এ যেন এক অন্যরকম পৃথিবী

লিখেছেন লিখেছেন লুকোচুরি ১৯ মার্চ, ২০১৪, ০৯:০৫:৫৯ রাত

রোজার একদমই মনে ছিল না আজ যে বৃহস্পতিবার। ইশ! আজকের গল্প বলা ক্লাসের জন্য কোন প্রস্তুতি নিয়ে আসেনি। ভেবেছিল আজ সুরাহ আল-কাহফ থেকে তাফসীর পড়ে সহজ ভাষায় বাচ্চাদের কাছে তা গল্প আকারে বলবে। একদমই ভুলে গিয়েছিল। যদিও রোজার সুরাহ কাহাফের তাফসীর মনে আছে, তারপরও আরেকবার না পড়ে বলতে চাইছে না। কি করা যায় ভাবছিল রোজা। তখন হঠাৎ মনে হল আজ বাচ্চাদের থেকে গল্প শুনবে আর ডুব দিবে বাচ্চাদের ভাবনার জগতে। বেড়িয়ে আসবে এক অন্যরকম পৃথিবী থেকে। যেই পৃথিবী কেবল স্নিগ্ধতা, কোমলতা, আর সরলতায় ভরপুর। এমন এক পৃথিবী যেখানে কোন হানাহানি, হিংসা-বিদ্বেষ, কিংবা কোন রকম কুটিলতা নেই।

রোজা ক্লাসে ঢুকেই বরাবরের মত প্রতিযোগিতা করে আগে সালাম দিতে চাইল কিন্তু এবারও বাচ্চারা রোজাকে আগে সালাম দিয়েছে। রোজা একদিন ক্লাসে বলেছিল, রাসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহর কাছে সে ব্যক্তিই উত্তম যে আগে সালাম দেয়।’ এরপর থেকে তার লক্ষ্মী বাচ্চাগুলো একরকম প্রতিযোগিতাই করেই রোজাকে হারিয়ে দেয়। রোজাও বেশ মজা পায় এই প্রতিযোগিতায় হেরে গিয়ে। কারণ রোজা চায় যে তার ছাত্রীরা ভাল কাজের প্রতিযোগিতা করুক।

বরাবরের মতই সুরাহ ফাতিহা পড়ার মাধ্যমে মহান রবের প্রশংসা, তার একত্ববাদের ঘোষণা এবং সঠিক পথে চলার দুয়া করে ক্লাসের শুরু করল রোজা। এরপর যথারীতি রাসুল (সাঃ) এর প্রতি দুরুদ পাঠ করল, এবং ছাত্রীদের উদ্দেশ্য করে বলল যে, আজ আমি তোমাদের থেকে গল্প শুনব। তোমরা যা ভাব, চিন্তা কর, বড় হয়ে যা করতে চাও, কিংবা গল্প, কবিতা, ক্বিরাত যা মন চায় আমাকে শোনাবে।

রোজার এমন কথা শোনার পর কেউ কেউ অনেক উৎসাহ দেখাল আবার কেউ কেউ নার্ভাস হয়ে পড়েছিল। রোজা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য নিজ থেকেই বলল, জানো যখন আমি ছোট ছিলাম তখন ভাবতাম... আমি একটা বাড়ি বানাব মেঘের দেশে। যেহেতু বাড়িটা মেঘের উপর হবে, তাই আমি যখন যেখানে ইচ্ছা ভেসে বেড়াব। উড়ে উড়ে অনেক দূরে যাব। আর মেঘের খণ্ড গুলো হবে আইস্ক্রিমের, আমি যখন তখন আইসক্রিম খাব মেঘ খণ্ড থেকে। আর আমার গাছ গুলো হবে রংধনুর। রংধনু রঙের ফুল হবে, ফল হবে। আরও কত কি...

রোজার কথা শুনে পুরো ক্লাস খিল খিল করে হেসে উঠল। এরপর লাবণ্য বলল, মিস আমিও এমন ভাবে কল্পনা করি তবে একটু অন্যরকম করে। আমার কল্পনায় আমার অনেক রংধনু আছে। আমি রংধনুর পিঠে চড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি। দেশ থেকে দেশান্তর, দূর থেকে দূরান্তর আরও দূরে... যেখানে আমাকে কেউ খুঁজে পাবে না এত দূরে চলে যাব, আবার খেলা শেষে যখন আম্মু আব্বুর কথা মনে পড়বে তখন ঠিকই আমি ফিরে আসব। সবার জন্য অনেক কিছু নিয়ে আসব সেখান থেকে।

লাবণ্যর কথা শেষ না হতেই প্রিয়ন্তি বলা শুরু করল, মিস জানেন আমি কি চিন্তা করি? আমি চিন্তা করি আমার একটা পৃথিবী হবে, সেখানে আইস্ক্রিমের পাহাড় থাকবে, চকলেটের নদী থাকবে। আমি হব সেই পাহাড়ের পর্বতারোহী, সেই নদীর সাঁতারু। আর আমার দুইটা ডানা থাকবে আমি ডানা মেলে উড়ে যাব আমার বান্ধুবির বাসায়, আমার নানু বাসায় আবার যাব দাদু বাসায়। যখন যেখানে ইচ্ছা যাব।

রোজা বেশ উপভোগ করছে ছোট্ট সোনামণিদের চিন্তাগুলো। তখন রোশনী বলে, মিস আমি একটা কথা বলি? তখন রোজা বলল, হ্যাঁ অবশ্যই। বল... তুমি কি বলতে চাও? মিস আমি একটা সুন্দর পৃথিবী দেখতে চাই। যেখানে ধনী, গরিব এসব কিছু থাকবে না, যেখানে কোন মারামারি হবে না। যুদ্ধ হবে না। ছোট্ট ছোট্ট বাচ্চারা তাদের মা-বাবাকে হারাবে না। একটা সুন্দর ছবির মত পৃথিবী হবে। চারদিকে সবুজ আর সবুজ গাছপালা থাকবে... অনেক রকম পাখির কিচির-মিচির, নানা রঙের ফুল, অনেক বড় নদী, নদীর চারপাশে সাদা সাদা কাশফুল, রাতের বেলা জোনাক পোকার আলো, একটা দুইটা জোনাকি ঘরে ঢুকবে দেখে অনেক খুশী লাগবে।

রোজা যত শুনছিল তত মুগ্ধ হচ্ছিল। এত সুন্দর এই বাচ্চাগুলোর কল্পনা। কত বিশুদ্ধ এদের ভাবনা। রোজা কিছুতেই এদের ভাবনাগুলোকে হারিয়ে যেতে দেবে না। সাধ্যমত চেষ্টা করবে এদের মনের মাঝে থাকা স্বপ্নগুলোকে জিইয়ে রাখতে। তখন হঠাৎ চোখ পড়ল সাদিয়ার দিকে, বেচারি সেই কখন থেকে কি যেন ভাবছে, ওকে আগেও দেখেছে এমন চুপ চাপ বসে থাকতে। তখন রোজা সাদিয়াকে বলল, তুমি কিছু ভাবছ সাদিয়া? তুমি কোন গল্প বলবে না? আচ্ছা তুমি বল, তুমি কি হতে চাও সাদিয়া? মিস আমি জান্নাতে গিয়ে আল্লাহ্‌র সাথে গল্প করতে চাই। আর যখন আল্লাহ্‌ অন্যদের সাথে কথা বলবে তখন আমি সবুজ পাখি হয়ে সারা জান্নাত ঘুরে বেড়াতে চাই। আমি কল্পনা করি, জান্নাতে গিয়ে আল্লাহ্‌কে কি বলব... কোন বিষয়ে কথা বলব আল্লাহ্‌র সাথে? তখন মনে হয় আল্লাহ্‌কে বলব যে, আমি তোমার সৃষ্টি করা সব তারা ঘুরে দেখতে চাই। আমার রাতের আকাশের তারা দেখতে অনেক ভাল লাগে মিস।

রোজার অবচেতন মন বলে উঠল, সুবাহানআল্লাহ্‌। কি অদ্ভুত সুন্দর চিন্তা। হে আল্লাহ্‌ তুমি এই ছোট্ট বাচ্চাকে কবুল করে নাও। তার দুয়া কবুল কর। আমীন। সুম্মা আমীন।

ফাতিমা ততক্ষনে গাল ফুলিয়ে বসে আছে। তার ধারণা সেই রোজা মিসকে সবচাইতে বেশি ভালবাসে অথচ মিস তার কথা শুনছে না। অভিমানে এই বুঝি চোখ দিয়ে পানি পড়া শুরু হবে। রোজা তা বুঝতে পেরে ফাতিমাকে বলল, ফাতিমা তুমি কিছু বলছ না কেন? আচ্ছা বল তুমি কি হতে চাও? অভিমানের সুরে... 'মিস' বলে যেই ডাক দিল ওমনি তার চোখ দিয়ে শ্রাবণধারা বইতে শুরু করল। রোজা বলে উঠল বোকা মেয়ে, তুমি কাঁদছ কেন? তোমাকে আমি এখনি বলতাম, তুমি কি করতে চাও কর। রোজা কোন মতে শান্ত করল ফাতিমাকে। ফাতিমা বলল মিস আমি ভোর হতে চাই। যখন সুয্যি মামা একটু একটু আলো দিবে আর আমাদের বাড়ির আঙ্গিনার ঘাসে শিশির লেগে থাকবে তখন আমার আব্বু-আম্মু ফজরের নামাজ পড়ে আঙ্গিনায় বসবে তখন আমি ভোর হয়ে ওদের সাথে থাকব, তখন ঠাণ্ডা বাতাস আসবে। সবার মন ভাল হয়ে যাবে। আমার দেখতে অনেক ভাল লাগবে।

