হযরত মুয়াবিয়া (রাঃ) সম্পর্কে সালাফী মিথ্যাচার।

লিখেছেন লিখেছেন আবু বকর সিদ্দিকী ১৭ নভেম্বর, ২০১৬, ০৪:০০:১৭ বিকাল

হযরত মুয়াবিয়া (রাঃ) একজন উচ্চমানের সাহাবী। তবে এই ‘উচ্চমান’ এমন নয় যে, তাকে বদরী সাহাবী, উহুদের সাহাবী, খন্দকের সাহাবী বা বাইয়াতে রিদওয়ানের সাহাবীদের সমতুল্য জ্ঞান করা যায়। মক্কা বিজয়ের পর লোকজন দলে দলে ইসলাম গ্রহন করাকালীন সময়ে তিনি ইসলাম গ্রহন করেছিলেন। অনেকে বলেন তিনি মক্কা বিজয়ের আগে ইসলাম গ্রহন করেছিলেন, তবে তা গোপন রেখেছিলেন। হতে পারে, আল্লাহই অধিক জ্ঞাত। হযরত মুয়াবিয়া শিক্ষিত এবং ঐ সময়ের প্রভাবশালী লোক ছিলেন। তিনি অহি লিপিবদ্ধকারকদের একজন ছিলেন। ইসলামের ইতিহাসে তিনি এক বিশাল স্থান দখল করে আছেন। আছে তাকে নিয়ে নানা বিতর্কও। তিনি ২০ বৎসরেরও অধিককাল মুসলিম জাহানের পরাক্রমশালী শাসক ছিলেন। খোলাফায়ে রাশেদীনের পর তিনি সুদীর্ঘ সময়কাল ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত ছিলেন। কাজেই তার প্রভাব প্রতিপত্তি ইতিহাসে প্রভাব ফেলেছে। এমনকি ধর্মীয় কতেক বিষয়ও এ প্রভাব কাটিয়ে উঠতে পারেনি। শিয়া-সুন্নির বিভেদ ক্রমে বিস্তার লাভ করাসহ ইসলামে সৃষ্টি হয়েছে নানা ফিতনা ও ফেরকার। খেলাফত ব্যবস্থা শেষ হলে চালু হয় হযরত মুয়াবিয়ার শাসন। একারনে মুয়াবিয়াকে আমিরুল মুমীনুন বলার চাইতে বাদশাহ বলাই অধিক সঙ্গত। ইসলামী জাহানের তিনি প্রথম বাদশাহ এবং সর্বশ্রেষ্ট বাদশাহ। তার পরে তার চাইতে ভাল শাসক আর আসেনি। মহানবী বলেছেন, ‘আমার পরে খেলাফত নীতি বহাল থাকবে ৩০ বছর পর্যন্ত। তারপরে শুরু হবে রাজতন্ত্র।’ হযরত হাসান-এর শাসনামল যোগ করলে খিলাফতকাল মোট ৩০ বছর পূর্ণ হয়। [আল-বিদায়া-ওয়ান-নিহায়া, ৮ম থন্ড, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, প্রথম প্রকাশ-২০০৭, পৃষ্ঠা-৪২] সুতরাং মুয়াবিয়া হলেন প্রথম রাজা বা বাদশাহ। মহানবী এরশাদ করেছেন, দেশ শাসনের এই বিষয়টি শুরু হয়েছে রহমত ও নবুয়তের ভিত্তিতে। এরপর এটি পরিণত হবে রহমত ও খিলাফত রীতিতে। এরপর এটি পরিণত হবে জুলুমবাজ রাজতন্ত্রে। এরপর এটি পরিণত হবে স্বৈরাচারী, সীমালঙ্ঘন, বল প্রয়োগ ও পৃথিবীতে বিপর্যয় ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির মাধ্যমরূপে। তখন তারা রেশমী কাপড় পরিধান, ব্যাভিচার ও মদপান বৈধ করে নেবে। তবুও তারা রিজিকপ্রাপ্ত হবে এবং সাহায্য পাবে। মৃত্যুর মাধ্যমে আল্রাহর সাথে সাক্ষাৎ ঘটার পূর্ব পর্যন্ত এভাবে চলতে থাকবে।’ এই হাদীসের সনদ উত্তম। [আল-বিদায়া-ওয়ান-নিহায়া, ৮ম থন্ড, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, প্রথম প্রকাশ-২০০৭, পৃষ্ঠা-৪৮]

