হাদিসের গল্প- পরশ পাথর

লিখেছেন লিখেছেন তবুওআশাবা্দী ১২ ডিসেম্বর, ২০১৬, ০৩:২১:৩৪ রাত

“তুমি তোমার মুসলিম ভাইকে সাহায্য করো, চাই সে অত্যাচারী হোক কিংবা অত্যাচারিত। তখন এক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, অত্যাচারিতকে সাহায্য করার অর্থ তো বুঝে আসল, তবে অত্যাচারীকে কিভাবে সাহায্য করব? তিনি বললেন, তুমি তার হাত ধরবে (তাকে যুলুম থেকে বাধা প্রদান করবে)’ (সহীহ বুখারী )

এক

ইংরেজিতে একটা ফ্রেইজ আছে "মাইডাস টাচ" (the Midas touch) বলে | এর মানে হলো এমন স্পর্শ যে স্পর্শ বা ছোঁয়া র সাথে সাথে যা ই ছোঁয়া হোক না কেন তা সোনা হয়ে যায় | সাধারণত সাফল্য বোঝাবার জন্য অনেক ভাবে এই ফ্রেইজটা ব্যবহার করা হয় | যেমন কেউ তার সব কাজেই সফল হলে আমরা বলি সে যা ছোঁয় তাই সোনা হয়ে যায় ! বাংলা ভাষায় মাইডাস টাচের কাছাকাছি যে শব্দটা আছে সেটা হলো পরশ পাথর | এটা এমন একটা পাথর যে এর সাথে স্পর্শ লাগলেই অন্য যে কোনো জিনিস সোনায় বদলে যায় | এই মাইডাস টাচ কথাটা এসেছে গ্রিক মিথলজির রাজা মাইডাসের ঘটনা থেকে | রাজা মাইডাস ছিলেন সে সময়ের ফ্রিজিয়ার রাজা |প্রচন্ড ক্ষমতাশালী রাজা মাইডাস তার মেয়েকে নিয়ে থাকতেন এক বিশাল প্রাসাদে | তার একমাত্র মেয়ে ছিল তার খুবই আদরের | অপরিসীম ধন দৌলতের কারণে রাজা মাইডাসের খুবই নাম ডাক ছিল আশে পাশের রাজাদের মধ্যে | রাজা মাইডাস তাই খুবই ভালো বাসতেন তার অগাধ ধন সম্পদ | তিনি মনে করতেন তার সব সুনাম, সন্মান আর সুখের কারণ হলো তার অপরিমেয় সম্পদ বিশেষ করে তার কোষাগার ভর্তি ধারণাতীত সোনাদানা | সোনাদানার প্রতি তার মোহ এমন হয়ে গিয়েছিলো যে মাঝে মাঝেই রাজা মাইডাস সোনায় তার শরীর ঢেকে বিছানায় শুয়ে থাকতেন | সোনার গন্ধ, ওজন সব তিনি উপভোগ করতে চাইতেন |

একদিন আনন্দ উৎসবের দেবতা ডাইওনিসাস তার রাজ্যের পাশ দিয়েই যাচ্ছিলেন | দেবতার সহচর সেলিনাস ক্লান্ত হয়ে রাজা মাইডাসের বিখ্যাত গোলাপ বাগানে একটু জিরিয়ে নিতে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন | সেখানে ঘুমন্ত অবস্থায় সেলিনাসকে দেখে রাজা মাইডাস চিনে ফেলেন | রাজা আমন্ত্রণ জানান সেলিনাসকে তার প্রাসাদে আতিথ্য নেবার জন্য | তার আতিথ্যে খুশি হয়ে সেলিনাস তাকে দেবতা ডাইওনিসাসের কাছে নিয়ে যান | সহচর সেলিনাসকে আতিথ্য দেবার জন্য রাজা মাইডাসের উপর খুব খুশি হয়ে দেবতা ডাইওনিসাস রাজাকে একটি বর দিতে চাইলেন | রাজা মাইডাস দেবতা ডাইওনিসাসকে বললেন তাকে এমন বর দিতে যাতে তিনি যা স্পর্শ করবেন তাই যেন সোনা হয়ে যায় | ডাইওনিসাস রাজাকে সতর্ক করলেন এই বলে যে তিনি যেন ভালো করে ভেবে তার বরটা চান | কারণ যে বর রাজা চেয়েছেন সেটা তার অকল্যাণ ডেকে আনতে পারে | অর্থ বিত্তের মোহে অন্ধ রাজা মাইডাস আবারো সেই একই বর চাইলেন | অনিচ্ছা নিয়েও ডাইওনিসাস রাজা মাইডাসকে তার চাওয়া বরটাই দিলেন|