রোজা বলল, আচ্ছা ঠিক আছে। তুমি আর কিছু বলতে চাও ফাতিমা? ফাতিমা বলল, আমি কুরআন থেকে একটা সুরাহ বলি মিস? আচ্ছা তুমি বল। কোন সুরাহটা শোনাবে আমাদের? ফাতিমা বলল, মিস আমি সুরাহ আল-ফাজ্‌র শোনাব। ফাতিমা সুরাহ ফাজ্‌র তিলাওয়াত করল। মুগ্ধ হয়ে শুনল সারা ক্লাস। এইটুকু মেয়ের মুখে এত চমৎকার তিলাওয়াত শুনবে রোজা কল্পনাও করতে পারেনি। যেন অন্যরকম ভাল লাগা ছেয়ে গেল সারা ক্লাস জুড়ে। শিরদাঁড়ায় কেমন একটা শিহরন বয়ে গেল।

এরপর সাবিরা বলে উঠল মিস আমি সুরাহ ফাজ্‌র এর অর্থ শোনাই সবাইকে। রোজা বলল, মাশা আল্লাহ্‌। তুমি অর্থ জানো? অবশ্যই শোনাবে আমাদের। তখন সাবিরা সুরাহ ফাজ্‌র এর অর্থ শোনাল সেই সাথে তাফসীরও। রোজার অজান্তেই তার চোখ বেয়ে পানি পড়তে শুরু করেছে, রোজা ভাবছিল সে যেন জান্নাতের বাগানে এসেছে, আর নানা রঙের ফুলগুলো তাদের সৌরভ ছড়াচ্ছে তার মনে। ভীষণ আনন্দ হচ্ছিল রোজার। আর এমন বাচ্চাদের পেয়ে আল্লাহ্‌র প্রতি কৃতজ্ঞতায় মাথা নুয়ে আসছিল। এই বাচ্চাগুলো যেন একেকটা মনি-মুক্তা। ভবিষ্যতেও যেন এরা এমন থাকে, এদের ইমানের দীপ্তি যেন ক্রমাগত বাড়তেই থাকে এই দুয়া করল রোজা।

এর মাঝে কখন যে ক্লাসের সময় শেষ হয়ে গেছে রোজা খেয়াল করেনি। যখন ছুটির বেল বাজল তখন রোজার হুঁশ ফিরল। সত্যি অসাধারণ সময় কেটেছে রোজার। এ যেন এক অন্য পৃথিবীতে চলে গিয়েছিল সে। যেখান থেকে আর ফিরতেই মনে চাইছিল না।



বিষয়: বিবিধ

৩৫৭১ বার পঠিত, ৪৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

194919
১৯ মার্চ ২০১৪ রাত ০৯:০৯
আওণ রাহ'বার লিখেছেন : ওয়াউ তাত্তু আমি ফাট্টু হয়েতি।
কি মদা মদা।
আমালে কি দিবা ?
বলো??
১৯ মার্চ ২০১৪ রাত ০৯:১২
145338
লুকোচুরি লিখেছেন :




১৯ মার্চ ২০১৪ রাত ০৯:২৩
145340
আওণ রাহ'বার লিখেছেন : হালিকেনটি রত মালাই পতন্দ কলে আমিও কেক ও পতন্দ কলি হালিকেন কইলে।
হালিকেন আতো একতাতে রতমালাই কাবো।
হালিকেন হালিকেন। Good Luck Happy
তুমাকেও দিবো থ্যাংকু তাত্তু।
১৯ মার্চ ২০১৪ রাত ১০:৩৯
145358
সূর্যের পাশে হারিকেন লিখেছেন : থিংকু তোমলা দু'দনকেই। আমাল অন্নেক ভাল্লাগে লতমলাই। তোমাকে অন্নেক আদল মামণি লতমলাইয়েদন্ন্য Happy
২০ মার্চ ২০১৪ সকাল ০৮:১৮
145459
ইমরান ভাই লিখেছেন : I Don't Want To See I Don't Want To See I Don't Want To See হায়রে বাচ্চাদের বাচ্চামি গেল না Tongue Tongue
২০ মার্চ ২০১৪ সকাল ১০:৩৮
145479
লুকোচুরি লিখেছেন : তোমলা দুইতা লুক্কি তাত্তু আমাল। মিলে মিথে লথগোল্লা আল কেক কাও। আলও আতে আমাল কাতে। তোমাদেল কাওয়া থেস ওলে বব্বে আমি আলও দিব। থিকতে আওন তাত্তু, হালিকেন তাত্তু। Good Luck Good Luck
২০ মার্চ ২০১৪ সকাল ১০:৪০
145480
লুকোচুরি লিখেছেন : ইমলান তাত্তু, আপনি কি কাবে? কেক দিত্তি আপনাকে, এত্তা কেক কান।

২০ মার্চ ২০১৪ সকাল ১১:৩৬
145511
ইমরান ভাই লিখেছেন : I Don't Want To See I Don't Want To See I Don't Want To See ইমলান তাত্তু। Time Out Time Out Thinking Thinking আমি তো ইমরান ভাই Surprised Surprised তাত্তু হলাম কবে? Tongue Tongue Tongue
২০ মার্চ ২০১৪ দুপুর ০১:২০
145547
লুকোচুরি লিখেছেন : "ইমলান ভাই" তাত্তু বব্ব তাইলে Tongue Tongue
194920
১৯ মার্চ ২০১৪ রাত ০৯:১৫
শিশির ভেজা ভোর লিখেছেন : সব পিতামাতার ঘরে এমন সন্তান আসুক সেটাই প্রত্যাশা।
১৯ মার্চ ২০১৪ রাত ০৯:১৯
145339
লুকোচুরি লিখেছেন : আমীন।
194936
১৯ মার্চ ২০১৪ রাত ১০:০০
নীল জোছনা লিখেছেন : অসাধারণ একটা গল্প। সে তো মেয়ে নয় যেন জান্নাতের ফুল
১৯ মার্চ ২০১৪ রাত ১০:০৭
145351
লুকোচুরি লিখেছেন : Good Luck Good Luck Good Luck অসংখ্য ধন্যবাদ Good Luck Good Luck Good Luck
194955
১৯ মার্চ ২০১৪ রাত ১০:৪৩
সূর্যের পাশে হারিকেন লিখেছেন : কী ব্যাপাল, আমলা কি বাত্তা নই? আমি আল আওণও ক্লাতে থিলাম ওদিন। আমাদেল কথা নেই কেনু? Crying Crying Crying আমি এ পোথ পড়বো না। যাও তোমাল তাথে আলি, খেলবো না আল Crying Crying Crying
২০ মার্চ ২০১৪ সকাল ০৮:২১
145461
ইমরান ভাই লিখেছেন : হারিকেন, খাবারের সময় দুস্টামি করে না Shame On You Shame On You Shame On You

Tongue Tongue Tongue Tongue Tongue Tongue Tongue
২০ মার্চ ২০১৪ সকাল ০৮:৫০
145463
আওণ রাহ'বার লিখেছেন : Rolling on the FloorRolling on the FloorRolling on the FloorRolling on the FloorRolling on the FloorRolling on the FloorRolling on the FloorRolling on the FloorRolling on the FloorRolling on the FloorRolling on the FloorRolling on the FloorRolling on the FloorRolling on the FloorRolling on the FloorRolling on the FloorRolling on the FloorRolling on the FloorRolling on the FloorRolling on the FloorRolling on the FloorRolling on the FloorRolling on the FloorRolling on the FloorRolling on the FloorRolling on the FloorRolling on the FloorRolling on the FloorRolling on the FloorRolling on the FloorRolling on the Floor হা হা হা....... হারিকেন Rolling on the FloorRolling on the FloorRolling on the FloorRolling on the FloorRolling on the FloorRolling on the FloorRolling on the FloorRolling on the FloorRolling on the FloorRolling on the FloorRolling on the FloorRolling on the FloorRolling on the FloorRolling on the FloorRolling on the FloorRolling on the FloorRolling on the Floor
২০ মার্চ ২০১৪ সকাল ১০:৪৪
145481
লুকোচুরি লিখেছেন : হালিকেন তাত্তু আমিতো দান্তাম তুমি থেলে বাবু। তুমি মেয়েদেল ইথকুলে তেন দেসো? আত্তা কান্দে না একন। তুমি তক্কেত কেক কাও।

২০ মার্চ ২০১৪ সকাল ১১:৩৫
145510
ইমরান ভাই লিখেছেন : I Don't Want To See I Don't Want To See I Don't Want To See ইমলান তাত্তু। Time Out Time Out Thinking Thinking আমি তো ইমরান ভাই Surprised Surprised তাত্তু হলাম কবে? Tongue Tongue Tongue
২০ মার্চ ২০১৪ রাত ০৯:৩৪
145698
সূর্যের পাশে হারিকেন লিখেছেন : হে ইমলান দাদা, তুমি আমাল তিতুকালেল এ্যালবাম তুলিকলে ফেলতো কবে? Crying Crying Crying
২১ মার্চ ২০১৪ রাত ০৩:০৪
145789
ভিশু লিখেছেন : Surprised Surprised Surprised Rolling Eyes Rolling Eyes Rolling Eyes
Worried Worried Worried
194966
১৯ মার্চ ২০১৪ রাত ১১:০৬
আরোহী রায়হান প্রিয়ন্তি লিখেছেন : রোজাকে নিয়ে লেখাটা রোজার মতই হয়েছে। Love Struck Angel মাশা আল্লাহ। সত্যি অনেক অনেক সুন্দর লিখেছো। পড়তে পড়তে হারিয়ে গিয়েছিলাম গল্পের মাঝে। Bee Music Rose Good Luck Big Hug
২০ মার্চ ২০১৪ সকাল ১০:৪৬
145482
লুকোচুরি লিখেছেন : আলহামদুলিল্লাহ্‌। Happy অনেক অনেক ধন্যবাদ আপুনি। তুমি ফুচকা খাও...

