প্রিয় হাদিস

লিখেছেন লিখেছেন তবুওআশাবা্দী ১৩ জুন, ২০১৫, ০৭:০৬:২০ সকাল

নিজের একাডেমিক পড়াশোনার বাইরে নিউজ পেপার ছাড়া ইসলামী সাহিত্য, আরো স্পেসিফিকালি বললে, হাদিসের বইগুলো, ইসলাম আর সাইন্স রিলেটেড বইপত্রই বেশী পড়তে এখন ভালো লাগে | হাদিসের বইগুলো থেকে কিছু কিছু হাদিস পরা আমার প্রায় প্রতিদিনের অভ্যাস এখন|ল্যাপটপে যখন কাজ করি(সারাদিনের প্রায় বেশির ভাগ সময়ই একাডেমিক কারণেই ল্যাপটপ ইউজ করতে হয়)কাজের মধ্যেই কিছু নির্ধারিত ওয়েব সাইটে গিয়ে হাদিস পড়ি|

হাদিসের বইগুলো যখন পড়ি তখন ভেবে অবাক হই যে কত নিষ্ঠার সাথে সাহাবীরা,তাবেইন এবং তাঁদের পরবর্তীরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহী আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদেশ-নিষেধ, উপদেশ, করণীয়-বর্জনীয় সম্পর্কিত বক্তব্যগুলো সংরক্ষণ করেছেন|হাদিস সংক্রান্ত কত যে বিষয় তারা সংরক্ষণ করেছেন!আল্লাহ সুরা মায়িদাহতে বলেছেন "...আল ইয়াওমা আকমালতুলাকুম দ্বীনাকুম ওয়াআতমামতু লাকুম আলাইকুম নি'ইমাতি ওয়ারাদিতু লাকুমুল ইসলাম দ্বিনা" অর্থাত "আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীন পূর্ণ করলাম, আমার নেয়ামত সম্পূর্ণ করলাম তোমাদের প্রতি,আর ইসলামকে তোমাদের জন্য দ্বীন মনোনীত করলাম..."(৫:৩)|যে দ্বীনকে আল্লাহ পূর্ণ করেছেন আমাদের জন্য তার রাসুলের কথাবার্তাতো শুধু ধর্মীয় বার্তাতেই সীমাবদ্ধ হবার কথা নয়| তাঁর আদেশ-নিষেধ, উপদেশ, করণীয়-বর্জনীয় সম্পর্কিত বার্তা হতে হবে জীবনের প্রতিটি কাজের সাথে সম্পর্কিত|যেমন ইসলামের স্থম্ভ ইমান, নামাজ, রোজা, যাকাত আর হ্বজ এগুলোর বাইরেওতো মুমিনের জীবন আল্লাহর পছন্দে পরিচালিত হবে| সাহাবী, তাবেইন আর তাদের পরবর্তীরা হাদিসের যে বিশাল ভান্ডার সংরক্ষণ করেছেন তাতো আল্লাহর বানীকেই তো সত্যায়িত করেছে|ব্যক্তির দৈনন্দিন একান্ত ব্যক্তিগত কাজগুলোর নির্দেশনা থেকে শুরু করে বিজ্ঞান,রাষ্ট্রশাসন কি নেই হাদিসের বইগুলোতে!হাদিস সংরক্ষণের আরেকটা বিষয়ও আমাকে সবসময়ই অবাক করে| সেটা হলো হাদিস সংরক্ষণে যাচাই বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সাহাবী থেকে শুরু করে পরবর্তীকালের হাদিসবেত্তাদের সতর্কতা|আমাদের নবীজিই সম্ভবত পৃথিবীর একমাত্র ধর্মীয় নেতা যার সর্বোত্তম অনুসারীরাই তাঁর কথাবার্তা সংরক্ষণে এত যাচাই বাছাই করেছেন, তাঁর নাম প্রচলিত এমন অসংখ্য বক্তব্য বাতিল ঘোষণা করেছেন যেগুলো আজও হাজার বছর পরও খুব প্রাসংগিক| উধাহরণ হিসেবে বলা যায় জাল একটি হাদিসের কথা- বিদ্যা শিক্ষার জন্য প্রয়োজনে চীন দেশে যাও|মর্মের দিক থেকে এত অসাধারণ একটি বক্তব্যও হাদিসবেত্তারা রাসুলের হাদিস হিসেবে গ্রহণ করেননি প্রয়োজনীয় সনদ না থাকার কারণে|এতে রাসুলের হাদিস অতিশয়োক্তি, অতিরঞ্জনের হাত থেকে মুক্ত থাকতে পেরেছে হাজার বছর ধরে|

