"রোমান্টিক ঝগড়া"

লিখেছেন লিখেছেন তারমিহিম আসফিম ২৯ জানুয়ারি, ২০১৪, ০৭:৪৩:৩৩ সকাল

১।

মোবাইলটা বাজতেই টেবিলের

উপর থেকে তুলে নিল সায়মা।

রনির বন্ধু ফোন করেছে।

‘হ্যালো সাইদ ভাই বলেন।’ ‘ভাবি কেমন আছেন?’ ‘এই তো।

আমাদের আর থাকা।’

একটা দীর্ঘশ্বাস গোপন করল

সায়মা।

‘আপনারা এইসব কি শুরু করলেন?

বিয়ে হল এখনো সাত মাসও হল না। কথায় কথায় ঝগড়া। তার উপর

আপনি এখন বাসা ছেড়ে বাবার

বাড়িতে। কোন মানে হয়?’

‘ঝগড়া কি আর একা করা যায়?’

‘তা ঠিক আছে। ঐ

রনি হারামজাদাটার দোষ আছে। তারপরেও নিজেরা সলভ

করে নিলে ভাল হত না?’

‘সলভ হয়নি বলেই

না আমি চলে আসলাম।’

‘এখন রনির নাকি খুব খারাপ

লাগছে। ও নাকি খুব Guilty ফিল করতেছে।’ ‘ Guilty ফিল

করছে নিজ

মুখে বলছে না কেন?’

‘না মানে, বুঝেন না? Uneasy

ফিল করতেছে।’

‘এই সব তো ওর পুরনো অভ্যাস। ঝগড়া করার সময় ষাঁড়ের মত

চেঁচাবে। পরে guilty ফিলের

নাটক। এই নাটক আর ভাল

লাগতেছে না ভাই। ওরে বলবেন

যেন নিজ মুখে বলে। উকিল যেন

না ধরে।’ ‘ওকে ওকে।’ ‘কে ফোন দিছে?’ পাশ

থেকে রেহমা বলল। সে সায়মার

ছোট বোন।

‘আর কে? ওর বন্ধু, সাইদ ভাই।

উকিল দিয়ে রাগ ভাঙ্গাচ্ছে।’

‘হা হা। দুলাভাই কি সুইট!’ ‘এখানে সুইটের কি হল?’

‘এই

যে তোমাকে ছাড়া থাকতে পারছে

বন্ধুকে দিয়ে ফোন করাচ্ছে।’

‘সুইট না। ঘোড়ার ডিম। নাটক

করতে ওস্তাদ। বিরাট অভিনেতা।’

শুনে হো হো করে হেসে ফেলল

রেহমা। ২।

রাত ১২টা। সায়মা শুয়ে ছিল। আর

রেহমা পড়ছে। সামনে তার

পরীক্ষা। হঠাৎ জানালা দিয়ে কি একটা দেখে চেঁ

‘আপু দেখে যাও।’ ‘কি?’

‘আরে আসো না।’

বিছানা থেকে উঠে এল সায়মা।

‘কি?’

‘ঐ দেখো দুলাভাই না?’ সায়মা জানালা দিয়ে রাস্তায়

তাকাল। একটা ছেলে মাথা নিচু

করে হাঁটছে।

‘আরে তাই তো। দেখি তুই ফোন

দে।’

ফোন করল রেহমা। দুজনেরই চোখ রাস্তায়। দেখল ঐ ছেলেটা ফোন

ধরেছে।

‘হ্যালো দুলাভাই আপনি কোথায়?’

‘এই তো বাসায়। কেন?’

‘ফুটপাথে বাসা নিলেন

কবে থেকে?’ ‘না মানে........... .......’ ‘আবার দেখি মাথা চুলকাচ্ছেন।’

হেসে বলল রেহমা।

‘না এদিকে একটা ফ্রেন্ড এর

বাসায় আসছিলাম। ভাবলাম

তোমাকে দেখে যাই। আবার এত

রাত। তাই.........।’ ‘ও আচ্ছা। আমাকে দেখতে আসছেন।

ভাল ভাল। তো বাসায়

এসে দেখেন। নাকি সাথে দূরবীন

নিয়ে আসছেন?’