194998
১৯ মার্চ ২০১৪ রাত ১১:৪৯
শেখের পোলা লিখেছেন : চমৎকার! বেশ ভাল লাগলো৷ধন্যবাদ
২০ মার্চ ২০১৪ সকাল ১০:৪৬
145483
লুকোচুরি লিখেছেন : আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া Happy Happy Good Luck Good Luck
195051
২০ মার্চ ২০১৪ সকাল ০৭:৪২
২০ মার্চ ২০১৪ সকাল ১০:৪৮
145485
লুকোচুরি লিখেছেন : ধন্যবাদ আপুনি। Happy Happy Good Luck Good Luck
ইন শা আল্লাহ্‌ জান্নাতে আমরা সবাই একসাথে এভাবে ঘুরে বেড়াব একদিন...

195062
২০ মার্চ ২০১৪ সকাল ০৮:২৩
ইমরান ভাই লিখেছেন :

মাশাআল্লাহ অনেক সুন্দর হয়েছে গল্পটি। আল্লাহ আপনার হাতের বরকত বাড়িয়ে দিন আমিন।

২০ মার্চ ২০১৪ সকাল ১০:৪৯
145486
লুকোচুরি লিখেছেন : আলহামদুলিল্লাহ্‌ ভাইয়া। Happy আমীন, সুম্মা আমীন। এবং জাযাকাল্লাহু খাইরান Happy Happy Good Luck Good Luck
195094
২০ মার্চ ২০১৪ সকাল ১০:২১
আবু আশফাক লিখেছেন : ফাতিমা'র ভাবনা ও কাজের বর্ণনা পড়ে চোখ অশ্রুসিক্ত হলো।
২০ মার্চ ২০১৪ সকাল ১০:৫১
145487
লুকোচুরি লিখেছেন : আল্লাহ্‌ সবাইকে এমন সুন্দর মনের বাচ্চা উপহার দিন। আমীন। যারা তাদের স্নিগ্ধতা দিয়ে চারপাশ মাতিয়ে রাখবে। Happy Happy Good Luck Good Luck
১০
195116
২০ মার্চ ২০১৪ সকাল ১১:২১
সিটিজি৪বিডি লিখেছেন : এই দুর প্রবাসে বাচ্চাদের সাথে খেলাধুলা দুরের কথা একটু আদর ও করতে পারি না।...পোষ্ট পড়ে প্রিয় সন্তানদের কথা মনে পড়ে গেল ।
২০ মার্চ ২০১৪ দুপুর ০১:৫২
145558
লুকোচুরি লিখেছেন : Crying Crying Crying
আল্লাহ্‌ আপনাকে ওদের সাথে সময় কাটানোর সুযোগ দিন। আমীন।
১১
195301
২০ মার্চ ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:৫০
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : রোজা নামটা......।
২০ মার্চ ২০১৪ রাত ০৮:৪২
145678
লুকোচুরি লিখেছেন : এই নামটা কি ভাইয়া???? Waiting Waiting :Thinking :Thinking
২০ মার্চ ২০১৪ রাত ০৮:৪৯
145682
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : কেমন কেমন।
২০ মার্চ ২০১৪ রাত ১০:০৫
145712
লুকোচুরি লিখেছেন : সব নাম আসলে সবার ভালো লাগবে এমন কোন নিয়ম নাই। তবে এটা আমার ভীষণ প্রিয় একটি নাম
১২
195564
২১ মার্চ ২০১৪ রাত ০১:২৭
বৃত্তের বাইরে লিখেছেন : গল্প পড়ে তো মনে হচ্ছিলো রোজাপু কে নিয়ে লেখা গল্প পড়ছি। এমন হলে ঠিক আছে। গল্পের নায়িকার সাথে আসলজনের মিল আছে। ভালো লাগলো Love Struck Rose Rose Good Luck
২১ মার্চ ২০১৪ বিকাল ০৫:০৪
145937
লুকোচুরি লিখেছেন : অন্নেক অন্নেক ধন্যবাদ। Happy Happy Happy Good Luck Good Luck Good Luck
১৩
195593
২১ মার্চ ২০১৪ রাত ০৩:০৬
ভিশু লিখেছেন : আমার কিচ্ছুই মনে হয়নি...শুধু কেমঙ্কেমন যেন লাক্সে... Worried Smug Happy Good Luck Rose Day Dreaming
২১ মার্চ ২০১৪ বিকাল ০৫:০৫
145938
লুকোচুরি লিখেছেন : ভিতু তাত্তু, তোমাল ভাল লাগে নাই? Surprised Surprised Surprised Surprised :Thinking :Thinking Yawn
২১ মার্চ ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৪৪
145974
ভিশু লিখেছেন : Rolling Eyes Don't Tell Anyone
Rolling on the Floor Rolling on the Floor
২১ মার্চ ২০১৪ রাত ০৮:০৩
145979
লুকোচুরি লিখেছেন :
১৪
195647
২১ মার্চ ২০১৪ সকাল ১০:১৯
সত্য নির্বাক কেন লিখেছেন : অনেক সুন্দর ও চমৎকার হয়েছে। পোস্টটি পড়ে মোবাইল থেকে সুরা আল ফজর ৮৯ নং সুরাটির অর্থ পড়লাম অতপর সুরাটির তেলাওয়াত শুনলাম। আল ফজর
ভূমিকা (নামকরণ, শানে নুযূল, পটভূমি ও বিষয়বস্তুর জন্য ক্লিক করুন)
নামকরণ :
প্রথম শব্দ ( আরবী ---------) কে এই সূরার নাম হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।

এই সূরার বিষয়বস্তু থেকে জানা যায় , এটি এমন এক যুগে নাযিল হয় যখন মক্কা মুয়াযযমায় ইসলাম গ্রহণকারীদের ওপর ব্যাপকভাবে নিপীড়ন নির্যাতন চলছিল। তাই মক্কাবাসীদেরকে আদ , সামূদ ও ফেরাউনের পরিণাম দেখিয়ে সতর্ক করা হয়েছে।


বিষয়বস্তু ও মূল বক্তব্য :
এর বিষয়বস্তু হচ্ছে আখেরাতের শাস্তি ও পুরস্কারের সত্যতা প্রমাণ করা । কারণ মক্কাবাসীরা একথা অস্বীকার করে আসছিল। এ উদ্দেশ্যে ধারাবাহিক পর্যায়ে যে যুক্তি পেশ করা হয়েছে সে ধারাবাহিকতা সহকারে এ বিষয়টি পর্যালোচনা করতে হবে।
প্রথম ফজর , দশটি রাত , জোড় ও বেজোড় এবং বিদায়ী রাতের কসম খেয়ে শ্রোতাদের জিজ্ঞেস করা হয়েছে , যে বিষয়টি তোমরা অস্বীকার করছো তার সত্যতার সাক্ষ দেবার জন্য কি এই জিনিসগুলো যথেষ্ট নয় ? সামনের দিকে টীকায় আমি এ চারটি জিনিসের ব্যাখ্যা দিয়েছি তা থেকে জানা যাবে যে, দিন রাত্রির ব্যবস্থায় যে, নিয়মানুবর্তিতা দেখা যায় এগুলো তারই নির্দশন। এগুলোর কসম খেয়ে প্রশ্ন করা হয়েছে , আল্লাহর প্রতিষ্ঠিত এই বিজ্ঞান সম্মত ব্যবস্থাপনা প্রত্যক্ষ করার পরও যে আল্লাহ এই ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করেছেন তিনি আখেরাত কায়েম করার ক্ষমতা রাখেন এবং মানুষের কাছ থেকে তার কার্যাবলীর হিসেব নেয়া তাঁর এ বিজ্ঞতাপূর্ণ ব্যবস্থাপনার অপরিহার্য দাবী , একথার সাক্ষ প্রমাণ পেশ করার জন্য কি আর কোন জিনিসের প্রয়োজন থাকে ?