সিফফিনের যুদ্ধ প্রসঙ্গ:-

হযরত উসমান মজলুম অবস্থায় নিহত হওয়ার পর দেশব্যাপী তার এই হত্যাকান্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হয়। হযরত আলীও তার ব্যতিক্রম ছিলেন না। তিনি নিজেও উসমান হত্যার বিচার চাইছিলেন। হযরত উসমানের দূর্দিনে আলীই ছিলেন তার সাথী। তিনি নিজ দুই পুত্র হাসান ও হুসাইনকে উসমানের প্রহরায় রেখেছিলেন। আলী কথনোই উমমানের প্রতিপক্ষ ছিলেন না। উগ্রপন্থীরা উসমানকে হত্যা করে। কোরআন তিলওয়াত রত অবস্থায় খারিজিরা তাকে হত্যা করে। পরবর্তীতে লোকেরা আলীর কাছে বাইয়াত গ্রহন করায় এবং সেনাবাহিনীতে হত্যাকারীর সর্মথকেরা থেকে যাওয়ায় দেশের নাজুক পরিস্থিতিতে আলী ক্ষমতা গ্রহন করলেও তিনি চাইছিলেন আগে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তারপর উসমান হত্যার বিচার করতে। কিন্তু সিরিয়ার প্রভাবশালী গর্ভনর মুয়াবিয়া বায়না ধরলেন আগে উসমান হত্যার বিচার হোক, তারপর আলীর খেলাফত তিনি মেনে নেবেন। একমসয় আলীকে তিনি উমসান হত্যাকারী হিসাবেই গন্য করতে শুরু করেন।

ইতিমধ্যে ঘটে যায় আরেক হৃদয়বিদারক ঘটনা। কিছু সাহাবীর পরামর্শে মা আয়শা আলীর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ঘর থেকে বের হন। আলী তাকে পরিস্থিতি বোঝাতে সক্ষম হলেও, কিছু কুচক্রিমহল মা আয়শার কাফেলায় আক্রমন করে বসে। শুরু হয় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, যা উষ্ট্রের যুদ্ধ নামে ইতিহাসে সমৃদ্ধ। উভয়পক্ষের প্রায় ১০,০০০ সাহাবী প্রাণ হারান এতে। উপায়ান্তর না দেখে মা আয়শা যে উষ্ট্রের উপর আরোহন করেছিলেন, সেই উষ্ট্রের পায়ে আঘাত হানার আদেশ দেন আলী। যুদ্ধ থেমে যায়। মা আয়শা তার ভুল বুঝতে পারেন এবং নিজগৃহে ফিরে যান। আলীর ইমামতিতে উভয়পক্ষের শহীদদের এক সাথে জানাজা পড়ানো হয় এবং দাফন কাফন সম্পন্ন হয়।