রাসুলুল্লাহর সাল্লাল্লাহী আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিস কুরআন শরীফের বিস্তারিত ব্যাখা| তাই হাদিস নিয়মিতই পরার চেষ্টা করি|আমি নিজে সোশ্যাল সাইন্সের মানুষ|তাই হাদিসের গুলোরমধ্যে ধর্মীয় বিধি বিধান সম্পর্কিত হাদিসগুলো ছাড়াও যেগুলো সামাজিক সমতা রক্ষা, রাজনীতি, অর্থনীতি, রাষ্ট্রীয় শাসন পরিচালনা সম্পর্কিত সেগুলোই বেশি মনোযোগ আকর্ষণ করে|ধর্মীয় ও সামাজিক বিধিবিধান পরে কেউ কি মুগ্ধ হয়? অন্যদের কি হয় আমি জানিনা| আমি ভিশন মুগ্ধ হই| এইতো সেদিনই পড়লাম যুক্তরাষ্ট্রের এক গাইনকোলজিস্ট ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন তার আরবীয় পেশেন্টের কাছে কুরআন আর রাসুলুল্লাহর সাল্লাল্লাহী আলাইহি ওয়া সাল্লামের কিছু কথা শুনে| এই ডাক্তার রোগিনীকে বলেছিলেন তার নবজাত শিশুকে ডান কাত করে শোয়াতে তাতে শিশুর হার্ট ভালো থাকবে | এর উত্তরে রোগিনীর হাসব্যান্ড সেই আক্তারকে বলেছিল আমরা সবসময়ই ডানদিক হয়ে শুই কারণ আমাদের নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ) এভাবেই শুতে বলেছেন | শোয়া সংক্রান্ত এ’রকমই একটি হাদিস বর্ণনা করেছেন বারা’ ইবনে ‘আযেব (রাদিয়াল্লাহু আনহু), তিনি বলেন, “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, তুমি যখন তোমার বিছানায় (ঘুমাবার জন্য) আসবে, তখন তুমি নামাযের ওযূর মত ওযূ কর। অতঃপর ডান পার্শ্বে শুয়ে দো‘আ পাঠ কর....’’ (রিয়াযুস স্বা-লিহীন, অধ্যায়ঃ ৫/ নিদ্রার আদব, হাদিস নম্বরঃ ৮১৮) | ধর্মীয় বিধি বিধান, সামাজিক সমতা রক্ষা, রাজনীতি, অর্থনীতি, রাষ্ট্রীয় শাসন ছাড়াও বিজ্ঞানও এসে মিলেছে হাদিসের উদ্দৃতিগুলোতে |এর উত্তরে স্থম্ভিত সেই গাইনোকোলজিস্ট এই বলে তার প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ছিলেন যে জ্ঞান লাভ করতে বিজ্ঞানের এত দিন লাগলো সেটা কেউ পনেরশত বছর আগেই বলে গিয়েছেন! এই ঘটনার পর সেই ডাক্তার তার অফিস থেকে ছুটি নিয়ে ইসলাম অধ্যয়ন করেন এবং ইসলাম গ্রহণ করেন |

ইসলাম প্রতিষ্ঠাকালে রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ধর্মীয় মতবাদের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় একটি সামাজিক সংস্কারের চেষ্টা করেন ইসলামকে সর্বজনীন ধর্ম হসেবে প্রতিষ্ঠা কল্পে | রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)সামাজিক সংস্কারের বিষয়ে তিনি যে নীতি নির্দেশনাগুলো দেন সেগুলো সামাজিক সমতা, ন্যায় নীতি, প্রতিষ্ঠায় এবং অর্থনৈতিক শাসন-শোষণ নির্মূলের অনেক ক্ষেত্রেই গোল্ডেন রুল প্রতিষ্ঠা করে | যার অনেক কিছু এই পনেরশত বছর পরও আধুনিক পৃথিবীতে অনুসরণ করা হয় | যেমন প্রতিবেশীর প্রতি দায়িত্ব পালনে রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মুসলমানদের বিশেষভাবে নির্দেশ দিয়েছেন |যেমন আবূ হুরায়রাহ্ (রাযি.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিস (বুখারী,হাদিস নং ৬০১৮) “রাসূলুল্লাহ(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ তা‘আলা ও পরকালের প্রতি বিশবাস স্থাপন করে সে যেন তার প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়…”| এখানে প্রতিবেশী বলতে মুসলিম এবং নন মুসলিম সবাইকেই অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে | খুব পরিস্কার ভাবেই একটি “কমুনিটি বিল্ডিইঙ্গের” প্রচেষ্টা লক্ষ্য কর যায় এই হাদিসে | যেটা একটি সমাজকে বা জাতির উন্নয়নের জন্য খুবই দরকারী |এখানে যে বিষয়টি আমাকে অবাক করে, তাহলো প্রতিবেশীর প্রতি দায়িত্ব পালনকে দেয়া গুরুত্বকে | আল্লাহ তায়ালা আর পরকালের প্রতি বিশ্বাস তথা ইমান হলো ইসলামের প্রথম স্থম্ভ | প্রতিবেশীর প্রতি দায়িত্ব পালন যথাযথ না হলে এই ইমানই প্রশ্ন সাপেক্ষ হয়ে পড়তে পারে |

