায়েদের উচিত তাদেরকে নামায পড়তে চাপ দেয়া এবং দশ বছরেও নামায না পড়লে শিশুদের শাস্তি দেয়া প্রয়োজন। এভাবে শিক্ষা দিলেই শিশুরা বুঝদার হওয়ার অনেক আগে থেকেই স্রষ্টা ও মানুষের প্রতি দায়িত্ব পালনে অভ্যস্ত হয়ে উঠবে।

মুসলিম মায়েদের উচিত তার সাধ্যের সীমার মধ্যেই বাসগৃহকে আকর্ষনীয় করে তোলা। এ দেশের প্রায় সকল গৃহই, এমনকি মধ্যবিত্তের ঘরবাড়ীও অনেক ক্ষেত্রে অপরিচ্ছন্ন ও নোংরা।

অনেক মহিলাই মেঝেতে, বিশেষ করে উঠোন ও রান্না ঘরে আবর্জনা ছড়িয়ে রাখেন। তাদের এ একটা খারাপ অভ্যাস যে, তারা ময়লার মধ্যে থাকবেন তবুও নিজ হাতে তা পরিষ্কার করবেন না।

ইসলামী শিক্ষা মেয়েদেরকে অবশ্যই পরিচ্ছন্নতা ও নিয়মানুবর্তিতা শিখায়। নিজেদের হাতে ঘর ঝাড়ু দিতে কিংবা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন মুসলিম নারীকে কখনই লজ্জাবোধ করা উচিত নয় এবং চাকর-চাকরানীদের ওপর সবসময় এ ব্যাপারে নির্ভরশীল হওয়া ঠিক নয়। যদি সম্পদশালী হন তবে সর্বদা জাঁক-জমক ও অপচয় এড়িয়ে চলতে হবে এবং পশ্চিমা ধাঁচের সোফা, ড্রেসিং টেবিল, খেলোগয়না ইত্যাদি ব্যয় বহুল গৃহসামগ্রী পরিহার করতে হবে।

কুরআন ও হাদিসের বানী সম্বলিত কারুকার্যপূর্ণ ক্যালিগ্রাফি দিয়ে ঘরের দেয়াল সজ্জিত করা যেতে পারে। এতে একদিকে যেমন ঘর সাজানো হবে অন্যদিকে তা সবাইকে স্মরণ করিয়ে দেবে যে, এটা মুসলিম বাসগৃহও। ইসলামী শিক্ষার সাথে সাংঘর্ষিক ধরণের ছবি, পারিবারিক কিংবা বন্ধু-বান্ধবের একক ও গ্রুপ ফটোগ্রাফ ইত্যাদি কিছুতেই ফ্রেমে আটকিয়ে ঘরে টাঙ্গিয়ে রাখা ঠিক নয়। ইসলামী শিক্ষা একজন বালিকাকে গৃহকর্মের জন্য অন্তত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার মুল্যনীতি, প্রাথমিক চিকিৎসা এবং মজাদায়ক হালাল খাদ্য তৈরির পদ্ধতি শেখায়।

অনেক মুসলিম নারীই খাদ্যের পরিপুষ্টি জ্ঞান সম্পর্কে সম্পূর্ণ অজ্ঞ। তাই প্রয়োজনীয় ও উপযোগী প্রচুর খাদ্য হাতের কাছে থাকতেও তারা তাদের বাচ্চাদেরকে তা খাওয়াতে জানেন না।

একজন অশিক্ষিত ও উদাসীন মুসলিম নারী কিছুতেই অনৈসলামিক প্রভাব যা দিবারাত্রি তার সন্তানকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে তা প্রতিহত করতে পারেন না। শুধুমাত্র একজন শিক্ষিত, চতুর ও অত্যন্ত আগ্রহশীল মুসলিম নারীই পারেন বর্তমান প্রতিকুল পরিবেশের সামনে সাহসের সাথে মুখোমুখি হতে।

বিষয়: বিবিধ

২০৩৭ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

299265
০৪ জানুয়ারি ২০১৫ রাত ০৮:৫২
নোমান২৯ লিখেছেন : সুন্দর,শিক্ষনীয় পোস্ট ।ধন্যবাদ আপনাকে।
০৫ জানুয়ারি ২০১৫ সকাল ০৯:১৬
242316
সালমা লিখেছেন : আপনাকে ও ধন্যবাদ।
299345
০৫ জানুয়ারি ২০১৫ সকাল ১০:৫৭
বেআক্কেল লিখেছেন : সুন্দর সুন্দর কথা দিয়া সুন্দর পোষ্ট বানাইছেন, ভাল লাগিল। আমনেরে অনেক ধন্যবাদ
২৬ জানুয়ারি ২০১৫ বিকাল ০৫:৪০
244193
সালমা লিখেছেন : আপনাক্ওে অনেক ধন্যবাদ, আমার ব্লগে আসার জন্য।ভাল থাকুন।
383305
০৯ জুন ২০১৭ সকাল ১০:০১
Ruman লিখেছেন : অনেক সুন্দর লিখেছেন?

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File