এ ঘটনার পরও উসমান হত্যার বিচারের দাবী নিয়ে কিছু লোক ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে প্রবৃত্ত হয়ে পড়ে। হযরত মুয়াবিয়া ছিলেন তার অন্যতম। পরিস্থিতি নাজুক থেকে নাজুক হতে থাকলে উম্মার স্বার্থে শক্ত অবস্থান নিতে বাধ্য হন আলী। তিনি সিরিয়ার গর্ভনর পদ থেকে মুয়াবিয়াকে বরখাস্ত করার আদেশ দেন। মুয়াবিয়া তা অমান্য করলে আলী তার বিরুদ্ধে সৈন্যদল নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। উমাইয়া বংশের মুয়াবিয়া এবং হাশেমী বংশের আলীর লোকজনের মধ্যে এমনিতেই বংশগত দ্বন্দ বিরাজমান ছিল। সিরিয়ায় মুয়াবিয়া ছিলেন তুমুল জনপ্রিয় এবং শক্তিশালী। তিনি তার সিদ্ধান্তে অটল রয়ে গেলেন এবং আলীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ মোকাবিলা করতে পিছপা হলেন না। ফলতঃ সিফফিন নামক স্থানে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে প্রচুর সাহাবীর প্রাণ যায়। শেষ পর্যন্ত উভয়পক্ষের মধ্যে সন্ধি স্থাপিত হয়। তবে এ যুদ্ধে মুয়াবিয়ার বিশাল কুটনৈতিক বিজয় অর্জিত হয়। তিনি প্রাদেশিক গর্ভনর থেকে পুরা মুসলিম জাহানের খিলাফতের হকদার বনে যান।

এখানে লক্ষনীয় বিষয় হলো, মুয়াবিয়া ইসলামী জাহানের আমীরের নির্দেশ অমান্য করেছেন কেবল তাই নয়, তিনি খিলাফতের বিরুদ্ধেও অস্ত্র হাতে নিয়েছেন, যা ইসলামের দৃষ্টিতে একটা অমার্জনীয় অপরাধ হিসাবে গন্য। সিফফিনের যুদ্ধের ফলে মুসলমানদের ঐক্য বিনষ্ট হয়ে যায়। ভ্রাতৃঘাতী এ যুদ্ধ কেবল মুয়াবিয়ার কারণেই সংঘটিত হয়েছে। এ ঘটনা দ্বারা প্রমাণ হয়েছে, সাহাবীরা যা করেছেন, তার সবগুলোই নির্ভূল ছিল না। তাদের সব কাজ সুন্নত নয়। তারা সত্যের মাপকাঠিও নন। সালাফী মতাবলম্বরীরা সাহাবীর ফজিলত বর্ণনা করতে গিয়ে তাদেরকে নবী-রসুলের স্তরে তুলে ফেলেন। আর সেটা যে একেবারেই ঠিক নয়, উষ্ট্রের যুদ্ধ এবং সিফফিনের যুদ্ধ তা চোখে আংগুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়।

মুয়াবিয়ার প্রতিষ্ঠিত ‘রাজতন্ত্র’ সেই যে মুসলিম জাহানে চেপে বসেছে এখনো মুসলমানেরা তার করাল গ্রাস থেকে মুক্ত হতে পারেনি। ক্রমান্বয়ে ইতিহাস এবং ধর্মে এই ক্ষমতাশীন ‘রাজতন্ত্র’ এক বিশেষ প্রভাব বিস্তার করেছে। রাজতন্ত্রকে ধর্মীয় সাপোর্ট দেবার নিমিত্তে গড়ে উঠেছে এক বিশেষ আলেম শ্রেনী ও বিশেষ কিছু কর্মসূচী। যার একটার নাম হলো ‘সালাফী’। সালাফীর আভিধানিক অর্থ হলো সালফে সালেহীন। অর্থাৎ নবী-রসুল ও সাহাবীরা যা করেছেন তার অনুসরন। এটাকে তারা দল বা মতবাদ না বলে একটা কর্মসুচী হিসাবে গন্য করলেও প্রকৃতপক্ষে এটা শিয়া-সুন্নির মতই একটা দলে পরিণত হয়েছে। সালাফীদের প্রধান কাজ হলো ইসলামে রাজতন্ত্রকে জায়েজ করা। জায়েজ করা সম্ভব না হলে অন্ততঃ সহনীয় করে তোলা। সালাফীদের প্রচারে সাহাবীর মর্যাদা বলতে হযরত মুয়াবিয়ার মর্যাদাই বুঝায়। মুয়াবিয়ার সকল কাজকে তারা সাহাবিয়্যাতের নিরিখে তুলে ধরেন। সাহাবীর মর্যাদা প্রসঙ্গে তারা একটা জয়ীফ হাদীস বর্ণনা করেন। যেটা বুখারিতে নেই, মুসলিমে নেই, সুনানে নেই, এমনকি এর বাইরের প্রসিদ্ধ কোনো হাদীস গ্রন্থেও নেই। মুয়াবিয়ার পুত্র ইয়াজীদকেও তারা নির্দোষ প্রমাণে প্রাণান্তকর প্রয়াস চালিয়ে আসছেন। আর এতে করে সচেতন মুসলমানদের মধ্যে যেসব দ্বন্দের সৃষ্টি হয় তা হলো-

