সালাতের রুকন ও ওয়াজিব সমুহ।

লিখেছেন লিখেছেন ইমরান ভাই ০৩ আগস্ট, ২০১৪, ০৩:১১:৩৫ দুপুর



ছালাতের রুকন সমূহ:---------------


‘রুকন’ অর্থ স্তম্ভ। এগুলি অপরিহার্য বিষয়। যা ইচ্ছাকৃত বা ভুলক্রমে পরিত্যাগ করলে ছালাত বাতিল হয়ে যায়। যা ৭টি। যেমন-

(১) ক্বিয়াম বা দাঁড়ানো : আল্লাহ বলেন, ‘আর তোমরা আল্লাহর জন্য একনিষ্ঠচিত্তে দাঁড়িয়ে যাও’ (বাক্বারাহ ২/২৩৮)

(২) তাকবীরে তাহরীমা : ‘আল্লাহু আকবর’ বলে দুই হাত কাঁধ অথবা কান পর্যন্ত উঠানো। আল্লাহ বলেন, ‘তোমার প্রভুর জন্য তাকবীর দাও’ (মুদ্দাছছির ৭৪/৩)- অর্থাৎ তাঁর বড়ত্ব ঘোষণা কর। রাসূলূল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, ‘ছালাতের জন্য সবকিছু হারাম হয় তাকবীরের মাধ্যমে এবং সবকিছু হালাল হয় সালাম ফিরানোর মাধ্যমে’।[আলবানী, ছিফাতু ছালা-তিন্নবী ১২১ পৃঃ]

(৩) সূরায়ে ফাতিহা পাঠ করা : রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, (লা ছালা-তা লেমান লাম ইয়াক্বরা’ বেফা-তিহাতিল কিতা-বে) ‘ঐ ব্যক্তির ছালাত সিদ্ধ নয়, যে ব্যক্তি সূরায়ে ফাতিহা পাঠ করে না’।[ইবনুল ক্বাইয়িম, বাদায়ে‘উল ফাওয়ায়েদ ৩/৮৯-৯০; মাসায়েলে ইমাম আহমাদ, মাসআলা-৩২০, ১/২৩৬ পৃঃ]

( ৪ ও ৫) রুকূ ও সিজদা করা : আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা রুকূ কর ও সিজদা কর...’(হজ্জ ২২/৭৭)।

(৬) তা‘দীলে আরকান বা ধীর-স্থির ভাবে ছালাত আদায় করা :

‘আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, জনৈক ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করে ছালাত আদায় শেষে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে সালাম দিলে তিনি তাকে সালামের জওয়াব দিয়ে বলেন, তুমি ফিরে যাও এবং ছালাত আদায় কর। কেননা তুমি ছালাত আদায় করনি। এইভাবে লোকটি তিনবার ছালাত আদায় করল ও রাসূল (ছাঃ) তাকে তিনবার ফিরিয়ে দিলেন।(অতঃপর তিনি তাকে ধীরে-সুস্থে ছালাত আদায় করা শিক্ষা দিলেন)’।[মুত্তাফাক আলাইহ,মিশকাত হা /৭৯০,সালাতের বিবরণ’ অনু১০]

(৭) ক্বা‘দায়ে আখীরাহ বা শেষ বৈঠক:

শেষ বৈঠকে বসা এবং সালাম ফিরানোটাই ছিল রাসূল (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরামের নিয়মিত সুন্নাত।[বুখারি , মিশকাত হা/৯৪৮’তাশাহহুদে দুয়া অনুচ্ছেদ-১৭]

কঠিন অসুখ বা অন্য কোন বাস্তব কারণে অপারগ অবস্থায় উপরোক্ত শর্তাবলী ও রুকন সমূহ ঠিকমত আদায় করা সম্ভব না হ’লে বসে বা শুয়ে ইশারায় ছালাত আদায় করবে।[মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/৮৮৭, ‘সিজদা ও তার ফযীলত’ অনুচ্ছেদ-১৪।] কিন্তু জ্ঞান থাকা পর্যন্ত কোন অবস্থায় ছালাত মাফ নেই।

