রামাযান মাসে মুমিনের দৈনন্দিন কর্মসূচী --------

লিখেছেন লিখেছেন Shopner Manush ১৭ জুন, ২০১৪, ১২:১৪:৫৭ রাত



রামাযান মাসে মুমিনের দৈনন্দিন কর্মসূচী --------

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

আল্ হামদু লিল্লাহ, ওয়াস্ সালাতু ওয়াস্ সালামু আলা রাসূলিল্লাহ, আম্মা বাদ :

রহমতের মাস, বরকতের মাস, কল্যাণের মাস, ক্ষমার মাস, কুরআনের মাস মাহে রামাযান আমাদের মাঝে উপস্থিত। এ মাসে জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয়েছে। জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কিন্তু আমরা কি রামাযানের এই মহামূল্যবান সময়গুলোকে যথাযথভাবে কাজে লাগাতে পারছি? আসুন না একটি তালিকা তৈরি করি যেন এই মাসের প্রতিটি মুহূর্তে নেকী কুড়িয়ে আখেরাতের জন্য সঞ্চয় করে রাখতে পারি।

ফজর পূর্বে:

[১] আল্লাহর দরবারে তাওবা-ইস্তেগফার ও দুয়া: কারণ মহান আল্লাহ প্রত্যেক রাতের শেষ তৃতীয়াংশে পৃথিবীর আকাশে অবতরণ করে বলেন: “কে আছে আমার কাছে দুআকারী, আমি তার দুআ কবুল করবো”। (মুসলিম)

[২] সাহরী ভক্ষণ : নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন : “সাহরী খাও। কারণ সাহরীতে বরকত আছে”।(বুখারী মুসলিম)

ফজর হওয়ার পর:

[১] ফজরের সুন্নত আদায়: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন : “ফজরের দুই রাকাআত সুন্নত দুনিয়া ও দুনিয়ার মাঝে যা আছে তার থেকে উত্তম”। (মুসলিম )

[২] ইকামত পর্যন্ত দুআ ও যিকিরে মশগুল: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন :”আযান ও ইকামতের মাঝে দুআ ফিরিয়ে দেওয়া হয় না”। (আহমদ, তিরমিযী, আবূ দাউদ)

[৩] ফজরের নামায আদায়: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন :”তারা যদি ইশা ও ফজরের ফযীলত জানতো, তো হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তাতে উপস্থিত হত”। (বুখারী ও মুসলিম)

[৪] সূর্যোদয় পর্যন্ত সকালে পঠিতব্য দুআ-যিকর ও কুরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে মসজিদে অবস্থান: “নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফজর নামাযের পর নিজ স্থানেই সূর্যোদয় পর্যন্ত অবস্থান করতেন”। (মুসলিম )

[৫] সূর্যোদয়েরে পর দুই রাকাআত নামায: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন :”যে ব্যক্তি জামায়াতের সহিত ফজরের নামায পড়লো, অতঃপর সূর্যোদয় পর্যন্ত বসে আল্লাহর যিকর করলো, তারপর দুই রাকাআত নামায আদায় করলো, তার জন্য এটা একটি পূর্ণ হজ্জ ও উমরার মত “। (তিরমিযী)

[৬] নিজ নিজ কর্মে মনোযোগ: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “নিজ হাতের কর্ম দ্বারা উপার্জিত খাদ্যের চেয়ে উত্তম খাবার নেই”। (বুখারী)

যহরের সময় :

[১] জামায়াতের সহিত জহরের নামায আদায়। অতঃপর কিছুক্ষণ কুরআন কিংবা অন্যান্য দীনী বই পাঠ।

[১] আসর পর্যন্ত বিশ্রাম, কারণ তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: ( তোমার উপর তোমার শরীরেরও হক আছে)।

আসরের সময় :

