আধাঁরের আলো (পর্ব ৭)

লিখেছেন লিখেছেন আলোর আভা ২১ অক্টোবর, ২০১৩, ০৬:৩৫:০৮ সন্ধ্যা



শনি বার সকালে উঠে নামাজ,কোরআন তেলাওয়াত শেষ করে কাপড় ধোয়ার মেশিনে কাপড় দিয়ে ,ঘর পরিস্কার শুরু করে আর মাঝে মাঝে এসে যে কাপড় যে গুলো ধোয়া হয় সেগুলো শুখানোর মেশিনে দিয়ে দেয় ধুয়ার মেশিনে আবার নতুন করে কাপড় দিয়ে দেয়। এভাবে করে মোনার ঘর পরিস্কার কাপড় ধুয়া,শুখানো একসাথেই শেষ হয়।এর পর মোনা কাপড়গুলো ভাজ করে ঠিক জায়গা মত রেখে রাহী আর রাহীর বোন মাহীকে গোসল করিয়ে নিজেও গোসল করে। এই সময়ে রাইমা রান্না শেষ করে।এমনি দিনে তো আর দুপুরে একসাথে খাওয়া হয় না ।তাই শনি বার দুপুরে সবাই মিলে একসাথে খায়।

খাওয়া শেষে মোনা রুমে যেয়ে বিছানায় বসতেই রাহী ও মাহী এসে বলে ফুপ্পী একটা গল্প বল। মোনা ওদের নিয়ে শুয়ে গল্প বলা শুরু করতেই দুজনেই ঘুমিয়ে পরে।মোনও একটু ঘুমাতে চায় কিন্তু ঘুম আসে না।মোনার বাবা মায়ের কথা মনে পড়ে,দেশের কথা, আত্বীয় স্বজনের কথা মনে করে মোনার খারাপ হয় যদিও বাবা মার সাথে প্রায় প্রতি দিনই কথা হয় তবু মোনার চোখ দিয়ে পানি পড়তে থাকে।দরজায় শব্দ পেয়ে মোনা তারাতারি চোখ মুছে উঠে বসে বলে এস ভিতরে এস।হাসিন ভিতরে ঢুকে মোনার দিকে তাকিয়ে বলে আপি তোমার কি মন খারাপ ?

মোনা নাতো।হাসিন ,কিন্তু আপি তোমার চেহারা দেখে মনে হচ্ছে তুমি কাঁদছিলে।

মোনা আরে না শুয়ে ছিলাম তো তাই।

হাসিন,ওকে আপি মাম্মা তোমাকে যেতে বলেছে।

মোনা ওকে তুমি যাও আমি আসরের নামাজ পড়ে আসছি

মোনা হাসিনদের বাসায় ঢুকে সরাসরি রান্না ঘরে এসে দেখে আনজোম রান্না করার জন্য অনেক কিছু বের করেছে।মোনা আনজোম কে সালাম দিয়ে জিঙ্গেস করে এত কিছু বের করেছ কেন?

আনজোম আজকে আমাদের বাসায় প্রগ্রাম তার জন্য হালকা নাস্তা বানাব আর রাতেও তোমরা আমাদের বাসায় খাবে।

মোনা আমি তো তোমাদের বাসায় সব সময়ই খাই।তার জন্য এত আয়োজনের কি আছে।আজকে কি বিশেষ কোন দিন।

আনজোম না তেমন কিছু না আজকে রাইমা, আদনান ওদেরকে ও খাওয়াব তো তাই ।

মোনা আনজোমকে রান্নার সব কিছু রেডী করে দিয়ে বলে মাম্মা তুমি এখন রান্না বসিয়ে দাও আর নাস্তার গুলো আমি রেডী করছি।

আনজোম আচ্ছা মোনা তুমি এত সুন্দর গুছিয়ে কাজ করা কার কাছে শিখেছ।

কেন আমার মায়ের কাছ থেকে।আমার ভাইয়ারা আমার আপুর অনেক পড়ে আমার জন্ম ।আমার ৫-৬ বছর বয়স তখন আমার ভাইয়ারা আপু লেখা পড়ার জন্য বাসার বাহিরে চলে যায় ।শুধু আমি ছিলাম আমার মায়ের কাছে। তখন আমার মা আমাকে হাত ধরে ধরে কাজ শিখাত এটা এভাবে না এভাবে কর ওটা এভাবে না ওভাবে কর ।আর সব সময় বিভিন্ন ভাবে বিভিন্ন রকম উপদেশ দিত। এখন আমি এখানে থাকলে কি বাংলাদেশ থেকেই আমার আম্মুই আমাকে পরিচালনা করে।আমার মা খুব শিক্ষীত না কিন্ত আমার মা আমার কাছে অনেক জ্ঞানী ।আমার মাঝে ভাল যা কিছু আছে তা সবই আমার মায়ের তৈরি করা।

আমার মা আমাকে বলত আমার মেয়ে হিসাবে নয় তুমি সুন্দর এটা আমি স্বীকার করি তবে মনে রেখ, তোমার সৌন্দর্য দেখে মানুষ তোমাকে ভাল বাসবে ১দিন ২দিন তার বেশী নয় যদি না তোমার মাঝে সৎ গুনাবলী না থাকে।আর তোমার সৌন্দর্য সে তো আল্লার দান এখানে তোমার কোন হাত নেই।আর তোমার মাঝে যদি সৎ গুনাবলী থাকে তুমি যেখানেই যাও যার কাছেই যাও সবাই তোমাকে ভালবাসবে এই ভালবাসাটা হবে স্থায়ী।তাই নিজের মাঝে সৎগুনাবলী তৈরি কর, যার কাছেই যে সৎ গুনটা দেখবে সেটাই গ্রহন করবে।

মাম্মা আমি কি কথা বেশী বলে ফেললাম।

আনজোম না আমার তো তোমার মায়ের কথা শুনতে খুব ভাল লাগছে আবার হিংসা ও হচ্ছে আবার তোমার মাকে খুব দেখতে ইচ্ছা করছে।কত লক্ষী মায়ের লক্ষী মেয়ে তুমি।

কথায় কথায় মোনা, আনজোমের কাজও শেষ হয় এদিকে প্রগ্রামের ও সময় হয়। আদনান,রাইমা আসে সাথে রাহী ,মাহীকে নিয়ে। আজকের প্রগামে আহনাফ পর্দার উপর কোরআন, হাদীসের রেফারেন্স ও বাস্তব উদাহরনের মাধ্যমে খুব সুন্দর আলোচনা করেন ।মোনা এতে খুব খুশী হয় হাসিন এবার নিশ্চয় পর্দার ব্যাপারে কিছুটা হলেও বুঝতে পারবে।

এরপর আনজোম ও আহনাফ বলে,তাদের যে ভিলা বাড়ি কেনার কথা চলছিল সেটা আজকে সকালেই ফাইনাল হয়েছে ও তারা আগামী মাসেই ওখানে উঠবে। মোনা চিৎকার করে বলে উঠে মাম্মা,

আমি সারা বিকাল তোমার সাথে ছিলাম আর তুমি আমাকে এটা বল নাই!!

আনজোম এটা তোমাদের সবার জন্য আজকের সারপ্রাইজ্ড....।

চলবে.....।

বিষয়: বিবিধ

১২১০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File