১। এক সাহাবী আরেক সাহাবীর বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারন করলেও উভয়ই ন্যায়ের পথে আছেন বলে গন্য করা। উভয়ের পরস্পর বিরোধী কাজকে ন্যায় বলে গন্য করা।

২। সাহাবীরা অন্যায় করলেও সাহাবী হওয়ার কারনে তাদের সমস্ত অন্যায়কে ইজতেহাদ বলে পাশ কাটিয়ে যাওয়া।

কিন্তু চোখ বন্ধ করলেই প্রলয় বন্ধ হয় না। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় ইসলামের প্রাথমিক যুগে (খোলাফয়ে রাশেদীনের শেষ পর্যায়ে) সাহাবী মুয়াবিয়ার কিছু বিতর্কিত কর্মকান্ডে তৎ কালে তো বটেই, পরবর্তীকালেও নানা বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে।

হাসান বসরীর মত মনীষীর ভাষায় মুয়াবিয়ার চারটি কাজ এমন যে, তার যে কোনো একটিই ক্ষতির জন্য যথেষ্ট!

১। তিনি উম্মাহর বিরুদ্ধে তরবারি ধারণ করেছেন। পরামর্শ ছাড়াই ক্ষমতা কুক্ষিগত করেছেন।

২। নিজ সন্তানকে নিজের স্থলাভিষিক্ত করেছেন (রাজতন্ত্রের চূড়ান্ত প্রচলন)।

৩। সুস্পষ্ট শরীয়া লংঘন করে যিয়াদকে আপন পরিবার ভূক্ত করেছেন।

৪। তৎ সময়ের বিশিষ্ট সাহাবী হুজর ইবনে আদি (রা) এবং তার সাথীদের নির্বিচারে হত্যা করেছেন। (ত্বকী ওসমানীর মত সালাফীরা ‘রাজতন্ত্রের চোখে’ হযরত হুজর আদীর মত এমন বিশিষ্ট সাহাবীকে সাহাবীর তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার সাহস পর্যন্ত দেখিয়েছেন। মু‘য়াবিয়া মদীনায় হযরত ‘আয়িশার (রা) সাথে সাক্ষাত করলে মা আয়শা সর্বপ্রথম হযরত হুজরের বিষয়টি উঠিয়েছিলেন। তিনি এভাবে ভর্ৎসনা করেন- ‘মু’য়াবিয়া! হুজরের ব্যাপারে তোমার ধৈর্য্য ও বিচক্ষণতা কোথায় ছিল। তাঁকে হত্যার ব্যাপারে তুমি আল্লাহকে ভয় করনি।’ হযরত আয়িশা বলতেন- ‘আল্লহর কসম! মু‘য়াবিয়া যদি বুঝতো কূফায় সাহস ও আত্নমর্যাদাবোধের কিছু অবশিষ্ট আছে তাহলে কখনও তাদের সামনে থেকে হুজরকে ধরে নিয়ে গিয়ে এভাবে হত্যা করতো না। কিন্তু কালিজা চিবানো হিন্দার এই ছেলে ভালো করেই বুঝে গেছে, তখন সেইসব লোক চলে গেছেন। আল্লাহর কসম! কূফা ছিল সাহসী ও আত্নমর্যাদাবোধ সম্পন্ন আরব নেতাদের আবাসভূমি। [আসহাবে রাসূলের জীবন কথা (হুজর ইবনে আদী রা.)- মুহাম্মদ আব্দুল মা’বুদ]