[১] আসরের নামায জামাতের সাথে সম্পাদন: অতঃপর ইমাম হলে নামাযীদের উদ্দেশ্যে দারস প্রদান কিংবা দারস শ্রবণ কিংবা ওয়ায নসীহতের ক্যাসেট ও সিডির মাধ্যমে জ্ঞান অর্জন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন :”যে ব্যক্তি মসজিদে ভাল কিছু শিক্ষা নিতে কিংবা শিক্ষা দেওয়ার উদ্দেশ্যে গেল, সে পূর্ণ এক হজ্জের সমান নেকী পেল”। (ত্ববারানী)

[২] পরিবারের সদস্যদের সাথে ইফতারির আয়োজনে সহায়তা করা: এর মাধ্যমে যেমন কাজের চাপ হাল্কা হয় তেমন পরিবারের সাথে ভালবাসাও বৃদ্ধি পায়।

মাগরিবের সময়

[১] ইফতারি করা এবং এই দুআ পাঠ করা: “যাহাবায্ যামাউ ওয়াব্ তাল্লাতিল্ উরূকু ওয়া সাবাতাল্ আজরু ইন্ শাআল্লাহু তাআলা”। অর্থ: পিপাষা নিবারিত হল, রগ-রেশা সিক্ত হল এবং আল্লাহ চাইলে সওয়াব নির্ধারিত হল।(আবূ দাউদ)

[২] মাগরিবের নামায জামায়াতের সাথে আদায় করা যদিও ইফতারি পূর্ণরূপে না করা যায়। বাকি ইফতারি নামাযের পর সেরে নেওয়া মন্দ নয়। অতঃপর সন্ধ্যায় পঠিতব্য যিকির-আযকার পাঠ করে নেওয়া।

[৩] স্বভাবানুযায়ী রাতের খাবার খেয়ে নিয়ে একটু বিশ্রাম করে তারাবীর নামাযের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া।

ইশার সময় :

[১] জামায়াতের সহিত ইশার নামায আদায় করা।

[২] ইমামের সাথে সম্পূর্ণ তারাবীর নামায আদায় করা। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি ঈমান ও নেকীর আশায় রমযানে কিয়াম করবে, (তারাবীহ পড়বে ) তার বিগত সমস্ত (ছোট গুনাহ) ক্ষমা করা হবে”।(বুখারী ও মুসলিম)

[৩] সম্ভব হলে বিতরের নামায শেষ রাতে পড়া। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন :তোমরা বিতরকে রাতের শেষ নামায কর”। (মুত্তাফিকুন আলাইহ)

বিষয়: বিবিধ

১৪২৩ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

235620
১৭ জুন ২০১৪ রাত ১২:২৮
কথার_খই লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ ভালো লাগলো
235621
১৭ জুন ২০১৪ রাত ১২:২৮
সন্ধাতারা লিখেছেন : অনেক অনেক ধন্যবাদ খুব খুব ভালো লাগলো লিখাটি
235629
১৭ জুন ২০১৪ রাত ০১:০৪
ধ্রুব নীল লিখেছেন : jajak allah khair
235639
১৭ জুন ২০১৪ রাত ০২:০২
আবু তাহের মিয়াজী লিখেছেন : রামাযান মাসে মুমিনের দৈনন্দিন কর্মসূচী আমরা জাতে মানতে পারি, মহান রব আমাদেরকে তাওফীক দিন। আমীন।
আর আপনাকে ও অসংখ মুবারকবাদ । সুন্দর একটি বিষয় পোষ্ট করার জন্য।
236389
১৮ জুন ২০১৪ রাত ১১:৪৪
আফরা লিখেছেন : অনেক ভাল লাগল ।
237776
২৩ জুন ২০১৪ সকাল ০৬:১৪
বৃত্তের বাইরে লিখেছেন : রমজানের গুরুত্ব বুঝে মহান রাব্বুল আলামীন আমাদের সবাইকে তাকওয়া অর্জন করার এবং এই মাসটিকে সফলকাম করার করার তৌফিক দিন। আমিন Praying
ধন্যবাদ আপনাকে
242131
০৬ জুলাই ২০১৪ রাত ০৩:২৬
Shopner Manush লিখেছেন : সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ আমার ব্লগে গুরে যাওয়ার জন্য ---

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File