"ঘুমিয়ে আছে শাশুড়ি মাতা সব মেয়েরই অন্তরে"

লিখেছেন লিখেছেন অভিমানী বালক ১৯ অক্টোবর, ২০১৬, ০৭:১৬:৫৪ সন্ধ্যা

মেয়েরা নাকি শাশুর শাশুড়িকে পিতা মাতার আসনে আসীন করতে পারে না?

তবে শাশুর শাশুড়ি কি ছেলের বউকে মেয়ের আসনে আসীন করতে পারে?

কঠিন সমীকরণ,

আমাদের সমাজ কি বলে?

আমাদের সমাজের বাস্তবতা হল বউ শাশুড়ি মানেই একে অন্যের প্রতিদ্বন্দ্বী,

যেমন- ক্রিকেট ম্যাচে পাকিস্তান বনাম ভারত, অথবা ফুটবল ম্যাচে আর্জেন্টিনা বনাম ব্রাজিল।

কেউ যেন কাউকে ছেড়ে কথা বলবে না, শাশুড়ি মনে করে বউ হচ্ছে ঘরের কাজের মেয়ের মত, আবার বউ মনে করে এটা আমার স্বামীর সংসার, অবশ্যই এখানে কর্তিত্ব করার অধিকার আমার আছে।

সংসারের শুরুটা যদি ও ভালো ভাবে শুরু হয়, শাশুড়ি মনে করে ছেলের বউ আমার মেয়ের মত আবার ছেলের বউ মনে করে শাশুড়ি আমার মায়ের মত। এই কথাটা শুধু মনে করার ভিতরেই বন্ধী থাকে, বাস্তবতা মোড় নেয় ভিন্ন দিকে।

যখন খুনসুটি শুরু হয় তখন শাশুড়ি বলে আমার মেয়ে হলে এমন কথা বলতে না, আবার বউ বলে আমার মা হলে এমন কথা বলতে পারতে না।

এই খুনসুটির চাপায় পিষ্ট হয় ছেলে এবং সংসার ও ছেলের ভবিষ্যৎ, সারাদিন কর্ম শেষে ছেলে যখন বাড়ি ফিরে তখন শুরু হয় মায়ের নালিশ বউয়ের বিরুদ্ধে, আবার রাতে শুরু হয় বউয়ের ঘ্যানর ঘ্যানর।

তখনই শুরু হয় সংসারে ত্রিমুখী সংঘর্ষ, অশান্তির লেলিহান শিখা দাবানলে পরিণত হয়।

অনেক ক্ষেত্রে বউ বাধ্য হয়ে সংসারের কাজ কর্ম করে, আবার অনেক ক্ষেত্রে বউ বাধ্য হয়ে সংসার ছাড়তে বাধ্য হয়।

যখন বউ বাধ্য হয়ে শাশুর শাশুড়ি থেকে পৃথক থাকার চিন্তা করে এবং সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয়, তখনি শুরু হয় বউয়ের বিরুধে অপপ্রচার। বলা হয় এই বউ সংসারটাকে জাহান্নামে পরিণত করেছে, কখনও বলা হয় না শাশুর শাশুড়ির অতিষ্টতার কারণে বউ বাধ্য হয়ে সংসার ছাড়তে হয়েছে।

সমাজের কিছু লোক ছেলেটার দিকে আঙ্গুল তুলে বলে ছেলেটা বউ পাগলা হয়ে গেছে, তাই মা বাবাকে ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে। কিন্তু ছেলেটা যে কঠিন সমীকরণের মুখোমুখি তা সমাজের কেউ বুজতে রাজি হয় না।

এবার একটু ফ্ল্যাশব্যাকের দিকে ফিরে তাকাই।

ছেলেটির জন্মের পর থেকেই দেখেছে তার দাদা দাদির কাছ থেকে তার মা বাবার সংসার আলাদা, তার মানে আজকের যিনি শাশুড়ি যখন ঘরের বউ ছিলেন তখন তাহার শাশুর শাশুড়ির সাথে খুব বেশি দিন এক সংসারে থাকতে পারেন নাই। শাশুর শাশুড়ির সাথে খুনসুটির এক পর্যায়ে স্বামীকে নিয়ে পৃথক সংসারে পাড়ি দেন। সেই তিনিই আজ শাশুড়ি হয়েছেন কিন্তু শাশুড়ি নামক চরিত্রের পরিবর্তন করতে পারেন নাই।

উনার শাশুড়ি যেমন উনাকে মেয়ের মত মেনে নিতে পারেন নাই,তাই উনি ও উনার ছেলের বউকে মন থেকে মেয়ের মত মেনে নিতে পারেন নাই।

সংসারের জট এখান থেকেই শুরু, এবং এর শেষটা হয় ভয়ঙ্কর পরিণতি দিয়ে।

সুতরাং এই সংস্কৃতি আমাদেরকে পরিবর্তন করতে হবে সংস্কৃতি পরিবর্তন হলে আমাদের সমাজ থেকে হিংসা বিদ্বেষ অনেক কমে যাবে।

একান্নবতি সংসার ভালো যদি পরিবারের সকলের মনে আন্তরিকতা থাকে, তার চেয়ে পৃথক সংসার অনেক ভালো যদি হিংসা বিদ্বেষ না থাকে।