মুয়াবিয়া সম্পর্কে হাদীসের বর্ণনাঃ-

সহিহ মুসলিম, হাদীস নম্বর – ৬২৯৮ ইবনে আব্বাস হতে বর্ণিত আছে যে, "আমি একদিন ছেলেদের সাথে খেলা করছিলাম, এমন সময় রাসুল করিম সাঃ-কে আসতে দেখলাম৷ আমি একটি দরজার আড়ালে চলে গেলাম৷৷ কিন্তু রাসুল করিম আমার কাঁধ ধরে আমাকে ডেকে আনলেন এবং মুয়াবিয়াকে ডাকতে বললেন৷ আমি ডাকতে গিয়ে তাকে ভোজনে ব্যস্ত দেখতে পেলাম এবং ফিরে আসলাম৷ রাসুল করিম আবার আমাকে যেতে বললেন ,আমি আবার গেলাম এবং মুয়াবিয়াকে ডাকলাম কিন্তু সে তখনও ভোজনে ব্যস্ত ছিল৷ আমি ফিরে এসে রাসুলকরিমকে এটা জানানোর পর তিনি বল্লেন 'আল্লাহ যেন তার পেট কখনও পূর্ণ না করেন' !" এই হাদীসটি ইমাম আহমাদ ইবনে হানবাল রহ. এবং ইমাম হাকিম রহ. দ্বারা পরিক্ষীত এবং স্বীকৃত৷

আল তাবারী (৮মখন্ড) , পৃষ্ঠা নং ১৮৬, দারআল মারিফ পাবলিকেশন, মিশর৷ এই হাদীসটি দুজন সাহাবার দ্বারা বর্ণিত হয়েছে— হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রা. হতে বর্ণিত আছে, "আমি রাসুল করিম সাঃকে বলতে শুনেছি যে " মুয়াবিয়ার মৃত্যু ইসলামের পথে হবে না"! হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ রা. হতে বর্ণিত আছে, " আমি রাসুল করিম সাঃ-কে বলতে শুনেছি ' মৃত্যুর সময় মুয়াবিয়া আমার উম্মত হিসেবে গ্রহনযোগ্য হবেনা'!" এমন সহীহ হাদীস থাকার পরও সালাফীরা মিথ্যা বর্ণনার জাল বুনে মানুষকে ধোকায় ফেলে মানুষের ঈমান আকিদা ধ্বংস করে চলেছে। ইসলামের ইতিহাসে প্রথম অন্তঃকোন্দল বা ফিৎনার জনক ছিলেন মুয়াবিয়া৷