এরপর মানব জাতির ইতিহাস থেকে প্রমাণ পেশ করে উদাহরণ স্বরূপ আদ ও সামূদ জাতি এবং ফেরাউনের পরিণাম পেশ করা হয়েছে । বলা হয়েছে , যখন তারা সীমা পেরিয়ে গেছে এবং পৃথিবীতে ব্যাপক বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে তখন আল্লাহর আযাব তাদেরকে গ্রাস করেছে। একথা প্রমাণ করে যে , কোন অন্ধ - বধির শক্তি এই বিশ্ব ব্যবস্থা পরিচালনা করছে না এবং এ দুনিয়াটা কোন অথর্ব রাজার মগের মূল্লুকও নয়। বরং একজন মহাবিজ্ঞ ও মহাজ্ঞানী শাসক এ বিশ্ব জাহানের ওপর কর্তৃত্ব করছেন। তিনি বুদ্ধি জ্ঞান ও নৈতিক অনুভূতি দান করে যেসব সৃষ্টিকে এ দুনিয়ায় স্বাধীন ক্ষমতা ও ইখতিয়ার দিয়েছেন তাদের কাজের হিসেব নিকেশ করা এবং তাদেরকে শাস্তি ও পুরস্কার দেয়া তাঁর জ্ঞানবত্তা ও ন্যায়পরায়ণতার অনিবার্য দাবী। মানব ইতিহাসের বিভিন্ন পর্যায়ে আমরা এর অবিচ্ছিন্ন প্রকাশ দেখি।

তারপর মানব সমাজের সাধারণ নৈতিক অবস্থা পর্যালোচনা করা হয়েছে। এর মধ্যে আরব জাহেলিয়াতের অবস্থা সে সময় সবার সামনে বাস্তবে সুস্পষ্ট ছিল। বিশেষ করে তার দু’টি দিকের সমালোচনা করা হয়েছে। এক , সাধারণ মানুষের বস্তুবাদী দৃষ্টিভংগী। যার ফলে তারা নৈতিক ভালো মন্দের দিকটাকে উপেক্ষা করে শুধুমাত্র পার্থিব ধন-দওলাত , মর্যাদা ও প্রতিপত্তি অর্জন বা এর অভাবকে সম্মান লাভ ও সম্মানহানির মানদণ্ড গণ্য করেছিল। তারা ভুলে গিয়েছিণ , সম্পদশালিতা কোন পুরস্কার নয় এবং আর্থিক অভাব অনটন কোন শাস্তি নয় বরং এ দুই অবস্থাতেই মহান আল্লাহ মানুষের পরীক্ষা নিচ্ছেন। সম্পদ লাভ করে মানুষ কি দৃষ্টিভংগী ও কর্মনীতি অবলম্বন করে এবং আর্থিক অনটন ক্লিষ্ট হয়ে সে কোন পথে চলে এটা দেখাই তাঁর উদ্দেশ্য। দুই, লোকদের সাধারণ কর্মনীতি। পিতার মৃত্যুর সাথে সাথেই তাদের সমাজে এতিম ছেলেমেয়েরা চরম দুরবস্থার সম্মুখীন হয়। গরীবদের খবর নেবার এবং তাদের পক্ষে কথা বলার একটি লোকও পাওয়া যায় না। যার ক্ষমতা থাকে সে মৃতের সমস্ত সম্পত্তি গ্রাস করে বসে। দুর্বল হকদারদের খেদিয়ে দেয়া হয়। অর্থ ও সম্পদের লোভ একটি দুর্নিবার ক্ষুধার মতো মানুষকে তাড়া করে ফেরে। যত বেশী পায় তবুও তার পেট ভরে না। দুনিয়ার জীবনে যেসব লোক এ ধরনের কর্মনীতি অবলম্বন করে তাদের কাজের হিসেব নেয়া যে ন্যায়সংগত , লোকদের কাছ থেকে এ স্বীকৃতি আদায় করাই হচ্ছে এ সমালোচনার উদ্দেশ্য ।

সবশেষে স্পষ্ট ভাষায় বলা হয়েছে , সমালোচনা ও হিসেব নিকেশ অবশ্যি হবে। আর সেদিন এই হিসেব নিকেশ হবে যেদিন আল্লাহর আদালত কায়েম হবে। শাস্তি ও পুরস্কার অস্বীকারকারীদের হাজার বুঝলেও আজ তারা যে কথা মেনে নিতে পারছে না। সেদিন তা তাদের বোধগম্য হবে। কিন্তু তখন বুঝতে পারায় কোন লাভ হবে না। অস্বীকারকারী সেদিন আফসোস করে বলবে : হায় , আজকের দিনের জন্য যদি আমি দুনিয়ায় কিছু সরঞ্জাম তৈরি করতাম। কিন্তু এই লজ্জা ও দুঃখ তাকে আল্লাহর আযাবের হাত থেকে বাঁচাতে পারবে না। তবে যেসব লোক আসামানী কিতাব ও আল্লাহর নবীগণের পেশকৃত সত্য পূর্ণ মানসিক নিশ্চিন্ততা সহকারে মেনে নিয়েছিল আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হবেন এবং তারাও আল্লাহ প্রদত্ত প্রতিদান পেয়ে সন্তুষ্ট হবে। তাদেরকে আহবান জানানো হবে , তোমরা নিজেদের রবের প্রিয় বান্দাদের অন্তরভুক্ত হয়ে জান্নাতে প্রবেশ করো ।

﴿بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ وَالْفَجْرِ﴾
১) ফজরের কসম,

.

﴿وَلَيَالٍ عَشْرٍ﴾
২) দশটি রাতের জোড় ও বেজোড়ের

.

﴿وَالشَّفْعِ وَالْوَتْرِ﴾
৩) এবং রাতের কসম

.

﴿وَاللَّيْلِ إِذَا يَسْرِ﴾
৪) যখন তা বিদায় নিতে থাকে ৷

.

﴿هَلْ فِي ذَٰلِكَ قَسَمٌ لِّذِي حِجْرٍ﴾
৫) এর মধ্যে কোন বুদ্ধিমানের জন্য কি কোন কসম আছে?১

১. এই আয়াগুলোর ব্যাখ্যায় মুফাসসিরগণের মধ্যে ব্যাপক মতবিরোধ দেখা যায়। এমন কি জোড় ও বেজোড় সম্পর্কে ছত্রিশটি বক্তব্য পাওয়া যায়। কোন কোন বর্ণনায় এগুলোর ব্যাখ্যা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে ও সম্পর্কিত করা হয়েছে । কিন্তু আসলে রসূলুল্লাহ ( সা ) থেকে কোন ব্যাখ্যা প্রমাণিত নেই। নয়তো তাঁর ব্যাখ্যার পর সাহাবা , তাবেঈও পরবর্তী তাফসীরকারদের মধ্য থেকে কোন একজনও এই আয়াতগুলোর ব্যাখ্যা নির্ধারণ করার সাহস করতেন না।
বর্ণনাভংগি সম্পর্কে চিন্তা করলে পরিস্কার বুঝা যায় , প্রথম থেকে কোন আলোচনা চলছিল। সেখানে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একটি কথা পেশ করেছিলেন এবং অস্বীকারকারীরা তা অস্বীকার করছিল। এ প্রসংগে রসূলের কথার সত্যতা প্রমাণ করে বলা হয়েছে , ওমুক ওমুক জিনিসের কসম। এর অর্থ ছিল , এই জিনিসগুলোর কসম , যা কিছু মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলছেন সব সত্য । তারপর এ প্রশ্নের ভিত্তিতে এ বক্তব্য পেশ করা হয়েছে যে , কোন বুদ্ধিমান লোকের জন্য কি এর মধ্যে কোন কসম আছে ৷ অর্থাৎ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে কথা বলছেন তা জেনে নেবার জন্য কি একজন বুদ্ধি- বিবেকমান ব্যক্তির জন্য এই কসমই যথেষ্ট নয় ৷

এখন প্রশ্ন হচ্ছে , যে প্রসংগে এই চারটি জিনিসের কসম খাওয়া হয়েছে তা কি ছিল ৷ এ জন্য আমাদের পরবর্তী আয়াতগুলোতে " তুমি কি দেখনি তোমার রব তাদের সাথে কি ব্যবহার করেছিলেন " থেকে সূরার শেষ পর্যন্ত সমগ্র আলোচ্য বিষয় সম্পর্কে চিন্তা -ভাবনা করতে হবে। এ থেকে জানা যায় , আলোচনা চলছিল শাস্তি ও পুরস্কার সম্পর্কে । মক্কাবাসীরা একথা অস্বীকার করছিল এবং রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের থেকে এর স্বীকৃতি আদায় করার জন্য অনবরত তাদেরকে দাওয়াত ও উপদেশ দিয়ে চলছিলেন। এ জন্য ফজর , দশটি রাত , জোড় - বেজোড় এবং বিদায়ী রাতের কসম খেয়ে বলা হয়েছে , এই বিষয়টি উপলব্ধি করার জন্য এই চারটি জিনিস যথেষ্ট নয় কি ৷ এ জন্য কোন বুদ্ধি বিবেকমান ব্যক্তির সামনে কি আর কোন জিনিস পেশ করার প্রয়োজন আছে ৷