সেই বর পেয়ে খুশির সাথে রাজা মাইডাস তার রাজ্যে ফিরে এলেন | তার বসার চেয়ারটা, বিছানা, যা কিছুই স্পর্শ করেন তাই সোনা হয়ে যায় দেখে রাজা মাইডাস খুবই খুশি | ঘরের দরজা জানালা সব কিছুই মাইডাস স্পর্শ করে সোনায় মুড়িয়ে দিলেন | সমস্ত প্রাসাদই তার সোনায় মুড়িয়ে দিতে ইচ্ছে করলো | রাজার এই অভাবনীয় বিত্ত বৈভবে তার সন্মান আরো বেড়ে গেলো | দেবতা ডাইওনিসাসের কাছে বর পাবার পর সব কিছু সোনায় মুড়ে দিতে গিয়ে রাজা মাইডাস এতোই ব্যস্ত হয়ে পড়লেন যে তার একমাত্র তার মেয়ের সাথেও আর তার দেখা হয় না | কিছুদিন পর যখন তার ব্যস্ততা একটু কমলো তখন রাজা মাইডাসের মনে হলো কত বছর যেন কেটে গেছে তিনি তার একমাত্র মেয়েকে দেখেননি ! তার আর অপেক্ষা করতে ইচ্ছে করছে না | তিনি আদরের মেয়েকে ডেকে পাঠালেন | মেয়েও তার বাবাকে কিছুদিন না দেখে আর অপেক্ষা করতে পারছে না | তাই বাবার ডাক পেয়ে সকাল সকালই মেয়ে উপস্থিত হলো বাবার দরবার কক্ষে |এক মাত্র মেয়েকে কিছুদিন না দেখার কষ্টে রাজা মাইডাস ভুলে গেলেন দেবতার বরে পাওয়া তার নতুন ক্ষমতার কথা | সিংহাসন থেকে উঠে রাজা ছুটে এসে জড়িয়ে ধরলেন তার আদরের মেয়েকে | তার স্পর্শে সাথে সাথেই সে বদলে গেলো অনিন্দ্য সুন্দর সোনার এক নারী মূর্তিতে | একমাত্র মেয়েকে হারিয়ে পাগল প্রায় রাজা কেঁদে কেঁদে দেবতার কাছে প্রার্থনা করলো তার এই অভিশাপ ফিরিয়ে নেবার জন্য |

দুই

গ্রীক মিথিওলজির রাজা মাইডাসের জন্য হাতের স্পর্শ করেই সোনায় পরিণত করার ক্ষমতা ভালো হয় নি, অভিশাপ হয়েছিল |স্পর্শে বা সংস্পর্শেই কিছু কে সোনায় বদলে দেবার মানুষের ইচ্ছা বা চেষ্টা কোনো ভাবেই আসলে সত্যি হয়নি | মিথলজির দিনগুলির পর থেকে আরো কত ভাবেই না মানুষ চেষ্টা করলো ! রাজা রাজড়ারা চেষ্টা করেছেন একদল সোনার মানুষ তৈরির যারা বিশ্বস্থ হবে, যারা রাজ্য পরিচালনার ক্ষেত্রে সহায়তা করবে | ধর্মীয় নেতা, সমাজ সংস্কারকরা চেষ্টা করেছেন তাদের মতবাদ দিয়ে একদল সোনার মানুষ তৈরী করতে যারা সর্বোচ মানবিক মূল্যবোধগুলিকে দাম দেবে | আলেক্সান্ডার তার প্রশিক্ষিত এক দল দুর্ধষ মানুষ দিয়ে গড়া সেনাবাহিনী দিয়ে সারা পৃথিবী জয় করে ফেললেন কিন্তু সোনায় বদলে দিতে পারেননি তার মানুষদের ! তার মৃত্যুর পর পরই তার সেনাবাহিনী এমনকি নেতৃত্ত্বের দ্বন্দে জড়িয়ে পড়ে |যার ফলাফল, সারা পৃথিবী জেতার পরও তার মৃত্যুর অল্প পরই গ্রিক সাম্রাজ্য ভেঙে যায় |প্রাচীন পৃথিবীর আরেক দ্বিগ্বিজয়ী বীর রোমান সম্রাট জুলিয়াস সিজার | তার অজেয় সামরিক বাহিনী প্রায় সারা পৃথিবী জয় করে রোমান সাম্রাজ্যকে পৃথিবীতে শ্রেষ্টত্বের আসনে বসিয়ে ছিলো| সারা পৃথিবীর সমীহ আদায়কারী জুলিয়াস সিজার কিন্তু নিহত হয়েছিলেন তারই একান্ত বিশ্বাসভাজন ব্রূটাসের ছুরির আঘাতে | সারা পৃথিবী জয় করলেও নিজের একান্ত কাছের মানুষগুলোকে লোভ লালসা, ক্ষমতালিপ্সাহীন সোনার মতো মানুষে পরিবর্তন করতে পারেননি জুলিয়াস সিজার |