ছালাতের ওয়াজিব সমূহ:------------------


রুকন-এর পরেই ওয়াজিব-এর স্থান, যা আবশ্যিক। যা ইচ্ছাকৃতভাবে তরক করলে ছালাত বাতিল হয়ে যায় এবং ভুলক্রমে তরক করলে ‘সিজদায়ে সহো’ দিতে হয়। যা ৮টি।

[আবুদাঊদ হা/৮৪০; ঐ, মিশকাত হা/৮৯৯ অনুচ্ছেদ-১৪।] যেমন-

১. ‘তাকবীরে তাহরীমা’ ব্যতীত অন্য সকল তাকবীর।[আবুদাঊদ হা/৮৩৮; ঐ, মিশকাত হা/৮৯৮ অনুচ্ছেদ-১৪, টীকা, পৃঃ ১/২৮২; মির‘আত ৩/২১৭-১৮; ইরওয়া হা/৩৫৭।]

২. রুকূতে তাসবীহ পড়া: কমপক্ষে ‘সুবহা-না রবিবয়াল ‘আযীম’ বলা।[‘কেননা দুই হাতও সিজদা করে যেমন মুখমন্ডল সিজদা করে থাকে’। -মুওয়াত্ত্বা, মিশকাত হা/৯০৫ ‘সিজদা ও তার ফযীলত’ অনুচ্ছেদ-১৪।]

৩. ক্বাওমার সময় ‘সামি‘আল্লা-হু লেমান হামেদাহ’ বলা।[ফিক্বহুস্ সুন্নাহ ১/১২৩; আবুদাঊদ, তিরমিযী, নায়লুল আওত্বার ৩/১২১।

৪. ক্বওমার দো‘আ:কমপক্ষে ‘রববানা লাকাল হাম্দ’ অথবা ‘আল্লা-হুম্মা রববানা লাকাল হাম্দ’ বলা। [মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, বুখারী, মিশকাত হা/৭৯২ অনুচ্ছেদ-১০, হা/৮৮৮ অনুচ্ছেদ-১৪।]

৫. সিজদায় গিয়ে তাসবীহ পড়া: কমপক্ষে ‘সুবহা-না রবিবয়াল আ‘লা’ বলা।[মুত্তাফাক্ব ‘আলআইহি, মিশকাত হা/৮৯১ অনুচ্ছেদ-১৪।]

৬. দুই সিজদার: মাঝখানে স্থির হয়ে বসা ও দো‘আ পাঠ করা। যেমন কমপক্ষে ‘রবিবগফিরলী’ ২ বার বলা।[আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৮০১।]

৭. প্রথম বৈঠকে বসা ও ‘তাশাহহুদ’ পাঠ করা।[মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/৮৮৮ ‘সিজদা ও তার ফযীলত’ অনুচ্ছেদ-১৪।]

৮. সালামের মাধ্যমে ছালাত শেষ করা।[আবুদাঊদ, তিরমিযী, মিশকাত হা/৩১২ ‘পবিত্রতা’ অধ্যায়-৩, ‘যা ওযূ ওয়াজিব করে’ অনুচ্ছেদ-১; ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/১০৬ পৃঃ।]

[[{{সংগ্রিহীত: অনেকের উপকার হবে, সেজন্য দিলাম}}]]