একই ভাবে রাসুলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আরেকটি হাদিসে সমাজে অবহেলিত আর নিগৃহীত একটা গ্রুপ -বিধবা আর মিসকিনদের প্রতি সদয় ব্যবহারকে কি দারুন ভাবেই না উত্সাহিত করা হয়েছে | আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,”বিধবা ও মিসকীনের প্রতি অনুগ্রহকারী ব্যক্তি আল্লাহর পথে জিহাদকারী ব্যক্তির সমতুল্য। বর্ননাকারী বলেন, আমার মনে হয় তিনি এও বলেছেন যে, ঐ ব্যক্তি অক্লান্ত সালাত আদায়কারী ও অনবরত সিয়াম সাধনাকারী ব্যক্তির সমতূল্য”(সহীহ মুসলিম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, অধ্যায়ঃ ৫৫/ যুহুদ ও দুনিয়ার প্রতি আকর্ষণহীনতা সম্পর্কিত বর্ণনা,হাদিস নম্বরঃ৭১৯৮)| আমেরিকায় আছি আজ বেশ অনেক বছর|নানা তর্ক বিতর্কের মাঝেও দেখছি এরা যে ফেডারেল মেডিকেইড প্রোগ্রাম বা অন্য সব সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের মাধ্যমে সমাজের খুবই দরিদ্র গ্রুপটাকে সাহায্য করছে |আরো অদ্ভুত হলো এসব ওয়েলফেয়ার প্রোগ্রামগুলোতে বিধবাদের বিশেষ করে যাদের সন্তান আছে তাদের জন্য আলাদা করে এম্ফাসিস করা হচ্ছে!এটা সমাজকে স্ট্যাবল রাখার জন্যই করেছে|এখনকার অর্থনীতির তত্বগুলোই এই ধরনের ইনিশিয়েটিভ যে খুবই দরকারী তাই বলছে|এই কথাটাই কোনো তত্ব ছাড়াই রাসুলুল্লাহ পনেরশত বছর আগে তার অনুসারীদের খুবই গুরত্বের সাথে পালনের নির্দেশনা দিয়ে গেছেন একাডেমিক বিষয় হিসেবে সমাজ বিজ্ঞানের ধারণা প্রতিষ্ঠার হাজার বছর আগেই!