শুধু রাজনৈতিক নেতা নয় ধর্মীয় নেতারাও তাদের অনুসারীদের সোনা হিসেবে মানে সর্বোচ্চ মানবিক গুনে ভরপুর হিসেবে গড়ে তুলতে পারেন নি | মিশরে ফিরাউনের অধীন শত বছরের দাসত্বের শৃঙ্খলিত জীবন থেকে থেকে মুক্ত করে হজরত মুসা ইসরাইলিদের স্বাধীন জীবনের স্বাদ দেন | তাওহীদের বাণী শোনান | হজরত মুসা (সাঃ) মাত্র চল্লিশ দিনের জন্য আল্লাহর কাছে ইবাদতের মধ্যে দিয়ে সাহায্য চাইতে তুর পাহাড়ে গিয়েছিলেন |এই ক’দিনের মধ্যেই তার অনুসারীরা তার শিক্ষা ভুলে গরুর বাছুর পূজার মতো জঘন্য গুনাহতে জড়িয়ে পরে | তাদের নিজেদের অন্তঃদ্বন্দ্ব. হিংসা দ্বেষ,এক দলের অন্য দলের কুৎসা সম্পর্কে কুরআন আমাদের বলেছে | এই হিংসা, কুৎসা হাজার বছর পরেও তাদের অন্তরে ছিল | রাসূলুল্লাহর বিরোধিতায় তারা তার প্রমান দিয়েছে | হজরত ঈসা(সাঃ)আল্লাহর শক্তিশালী বার্তা এনেছিলেন তার অনুসারীদের জন্য | আল্লাহ অনুসারীদের সৎ পথে আনবার জন্য তাঁকে অলৌকিক ক্ষমতা দিয়েছিলেন | সেই সব অলৌকিক ক্ষমতা দেখেও তার অনুসারীদের সোনার মানুষ হওয়া আর হয়নি | তাদের বর্ণনা মতেই লাস্ট সাপারে যোগ দেওয়া হজরত ঈসার প্রিয় তেরো সঙ্গীর অন্যতম জুডাস তার সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা করে | তাকে ধরিয়ে দেয় রোমানদের হাতে |

এই আধুনিক যুগেও আমরা তাই দেখি রাজনৈতিক নেতৃত্ব বা ধর্মীয় নেতৃত্বের কেউই তাদের রাজনৈতিক বা ধর্মীয় মতবাদ দিয়ে অনুসারীদের সোনার মানুষ বানাতে পারছেন না | শ্রেণী বৈষম্যহীন সর্বহারাদের একটা সমাজ গড়তে চাইবার মতো আদর্শিক স্লোগান দিয়েও লেনিন, স্ট্যালিন, মাওসেতুং কেউ সেটা পারেননি | এদের সবার অনুসারীরাই তাদের মৃত্যুর পর তাদের আদর্শ থেকে সরে গেছে | ক্ষমতার দ্বন্দে জড়িয়ে পড়েছে | সোভিয়েত ইউনিয়নে এই আন্তঃদ্বন্দ কল্পনাতীত রক্তপাতের সূচনা করে লেনিনের মৃত্যুর পরপরই | চীনের ইতিহাসও তাই | ইতিহাস পুনরাবৃত্তি করে নিজেকে | তাই বুঝি স্পর্শে বা সংস্পর্শেই মানুষকে খাঁটি সোনার মতো করে গড়ে তোলার ইচ্ছেগুলো ব্যর্থ হয় বার বার, অভিশাপের মতো হয়ে আসে সেই গ্রীক মিথিওলজির রাজা মাইডাসের মতোই |

তিন

হাজার বছরের ইতিহাসের এই অন্তহীন প্রবহমান ধারা একবার স্তব্ধ হয়েছিল |স্পর্শে বা সংস্পর্শে মানুষকে খাঁটি সোনার মতো করে গড়ে তোলার এই ইচ্ছে একবার সত্যি হয়েছিল | সেই একবারই ইতিহাসের প্রবহমান ধারার বিপরীতে সোনা করতে চাওয়ার ইচ্ছে অভিশাপ না হয়ে আশীর্বাদের অন্তঃসলিলা স্রোত হয়ে বয়ে ছিল আরবের রুক্ষ মরুভূমি দিয়ে | ইসলামের নবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহর (সাঃ) সংস্পর্শে এসেই এক সময়ের জাহিলিয়াতের আঁধারে ডুবে থাকা আরবরা বদলে গিয়েছিলো সোনার মানুষে | মানুষের ইতিহাসে বুঝি এই সোনার মানুষদের আর কোনো উদাহরণ নেই আজ হাজার বছর পরেও | একজন দুজন নয় রাসূলুল্লাহর (সাঃ) সংস্পর্শে এসে তার সব সাহাবীরাই বদলে গেলো কি আশ্চর্য জাদুর পরশে !হজরত আবুবকরের (রাঃ) ইসলামের খেদমতে আল্লাহ আর রাসূলকে রেখে সব সম্পত্তি দিয়ে দেবার ঘটনা আমরা জানি | গভীর রাতের নির্জনে একা একা ছদ্মবেশে মদিনার অলিতে গলিতে আমিরুল মোমেনীন হজরত উমরের (রাঃ)ঘুরে ঘুরে মুসলিমদের অবস্থা দেখার ঘটনা আমাদের এখনো অবিশ্বাস জাগায় ! কিন্তু রাসূলুল্লাহর (সাঃ) সংস্পর্শের এই জাদু এতোই মন্ত্রমুগ্ধকর, এটি এতোই অসামান্য যে শুধু প্রধান সাহাবীরাই নয়, অনেক পরে ইসলামের ছায়াতলে এসে আশ্রয় নেয়া সাহাবীরাও রাসূলুল্লাহর সংস্পর্শে এসে খাঁটি সোনাই হয়ে গিয়েছিলেন!