বহিঃবিশ্বে সংসারে জটিলতা খুব কম কারন একান্নবতি পরিবার কম তাই। কারন তারা বিয়ের পর পরই পৃথক সংসারে চলে যায়, সেই কারণে মা বাবার প্রতি সম্মান এবং ভালবাসা থাকে যথেষ্ট।

সুতরাং একান্নবতি পরিবারে সুখে থাকার অভিনয় করার চেয়ে সম্মান বজায় রেখে বিয়ের পর পর পৃথক থাকা আমার দৃষ্টিকোণ থেকে মনে হয় উত্তম।

তবে হ্যাঁ মা বাবার প্রতি অনীহা অবহেলা করা যাবে না, তাদের প্রতি যে দায়িত্ব আছে তা অবশ্যই সন্তানকে পালন করতে হবে। আপনার মা বাবাকে খেদমত করা আপনার দায়িত্ব আপনার বউয়ের নয়। আপনার ভাই বোনকে খোশামোদ করা আপনার দায়িত্ব আপনার বউয়ের নয়।

অতএব বউ মা বাবা ভাই বোনকে সন্তুষ্ট রাখার একমাত্র উপায় হল, বিয়ের পরেই আলাদা সংসারে বসবাস করা।

অবশ্য আমার কথাতে অবিবাহিতরা ক্ষিপ্ত হবেন, তবে বিবাহিতরা একমত পোষণ করবেন।

কারন বাস্তবতার দুয়ারে মুখোমুখি বিবাহিতরা।

বিষয়: বিবিধ

১৫৮২ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

378842
১৯ অক্টোবর ২০১৬ রাত ০৯:১০
হতভাগা লিখেছেন : বিয়ের পর মেয়েদের প্রথম টার্গেটই থাকে স্বামীকে তার আপনজনদের কাছ থেকে সরিয়ে নেওয়া ।

না পারলে সংসারে অশান্তির সৃষ্টি করে ।

আমাদের সমাজে এমন ট্রেন্ড এখন চলে এসেছে যে আগে ছোটদেরকে সমঝে চলতে হবে । ছোটরা বড়দেরকে মান্য করাটা একটা ইগো ইস্যু হয়ে ওঠে ।

বেয়াদপী করা এখানে একটা ক্রেডিট হিসেবেই বিবেচ্য হয় ।

স্বামীকে তার আপনজনদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করা স্ত্রী কখনও কি মনে করে যে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে ২০ বছর পরে যেখানে তার রোল ঠিক উল্টো হবে ।

আমাদের মুসলমান পারিবারিক তথা সামাজিক জীবনে পুরুষদের লিড দেওয়ার কথা থাকলেও অযাচিতভাবে সেটা নারীরা করে বা সংসারের বসিং তাদেরকে দিতেই হয় ।

যার ফলাফল গোটা সমাজে বিশৃঙ্খলা ।

২০ অক্টোবর ২০১৬ দুপুর ১২:০৩
313825
অভিমানী বালক লিখেছেন : স্বামীকে তার আপনজনদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করা স্ত্রী কখনও কি মনে করে যে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে ২০ বছর পরে যেখানে তার রোল ঠিক উল্টো হবে

সুন্দর বলেছেন, ধন্যবাদ।
378846
১৯ অক্টোবর ২০১৬ রাত ১০:১২
আফরা লিখেছেন : এক গাছের ছাল আরেক গাছে জোড়া লাগে না ।তাই শাশুরী ও যেমন মা হবে না ছেলের বউ ও কখনো মেয়ে হবে না ।

তবে আমরা যদি সত্যিকারে মুসলিম হতে পারি ও মুসলিম পরিবার গঠন করতে পারি তবেই আমাদের পরিবারে শান্তি থাকবে ।তবে দুজনকেই মুসলিম হবে একজন হলে ও হবে না ।

২০ অক্টোবর ২০১৬ দুপুর ১২:০৪
313826
অভিমানী বালক লিখেছেন : এক গাছের ছাল আরেক গাছে জোড়া লাগে না ।

এই কথাটাই আমাদেরকে বিষণ্ণতায় ফেলে দেয়।
ধন্যবাদ।
378850
১৯ অক্টোবর ২০১৬ রাত ১১:০০
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : পরিবার একক হবে না যেীথ সেটা নির্ভর করে অর্থনৈতিক অবস্থার ভিত্তিতে। কিন্তু এখন আমাদের দেশে যেটা হচ্ছে তা হল স্ত্রী কর্তৃক স্বামিকে নিজের সম্পত্তি মনে করা তেমনি মা ও ছেলে কে সেটাই মনে করছে।
২০ অক্টোবর ২০১৬ দুপুর ১২:০৫
313827
অভিমানী বালক লিখেছেন : হ্যাঁ টিক বলেছেন।
ধন্যবাদ।
378880
২০ অক্টোবর ২০১৬ দুপুর ১২:৪১
মোস্তফা সোহলে লিখেছেন : বর্তমানে যৌথ পরিবারের কথা কল্পনাও করা যায় না
২০ অক্টোবর ২০১৬ দুপুর ০১:০৮
313828
অভিমানী বালক লিখেছেন : যৌথ পরিবার বিলীন হয়ে গেছে।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File