এই কসমগুলোর এই পরিবেশ পরিস্থিতি নির্ধারিত হয়ে যাওয়ার পর পরবর্তী আলোচনা এগুলোর যে অর্থ নির্দেশ করে আমাদের অপরিহার্যভাবে সেই অর্থই গ্রহণ করতে হবে। প্রথমে বলা হয়েছে " ফজরের কসম " । ফজর বলা হয় প্রভাত হয়ে যাওয়াকে। অর্থাৎ যখন রাতের অন্ধাকরা ভেদ করে দিনের প্রথম আলোক রশ্মি পূর্বদিগন্তে একটি সাদা রেখার মতো আত্মপ্রকাশ করে। তারপর বলা হয়েছে "দশটি রাতের কসম। " ধারাবাহিক বর্ণনাগুলো সামনে রাখলে জানা যায় , এর অর্থ হচ্ছে মাসের তিরিশটি রাতের প্রত্যেক দশটি রাত। প্রথম দশটি রাতের চাঁদ সরু কাস্তের আকারে শুরু হয়ে প্রতি রাতে বাড়তে থাকে । এভাবে তার অর্ধেকেরও বেশী এলাকা উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। দ্বিতীয় দশটি রাতে চাঁদের আলোয় রাতের বৃহত্তম অংশ আলোকিত থাকে। শেষ দশটি রাতে চাঁদ আস্তে আস্তে একেবারে ছোট হয়ে যেতে থাকে এবং রাতের বেশীর ভাগ অন্ধকারে ডুবে যেতে থাকে । এমনকি মাসের শেষ রাতটি হয় পুরোপুরি অন্ধকার । এরপর বলা হয়েছে , " জোড় ও বেজোড়ের কসম । " জোড় বলা হয় এমন সংখ্যাকে যাকে দুটি সমান ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন ২, ৪, ৬, ১০, । অন্যদিকে বেজোড় বলা হয় এমন স্যংখ্যাকে যাকে সমান দু'ভাগে ভাগ করা যায় না। যেমন ১, ৩, ৫, ৭, ৯, । সাধারণভাবে দেখলে এর অর্থ হতে পারে বিশ্ব জাহানের সমস্ত জিনিস। কারণ প্রতিটি জিনিস হয় জোড় , বেজোড়। কিন্তু যেহেতু এখানে দিন ও রাতের কথা আলোচনা হচ্ছে তাই বিষয়বস্তুর সাথ সম্পর্কের প্রেক্ষিতে এখানে জোড় ও বেজোড় মানে হচ্ছে , দিন রাত্রির পরিবর্তন। অর্থাৎ মাসের তারিখ এক থেকে দুই এবং দুই থেকে তিন হয়ে যায়। আর প্রত্যেকটি পরিবর্তন একটি নতুন অবস্থার সৃষ্টি করে। সবশেষে বলা হয়েছে , " রাতের কসম যখন তা বিদায় নিতে থাকে। " অর্থাৎ সূর্য ডোবার পর থেকে পৃথিবীর বুকে যে অন্ধকার ছেয়ে ছিল তার অবসান ঘটেছে এবং আলোকময় ঊষার উদায় হতে যাচ্ছে।

এখন হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শাস্তি ও পুরস্কারের যে খবর দিচ্ছিলেন তার সত্যতা প্রমাণ করার জন্য যে চারটি জিনিসের কসম খাওয়া হয়েছে তাদের ওপর একবার সামগ্রিকভাবে দৃষ্টিপাত করুণ। এসব জিনিস এই সত্যটি প্রমাণ করছে যে , একজন মহাশক্তিশালী স্রষ্টা এই বিশ্ব জাহানের ওপর রাজত্ব করছেন। তিনি যে কাজটিই করছেন , তা উদ্দেশ্যহীন , লক্ষহীন , অর্থহীন নয় এবং তার পেছনে কোন বিজ্ঞতাপূর্ণ পরিকল্পনা নেই একথা বলা যাবে না। বরং তাঁর প্রত্যেকটি কাজের মধ্যে একটি স্পষ্ট বিজ্ঞানসম্মত পরিকল্পনা সক্রিয় রয়েছে। তাঁর পৃথিবীতে কখনো এমন দেখা যাবে না যে , এখনই রাত আবার এখনই হঠাৎ সূর্য একেবারে মাথার ওপর উঠেছে । অথবা একদিন চাঁদ উঠলো কাস্তের মতো সরু হয়ে এবং তারপর একে বারে গোল থালার মতো পূর্ণচন্দ্র আকাশে শোভা পেতে লাগলো। অথবা রাত এলো কিন্তু তা আর শেষই হচ্ছে না , স্থায়ীভাবে ঠায় একই জায়গায় দাঁড়িয়ে রইলো। অথবা আদতে দিন রাত্রির পরিবর্তনের কোন স্থায়ী ব্যবস্থাই নেই। যার ফলে তারিখের হিসাব রাখা যায় না। আজ কোন মাসের কয় তারিখ,কোন তারিখে কোন কাজটি শুরু করা হয়েছিল এবং কবে খতম হবে , গ্রীস্মকাল কবে থেকে শুরু হচ্ছে এবং বর্ষাকাল ও শীতকাল কবে আসবে -- এসব জানা সম্ভব হয় না। বিশ্ব জাহানের অন্যান্য অসংখ্য জিনিস বাদ দিয়ে মানুষ যদি শুধুমাত্র দিন রাত্রের এই যথা নিয়মে যাওয়া আসার বিষয়টি মনোযোগ সহকারে দেখে এবং এ ব্যাপারটি নিয়ে একটু মাথা ঘামায় , তাহলে এক সর্বশক্তিমান সত্তা যে এই বিরাট নিয়ম শৃংখলা ও আইনের রাজত্ব কায়েম করেছেন এবং এই নিয়ম শৃংখলার সাথে এখানে সৃষ্টজীবের অসংখ্য স্বার্থ ও কার্মপ্রবাহ জড়িত তার সাক্ষ - প্রমাণ সে এর মধ্যেই পেয়ে যাবে। এখন এই ধরনের জ্ঞানবান ও বিজ্ঞানময় এবং মহাশক্তিধর স্রষ্টার আখেরাতে শাস্তি ও পুরস্কার দেবার বিষয়টি যদি দুনিয়ার কোন মানুষ অস্বীকার করে তাহলে সে দু'টি নির্বুদ্ধিতার মধ্য থেকে কোন একটিতে অবশ্যি লিপ্ত । হয় সে তাঁর ক্ষমতা অস্বীকার করে এবং মনে করে তিনি এই অকল্পনীয় নিয়ম শৃংখলা সহকারে এই বিশ্ব জাহান সৃষ্টি করার ক্ষমতা রাখেন কিন্তু মানুষকে পুনর্বার সৃষ্টি করে তাকে শাস্তি ও পুরস্কার দান করার ক্ষমতা তাঁর নেই অথবা সে তাঁর জ্ঞানবত্তা ও বিজ্ঞানময়তা অস্বীকার করে এবং তাঁর সম্পর্কে একথা মনে করে নিয়েছে যে , তিনি মানুষকে দুনিয়ায় বুদ্ধি - বিবেক ও ক্ষমতা ইখতিয়ার দিয়ে সৃষ্টি করেছেন ঠিকই কিন্তু তিনি কখনো তার কাছ থেকে এই বুদ্ধি - বিবেক ও ক্ষমতা ইখতিয়ারকে সে কিভাবে কাজে লাগিয়েছে তার হিসেব নেবেন না। আর তিনি ভালো কাজের পুরস্কার দেবেন না এবং খারাপ কাজের শাস্তিও দেবেন না। এই দু'টি কথার কোন একটিকেও যে ব্যক্তি মেনে নেবে সে একজন প্রথম শ্রেণীর নির্বোধ।


﴿أَلَمْ تَرَ كَيْفَ فَعَلَ رَبُّكَ بِعَادٍ﴾
৬) তুমি২ কি দেখনি

২. দিন-রাত্রির আবর্তন ব্যবস্থা থেকে শাস্তি ও পুরস্কার বিধানের প্রমাণ পেশ করার পর এখন তার নিশ্চিত সত্য হবার ব্যাপারে মানুষের ইতিহাস থেকে প্রমান পেশ করা হচ্ছে । ইতিহাসের কয়েকটি পরিচিত জাতির কর্মপদ্ধতি ও তাদের পরিণাম উল্লেখ করা হয়েছে একথা বলার উদ্দেশ্যে যে , এই বিশ্ব জাহান কোন অন্ধ ও বধির প্রাকৃতিক আইনের ভিত্তিতে পরিচালিত হচ্ছে না। বরং এক বিজ্ঞানময় আল্লাহ এই সমগ্র বিশ্ব ব্যবস্থা পরিচালনা করছেন। আর এই আল্লাহর সার্বভৌম কর্তৃত্বের মধ্যে তোমরা যাকে প্রাকৃতিক আইন মনে করো কেবল মাত্র সেই আইনটিই সক্রিয় নেই বরং এই সাথে একটি নৈতিক আইনও এখানে সক্রিয় রয়েছে , যার অনিবার্য দাবী হচ্ছে , কাজের প্রতিফল এবং শাস্তি ও পুরস্কার দান। এই আইন যে সক্রিয় রয়েছে তার চিহ্ন এই দুনিয়াতেই বার বার প্রকাশ হতে থেকেছে এবং তা থেকে বুদ্ধি - বিবেকবান মানুষ বিশ্ব জাহানের শাসন কর্তৃত্বের প্রকৃতি ও স্বভাব সুস্পষ্টভাবে জানতে পেরেছে। এখানে যেসব জাতি আখেরাতের ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে এবং আল্লাহর শাস্তি ও পুরস্কারের ভয় না করেই নিজেদের জীবনের ব্যবস্থা পরিচালনা করেছে তারা পরিণামে বিপর্যস্ত হয়েছে এবং বিপর্যয় সৃষ্টিকারী রূপে আত্ম- প্রকাশ করেছে । আর যে জাতিই এ পথে চলেছে বিশ্ব জাহানের রব তার ওপর শেষ পর্যন্ত আযাবের চাবুক বর্ষণ করেছেন। মানুষের ইতিহাসের এই ধারাবাহিক অভিজ্ঞতার দু'টি কথা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণ করছে : এক , আখেরাত অস্বীকার করার কারণে প্রত্যেক জাতি বিপথে পরিচালিত হয়েছে এবং শেষ পর্যন্ত তা তাকে ধ্বংসের আবর্তে নিক্ষেপ করেছে। কাজেই আখেরাত একটি যথার্থ সত্য। প্রত্যেক সত্যের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হবার যে ভয়াবহ পরিণতি হয় এর সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হবার ফলও তাই হয়। দুই , কর্মফল কোন এক সময় পূর্ণ মাত্রায়ও দেয়া হবে। কারণ বিপর্যয় ও বিকৃতির শেষ পর্যায়ে এসে আযাবের চাবুক যাদের ওপর বর্ষিত হয়েছে তাদের পূর্বে শত শত বছর পর্যন্ত বহু লোক এই বিপর্যয়ের বীজ বপন করে এই দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছিল এবং তাদের ওপর কোন আযাব আসেনি। আল্লাহর ইনসাফের দাবী এই যে , কোন এক সময় তাদের সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক এবং তারা কৃতকর্মের ফল ভোগ করুক। ( কুরআন মজীদে আখেরাতের ব্যাপারে এই ঐতিহাসিক ও নৈতিক যুক্তির বিশ্লেষণ বিভিন্ন জায়গায় করা হয়েছে এবং সবজায়গায় আমি এর ব্যাখ্যা করেছি। উদাহরণ স্বরূপ নিম্নোক্ত জায়গাগুলো দেখুন : তাফহীমূল কুরআন , সূরা আল আরাফ ৫- ৬ টীকা , ইউনুস ১২ , হূদ ৫৭, ১০৫, ১১৫ টীকা , ইবরাহীম ৯ টীকা , আন নহল ৬৬ ও ৮৬ টীকা , আররূম ৮ টীকা , সাবা ২৫ টীকা , সাদ ২৯ ও ৩০ টীকা আল মু'মিন ৮০ টীকা , আদ দুখান ৩৩ ও ৩৪ টীকা ; আল জাসিয়াহ - ২৭ ও ২৮ টীকা , কাফ ১৭ টীকা এবং আয যারিয়াত ২১ টীকা । )