‘না থাক এত রাতে।

আব্বা আম্মা কি মনে করে।’ ‘আরে আসেন আসেন। এক কাজ করেন

ছাদে চলে যান।

আমি আপুকে পাঠাই দিব।

সকালে আম্মু উঠলে বলব

আপনি সকালেই আসছেন।

‘কি নির্লজ্জ দেখলি? এত রাতে বাসায় চলে আসছে।’

সায়মা বলল।

‘আপু তুমি না। নির্লজ্জ কই?

তোমাকে কি ভালবাসে। আর

তানভীরটা ঝগড়া করলে সরিই

বলতে চায় না।’ বলেই জিভে কামড় দিল রেহমা।

কিন্তু ততক্ষণে বুলেট বের

হয়ে গেছে। শুনে ফেলল সায়মা।

‘তানভীর কে রে?’

‘এই তো আমার একটা বন্ধু।’

আমতা আমতা করল রেহমা। ‘বন্ধু মানে? দাঁড়া ঐ

ব্যাপারে পরে কথা হবে।’ এই

বলে ছাদে রওনা হল সায়মা। ৩।

সায়মাকে দেখেই মোবাইল

টেপাটেপি শুরু করল রনি।

‘কি ব্যাপার এত রাতে এদিকে কোথায় এসেছ?’

সামনে এসে সায়মা বলল। ‘এই

তো রায়হানদের বাসায়।’

‘রায়হান ভাইয়ের

বাসা তো জানতাম মগবাজার।’

‘না মানে ঐ.............. .’ মাথা চুলকাল রনি।

মনে মনে হেসে ফেলল সায়মা।

বেচারা! মিথ্যাটাও ঠিক মত

বলতে পারে না।

‘এত রাতে যে রাস্তা ঘাটে টহল

দিচ্ছিলে কোন বিপদ টিপদ হলে কি হত?’ গলার

রাগী ভাবটা বজায় রাখল

সায়মা।

‘কি হত আর? আমার

জন্যে চিন্তা করবে কে?’ উদাস

গলায় বলল রনি। ‘দার্শনিকদের মত কথা বলার

চেষ্টা করছ মনে হচ্ছে?

আম্মা উঠে দেখলে কি ভাববে?

জামাই রাত ১২টায় চলে এসেছে।’

‘সমস্যা কি?

আম্মাকে বলবে আমাকে ডাক্তার রাত ১২ টার পর হাটতে বলেছে।’

অনেক কষ্টে হাসি চেপে রাখল

সায়মা।

‘হাসি চেপে রাখলে নাকি হার্টে

ক্ষতি।’ সুফি সাধকের ভাব

নিয়ে বলল রনি। ‘ডাক্তারি করতে আসছ না?’ রনির

হাতের উপর কিল বসাল সায়মা।

‘উফফফ!! কি জোররে বাবা। বাবার

বাড়িতে এসে জিমে ভর্তি হইলা ন

‘জোকারের মত কথা বলবা না। আর

ঝগড়া করবা নাকি বল?’ ‘আরে ধুর। আমি ঝগড়া করি নাকি?

এটা তো জাস্ট একটা মসলা।

মাঝে মাঝে ঝগড়া না হইলে সম্পর্

শক্ত হয় না। শোন নাই? বিখ্যাত

মনীষী এরিস্টটল বলেছেন.........

......।’ কথা শেষ করল না রনি। সায়মার আরেকটা কিল খাওয়ার

চান্স দেখে।

ততক্ষণে আকাশে চমৎকার

একটা চাঁদ উঠেছে। পূর্ণ তালার

মত চাঁদ। শুধু রনি আর সায়মার

জন্যে সে চাঁদ অনেক খানি নিচে নেমে আসল।

বিষয়: বিয়ের গল্প

৪৯৩৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File