অন্য অনেকের মতোই রাসূলুল্লাহর (সাঃ) পরশ পাথরের ছোয়ায় বদলে গিয়েছিলেন ইকরামা বিন আবু জাহিল (রাঃ) | তার বাবা মক্কার কুরাইশদের প্রধান নেতা আবু জাহল ছিলেন সে সময়ের রাসূলুল্লাহর (সাঃ) অন্যতম চরম শত্রূ | বাবার কারণেই হজরত ইকরামাও রাসূলুল্লাহর (সাঃ) এবং ইসলামের শত্রূ হয়ে উঠেন | খালিদ বিন ওয়ালিদ আর তার সেনাপতিত্বেই উহুদের মাঠে সে সময়ের প্রথা বিরুদ্ধ নির্মম বীভৎসতা নিয়ে মক্কার মুশরিক বাহিনী মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঝাঁপিয়ে পড়েছিল | মক্কা বিজয়ের দিন কুরাইশদের যে অল্প কিছু মানুষ সশস্র ভাবে মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল ইকরামা বিন আবু জাহিল ছিলেন তাদের অন্যতম | কিন্তু মুসলিম বাহিনীকে প্রতিরোধ করার ক্ষমতা সেদিন কুরাইশ বীর ইকরামার ছিল না | মুসলিমদের মক্কা বিজয়ের পর তিনি প্রাণের ভয়ে ইয়েমেনের দিকে পালিয়ে যান | তার স্ত্রী রাসূলুল্লাহর হাতে ইসলাম গ্রহণ করেন মক্কা বিজয়ের দিনই | রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইকরামার জীবনের নিরাপত্তা দান করেন | এই কথা জানতে পেরে ইকরামা মক্কায় ফিরে এলেন | রাসূলুল্লাহকে (সাঃ) জিজ্ঞেস করলেন , হে মুহাম্মদ আপনি কিসের দাওয়াত দেন মানুষকে ?

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বললেন আমি আমি তোমাকে আহবান করছি এক আল্লাহর উপর, আমি আল্লাহর বান্দা এবং রাসূল তার উপর বিশ্বাসের | এর পর রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তাঁকে নামাজ, জাকাত এবং ইসলামের অন্য অবশ্য পালনীয় বিষয়গুলো জানালেন |ইকরামা বললেন, হে মুহম্মদ এই দাওয়াতের আগেই আপনি ছিলেন আমাদের মধ্যে সবচেয়ে সত্যবাদী, মানুষের ব্যাথা বেদনা, শোকে দুঃখে সবচেয়ে বেশি উপকারী বন্ধু |এখনো আপনি সত্যি দ্বীনের দাওয়াতই দিচ্ছেন |এই কথা বলেই ইকরামা পরম মমতায় আর বিশ্বাসের সাথে রাসূলুল্লাহর (সাঃ) হাতে হাত রেখে উচ্চারণ করলেন 'আশহাদু আন লা ইলাহা ইল্লালাহু ওয়া আন্না মুহাম্মাদান্ আব্দুহু ওয়া রাসূলুহু ' |রাসূলুল্লাহ (সাঃ) নব্য মুসলিম, তার চরম শত্রূ মূর্তিপূজারী আবু জহলের ছেলে হজরত ইকরামার (রাঃ) জন্য দু হাত তুলে দোয়া করলেন, হে আল্লাহ যত শত্রুতা সে আমার সাথে করেছে, আপনার তৌহিদের বাণী স্তব্ধ করতে মাঠে প্রান্তরে যত যুদ্ধ সে করেছে, সামনে পেছনে সে যত অপমানই আমাকে করেছে আপনি তার সব গুনাহ ক্ষমা করুন |

রাসূলুল্লাহর (সাঃ) দোয়া শুনে আনন্দে উৎফুল্ল ইকরামা (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল, আল্লাহ সাক্ষী, আল্লাহর বাণী মুছে দিতে আমি যত খরচ করেছি, আল্লাহর পথে আমি তার দ্বিগুন খরচ করবো | আল্লাহর বাণী স্তব্ধ করতে যত যুদ্ধ আমি করেছি, ইসলামের পক্ষে আমি তার দ্বিগুন যুদ্ধ করবো | এভাবেই ইসলামের ছায়াতলে এলেন এক সময়ের ইসলামের চরমতম শত্রূদের একজন হজরত ইকরামা ইবনে আবি জেহেল (রাঃ) | ইসলামের সেবায় যুদ্ধের ময়দানে যিনি ছিলেন অকুতোভয় আর দুর্দমনীয় যোদ্ধা, মসজিদে ইবাদতে সবচেয়ে বেশি সময় ব্যয়কারী, গভীর রাতের ক্লান্তিহীন নামাজ আদায়কারী আর কুরআনুল করিমের অক্লান্ত তেলাওয়াতকারী | গভীর ভালোবাসায় পবিত্র কুরআন বুকে জড়িয়ে ধরে অঝোর ধারায় তিনি কাঁদতেন আর বলতেন কিতাবু রাব্বি, কালামু রাব্বি -এ আমার রবের কিতাব, এ আমার রবের কালাম | তার ইসলাম গ্রহণে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) খুবই খুশি হয়েছিলেন | রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তার নেতৃত্বে মুসলিম বাহিনীকে অভিযানেও পাঠিয়েছিলেন |