.

﴿إِرَمَ ذَاتِ الْعِمَادِ﴾
৭) তোমার রব সুউচ্চ স্তম্ভের অধিকারী আদে - ইরামের৩ সাথে কি আচরণ করেছেন ,

৩. ' আদে ইরাম ' বলতে আদ জাতির সেই প্রাচীন ধারাটির কথা বুঝানো হয়েছে যাকে কুরআন মজীদ ও আরবের ইতিহাসে ' আদে উলা ' (প্রথম ) বলা হয়েছে। সূরা আন নাজমে বলা হয়েছে : ( আরবী -----------) "আর তিনি প্রাচীন আদ জাতিকে ধবংস করেছেন । " ( ৫০ আয়াত ) অর্থাৎ সেই আদ জাতিকে যাদের কাছে হযরত হূদ আলাইহিস সালামকে পাঠানো হয়েছিল এবং যাদের ওপর আযাব নাযিল হয়েছিল। অন্যদিকে এই জাতির যেসব লোক আযাব থেকে রেহাই পাওয়ার পর নিজেদের জাতি সত্তার সমৃদ্ধি সাধন করেছিল , আরবের ইতিহাসে তাদেরকে ' আদ উখরা ' ( দ্বিতীয় আদ ) নামে অভিহিত করা হয়েছে । প্রাচীন আদ জাতিকে " আদে ইরাম " বলার কারণ হচ্ছে এই যে , তারা সিরিয় বংশজাত আদদের সেই বংশধারার সাথে সম্পর্কিত যাদের উদ্ভব হয়েছিল নূহ আলাইহিস সালামের নাতি ও সামের ছেলে ইরাম থেকে । ইতিহাসে আদদের এই মাখার আরো কয়েকটি উপশাখা প্রসিদ্ধি অর্জন করেছে। সামূদ এদের অন্যতম। কুরআনে এই জাতিটির উল্লেখ করা হয়েছে। দ্বিতীয়টি হচ্ছে আরমিয়ান ( Arameana) জাতি । এরা প্রথমে সিরিয়ার উত্তর এলাকায় বসবাস করতো। এদের ভাষা আরামী (Aramic)। সিরিয়ার ভাষাগুলোর মধ্যে এই ভাষাটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে।
আদের জন্য ' যাতুল ইমাদ ' ( সুউচ্চ স্তম্ভের অধিকারী ) শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। কারণ তারা বড় বড় উঁচু উঁচু ইমারত তৈরি করতো। দুনিয়ায় তারাই সর্বপ্রথম উঁচু উঁচু স্তম্ভের ওপর ইমারত নির্মাণ করার কাজ শুরু করে। কুরআন মজীদের অন্য জায়গায় তাদের এই বৈশিষ্টকে নিম্নোক্তভাবে বর্ণনা করা হয়েছে " হযরত হূদ ( আ ) তাদেরকে বলেন ,

আরবী ---------------------------------------------------------------------------------------------

" তোমাদের এ কেমন অবস্থা , প্রত্যেক উঁচু জায়গায় অনর্থক একটি স্মৃতিগৃহ তৈরি করছো এবং বড় বড় প্রসাদ নির্মাণ করছো , যেন তোমরা চিরকাল এখানে থাকবে। " ( আশ শু' আরা , ১২৮ - ১২৯ )


.

﴿الَّتِي لَمْ يُخْلَقْ مِثْلُهَا فِي الْبِلَادِ﴾
৮) যাদের মতো কোন জাতি দুনিয়ার কোন দেশে সৃষ্টি করা হয়নি ?৪

৪. অর্থাৎ তারা সমকালীন জাতিদের মধ্যে ছিল একটি তুলনাবিহীন জাতি। শক্তি শৌর্য - বীর্য , গৌরব ও আড়ম্বরের দিক দিয়ে সে যুগে সারা দুনিয়ায় কোন জাতির তাদের সমকক্ষ ছিল না। কুরআনের অন্যান্য স্থানে তাদের সম্পর্কে বলা হয়েছে :
আরবী ------------------------------------------------------------------

" দৈহিক গঠনের দিক দিয়ে তোমাদের অবয়বকে অত্যন্ত সমৃদ্ধ করেছেন। ( আল আরফ , ৬৯ )

আরবী --------------------------------------------------------------------------------------

" আর তাদের ব্যাপারে বলতে গেলে বলতে হয় , তারা কোন অধিকার ছাড়াই পৃথিবীর বুকে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্বের অহংকার করেছে। তারা বলেছে : কে আছে আমাদের চাইতে বেশী শক্তিশালী ৷ " ( হা মীম সাজদাহ , ১৫ )

আরবী ----------------------------- " আর তোমরা যখন কারোর উপর তাহ উঠিয়েছো প্রবল পরাক্রান্ত হয়েই উঠিয়েছো । " ( আশ শু'আরা , ১৩০ )


﴿وَثَمُودَ الَّذِينَ جَابُوا الصَّخْرَ بِالْوَادِ﴾
৯) আর সামূদের সাথে , যারা উপত্যকায় পাথর কেটে গৃহ নির্মাণ করেছিল ?৫

৫. উপত্যকা বলতে ' আলকুরা ' উপত্যকা বুঝানো হয়েছে। সামূদ জাতির লোকেরা সেখানে পাথর কেটে কেটে তার মধ্যে গৃহ নির্মাণ করেছিল। সম্ভবত ইতিহাসে তারাই প্রথম জাতি হিসেবে চিহ্নিত যারা পাহাড়ের মধ্যে এভাবে ইমারত নির্মাণের রীতি প্রচলন করেছিল। ( বিস্তারিত জানার জন্য দেখুন তাফহীমূল কুরআন , আল আরাফ ৫৭ -৫৯ টীকা , আল হিজর ৪৫ টীকা এবং আশ শু'আরা ৯৫- ৯৯ টীকা )।

﴿وَفِرْعَوْنَ ذِي الْأَوْتَادِ﴾
১০) আর কীলকধারী ফেরাউনের৬ সাথে ?

৬. ফেরাউনের জন্য ' যুল আউতাদ ' ( কীলকধারী ) শব্দ এর আগে সুরা সাদের ১২ আয়াতেও ব্যবহার করা হয়েছে। এর কয়েকটি অর্থ হতে পারে। তার সেনাবাহিনীকে কীলকের সাথে তুলনা করা হয়েছে এবং সেই অর্থে কীলকধারী মানে সেনাবাহিনীর অধিকারী । কারণ তাদেরই বদৌলতে তার রাজত্ব এমনভাবে প্রতিষ্ঠিত ছিল যেমন কীলকের সাহায্যে তাঁবু মজবুতভাবে প্রতিষ্ঠিত থাকে। এর অর্থ সেনা দলের সংখ্যাধিক্যও হতে পারে। এক্ষেত্রে এর অর্থ হবে , তার সেনাদল যেখানে গিয়ে তাঁবু গাঁড়তো সেখানেই চারদিকে শুধু তাঁবুর কীলকই পোঁতা দেখা যেতো। আবার অর্থ সেই কীলকও হতে পারে যা মানুষের শরীরে গেঁড়ে দিয়ে সে তাদেরকে শাস্তি দিতো। এও হতে পারে , মিসরের পিরামিডগুলোকে কীলকের সাথে তুলনা করা হয়েছে। কারণ সেগুলো ফেরাউনদের পরাক্রম ও শান শওকতের নিদর্শন হিসেবে হাজার হাজার বছর থেকে পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে।

.

﴿الَّذِينَ طَغَوْا فِي الْبِلَادِ﴾
১১) এরা দুনিয়ায় বিভিন্ন দেশে বড়ই সীমালংঘন করেছিল

.

﴿فَأَكْثَرُوا فِيهَا الْفَسَادَ﴾
১২) এবং সেখানে বহু বিপর্যয় সৃষ্টি করেছিল৷

.

﴿فَصَبَّ عَلَيْهِمْ رَبُّكَ سَوْطَ عَذَابٍ﴾
১৩) অবশেষে তোমার রব তাদের ওপর আযাবের কশাঘাত করলেন৷

.

