সমানুপাতিক আত্নকেন্দ্রিক ব্যক্তিগত উদ্ভট সমস্যা!

লিখেছেন লিখেছেন নীল অভ্র ০৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ১২:৪৬:৩২ দুপুর



'একটু চেপে দাড়া।'

'আর কত চাপব? আমি কি খোলা আকাশের নিচে দাড়িয়েছি নাকি?'

'খুব গরম লাগছে রে!'

'এখন আমি কি করব এসি ফিট করে দিতে হবে নাকি এখানে?'

লোকাল বাস মানেই হল গরম, চাপাচাপি, ঝামেলা, এবং হুলুস্থুল কান্ড! দুই বন্ধু মিলে ঝুলে ঝুলে যাচ্ছি বাই বাস। দাড়ানোর জায়গাও নেই। তারপরও কোনরকমে দাড়াতে হয়েছে। এদিকে ভ্যাপসা গরম তার ওপর আবার গাদাগাদি করে দাড়ানো ফলে গরমের তীব্রতা আরও বেড়ে গেছে। এরপর আরেক সমস্যা হল জ্যাম। থেমে থেমে বাস চলছে। এত ঝামেলার মাঝে আবার আরেক সমস্যা এসে দাড়াল একটা পিকনিক বাস। এই সময় আবার কিসের পিকনিক বুঝলাম না। তাদের মাইকের প্যানপ্যানানিতে মাথাটা আরও হট হয়ে গেল। ভাবছি আজকেই কি এসব হওয়া খুব দরকার ছিল? বারবার এদিক-অদিক খেয়াল রাখছি কোন সিট খালি হয় কিনা। একটু পর একটা ছেলে উঠতে না উঠতে সামনের একটা সিট খালি পেয়ে গেল। এটা দেখে আমার কি ইচ্ছে হচ্ছিল একবার বুঝে দেখুন। এতক্ষন দাড়িয়ে থেকে একটু দাড়ানোর জায়গা পাচ্ছি না। আর ঐ বেটা এসেই বসে গেল। এরমধ্যে আবার আমার বন্ধুর মুখ ফুটল,

'এই শুনছিস?'

'কি?'

'সাবধানে দাড়াস!'

'দাড়াতেই পারছি না আবার সাবধানে কি করে দাড়াব?'

'মোবাইল সাবধানে রাখিস!'

'বলতে হবে না। আমি ছোট খোকা না!'

'কোনদিক দিয়ে যে কাজ করে দেবে তুই টেরও পাবি না! সো সাবধান!'

'ওকে বাবা! এবার একটু অফ যা।'

হঠাৎ একটু দমকা বাতাস এল। আহ কি শান্তি! এ এক অদ্ভুত অনুভুতি। আবার জ্যাম এবং আবার প্যানপ্যান। সাথে পিকনিক বাস তো আছেই। আর সাথে বোনাস হল চাপাচাপি। হোয়াট এ লাইফ! আচমকা বাস থামল। দেখি একসাথে কয়েকজন যাত্রী সিট ছেড়ে উঠে দাড়াল নামবে বলে। আমার যে কি আনন্দ হচ্ছিল সেটা এখানে যতই ব্যাখ্যা করি তবুও বোঝানো সম্ভব না। আমি সিট পছন্দ করছিলাম। ভাবছি কোন সিটে বসব। এমন সময় বাসের হেলপারটি এসে বলল,

'ভাইজান নামবেন না?'

'না ভাইয়া! আমি আরও পরে নামব। আপাতত নামবার কোন খায়েশ নেই!'

'কিন্তু আপনাকে তো নেমে যেতে হবে!'

'নেমে যেতে হবে মানে? ফাজলামী কর নাকি হা?'

'ফাজলামী না ভাই। চাক্কা ফিউজ হয়ে গেছে তো তাই!'

এবং ক্রাশ খেলাম! নেমে গেলাম বাস থেকে। এতক্ষন যাও ছায়ার মধ্যে ছিলাম আর এখন রোদের মধ্যে। হঠাৎ দেখি আমার বন্ধুটি ভীষন উত্তেজিত হয়ে কি যেন খুজছে! বললাম,

'কি খুজছিস?'

'আরে ব্যাটা আমার মোবাইল খুজে পাচ্ছি না!'

'বলিস কি?'

'হ্যা রে! বাস থেকে নামার পর পকেটে হাত দিয়ে দেখি মোবাইল নেই! আমার এত টাকার স্মার্টফোনটা!'

'মোবাইল সাবধানে রাখা উচিত ছিল। দেখলি তো কোনদিক দিয়ে কাজ করে দিল টেরও পাস নি!'

'আমার ডায়ালগ আমাকে দিচ্ছিস? এখন মজা করার সময় না!'

'এই নে তোর স্মার্টফোন! এবার থেকে সাবধানে রাখিস!'

ফোনটা ওকে ফেরত দেয়ার পর ও একটু ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেল। সকাল থেকে এত ঝামেলা পোহানর পরও আমার এখন খুব হাসতে ইচ্ছে করছে ওর এই নিস্তব্ধ মার্কা চেহারা দেখে। কড়া রোদের মধ্যে দুই বন্ধু হাটছি। ফোন পেয়েও বেচারা মুখ গোমরা করে আছে। দেখি এবার বাসে উঠে কোন ক্রাশ খেতে হয়?

বিষয়: বিবিধ

১২৪২ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

262005
০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ দুপুর ০১:১৭
সুশীল লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ
262018
০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ দুপুর ০২:০৭
নীল অভ্র লিখেছেন : আপনাকেও ধন্যবাদ।
262036
০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ দুপুর ০৩:০৪
কাহাফ লিখেছেন : চাপা-চাপি,ঝামেলা ,হুলস্হুল কান্ড এর পর একটু প্রশান্তি এই নিয়েই তো জীবন।
262089
০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০৮:০৭
নীল অভ্র লিখেছেন : ঠিক বলেছেন ভাই।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File