চার

মুসলিম জাহানের খলিফা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন হজরত উমার বিন খাত্তাব (রাঃ) | আরবের অভ্যন্তরীণ সংকটগুলোর সমাধান হয়েছে | বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের অধিকৃত সিরিয়া ক্রমশই হুমকি হয়ে উঠেছে ইসলামের জন্য | তাই উত্তরের সিরিয়ার দিকে মুসলিম বাহিনী পাঠাবার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আমির উল মোমেনীন | রাসূলের (সাঃ) বীর সাহাবী খালিদ বিন ওয়ালিদের উপর সেনাপতির দায়িত্ব পড়েছে | ইয়ারমুকের প্রান্তরে এসে মুসলিম বাহিনী পৌছেচে | চব্বিশ হাজার সৈন্যের মুসলিম বাহিনীকে বাধা দিতে বাইজেন্টাইন সম্রাট হিরাক্লিয়াস দ্বিগুনেরও বেশি সৈন্যের বিশাল বাহিনী প্রেরণ করেছেন |

মুসলিম বাহিনীতে সাধারণ সৈন্য হিসেবে যোগ দিয়েছেন হজরত ইকরামা (রাঃ) |বিশাল বাইজেন্টাইন বাহিনীর আক্রমণে যুদ্ধের প্রথম দিকে মুসলিম বাহিনী এক পর্যায়ে কোনঠাসা হয়ে গেলো | ইকরামা (রাঃ) সিদ্ধান্ত নিলেন ছোট একটি দল তৈরী করে বাইজেন্টাইন বাহিনীর মধ্যে ঢুকে যেতে হবে | তাতে যত ক্ষতিই হোক | নিজের জীবনের কোনো মায়া করা চলবে না | খালিদ বিন ওয়ালিদ (রাঃ) হজরত ইকরামার (রাঃ) এই সিদ্ধান্ত শুনে তাকে সিদ্ধান্ত বদলাতে বললেন | তিনি আরো বললেন এটা পুরোপুরি আত্মহত্যা| ইকরামার (রাঃ) মৃত্যু হলে তা মুসলিম বাহিনীর মনোবলের উপর প্রভাব ফেলবে | তিনি উত্তরে খালিদ বিন ওয়ালিদকে বললেন, খালিদ আমাকে সিদ্ধান্ত বদলাতে বোলো না | মিথ্যা মূর্তিকে বিশ্বাস করে রাসূলুল্লাহর (সাঃ) বিরোধিতায় আমি অনেক বছর পার করেছি, তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছি | আমার সেই ভুলের কাফ্ফারা দেবার সময় হয়েছে আজ | সামান্য মাটির মূর্তিকে দেবতা মনে করে আমি আল্লাহ আর রাসূলুল্লাহর বিরুদ্ধে আমি অনেক যুদ্ধ করেছি | আর আজ আল্লাহ, রাসূলুল্লাহ (সাঃ), ইসলামের শত্রূ রোমান বাহিনীর ভয়ে পালিয়ে যাবো ? এই কথা বলেই তিনি মুসলিমদের প্রতি আহবান জানালেন আল্লাহর সন্তুষ্টি আর শহীদি মৃত্যুর উপর কে বাইয়াত করতে চায়? হজরত ইকরামার (রাঃ) চাচা হারিস ইবনে হিশাম (রাঃ)সহ চারশো মুসলিম সৈনিক তার কথায় সাড়া দিয়ে সামনে এলো |খালিদ বিন ওয়ালিদের (রাঃ) তাঁবুর সামনে থেকে এদের অনুসরণ করেই নব উদ্দমে মুসলিম বাহিনী যুদ্ধ শুরু করলো | ইয়ারমুকের রক্তাক্ত যুদ্ধে মুসলিম বাহিনীর অবিশ্বাস্য জয়ের ভীত গড়ে দিলেন হজরত ইকরামা (রাঃ) ইসলামের প্রতি তার প্রগাঢ় ভালোবাসা দিয়ে, রাসূলুল্লাহকে (সাঃ) দেওয়া তার প্রতিশ্রুতি পালন করে |