﴿إِنَّ رَبَّكَ لَبِالْمِرْصَادِ﴾
১৪) আসলে তোমার রব ওঁৎ পেতে আছেন ৷৭

৭. জালেম ও বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের কার্যকলাপের প্রতি নজর রাখার জন্য ওঁৎ পেতে থাকা প্রবাদটির ব্যবহার করা হয়েছে রূপক হিসেবে। কোন ব্যক্তির কারো অপেক্ষায় কোন গোপন স্থানে এই উদ্দেশ্যে লুকিয়ে বসে থাকে যে , তার আয়ত্বের মধ্যে আসার সাথে সাথেই সে তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়বে , একে বলা হয় ওঁৎ পেতে থাকা। যার জন্য লুকিয়ে বসে থাকা হয় সে জানতে পারে না যে , তার ওপর আক্রমণ করার জন্য কেউ কোথাও লুকিয়ে বসে আছে। সে নিশ্চিন্তে চারদিকে সম্পর্কে অসতর্ক হয়ে ঐ স্থান অতিক্রম করতে থাকে তখন আকস্মাৎ সে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। দুনিয়ায় যেসব জালেম বিপর্যয়ের তুফান সৃষ্টি করে থাকে আল্লাহর মোকাবিলায় তাদের অবস্থাও অনুরূপ হবে । আল্লাহ যে একজন আছেন এবং তিনি তার সমস্ত কার্যকলাপের প্রতি লক্ষ রাখছেন , এ অনুভূতিই তার থাকে না। সে একেবারে নির্ভয়ে দিনের পর দিন বেশী বেশী শয়তানী কাজ করে যেতে থাকে । তারপর একদিন যখন সে এক সীমান্তে পৌঁছে যায় যেখান থেকে আল্লাহ তাকে আর এগিয়ে যেতে দিতে চান না , তখন তার উপর হঠাৎ আল্লাহর আযাবের চাবুক বর্ষিত হয়।

﴿فَأَمَّا الْإِنسَانُ إِذَا مَا ابْتَلَاهُ رَبُّهُ فَأَكْرَمَهُ وَنَعَّمَهُ فَيَقُولُ رَبِّي أَكْرَمَنِ﴾
১৫) কিন্তু ৮ মানুষের অবস্থা হচ্ছে এই যে , তার রব যখন তাকে পরীক্ষায় ফেলেন এবং তাকে সম্মান ও নিয়ামত দান করেন তখন সে বলে , আমার রব আমাকে সম্মানিত করেছেন৷

৮. এখন লোকদের সাধারণ নৈতিক অবস্থায় সমালোচনা করে বলা হচ্ছে , যেসব লোক দুনিয়ার জীবন এই দৃষ্টিভংগী ও কর্মনীতি অবলম্বন করেছে তাদের কার্যাবলীর হিসেব কখনো না নেয়ার কি কারণ থাকতে পারে ৷ দুনিয়ায় এসব কাজ কারবার করে যখন মানুষ বিদায় নেবে তখন তার কাজের জন্য সে কোন শাস্তি বা পুরস্কার লাভ করবে না একে বুদ্ধি ও নৈতিক বৃত্তির দাবী বলে কেমন করে মেনে নেয়া যেতে পারে।

.

﴿وَأَمَّا إِذَا مَا ابْتَلَاهُ فَقَدَرَ عَلَيْهِ رِزْقَهُ فَيَقُولُ رَبِّي أَهَانَنِ﴾
১৬) আবার যখন তিনি তাকে পরীক্ষায় ফেলেন এবং তার রিযিক তার জন্য সংকীর্ণ করে দেন তখন সে বলে , আমার রব আমাকে হেয় করেছেন৷৯

৯. অর্থাৎ এটি হচ্ছে মানুষের বস্তুবাদী জীবন দর্শন। এই দুনিয়ার ধন - সম্পদ , ক্ষমতা , কর্তৃত্বকেই সে সবকিছু মন করে। এগুলো পেলে সে আনন্দে উল্লাসিত হয় এবং বলে আল্লাহ আমাকে মর্যাদ দান করেছেন। আবার না পেলে বলে , আল্লাহ আমাকে লাঞ্ছিত ও অপমানিত করেছেন। অর্থাৎ ধন সম্পদ ও ক্ষমতা কর্তৃত্ব পাওয়া না পাওয়াই হচ্ছে তার কাছে মর্যাদা ও লাঞ্ছনার মানদণ্ড। অথচ প্রকৃত ব্যাপারটিই সে বোঝে না । আল্লাহ দুনিয়ায় যাকেই যা কিছুই দিয়েছেন পরীক্ষার জন্যই দিয়েছেন। ধন ও শক্তি দিয়েছেন পরীক্ষা করার জন্য। এগুলো পেয়ে মানুষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না অকৃতজ্ঞ হয় , তা তিনি দেখতে চান। দারিদ্র ও অভাব দিয়েছেন পরীক্ষা করার জন্য। ধৈর্য ও পরিতুষ্টি সহকারে মানুষ আল্লাহর ইচ্ছার ওপর সন্তুষ্ট থাকে এবং বৈধ সীমার মধ্যে অবস্থান করে নিজের সমস্যা ও সংকটের মোকবিলা করে , না সততা বিশ্বস্ততা ও নৈতিকতার সব বাঁধন ছিন্ন করে আল্লাহকেই গালমন্দ দিতে থাকে , তা আল্লাহ অবশ্যই দেখতে চান।

﴿كَلَّا ۖ بَل لَّا تُكْرِمُونَ الْيَتِيمَ﴾
১৭) কখনোই নয় , ১০ বরং তোমরা এতিমের সাথে সম্মানজনক ব্যবহার কর না ১১

১০. অর্থাৎ এটি কখনই মর্যাদা ও লাঞ্ছনার মানদণ্ড নয়। তোমরা মস্তবড় ভুল করছো । একে সৎ চারিত্রিক মনোবৃত্তি ও অসৎ চারিত্রিক মনোবৃত্তির পরিবর্তে তোমরা মর্যাদা ও লাঞ্ছনার মানদণ্ড বানিয়ে রেখেছো ।

১১. অর্থাৎ তার বাপ জীবিত থাকাকালে তার সাথে তোমরা এক ধরনের ব্যবহার করো। আর তার বাপ মারা যাবার সাথে সাথেই প্রতিবেশী ও দূরের আত্মীয়দের তো কথাই নেই , চাচা , মামা এমনকি বড় ভাই পর্যন্ত তার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়।

﴿وَلَا تَحَاضُّونَ عَلَىٰ طَعَامِ الْمِسْكِينِ﴾
১৮) এবং মিসকীনকে খাওয়াবার জন্য পরস্পরকে উৎসাহিত কর না ৷ ১২

১২. অর্থাৎ তোমাদের সমাজে গরীবদের আহার করাবার কোন রেওয়াজই নেই। কোন ব্যক্তি নিজে অগ্রসর হয়ে কোন অভুক্তকে আহার করাবার উদ্যোগ নেয় না। অথবা ক্ষুধার্তদের ক্ষুধা নিবারণ করার কোন চিন্তাই তোমাদের মনে আসে না এবং এর ব্যবস্থা করার জন্য তোমরা পরস্পককে উৎসাহিতও করো না।

﴿وَتَأْكُلُونَ التُّرَاثَ أَكْلًا لَّمًّا﴾
১৯) তোমরা মীরাসের সব ধন সম্পদ সম্পূর্ণরূপে খেয়ে ফেলো১৩

১৩. আরবে মেয়েদের ও শিশুদের এমনিতেই মীরাস থেকে বঞ্চিত রাখা হতো। এ ব্যাপারে লোকেরা যে মত পোষণ করতো তা ছিল এই যে , মীরাস লাভ করার অধিকার একমাত্র এমন সব পুরুষের আছে যারা লড়াই করার ও পরিবারের লোকদের হেফাজত করার ক্ষমতা ও যোগ্যতা রাখে। এছাড়াও মৃত ব্যক্তির উত্তরাধিকারীদের মধ্যে যে ব্যক্তিই সবচেয়ে বেশী শক্তিশালী ও প্রভাবশালী হতো সে নিশ্চিন্তে সমস্ত মীরাস নিজের একার দখলে নিয়ে নিতো এবং যারা নিজেদের অংশ হাসিল করার ক্ষমতা রাখতো না তাদের সবারটা গ্রাস করে ফেলতো । অধিকার ও কর্তব্যের কোন গুরুত্বই তাদের কাছে ছিল না। অধিকারী নিজের অধিকার হাসিল করতে পারুক বা না পারুক ঈমানদারীর সাথে নিজের কতর্ব্য মনে করে তাকে তার অধিকার প্রদান করার কথা তারা চিন্তাই করতো না।

﴿وَتُحِبُّونَ الْمَالَ حُبًّا جَمًّا﴾
২০) এবং এই ধন সম্পদের প্রেমে তোমরা মারাত্মকভাবে বাঁধা পড়েছ৷১৪

১৪. অর্থাৎ বৈধ - অবৈধ ও হালাল - হারামের কোন পার্থক্যই তোমাদের কাছে নেই। যে কোন পদ্ধতিতে সম্পদ অর্জন করতে তোমরা মোটেই ইতস্তত করো না। যত বিপুল পরিমাণ ধন - সম্পদই তোমরা লাভ করো না কেন তোমাদের লোভের ক্ষুধা মেটে না।

﴿كَلَّا إِذَا دُكَّتِ الْأَرْضُ دَكًّا دَكًّا﴾
২১) কখনই নয় , ১৫ পৃথিবীকে যখন চূর্ণবিচূর্ণ করে বালুকাময় করে দেয়া হবে

১৫. অর্থাৎ তোমাদের চিন্তা ভুল। তোমরা দুনিয়ায় যত দিন জীবন যাপন করবে , এসব কিছুই করতে থাকবে এবং এজন্য তোমাদের কোন জবাবদিহি করতে হবে না , একথা ঠিক নয়। যে শাস্তি ও পুরস্কার বিষয়টি অস্বীকার করে তোমরা এই জীবন পদ্ধতি অবলম্বন করেছো সেটি কোন অসম্ভব ও কাল্পনিক ব্যাপার নয়। বরং সে বিষয়টি অবশ্যি সংঘটিত হবে। সামনের দিকে সেটি কখন সংঘটিত হবে সে সম্পর্কে উল্লেখ করা হয়েছে।

.