বিষয়: বিবিধ

১৮০৩ বার পঠিত, ৩৭ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

250427
০৩ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ০৩:২৫
সন্ধাতারা লিখেছেন : It is an important post. Jajakallahu khair.
০৩ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৪:০৯
194623
ইমরান ভাই লিখেছেন : ওয়া আনতুম ফাজাজাকুমুল্লাহু খায়রান
Love Struck Love Struck
হ্যারি একটা কমেন্টস করে সেই যে গেল আর তো এলোনা Frustrated হ্যারিরখালামনি Tongue
০৩ আগস্ট ২০১৪ রাত ০৮:৩৬
194710
সন্ধাতারা লিখেছেন : You are right. It seems like he is busy!
250434
০৩ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ০৩:৪২
ফেরারী মন লিখেছেন : অনেক অনেক ধন্যবাদ সুন্দর একটি পোষ্টের জন্য
০৩ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৪:১০
194627
ইমরান ভাই লিখেছেন : আপনাকেও ধন্যবাদ উপকার হয়েছে জেনে খুব খুশি হলাম। আপনার চোখের ছবিটা বিরক্তিকর Frustrated Frustrated বলার জন্য দুঃখিত Broken Heart
250457
০৩ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৪:২৪

A PHP Error was encountered

Severity: Notice

Message: Undefined offset: 9368

Filename: views/blogdetailpage.php

Line Number: 764

"> আমি মেঘ হবো লিখেছেন : Thumbs Up Thumbs Up Thumbs Up Rose Rose Rose চমৎকার চমৎকার
০৩ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৪:৩১
194635
ইমরান ভাই লিখেছেন : Happy>- Happy>- Love Struck Love Struck থ্যাংকু থ্যাংকু জাজাকাল্লাহ Happy

আপনি মেঘ হবেন আমরা কি হবো...Tongue
250467
০৩ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৪:৩৮
আফরা লিখেছেন : জাজাকাল্লাহ খাইরান ভাইয়া । অনেক প্রয়োজনীয় বিষয় শেয়ার করেছেন ।
০৩ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৫:০১
194650
ইমরান ভাই লিখেছেন : Love Struck Love Struck ওয়া আনতুমফাজাজাকুমুল্লাহু খায়রান Love Struck Love Struck
250500
০৩ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৫:৫৯
মোঃমাছুম বিল্লাহ লিখেছেন : প্রিয়তে...
০৪ আগস্ট ২০১৪ সকাল ০৮:০১
194860
ইমরান ভাই লিখেছেন : জাজাকাল্লাহ Big Grin
250505
০৩ আগস্ট ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:২৮
রঙ্গিন স্বপ্ন লিখেছেন : Thanks Va।
০৪ আগস্ট ২০১৪ সকাল ০৮:০১
194861
ইমরান ভাই লিখেছেন : Big Grin জাজাকাল্লাহ
250533
০৩ আগস্ট ২০১৪ রাত ০৮:১২
মোহাম্মদ লোকমান লিখেছেন : ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।
০৪ আগস্ট ২০১৪ সকাল ০৮:০২
194862
ইমরান ভাই লিখেছেন : জাজাকাল্লাহ ঈদ মোবারক লোকমান ভাই Big Grin
250536
০৩ আগস্ট ২০১৪ রাত ০৮:২২
সত্যলিখন লিখেছেন :
০৪ আগস্ট ২০১৪ সকাল ০৮:০৫
194863
ইমরান ভাই লিখেছেন : আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহ বর্ণিত যে, রাসূল ﷺ ইরশাদ করেন : সূর্য উদিত হয় এমন সকল দিনের মধ্যে শ্রেষ্ঠ দিন হ’ল জুমু’আর দিন। এই দিনেই আদম (আ)-কে সৃষ্টি করা হয়েছে। এদিনেই তাঁকে জান্নাতে প্রবেশ করান হয়। এই দিনেই তাঁকে তা থেকে বের করা হয়। আর এই জুমু’আর দিনেই কিয়ামত সংঘটিত হবে।
[তিরমিযি-৪৮৮)
Love Struck Love Struck
খালামনি দাওয়াত রইলো আসবেন কিন্তু Angel
০৪ আগস্ট ২০১৪ সকাল ০৯:৫৯
194882
সত্যলিখন লিখেছেন : যখন আমার ব্লগে গিয়ে কমেন্টস করতেন তখন ছিলাম আপা ।আর যখন আমি কষ্ট করে কত দূর থেকে দীর্ঘপথ পায়ে হেটে মনের টানে আপনার জ্ঞানের অট্রালিকা ব্লগ বাড়িতে বেড়াতে আসলাম তখন ডাকছেন খালামনি ।বেপারটা কেমন জানি খটকা লাগছে । থাক নিজের অজ্ঞ কুড়ের ঘরে পড়ে থাকাই ভালো ।
০৪ আগস্ট ২০১৪ সকাল ১০:২২
194886
ইমরান ভাই লিখেছেন : অনেক কষ্টে বুঝছি যে আপনাকে আপা বলা ঠিক হবে না কেননা আপনি আমার মায়ের মতোই হবেন। তাই মায়ের বনের সম্মান দেয়াই ছ্রেয় হবে বলে ডাকছি। Happy