ইয়ারমুকের রক্তাক্ত যুদ্ধ শেষ হয়েছে | দ্বিগুনেরও বেশি সৈন্য বাহিনী নিয়েও রোমান বাহিনী সম্পূর্ণ পরাজিত | মুসলিম বাহিনীরও অপরিসীম ক্ষতি হয়েছে | প্রায় তিন হাজার মুসলিম সৈন্য শহীদ হয়েছে ইয়ারমুকের ময়দানে |হাজার মুসলিম সৈন্যের শাহাদাতের রক্ত রঙে রাঙা শেষ বিকেলের সূর্য তাই বুঝি আরো লাল | হাজার শহীদের শাহাদাতের রঙে পশ্চিমের আকাশকেও তাই বুঝি আজ আরো বেশি আবির মাখা লাগছে | দিন শেষে ডুবে যাবার আগে সূর্য সোনালী রোদের স্পর্শ দিয়ে শহীদদের রক্তাক্ত শরীরও যেন সোনায় মুড়িয়ে দিয়েছে |সেই গারো আবির রাঙা শেষ বিকেলে ইয়ারমুকের প্রান্তরে সারা শরীরে শত্রূর অস্রের অজস্র আঘাতে ক্ষতবিক্ষত, রক্ষরণে মুমূর্ষু অবস্থায় পরে রয়েছেন রাসূলুল্লাহর (সাঃ) প্রিয়ভাজন, ইসলাম রক্ষায় অকুতোভয় যোদ্ধা হজরত ইকরামা (রাঃ) | তার অল্প দূরেই আহত অবস্থায় পরে আছেন তার আহ্বানে সারা দিয়ে এগিয়ে আসা তারই চাচা হারিস ইবনে হিশাম (রাঃ) |তার কাছেই মুমূর্ষু অবস্থায় পরে আছেন আইয়াশ ইব্ন আবি রাবিয়া (রাঃ) |

হজরত হাবিব ইবনে আবি সাবিত (রাঃ) এর পরের ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন| আবু জাহিম হুজাইফা তার চাচাতো ভাই আইয়াশ ইবনে আবু রাবিয়াকে (রাঃ) খুঁজে বেড়াচ্ছিলেন আহত নিহত সৈন্যদের ভিড়ে | এক সময় তিনি খুঁজে পেলেন তার চাচাতো ভাইকে | আইয়াশ ইবনে আবু রাবিয়া (রাঃ) ইশারায় পানি খেতে চাইলেন | মশক খুলে পানি খাবার সময় তিনি দেখলেন তার দিকে তাকিয়ে আছেন তীব্র যন্ত্রনায় অস্থির হারিস ইবনে হিশাম (রাঃ)| আইয়াশ (রাঃ)হারিস ইবনে হিশামকে (রাঃ) পানি দিতে বললেন |হারিস (রাঃ)পানি খাবার সময় তিনি দেখলেন হজরত ইকরামা (রাঃ) তার দিকে তাকিয়েছেন | হারিস ইবনে হিশাম (রাঃ) ইকরামাকে (রাঃ) পানি দিতে বললেন | সারা শরীরে অজস্র আঘাতের যন্ত্রনা, রক্তক্ষরণে ক্লান্ত অবসন্ন হজরত ইকরামা (রাঃ) তাকে দেওয়া পানির মশক ঠোঁটে ছুঁইয়েছেন এমন সময় তার চোখ পড়লো তৃষ্ণার্ত আইয়াশ ইবনে আবু রাবিয়ার উপর (রাঃ)| মুখ থেকে পানির মশকটা নামিয়ে তিনি বললেন পানিটা আইয়াশকে দাও |পানি নিয়ে আইয়াশের (রাঃ) কাছে পৌঁছুবার আগেই তিনি মারা গেলেন | সেই পানি নিয়ে হজরত হারেসের (রাঃ ) কাছে আসতে আসতে তিনিও ইন্তিকাল করলেন | হজরত ইকরামার (রাঃ)কাছে পানি নিয়ে ফিরে আসার পর দেখা গেলো রক্তক্ষরণে ক্লান্ত, অবসন্ন আর সারা শরীরে অজস্র আঘাতের যন্ত্রনা নিয়ে ইসলামের সন্মান রক্ষায় ইয়ারমুকের রক্তাক্ত যুদ্ধের দুরন্ত যোদ্ধা পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে শাহাদতের পথেও দুরন্ত গতিতে ছুটে গেছেন |