﴿وَجَاءَ رَبُّكَ وَالْمَلَكُ صَفًّا صَفًّا﴾
২২) এবং তোমার রব এমন অবস্থায় দেখা দেবেন৷১৬ যখন ফেরেশতারা সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকবে৷

১৬. মূলে বলা হয়েছে ( আরবী ------------------------------------------------------------) এর শাব্দিক অনুবাদ হচ্ছে , " তোমার রব আসবেন।" তবে আল্লাহর জন্য এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাওয়ার কোন প্রশ্নই ওঠে না। তাই একে রূপক অর্থেই গ্রহণ করতে হবে এর উদ্দেশ্য এমনি ধরনের একটি ধরাণা দেয়া যে , সে সময় আল্লাহর সার্বভৌম কর্তৃত্ব , শাসন ও প্রতাপের নিদর্শনসমূহ পূর্ণরূপে প্রকাশিত হবে । দুনিয়ায় কোন বাদশাহর সমগ্র সেনাদল এবং তার মন্ত্রীপরিষদ ও সভাসদদের আগমনে ঠিক ততটা প্রভাব ও প্রতাপ সৃষ্টি হয় না যতটা বাদশাহর নিজের দরবারে আগমনে সৃষ্টি হয়। এই বিষয়টিই এখানে বুঝানো হয়েছে।

.

﴿وَجِيءَ يَوْمَئِذٍ بِجَهَنَّمَ ۚ يَوْمَئِذٍ يَتَذَكَّرُ الْإِنسَانُ وَأَنَّىٰ لَهُ الذِّكْرَىٰ﴾
২৩) সেদিন জাহান্নামকে সামনে আনা হবে৷

.

﴿يَقُولُ يَا لَيْتَنِي قَدَّمْتُ لِحَيَاتِي﴾
২৪) সেদিন মানুষ বুঝবে কিন্তু তার বুঝতে পারায় কী লাভ ? ১৭ সে বলবে, হায়, যদি আমি নিজের জীবনের জন্য কিছু আগাম ব্যবস্থা করতাম !

১৭. মূলে বলা হয়েছে আরবী -------------------------------------------------------------------- এর দু'টি অর্থ হতে পারে । এক , সেদিন মানুষ দুনিয়ায় যা কিছু করে এসেছে তা স্মরণ করবে এবং সেজন্য লজ্জিত হবে । কিন্তু তখন স্মরণ করায় এবং লজ্জিত হওয়ায় কোন লাভ হবে না। দুই , সেদিন মানুষ সচেতন হবে। সে উপদেশ গ্রহণ করবে। সে বুঝতে পারবে , নবীগণ তাকে যা কিছু বলেছিলেন তাই ছিল সঠিক এবং তাদের কথা না মেনে সে বোকামি করেছে। কিন্তু সে সময় সচেতেন হওয়ায় , উপদেশ গ্রহণ করায় এবং নিজের ভুল বুঝতে পারায় কী লাভ ৷

.

﴿فَيَوْمَئِذٍ لَّا يُعَذِّبُ عَذَابَهُ أَحَدٌ﴾
২৫) সেদিন আল্লাহ যে শাস্তি দেবেন তেমন শাস্তি কেউ দিতে পারবে না৷

.

﴿وَلَا يُوثِقُ وَثَاقَهُ أَحَدٌ﴾
২৬) এবং আল্লাহ যেমন বাঁধবেন আর কেউ তেমন বাঁধতে পারবে না৷

.

﴿يَا أَيَّتُهَا النَّفْسُ الْمُطْمَئِنَّةُ﴾
২৭) ( অন্য দিকে বলা হবে ) হে প্রশান্ত আত্মা !১৮

১৮. 'প্রশান্ত আত্মা ' বলে এমন মানুষকে বুঝানো হয়েছে যে, কোন প্রকার সন্দেহ সংশয় ছাড়াই পূর্ণ নিশ্চিন্ততা সহকারে ঠাণ্ডা মাথায় এক ও লা -শরীক আল্লাহকে নিজের রব এবং নবীগণ যে সত্য দীন এনেছিলেন তাকে নিজের দীন ও জীবন বিধান হিসেবে গণ্য করেছে। আল্লাহ ও তাঁর রসূলের কাছে থেকে যে বিশ্বাস ও বিধানই পাওয়া গেছে তাকে সে পুরোপুরি সত্য বলে মেনে নিয়েছে। আল্লাহর দীন যে জিনিসটি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে তাকে সে অনিচ্ছা সত্ত্বেও নয় বরং এই বিশ্বাস সহকারে বর্জন করেছে যে , সত্যিই তা খারাপ। সত্য প্রীতির পথে যে কোন ত্যাগ স্বীকারের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে সে নির্দ্ধিধায় তা করেছে। এই পথে যেসব সংকট , সমস্যা , কষ্ট ও বিপদের মুখোমুখি হতে হয়েছে হাসি মুখে সেগুলো বরদাশত করেছে। অন্যায় পথে চলে লোকদের দুনিয়ায় নানান ধরনের স্বার্থ , ঐশ্বর্য ও সুখ - সম্ভার লাভ করার যেসব দৃশ্য সে দেখছে তা থেকে বঞ্চিত থাকার জন্য তার নিজের মধ্যে কোন ক্ষোভ বা আক্ষেপ জাগেনি। বরং সত্য দীন অনুসরণ করার ফলে সে যে এই সমস্ত আবর্জনা থেকে মুক্ত থেকেছে , এজন্য সে নিজের মধ্যে পূর্ণ নিশ্চিন্ততা অনুভব করেছে। কুরআনের অন্যত্র এই অবস্থাটিকে ' শারহে সদয় ' বা হৃদয় উন্মুক্ত করে দেয়া অর্থে বর্ণনা করা হয়েছে। ( আল আন' আম , ১২৫ )

﴿ارْجِعِي إِلَىٰ رَبِّكِ رَاضِيَةً مَّرْضِيَّةً﴾
২৮) চলো তোমার রবের দিকে , ১৯ এমন অবস্থায় যে তুমি ( নিজের শুভ পরিণতিতে ) সন্তুষ্ট ( এবং তোমরা রবের প্রিয়পাত্র৷

১৯. একথা তাকে মৃত্যুকালে ও বলা হবে , যখন কিয়ামতের দিন পুনরায় জীবিত হয়ে হাশরের ময়দানের দিকে যেতে থাকবে সে সময়ও বলা হবে এবং আল্লাহর আদালতে পেশ করার সময় ও তাকে একথা বলা হবে। প্রতিটি পর্যাযে তাকে এই মর্মে নিশ্চয়তা দান করা হবে যে , সে আল্লাহর রহমতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

.

﴿فَادْخُلِي فِي عِبَادِي﴾
২৯) শামিল হয়ে যাও আমার ( নেক ) বান্দাদের মধ্যে

.

﴿وَادْخُلِي جَنَّتِي﴾
৩০) এবং প্রবেশ করো আমার জান্নাতে৷

.

২১ মার্চ ২০১৪ রাত ০৮:১৪
145985
লুকোচুরি লিখেছেন : জাযাকুমুল্লাহু খাইরান। Good Luck Good Luck Good Luck
১৫
195848
২১ মার্চ ২০১৪ রাত ০৯:২৮
আফরোজা হাসান লিখেছেন : আমি সবসময় এমন কিছু মানুষকে খুঁজতাম যারা আমার মত করে চিন্তা করে। সবসময় স্বপ্ন দেখেছি যখন খুঁজে পাবো তাদেরকে নিয়ে আমি কাজ শুরু করবো...
ঘৃণার বদলে ভালোবাসা ছড়ানো,দুঃস্বপ্ন ঘেরা মনে স্বপ্নের বীজ বুনে দেয়া,হতাশার ঘোর অমানিশায় আশা জাগানিয়া হওয়া,নিজে কাঁটার উপর দিয়ে চলে অন্যের জন্য ফুল ছড়িয়ে দেয়া, নিজের কষ্টের মেঘগুলোকে অন্যের জন্য আনন্দের শ্রাবণ রূপে ঝরানো,মনের মধ্যে নিরবধি বেদনার স্রোতকে চাপা দিয়ে সুখের ধারা বইয়ে দেয়া হবে সেই কাজ...
তোমাদের কয়েকজনের মাঝে আমি সেই মানুষগুলোর ছায়া দেখতে পাই। তাই চলো আমরা সবাই মিলে সুন্দর জীবনের স্বপ্ন দেখি। আর সেই স্বপ্ন দিয়ে গড়ে তুলি আমাদের স্বপ্নিল ভুবন...

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File