হাদিস পড়তে যে সবসময়ই ভালো লাগছে তা নয়|মাঝে মাঝেই প্রচন্ড হতাশ লাগে|আবূ হুরায়রা থেকে হাদিসে উল্লেখিত হয়েছে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন “আমি তোমাদেরকে যেসব বিষয় নিষেধ করেছি, তা থেকে বিরত থাক। আর যেসব বিষয়ে আদেশ করেছি, যথাসম্ভব তা পালন কর...” (বুখারীঃ ৭২৮৮, মুসলিম: ১৩৩৭)| হাদিসতো পরছি,কিন্তু রাসুল্লুলাহ সাল্লাহী আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদেশ নিষেধগুলো মানতে পারছি কি ঠিকমত? সাহাবীযে আকরামতো রাসুল্লুলাহ সাল্লাহী আলাইহি ওয়াসাল্লামের যে কোনো কথা বা নির্দেশনায় বিনা বাক্য ব্যয়ে মেনে নিতেন | আবদুল্লাহ ইবনু উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, “লোকেরো কুবার মসজিদে ফজরের সালাত (নামায/নামাজ) রত ছিলেন, এমন সময় একজন আগন্তুক এসে বলল, (গত) রাতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর উপর কুরআন অবতীর্ণ -করা হয়েছে এবং কাঁবাকে কিবলা বানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সূতরাং তোমরা কাবা-এর দিকে মুখ করে দাড়াও। তখন তাদের চেহারা ছিল সিরিয়ার দিকে, তারপর তারা কাবার দিকে ঘুরে দাঁড়ালেন” (বুখারীঃ৬৭৫৭) ।নামাজের মত প্রধানতম ইবাদতের অন্যতম ফরজ শর্ত যে কিবলামুখী হওয়া সেটাও রাসুল্লাহ্রর উপর অবতীর্ণ নির্দেশনার খবরের ভিত্তিতেই সাহাবীরা পরিবর্তন করেছেন বিন্দুমাত্র দ্বিধা না করেই | আল্লাহতায়ালা পবিত্র কুরআন শরীফে বলেছেন 'অতিউল্লাহু ও আতিউর রাসুল' অর্থাত আমাকে এবং আমার রাসুলকে অনুসরণ কর | ভয় লাগে এই ভেবে যে আসলেই কি সত্যিকার ভাবে অনুসরণ করতে পারছি আল্লাহ ও তার রাসুলকে | প্রতি পদে পদেইতো মনে হয় খিলাফ করছি রাসুলের নির্দেশনা | রাসুলুল্লাহ সাল্লাহী আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশ মত প্রতিবেশীর হক্ক আদায় করতে পারছি কি ঠিকমত?পেছনের দিকে যখন তাকাই তখনকার কথা ভেবে কত যে অপরাধী হই নিজের কাছেই|কত দিনইতো দরজায় ধাক্কা দেওয়া ফকিরকে ফিরিয়ে দিয়েছি !কোনদিন কি খোঁজ নিয়েছি আসে পাশে কোনো এতিমখানা ছিল কিনা যেখানে কত অনাথ শিশু খেয়ে না খেয়ে বাস করে?

আবূ হুরায়রা ও আবূ সায়িদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত, তারা বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামবলেছেন: “কিয়ামতের দিন বান্দাকে উপস্থিত করা হবে, অতঃপর আল্লাহ তাকে বলবেন: আমি কি তোমাকে কান, চোখ, সম্পদ ও সন্তান দেই নি? এবং তোমার জন্য চতুষ্পদ জন্তু ও কৃষি অনুগত করে দিয়েছি। আর তোমাকে দিয়েছি নেতৃত্ব দেয়া ও ভোগ করার সুযোগ, (এত কিছুর পর) তুমি কি চিন্তা করেছ তোমার এ দিনে আমার সাথে সাক্ষাত করবে?” রাসূল বলেন: “সে বলবে: না, অতঃপর তিনি তাকে বলবেন: আজ আমি তোমাকে ছেড়ে যাব, যেমন তুমি আমাকে ভুলে গিয়েছিলে”। (সহিহ হাদিসে কুদসি,ইসলাম হাউস,অধ্যায়ঃ ১,হাদিস নং ৭৮)|এই হাদিসটা পড়লে ভয় লাগে|মনে হয় যেন আমিই হব আল্লাহর সেই হতভাগ্য বান্দা|যাকে অনেক অনেক কিছু দেবার পরও তার ইবাদতে গাফিলতি, তার তাকওয়ার কমতি -কোনো কিছুতেই কোনো পাশ মার্কস নেই |