সম্মানটা একটু বেশি দেবো তাই ডাকছি খালামনি Happy দ্বীতিয় মা Love Struck
০৪ আগস্ট ২০১৪ সকাল ১০:৪৬
194890
সত্যলিখন লিখেছেন : মা শব্দ টা খুব সেন্সেটিভ শব্দ ।যিনি মা তিনিও যেমন আতংকে থাকেন এই শব্দটার মর্যাদা অক্ষুন্ন রাখতে ।কারন মায়ের অনেক দায়িত্ব থাকে সন্তানের প্রতি ।
আবার যিনি এই শব্দটা মুখে উচ্চারন করেন তিনি লাভ করেন অনেক শান্তি ও শান্তনার অমিয় ধারা, চৈত্রের কাঠ ফাটা রোদের শিরিন শীতল হাওয়া,দুঃখের অমারাতে স্বস্তির বাতিঘর,ছাতি ফাটা তৃষ্ণায় আলৌকিক আবে হায়াত।
তাই দায়িত্ব কর্তব্য কারো থেকে কারো কম না।আমার জীর্ন সিন্ন কাথার মত দেহে কি আর এখন সেই উষ্ণ ভালবাসা দিয়ে সন্তান কে আচলে ডাকা বাহু বন্ধনে আগলে রাখতে পাবর ?তাই আবার ভেবে দেখ ।সময় আছে হাতে তোমার অনেক । পরে দুঃখের সাগরে ফেলে চলে যাবার চেয়ে আগেই সুখের সোনার তরীতে না উঠানোই ভাল।
০৪ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ১২:৪০
194913
ইমরান ভাই লিখেছেন : আপনি যে সম্মান পাবার যোগ্য ইনশাআল্লাহ তাই দিবো সব সময়।
আপনাকে কি বলে ডাকবো আপনিই সিলেক্ট করে দেন প্লিজ Praying

আপনি মুসলিমা আমি মুসলিম। কখনো ভুল করলে তো শুধরে দিবেন এটাই আমি চাই।

আপনার সাথে বিভিন্ন বিষয়ে ইখতিলাফ থাকলেও আপনাকে অনেক পছন্দ করি Love Struck

কিবলে ডাকবো ? প্লিজ বলেদিন......Rolling Eyes Praying Love Struck
০৪ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ০২:১৪
194932
সত্যলিখন লিখেছেন : Click this link
২১ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৪:৫৩
200395
সূর্যের পাশে হারিকেন লিখেছেন : Angel Rolling Eyes Waiting Applause
254428
১৫ আগস্ট ২০১৪ সকাল ০৫:০১
বুড়া মিয়া লিখেছেন : খুবই জরুরী বিষয় জানিয়েছেন ইমরান ভাই।

