মুত্তাফাকুন আলাইহি-১৮

লিখেছেন লিখেছেন ফাতিমা মারিয়াম ৩১ অক্টোবর, ২০১৩, ০১:০৮:২৭ দুপুর

আনুগত্যে ভারসাম্য রক্ষা করা-১

৬১) হযরত আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন, একদিন রাসূলে আকরাম তাঁর নিকট গেলেন। তখন একজন মহিলা তাঁর কাছে বসা ছিলো। রাসূলে আকরাম জিজ্ঞেস করলেন, ‘এই মহিলাটি কে?’

আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বললেন, ‘এ হচ্ছে অমুক মহিলা; সে তার নামায সম্পর্কে আলোচনা করছে।’

তিনি বললেন,’ থামো; সব কাজই তোমাদের শক্তি অনুযায়ী তোমাদের ওপর ওয়াজিব। আল্লাহর কসম! তোমরা ক্লান্তিবোধ করলেও আল্লাহ সওয়াব দিতে ক্লান্তিবোধ করেন না। আর তাঁর নিকট উত্তম দ্বীনি কাজ সেটাই, যার কর্তা সে কাজটি নিয়মিত সম্পাদন করে।’

৬২) হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, একদা তিন ব্যক্তি রাসূলে আকরাম এর স্ত্রীদের বাড়িতে এসে তারা রাসূলে আকরাম এর ইবাদত সম্পর্কে খোঁজ খবর নিচ্ছিলো। যখন তাদেরকে এ বিষয়ে জানিয়ে দেয়া হলো, তারা এটাকে নিজেদের জন্য অপর্যাপ্ত মনে করল।

তারা বলতে লাগল, ‘রাসূলে আকরাম এর তুলনায় আমরা কোথায়? আল্লাহ তো তাঁর পূর্বের ও পরের সব ত্রুটি-বিচ্যুতি (যদি ঘটে থাকে) ক্ষমা করে দিয়েছেন।’

তাদের একজন বলল, ‘আমি জীবনভর সারা রাত নামাযে মগ্ন থাকবো।’

আরেকজন বলল, ‘আমি সারা জীবন রোযা পালন করবো এবং কখনো পানাহার করবো না।’

আরেকজন বলল, ‘আমি স্ত্রী সংসর্গ থেকে দূরে থাকবো এবং কখনো বিয়েই করবো না।’

এমনই সময় রাসূলে আকরাম সেখানে উপস্থিত হলেন। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমরা কি এ ধরনের কখা বলেছো? আল্লাহর কসম! আমি তোমাদের চেয়ে আল্লাহকে বেশি ভয় করি এবং বেশি তাকওয়া অবলম্বন করি। কিন্তু আমি তো রোযা রাখি আবার পানাহার করি, নামায পড়ি আবার ঘুমাই এবং বিয়ে-শাদিও করি। (এটাই আমার তরিকা– সুন্নাত) যে ব্যক্তি আমার তরিকা মেনে চলে না সে আমার দলভূক্ত নয়।’

৬৩) হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলে আকরাম একদা মসজিদে গিয়ে দেখতে পেলেন, একটি রশি দু’টি খুঁটির মাঝখানে বাঁধা।

তিনি জিজ্ঞেস করলেন, ‘এ রশিটা কিসের?’

সাহাবীগণ বললেন ‘এটা যয়নবের রশি। তিনি নামায পড়তে পড়তে ক্লান্ত হয়ে গেলে এ রশিতে ঝুলে পড়েন।’

রাসূলে আকরামবললেন, ‘এটা খুলে ফেল। তোমাদের প্রত্যেকেরই শক্তি ও সামর্থ্য অনুযায়ী নামায পড়া উচিত। আর যখন ক্লান্তি এসে যায়, তখন ঘুমিয়ে পড়া উচিত।’

৬৪) হযরত আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন, রাসূলে আকরাম বলেন, ‘তোমাদের কারো নামায পড়তে পড়তে ঘুম এসে গেলে তার ঘুমিয়ে নেওয়া উচিত। কেননা তন্দ্রাচ্ছন্ন অবস্থায় নামায পড়তে থাকলে সে হয়তো ইস্তেগফারের পরিবর্তে নিজেকেই গালি দিতে থাকবে।’

[বুখারী ও মুসলিম]

.

.

[ রিয়াদুস সালেহীন থেকে সংগৃহিত। হাদিস নং যথাক্রমে ১৪২, ১৪৩, ১৪৬ ও ১৪৭ ]

মুত্তাফাকুন আলাইহি-১৭

বিষয়: বিবিধ

১৩৩০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File