আমি জানি আমি আল্লাহর নেক বান্দা হতে পারিনি |আমি গুনাহগার| কিন্তু সারাদিন পরে আমি যখন এই হাদিসটা পড়ি- তখন সব শংকা আমার কেটে যায় নিমেষেই | আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুবলেন, “রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি আল্লাহ্ তা‘আলা বলেছেন: হে আদম সন্তান! যতক্ষণ পর্যন্ত তুমি আমাকে ডাকবে এবং আমার কাছে (ক্ষমা) প্রত্যাশা করবে, তুমি যা-ই প্রকাশ হোক না কেন আমি তা ক্ষমা করে দেব- আর আমি কোন কিছুর পরোয়া করি না। হে আদম সন্তান! তোমার গোনাহ্ যদি আকাশ সমান হয়ে যায় আর তুমি আমার কাছে ক্ষমা চাও, তাহলে আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেব। হে আদম সন্তান! যদি তুমি পৃথিবী পরিমাণ গোনাহ্ নিয়ে আমার কাছে আস এবং আমার সঙ্গে কোন কিছুকে শরীক না করে (আখেরাতে) সাক্ষাত কর, তাহলে আমি সমপরিমাণ ক্ষমা নিয়ে তোমার সঙ্গে সাক্ষাত করবো” (তিরমিযী ,নং-৩৫৪০) |আমি আবার অনেক আশায় উজ্জীবিত হয়ে উঠি|আবার মনে পরে যায় আল্লাহতো রাহমানির রহিম|বান্দার প্রতি দয়া দেখানোকে আল্লাহত তার দায়িত্ব বলে মনে করেন| আমি আগের চেয়েও উজ্জীবিত হয়ে উঠি, মনের শংকা কেটে যায়|আগের চেয়েও গভীর আশাবাদী হয়ে আল্লাহু আকবার- আল্লাহই শ্রেষ্ঠ এই ঘোষণা দিয়ে নামাজে দাড়াই| অনেক শংকায়, হতাশায়, ব্যর্থতায় যখন বিপর্যস্থ লাগে তখন আমি এই হাদিসটা বার বার মনে করার চেষ্টা করি - আমার খুবই প্রিয় হাদিস এটি |

বিষয়: Contest_priyo

১৮১৩ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

325499
১৩ জুন ২০১৫ সকাল ০৭:২৯
শেখের পোলা লিখেছেন : সুন্দর উপস্থাপনা৷ ভাল লাগল৷ আল্লাহ আমাদের অন্তরকে তার প্রতি সমর্পনের উপযুক্ত করে দিন৷ধন্যবাদ৷
১৪ জুন ২০১৫ সন্ধ্যা ০৬:৩৭
267983
সাদিয়া মুকিম লিখেছেন : তবুওআশাবা্দী লিখেছেন : শেখের পোলা:অনেক ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য|আল্লাহ আমাদের সবাইকেই তাঁর সব নির্দেশ মানার এবং তাঁর রাসুলকে(সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)সত্যিকার ভাবে অনুসরণের তৌফিক দান করুন |
325503
১৩ জুন ২০১৫ সকাল ০৭:৫৮
তবুওআশাবা্দী লিখেছেন : শেখের পোলা:অনেক ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য|আল্লাহ আমাদের সবাইকেই তাঁর সব নির্দেশ মানার এবং তাঁর রাসুলকে(সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)সত্যিকার ভাবে অনুসরণের তৌফিক দান করুন |
325508
১৩ জুন ২০১৫ সকাল ০৮:১৬
নীলাঞ্জনা লিখেছেন : মূর্খ নবীর মূর্খ হাদিস।

325517
১৩ জুন ২০১৫ সকাল ১১:৫১
সুশীল লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ
১৩ জুন ২০১৫ রাত ০৮:১১
267742
তবুওআশাবা্দী লিখেছেন : সুশীল:লেখাটা পড়ার জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ |
325547
১৩ জুন ২০১৫ দুপুর ০২:০০
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ভালো লাগলো
অনেক ধন্যবাদ
325617
১৩ জুন ২০১৫ রাত ০৮:১০
তবুওআশাবা্দী লিখেছেন : রিদওয়ান কবির সবুজ:আপনাকেও ধন্যবাদ লেখাটা পড়ার জন্য|
325795
১৪ জুন ২০১৫ সন্ধ্যা ০৬:৩৭
সাদিয়া মুকিম লিখেছেন : আসসালামুআলাইকুম শ্রদ্ধেয় ভাইয়া!

প্রচন্ড ভালো লাগা নিয়ে পড়লাম । কোরআন ও হাদীস অধ্যয়নের সময় আমাদের প্রত্যেকের মন যদি এভাবেই করণীয় ও বর্জনীয় বিষয়গুলো ভাবতে পারতাম সত্যি অনেক বেশী উপকৃত হতাম আমরা! আজকাল অনেকেই পড়ার সময় শুধু রুটিন আদায় করার জন্যই পড়েন ফলে অধ্যয়নের মূল শিক্ষা চক্ষু স্পর্শ করলেও অন্তর স্পর্শ করে না।এটা আমাদের জন্য খুব দুঃখজনক!

অধ্যয়নের প্রতি আপনার সুগভীর চিন্তা-ভাবনা পরে এবং জেনে খুবি অনুপ্রাণিত হলাম। চমৎকার হাদীসগুলোর উল্লেখ লিখাটিকে খুবি উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন করেছে!