সাহু সিজদার কারণগুলো এবং এছাড়াও একসাথে ৮ রাক’আত এনং ৭ রাক’আত ফরয নামাজ কিভাবে পড়তে হয় সেটা নিয়ে একটা পোষ্ট দিয়েন।
১৫ আগস্ট ২০১৪ সকাল ০৭:৪৬
198187
ইমরান ভাই লিখেছেন : একসাথে ৮ রকাত ৭ রকাত বিষয়টি বিস্তারিত বলুন,,,, ঠিক বুঝতে পারি নাই ?Rolling Eyes
১৫ আগস্ট ২০১৪ সকাল ০৯:৪৬
198197
বুড়া মিয়া লিখেছেন : যোহর+আসর এর ৮ রাকআত
মাগরিব+এশা এর ৭ রাকাত
১৫ আগস্ট ২০১৪ সকাল ১০:৪৬
198209
ইমরান ভাই লিখেছেন : আপনার কি কোন ওজর আছে যে এভাবে সালাত পড়তে হবে!
ওজর থাকলে উত্তর খুজবো ইনশাআল্লাহ না থাকলে আর খুজবো না।
১৫ আগস্ট ২০১৪ সকাল ১০:৫১
198211
বুড়া মিয়া লিখেছেন : এরকম নামাজের কথা জানা যায় – তাই জানার ইচ্ছা।
হজ্বে গেলে কি হাজীরা এভাবে ৮ রাকাত ৭ রাকাত নামাজ পড়ে?
১৫ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ১২:০৪
198228
ইমরান ভাই লিখেছেন : হ্যা হজের সময় এর একটা বিধান আছে।
১৫ আগস্ট ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:৫৪
198361
বুড়া মিয়া লিখেছেন : সেটাই জানান, ঈমাম সাহেব কিভাবে পড়বে এবং পিছনে মুসুল্লীরা কিভাবে পড়বে
২০ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৫:১৯
200016
ইমরান ভাই লিখেছেন : ২ ওয়াক্ত নামাজ একত্রে পড়া জায়েজ।
১) عن ابن عباس قال: جمع رسول الله –صلى الله عليه وسلم- بين الظهر والعصر والمغرب والعشاء بالمدينة في غير خوف ولا مطر আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ রাসূল (সাঃ) মদীনাতে বৃষ্টি ও ভয় ছাড়াও যোহর ও আসর এবং মাগরিব ও ইশার নামায একত্রিত করে আদায় করেছেন। (মুসলিম) টিকাঃহাদীছে বর্ণিত বৃষ্টি ছাড়াও কথাটি প্রমাণ করে যে বৃষ্টির সময় তখন দুই নামায একত্রে আদায় করার বিষয়টি সর্বসাধারণের কাছে পরিচিত ছিল। আমার পক্ষ থেকে লাগানো টিকা এ পর্যন্তই। ইমাম আলবানী (রঃ) বলেনঃ হাদীছে ভয় ও বৃষ্টির কথাটি এসেছে। এথেকে বুঝা যাচ্ছে যে, বৃষ্টির সময় দুই নামায একত্রে করে পড়ার বিষয়টি তাদের কাছে খুবই প্রসিদ্ধ ছিল।

তিনি আরও বলেনঃ বৃষ্টির সময় দুই নামায একত্র করে পড়া জায়েয না হলে এখানে বৃষ্টির কথা উল্লেখ করা অর্থহীন। (দেখুন ইরওয়াউল গালীল, ৩/৪০) ২) মুস্তাহাযার রোগে আক্রান্ত মহিলাদেরকে রাসূল (সাঃ) একবার গোসল করে দুই নামায একত্র করে পড়ার আদেশ দিয়েছেন। ৩) তাবুক যুদ্ধে রাসূল যোহর-আসর এবং মাগরিব-ইশা একত্র করে আদায় করেছেন।