বিষয়: বিবিধ

৩৫৪২ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

379772
১৭ নভেম্বর ২০১৬ বিকাল ০৫:০৭
ঘুম ভাঙাতে চাই লিখেছেন : প্রথম প্যারাটুকু পড়লাম বাকিটা পড়ার ইচ্ছা হলনা। ইতিহাস টেনে কি লাভ? কোন মানুষই ভুলের উপরে না। আপনি যখন এসব ইতিহাস ঘাটছেন তখন বাস্তবতা হল এই- মায়ানমারে মুসলিম গণহত্যা নতুন রূপলাভ করেছে, কাশ্মিরের পরিস্হিতি আগের যে কোন সময়ের চাইতে ভয়ানক, সিরিয়াতে মুসলিম হত্যা পরাশক্তিগুলোর জন্য নিত্যদিনের বিনোদন, খেলা হয়ে গেছে। আর কয়েকবছরের মাঝে ইউরোপ আমেরিকা মুসলিমদের জন্য ভয়ানক হয়ে উঠবে। আমাদের দেশে একদিকে যেমন সামাজিক অনাচার বৃদ্ধি পেয়েছে সাথে সাথে মানুষও ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা থেকে যোজন যোজন দুরে সরে গেছে। গরীব শ্রেণীর অধিকাংশ মানুষই শির্ক ও বিদাতে নিমগ্ন। ইজরাঈল চাইছে আরেকটি বিশ্বযুদ্ধ বাঁধাতে আর রাশিয়াও তার দেশের যুদ্ধ প্রস্তুতি সমাপ্ত করছে। আমি কাঁদবোই, রাগে ফুঁসেও উঠবো কিন্তু দিনশেষে একজন মুসলিম হিসেবে আমি ইচ্ছা করলেই মায়ারমার, কাশ্মির, সিরিয়া সমস্যা মিটিয়ে ফেলতে পারবোনা। যারা তথাকথিত গণতান্ত্রিক ইসলামের প্যাচাল শুনাচ্ছে, তারা নিজেরাই নিজেদের বানানো মতবাদ দ্বারা প্রতারিত, বিভ্রান্ত আর তরুণদের জন্য তা আরেক আত্নঘাতী মৃত্যুফাঁদ ছাড়া কিছুইনা। এই মতবাদ বিদাতের প্রকৃষ্ট উদাহরণ যা কিছুই চেঞ্জ করতে পারবেনা। তাই আজকে একজন মুসলিম হিসেবে আমার করণীয় কি? আমাকে এমন পরিস্হিতিতে রাসূল (সাঃ) কোন পথ বেছে নিতে বলেছেন? সেটা ভাবা আর কিছু লোককে তা নিয়ে ভাবতে বলাই শ্রেয়।
২১ নভেম্বর ২০১৬ সকাল ১০:১৪
314436
আবু বকর সিদ্দিকী লিখেছেন : চোখ বুঝে থাকলে প্রলয় তো বন্ধ হবে না। পরস্পর বিরোধী দুটো চরিত্রকেই আপনি ভাল বলতে পারেন না। আমাদের ভাল খারাপের মানদন্ড কোরআন এবং হাদীস। সাহাবী হলেই সব মানতে হবে তা নয়। রাজতন্ত্রীরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই কিছু বিভ্রান্তিকর প্রচারনায় লিপ্ত হওয়ার কারনে মুসলমানদের কলম ধরতে হয়। সত্যটা প্রকাশ করে বিভ্রান্তি দুর করতে হয়।
379775
১৭ নভেম্বর ২০১৬ সন্ধ্যা ০৭:৩৭
কুয়েত থেকে লিখেছেন : আপনার লেখা্টি পগলাম নবীজি আমাদের জন্য ২টি বস্তু রেখে গেছেন আল কুরআন এবং নবীজির সুন্নাহ তথা হাদিস। ভাই মুসলিমরা হলো একটি দেহ আজ আমরা কোথায় অবস্থান করছি। ইসলামের ক্ষতি সবচেয়ে বেশী করেছেন নামদ্বারি মুনাফেক মুসলমানেরাই। কুরআন সুন্নাহর অনুসারী মুসলমানেরা ঐক্যবদ্ধ তাকলে পৃথিবীর কোন শক্তিই থাকতো না ইসলামের দিকে বাঁকা চোখে তাকানোর।তাই আজকে একজন মুসলিম হিসেবে আমার আপনার করণীয় কি তা চিন্তা করার সময়কি আসেনি..? আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ
379779
১৮ নভেম্বর ২০১৬ রাত ১২:২৬
স্বপন২ লিখেছেন : ভালো লাগলো / অনেক ধন্যবাদ /