"অতিউল্লাহু ও আতিউর রাসুল" এই মূল কথাটি মেনে চলার মাঝেই মুমিনের স্বার্থকতা! আল্লাহ আমাদের সহায় হোন!




জাযাকাল্লাহু খাইর! আমাদের জন্য দোআ করবেন!
১৪ জুন ২০১৫ রাত ১০:৫৯
268086
তবুওআশাবা্দী লিখেছেন : সাদিয়া মুকিম:অনেক ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য |আপনার আর আপনার ফ্যামিলির জন্য দোআ রইলো|আপনার আর আপনার ফ্যামিলির জন্য আরো রইলো পবিত্র রোযার মুবারকবাদ |
325855
১৪ জুন ২০১৫ রাত ১০:০৭
মোহাম্মদ লোকমান লিখেছেন : লেখাটি পড়তে পড়তে কখনো ভয়ে ভিত হয়েছি এবং কখনো হয়েছে আনন্দে উদ্বেলিত। আল্লাহ আমাদেরকে কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে জীবন গঠনের তাওফিক দান করুন।
১৪ জুন ২০১৫ রাত ১০:৪৬
268083
তবুওআশাবা্দী লিখেছেন : মোহাম্মদ লোকমান:খুব খুশি হলাম আপনি ভয় পেয়েছেন বলে|আমরা সবাই যদি দ্বীনের প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো পালন না করে ভয় পেতাম তাহলে আসলে আমাদেরই লাভ হত সবচেয়ে বেশি|সমাজটাও অনেক উপকৃত হত সব দিক থেকেই|ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য |
339774
০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাত ১০:০১
আফরা লিখেছেন : আমি জানি আমি আল্লাহর নেক বান্দা হতে পারিনি |আমি গুনাহগার| কিন্তু সারাদিন পরে আমি যখন এই হাদিসটা পড়ি- তখন সব শংকা আমার কেটে যায় নিমেষেই | আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুবলেন, “রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি আল্লাহ্ তা‘আলা বলেছেন: হে আদম সন্তান! যতক্ষণ পর্যন্ত তুমি আমাকে ডাকবে এবং আমার কাছে (ক্ষমা) প্রত্যাশা করবে, তুমি যা-ই প্রকাশ হোক না কেন আমি তা ক্ষমা করে দেব- আর আমি কোন কিছুর পরোয়া করি না। হে আদম সন্তান! তোমার গোনাহ্ যদি আকাশ সমান হয়ে যায় আর তুমি আমার কাছে ক্ষমা চাও, তাহলে আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেব। হে আদম সন্তান! যদি তুমি পৃথিবী পরিমাণ গোনাহ্ নিয়ে আমার কাছে আস এবং আমার সঙ্গে কোন কিছুকে শরীক না করে (আখেরাতে) সাক্ষাত কর, তাহলে আমি সমপরিমাণ ক্ষমা নিয়ে তোমার সঙ্গে সাক্ষাত করবো” (তিরমিযী ,নং-৩৫৪০) |আমি আবার অনেক আশায় উজ্জীবিত হয়ে উঠি|আবার মনে পরে যায় আল্লাহতো রাহমানির রহিম|বান্দার প্রতি দয়া দেখানোকে আল্লাহত তার দায়িত্ব বলে মনে করেন| আমি আগের চেয়েও উজ্জীবিত হয়ে উঠি, মনের শংকা কেটে যায়|আগের চেয়েও গভীর আশাবাদী হয়ে আল্লাহু আকবার- আল্লাহই শ্রেষ্ঠ এই ঘোষণা দিয়ে নামাজে দাড়াই| অনেক শংকায়, হতাশায়, ব্যর্থতায় যখন বিপর্যস্থ লাগে তখন আমি এই হাদিসটা বার বার মনে করার চেষ্টা করি - আমার খুবই প্রিয় হাদিস এটি |


এই হাদীস টা অনেক বার পড়েছি অনেকের মুখে ও শুনেছি আপনার কথা টুকু পড়ে মনের মাঝে যে ভাবে আন্দোলিত এরকম কখনো হয়নি ভাইয়া ।

আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দিন এর জন্য । আমীন
১০
339776
০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাত ১০:০৭
তবুওআশাবা্দী লিখেছেন : আফরা:অনেক ধন্যবাদ লেখাটা পড়ার জন্য|

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File