ইয়ারমুক প্রান্তরে শহীদের রক্তে রাঙা সূর্য অস্ত গেছে | কিন্তু সেই আঁধার আরো উজ্জ্বল করে উঠেছে ঝলমলে আরেক সূর্য | ভালোবাসা, মানবিকতা, ইসলামী ভাতৃত্ববোধের অদ্বিতীয় এক সূর্য | যে সূর্য পৃথিবীর মানুষ কোনো দিন আর দেখেনি | মৃত্যুর তীব্র যন্ত্রণার মধ্যেও কেউ নিজের পানির পিপাসা না মিটিয়ে হাসি মুখে সেই পানি মৃত্যুর পথযাত্রী তার সহযোদ্ধা অন্য কাউকে দিয়ে নিজে পিপাসার্ত অবস্থাতেই মারা যেতে পারে! মৃত্যু খেলা করা যুদ্ধের প্রান্তরে এমন দৃশ্য পৃথিবী আর কখনো দেখে নি! রাসূলুল্লাহর (সাঃ) পরশ পাথরের ছোয়ায় এমনি করেই চিরদিনের মতো সোনার মানুষে বদলে গিয়েছিলো তার সংস্পর্শে আসা মানুষগুলো! রাসূলুল্লাহর (সাঃ) মৃত্যুর পরও তাই তাই তার শিক্ষা, তার আদর্শ থেকে একচুলও তারা দূরে সরে যাননি |মূসাদ্দাদ (রহঃ) থেকে জারীর ইবনু আবদুল্লাহ আল বাজলী (রাঃ) বলেছেন: “আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাতে বায়’আত গ্রহণ করেছি সালাত কায়েম করার, যাকাত দেওয়ার এবং সকল মুসলিমের কল্যাণ কামনা করার”(সহীহ বুখারি, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ,অধ্যায়ঃ ২/ ঈমান | হাদিস: ৫৫)| অন্য সব মুসলিমের কল্যাণ কামনা করার সাথে সব মুসলিমকে সাহায্য করার ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ (সাঃ)জোরালো ভাষায় খুব পরিষ্কার করেই নির্দেশ দিয়েছেন, “তুমি তোমার মুসলিম ভাইকে সাহায্য করো, চাই সে অত্যাচারী হোক কিংবা অত্যাচারিত। তখন এক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, অত্যাচারিতকে সাহায্য করার অর্থ তো বুঝে আসল, তবে অত্যাচারীকে কিভাবে সাহায্য করব? তিনি বললেন, তুমি তার হাত ধরবে (তাকে যুলুম থেকে বাধা প্রদান করবে)’ (সহীহ বুখারী, ২৪৪৪; তাওহীদ ফাউন্ডেশন, অধ্যায় ৪৬: অত্যাচার, কিসাস ও লুন্ঠন) | তার মানে সব অবস্থাতেই মুসলিমদের সাহায্য করতেই হবে | রাসূলুল্লাহর (সাঃ) সংস্পর্শে এসে সোনার মানুষে বদলে যাওয়া এক সময় ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধকরা মানুষগুলো এমন করেই তাই ইসলাম আর মুসলিমের জীবন রক্ষায় অবলীলায় নিজেদের প্রাণ দিতে পারেন!

পাঁচ

এই লিখায় আমার কোনো উপসংহার বা কোনো নিজস্ব মতামত থাকবে না সেটাই ভেবেছিলাম | কিন্তু উপসংহার একটা লিখতেই হলো | ইসলামের ইতিহাসের এই ঘটনাগুলো আমি গভীর মমতা নিয়ে সব সময় পড়ি | রাসূলুল্লাহর আদেশ নিষেধ অনুসরণে সাহাবীদের অবিশ্বাস্য একনিষ্ঠতার কথা মনে করে সব সময়ই অভিভূত হই | উপরের হাদিসগুলো পড়তে পড়তে সব সময়ই আমার ইসলামের সন্মান রক্ষায় দুরন্ত অশ্বারোহী, ইয়ারমুকের প্রান্তরে বিপন্ন মুসলিম বাহিনীকে রক্ষায় শহীদি মৃত্যুর উপর বাইয়াত নেয়া হজরত ইকরামার (রাঃ) কথা মনে হয় | কিন্তু এই লেখা লিখতে গিয়ে এমন কিছু ঘটনা দেশে বিদেশে ঘটলো যে এই প্রথম মনে হয় ইয়ারমুকের প্রান্তরে হজরত ইকরামার (রাঃ) আত্মত্যাগের ঘটনা মনে করে আমি অভিভূত হবার সাথে সাথে আশংকিতও হলাম| রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিপদে সাহায্যের হাত না বাড়ানোয় আল্লাহ নাকি আমাদেরই ধ্বংস করে দেন সেই চিন্তা করে বেশ আতঙ্কিতও হলাম ! ক'দিন আগে মাননীয়া প্রধানমন্ত্রীর বলেছেন "রোহিঙ্গাদের জন্যতো আমি সীমান্ত খুলে দিতে পারিনা" | অথচ এই বাংলাদেশেই রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেবার জন্য সীমান্ত উন্মুক্ত করলো কতবার! কোনো জঙ্গি হামলাতো হয়নি কখনো! এখন তবে এই আশংকা কেন? মাননীয়া প্রধানমন্ত্রীর মাতাল একান্ত সচিবের মৃত্যু তদন্তে পাশের দেশ থেকে গোয়েন্দা আসে! আমাদের পাতানো নির্বাচনে বিরোধী দল তৈরী করতে পাশের দেশ থেকে তাদের সরকারি প্রতিনিধি আসে! সীমান্তের চাবি আমাদের কাছে আছেতো মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী? প্রতিদিনই দেখছি খবরে আসছে রোহিঙ্গা ভর্তি নৌকো আমাদের বীর বিজিবি আমাদের সীমানায় আসতেই দিচ্ছে না! অসহায় মুসলিম নারী,পুরুষ, শিশুতে ভর্তি নৌকায় গুলি করে আমাদের বিজিবি বাহিনী কি বীরত্বই না দেখাচ্ছেন ! অথচ সীমান্তে নিরপরাধ মানুষ গুলি খেয়ে মারা গেলেও এই বাহিনীর কোনো সারা শব্দ পাওয়া যায় না! আমাদের মানবধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান রোহিঙ্গা মুসলিমদের সাহায্য করে আশ্রয় দেওয়াতে জঙ্গি হামলার আশংকা করেন, তার সাথে হুক্কা হুয়া রব তোলেন সরকারি আশীর্বাদ পাওয়া আরো অনেক জ্ঞানী গুণী জন! নিজেদের ক্ষমতা বাঁচাতে আমাদের সরকার কত যে নিজেকে ছোট করবে তাই ভাবি!