(মুসলিম)সফরের সময় দুই নামায একত্র করে পড়ার হাদীছগুলো খুবই প্রসিদ্ধ। আলেমগণ বলেনঃ কষ্টের কারণে সফর অবস্থায় দুই নামাযকে একত্র করে পড়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে। আর বৃষ্টি, অসুস্থতা, ভয়, প্রচন্ড ঠান্ডা ও বন্যার কারণেও প্রতি ওয়াক্তে যথা সময়ে মসজিদে গিয়ে নামায পড়া কষ্টকর। এই কষ্ট লাঘব করার জন্যও উপরোক্ত অবস্থায় দুই নামায একত্র করে পড়া জায়েয। সুতরাং এই অনুমতি গ্রহণ করাই আল্লাহর নিকট পছন্দনীয়। ৫) ইবনে উমার (রাঃ) বলেনঃ আল্লাহ যেমন তার নাফরমানী করাকে অপছন্দ করেন তেমনি তার রুখসতগুলো তথা যে সমস্ত ক্ষেত্রে তিনি অনুমতি দিয়েছেন, তা গ্রহণ করাও ভালবাসে। (মুসনাদে আহমাদ ও ইবনে খুজায়মা। ইমাম আলবানী সহীহ বলেছেন। দেখুন ইরওয়াউল গালীল হাদীছ নং- ৫৬৪) ৬) ইমাম মালেক (রঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, নাফে (রঃ) বলেনঃ খলীফা ও আমীরগণ যখন বৃষ্টির সময় মাগরিব ও ইশার নামায একত্রে আদায় করতেন, তখন ইবনে উমারও তাদের সাথে উভয় নামায একত্র করে আদায় করতেন। দেখুন ইরওয়াউল গালীল হাদীছ নং- ৫৮৩) ৭) মুসা ইবনে উকবা (রঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেনঃ উমার বিন আব্দুল আযীয বৃষ্টি হলে মাগরিব ও ইশার নামায একত্রে আদায় করতেন। সাঈদ বিন মুসায়্যেব, উরওয়া ইবনুয যুবায়ের, আবু বকর বিন আব্দু রাহমানসহ সেই সময়ের বিজ্ঞ আলেমগণ আমীরদের সাথে তাই করতেন। তারা এর কোন প্রতিবাদ করতেন না।
(দেখুনঃ ইরওয়া, ৩/৪০)

সুতরাং কোন ইমাম যদি দুই নামায একত্রিত করে আদায়ের ক্ষেত্রে রুখসত (জায়েয হওয়ার বিধান) গ্রহণ করে এবং বৃষ্টির সময় উপস্থিত মুসল্লীদেরকে নিয়ে দুই নামাযকে একত্রিত করে আদায় করতে চায়, তখন ইমামের বিরোধীতা করা মুসল্লীদের জন্য বৈধ নয়। আরও স্মরণ রাখা দরকার যে এটি সুন্নাত ও মুস্তাহাব; ওয়াজিব বা ফরজ নয়। ইমাম মুনাভী (রঃ) বলেনঃ যে ব্যক্তি শরীয়তের হালাল, মুস্তাহাব ও সুন্নাত বিষয়গুলো পালন করতে অহংকার করবে তার দ্বীনদারী নষ্ট হয়ে যাবে। আল্লাহ্ তাআলা সুন্নাত ও মুস্তাহাব বিষয়গুলো পালন করাকেই পছন্দ করেন। আমাদের দেশে হাদীছের ব্যাপক চর্চা ও গবেষণা না থাকার কারণে দ্বীনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ মাসআলা মুসলিমদের অজানা রয়ে গেছে। সুতরাং আমাদের উচিত নিরপেক্ষভাবে হাদীছের ব্যাপক চর্চা ও আলোচনা করা। আল্লাহ্ আমাদের সেই তাওফীক দান করুন। আমীন।
২০ আগস্ট ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:১৩
200040
বুড়া মিয়া লিখেছেন : অনেক ধন্যমাদ ইমরান ভাই, আর সামান্য কিছু প্রশ্ন রয়েছে –