379782
১৮ নভেম্বর ২০১৬ সকাল ১০:৪৮
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : পরিশ্রমি লিখাটির জন্য ধন্যবাদ। তবে শেষ দুটি হাদিস এর বিষয়ে আরো গবেষনা প্রয়োজন বলে মনে করছি।
২১ নভেম্বর ২০১৬ সকাল ১০:২০
314437
আবু বকর সিদ্দিকী লিখেছেন : চোখ বুঝে থাকলে প্রলয় তো বন্ধ হবে না। পরস্পর বিরোধী দুটো চরিত্রকেই আপনি ভাল বলতে পারেন না। আমাদের ভাল খারাপের মানদন্ড কোরআন এবং হাদীস। সাহাবী হলেই সব মানতে হবে তা নয়। রাজতন্ত্রীরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই কিছু বিভ্রান্তিকর প্রচারনায় লিপ্ত হওয়ার কারনে মুসলমানদের কলম ধরতে হয়। সত্যটা প্রকাশ করে বিভ্রান্তি দুর করতে হয়। হাদীস-এর রেফারেন্সটা দেখে নিন। এগুলো সহি হাদীস। এগুলো সালাফীরা কৌশলে লুকিয়ে রাখতে চায়। কেননা সালাফীদের প্রধান এজেন্ডই হলো, রাজতন্ত্রকে জায়েজ করা। মুয়াবিয়া প্রতিষ্ঠা করলেই তা ইসলামে জায়েজ হয় না। আমাদের মানদন্ড অবশ্যই কোরআন-হাদীস। ত্বকী উসমানীর বইতে মুয়াবিয়ার আলোচনা করতে গিয়ে সাহাবী সম্পর্কে একটা জঈফ হাদীস দিয়ে মানুষকে আরো বেশী বিভ্রান্ত করা হয়েছে।
379796
১৯ নভেম্বর ২০১৬ সকাল ১১:১৯
আবু জান্নাত লিখেছেন : যারা চলে গেছেন, তাদের ব্যপারে এতো আলোচনা না করলেই কি নয়!
قال فما بال القرون الأولى، قال علمها عند ربي في كتاب لا يضل ربي ولا ينسى
এই আয়াত কি আমাদেরকে সেই নির্দেশ দেয় না!

তাদের আমলনামা তাদের জন্য, আর আমাদের আমলনামা আমাদের।

চুপ থাকাই উত্তম মনে করছি। ধন্যবাদ
২১ নভেম্বর ২০১৬ সকাল ১০:১৩
314434
আবু বকর সিদ্দিকী লিখেছেন : আপনার কথা ঠিক। এটা ধর্মীয় দৃষ্টিকোন।তবে, ইতিহাসের পাঠ তো বন্ধ হবে না। চোখ বুঝে থাকলে প্রলয় তো বন্ধ হবে না। পরস্পর বিরোধী দুটো চরিত্রকেই আপনি ভাল বলতে পারেন না। আমাদের ভাল খারাপের মানদন্ড কোরআন এবং হাদীস। সাহাবী হলেই সব মানতে হবে তা নয়। রাজতন্ত্রীরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই কিছু বিভ্রান্তিকর প্রচারনায় লিপ্ত হওয়ার কারনে মুসলমানদের কলম ধরতে হয়। সত্যটা প্রকাশ করে বিভ্রান্তি দুর করতে হয়।
২১ নভেম্বর ২০১৬ সকাল ১০:১৩
314435
আবু বকর সিদ্দিকী লিখেছেন : আপনার কথা ঠিক। এটা ধর্মীয় দৃষ্টিকোন।তবে, ইতিহাসের পাঠ তো বন্ধ হবে না। চোখ বুঝে থাকলে প্রলয় তো বন্ধ হবে না। পরস্পর বিরোধী দুটো চরিত্রকেই আপনি ভাল বলতে পারেন না। আমাদের ভাল খারাপের মানদন্ড কোরআন এবং হাদীস। সাহাবী হলেই সব মানতে হবে তা নয়। রাজতন্ত্রীরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই কিছু বিভ্রান্তিকর প্রচারনায় লিপ্ত হওয়ার কারনে মুসলমানদের কলম ধরতে হয়। সত্যটা প্রকাশ করে বিভ্রান্তি দুর করতে হয়।
380053
২৪ নভেম্বর ২০১৬ দুপুর ১২:৫০
আল্লাহর সন্তুষ্টি লিখেছেন : পিলাচ
পিলাচ
অনেক ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File