ইসলামের ইতিহাসে অন্যতম ঘৃণিত ব্যক্তি হলো আমির হাজ্জাজ বিন ইউসুফ | ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে গিয়ে যার শাসনামলে হাজার হাজার মুসলিমকে হত্যা করতে হয়েছিলো | যাকে সাহাবীদের হত্যার মতো জঘন্য কাজের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয় | সেই হাজ্জাজের মতো অমানুষও মুসলিমদের প্রতি অত্যাচারের প্রতিশোধ নিতে আরব থেকে হাজার মাইল পেড়িয়ে সুদূর দক্ষিণ ভারতের রাজা দাহিরের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ছিলেন | বাধ্য করেছিলেন রাজা দাহিরকে মুসলিম হত্যার ক্ষতিপূরণ দিতে! আজ নব্বই ভাগ মুসলিমের বাংলাদেশের পাশের দেশেই হাজার হাজার অসহায় মুসলিমকে বিনা কারনে হত্যার পরও আমাদের সরকার হাজ্জাজের মতো একজন অমানুষেরও মুসলিমদের প্রতি যে দায়িত্ববোধ ছিল সেটুকুও দেখতে পারছে না! বাংলাদেশের একজন মুসলিম হিসেবে এই বিশাল লজ্জ্বার বোঝা কোথায় লুকাই আমি?

বিষয়: বিবিধ

২৬৭৮ বার পঠিত, ৯ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

380610
১২ ডিসেম্বর ২০১৬ সকাল ০৬:০১
মনসুর আহামেদ লিখেছেন :

চমৎকার, একটানে পড়ে ফেললাম ।
১২ ডিসেম্বর ২০১৬ সকাল ০৮:২১
314945
তবুওআশাবা্দী লিখেছেন : মনসুর আহামেদ:অনেক ধন্যবাদ লেখাটা পড়ার জন্য| যদিও বুঝলাম না লেখাটা পরে কেমন লাগলো আপনার !ভিডিওটা আমি কিন্তু দেখিনি|আপনি দেখে থাকলে জানাবেন কেমন হয়েছে ভিডিওটা|সাহাবীদের নিয়ে এদের এই সিরিজের আরো অনেক বায়োগ্রাফিক ফিল্ম আছে সেটা জানি |
১২ ডিসেম্বর ২০১৬ সন্ধ্যা ০৬:১৭
314954
স্বপন২ লিখেছেন : Tears came out of my eyes when I read it
১২ ডিসেম্বর ২০১৬ রাত ০৮:৩৫
314956
তবুওআশাবা্দী লিখেছেন : স্বপন২:অনেক ধন্যবাদ| লেখাটা পড়ে মন্তব্য করার জন্য|
380611
১২ ডিসেম্বর ২০১৬ সকাল ০৯:০৪
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : অসম্ভব শিক্ষনিয় লিখাটির জন্য অনেক ধন্যবাদ।
আর আমরা এখন হারিয়ে ফেলেছি আমাদের মানবিক বোধ।
১২ ডিসেম্বর ২০১৬ রাত ০৮:৪০
314957
তবুওআশাবা্দী লিখেছেন : প্রিয় ব্লগার রিদওয়ান কবির সবুজ : অনেক ধন্যবাদ নেবেন মন্তব্যের জন্য |
380614
১২ ডিসেম্বর ২০১৬ সকাল ০৯:১২
সন্ধাতারা লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতাহু পরম শ্রদ্ধেয় ভাইয়া।


হাদিসের চমৎকার সিলেকশন এবং হৃদয়গ্রাহী সময়োপযোগী একটি লিখা মাশাআল্লাহ।


মর্মস্পর্শী উদাহরণগুলো পাঠককূলকে কিছুক্ষণের জন্য হলেও নিজস্ব চিন্তা ও ভাবনার রাজত্বে নিয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ্‌। বরাবরের মত সুন্দর উপস্থাপনা খুব ভাল লাগলো।

জাজাকাল্লাহু খাইর।
১২ ডিসেম্বর ২০১৬ রাত ০৮:৪৫
314958
তবুওআশাবা্দী লিখেছেন : সন্ধাতারা:অনেক ধন্যবাদ নেবেন লেখা পড়ার আর মন্তব্যের জন্য | অনেক উৎসাহ পেয়ে গেলাম আপনার মন্তব্যে, ইনশাল্লাহ এই ধরণের লেখা আরো কিছু লিখবার|
১২ ডিসেম্বর ২০১৬ রাত ১১:১২
314961
সন্ধাতারা লিখেছেন : Waiting. Inshallah.Good Luck Good Luck Good Luck

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File