৩/৪ রাকাত এর ক্ষেত্রে তো প্রথম দুই রাকাতে ফাতিহা ও অন্য সূরা পড়ি আর পরে ১/২ রাকাত এ শুধু ফাতিহা পড়ি। ৭/৮ রাকাত এর ক্ষেত্রেও কি প্রথম ২ রাকাত এ ফাতিহা ও অন্য সূরা পড়ে বাকী ৫/৬ রাকাত শুধু ফাতিহা পড়বো? আর বসবো কি প্রতি দুই রাকাত পর পর এবং সেখানে শুধু আত্তাহিয়্যাতু পড়বো?
২১ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৪:৩৮
200388
ইমরান ভাই লিখেছেন : আপনি জিজ্ঞাসা করেছেন
"৩/৪ রাকাত এর ক্ষেত্রে তো প্রথম দুই রাকাতে ফাতিহা ও অন্য সূরা পড়ি আর পরে ১/২ রাকাত এ শুধু ফাতিহা পড়ি। ৭/৮ রাকাত এর ক্ষেত্রেও কি প্রথম ২ রাকাত এ ফাতিহা ও অন্য সূরা পড়ে বাকী ৫/৬ রাকাত শুধু ফাতিহা পড়বো?"

আমার মানেহয় আপনি একটু ভুল বুঝছেন। (বুঝার জন্য বললাম ভুল মাইন্ড করবেন না)
দুইটি সালাত একত্রে করার অর্থ এই নয় যে ৪+৪=৮ রাকাত পড়তে হবে একসাথে। এর অর্থ ৪ রাকাত ফরজ পরে সালাম ফিরিয়ে পুনরায় ৪ রাকাত সালাত পড়া।

অর্থাৎ ধরেন আপনি যোহর+আসর একসাথে পড়বেন তাহলে আপনাকে প্রথমে ইকামাত দিয়ে ৪ রাকাত যোহর পড়তে হবে (যেভাবে আপনি বলেছেন)এবং শেষে সালাম ফিরিয়ে আর ইকামত না দিয়ে পুনরায় আসরের ৪ রাকাত সালাত পড়তে হবে(যেভাবে আপনি প্রথমে পড়েছেন)
অর্থাৎ সালাত হবে আলাদা আলাদা কিন্তু একসাথেই একটার পরে একটা।

আশাকরি বুঝতে পারছেন।

আরো বলেছেন "আর বসবো কি প্রতি দুই রাকাত পর পর এবং সেখানে শুধু আত্তাহিয়্যাতু পড়বো?"

এক্ষেত্রেও আগের পদ্ধতি ফলো করলে দুই রাকাত পরে বসবেন ও আত্তাহিয়্যাতু পড়বেন এবং ৪ রাকাত শেষে বসে সালাম ফিরাবেন। অর্থৎ স্বাভাবীক ভাবে ৪ রাকাত সালাত পড়েন যেভাবে।

জ্ঞাতব্য: একমাত্র বেতেরে সালাত ৩ রাকাত পড়ার সময় দ্বীতিয় রাকাতে না বসে দাড়িয়ে জেতে হয় এবং তৃতীয় রাকাতে বসে একবাড়েই সালাম ফিরাতে হয়।
২১ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৫:১৬
200410
বুড়া মিয়া লিখেছেন : ওহ! তাইলে তো সোজা, আমি আরও মনে করছি যে একবারে ৭/৮ রাকাত পড়তে হবে।

নাহ আমাদের জেনারেল লাইনের লোকজনের এসব বিষয়ে মাইন্ড করলে লস, এসব বিষয়ে পুরাই মূর্খ থেকে যাবো, এসবে কোন মাইন্ড নাই; আমাকে এসব বিষয়ে জিজ্ঞেস করতে কোন সঙ্কোচবোধ করবেন না।
২১ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৫:৪২
200412
ইমরান ভাই লিখেছেন : ঠিকআছে, ভালই হলো জেনে। আল্লাহ আপনার জ্ঞানকে বাড়িয়ে দিন আমিন। Love Struck Love Struck
১০
256777
২১ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৪:৫৩
সূর্যের পাশে হারিকেন লিখেছেন : অন্নেক ভালো লাগলো Good Luck Good Luck যাজাকাল্লাহু খাইর। Rose Rose Good Luck Good Luck Rose Rose
২১ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৪:৫৬
200397
ইমরান ভাই লিখেছেন : ওয়াআনতুমফাজাজাকুমুল্লাহুখায়রান। Love Struck Love Struck

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File