হাতমাম মাকদিয়্যা শেষ পর্ব।

লিখেছেন লিখেছেন মুহাম্মদ_২ ২২ জুলাই, ২০১৩, ০৮:৩০:৫৭ সকাল

কুরআন মুমিনের ভাষা। আগ্রহী গ্রহীতার জন্য তার রসাস্বাদন সহজ করা হয়েছে। বিশ্বাস আর ভালবাসায় তাকে ধারণ করতে পারলে তার সংবাদ আর সৌন্দর্যের নাগাল পাওয়া সহজ হয়ে যায়। এই অত্যন্ত মৌলিক কাজটি যখন আমরা করতে উদ্যোগী হব, আমাদের ঈমান ও আমল-আখলাক শুদ্ধ হবার পথ খুঁজে পাবে। কুরআন আমাদেরকে তখন সঠিক দিক-নির্দেশনা দেবে কোন বিষয়কে কিভাবে গ্রহণ করতে হবে এবং কোন পন্থায়, কত গভীরতায়। কুরআনে উল্লেখিত মধ্যপন্থার স্বরূপ কী, তা প্রয়োগের হেকমত কী তা আমাদের কাছে সু্স্পষ্ট হবে। এটা কতটা অদ্ভুত যে আমরা অপরকে ইসলামের দিকে আহ্বান করি, অথচ নিজেই কুরআন পড়িনা। এটা কত জঘন্য স্তরের ধোঁকাবাজি যে, কর্মী থেকে নেতা কেউ এই গ্রন্থখানা ভালভাবে পড়লই না, কিন্তু তারাই অন্যকে কুরআনী শাসন কায়েমের ফজিলত বয়ান করে, তারাই রাজপথে ইসলামের নামে শোরগোলকারী (লিমা তাকুলুনা মা লা তাফআলুন-৬১.২-৩)। অথচ কুরআনের জ্ঞান অর্জনের সকল আয়োজন সকলের খুব কাছেই বিদ্যমান। এর নাজিলকারী সকলপ্রকারে পুরো মানবজাতিকে উদ্ভুদ্ধ করেছেন, কুরআনের কাছে আসতে, এই গ্রন্থখানা নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা-ফিকির করেত, এর থেকে উপদেশ গ্রহণ করতে সর্বোপরি এর সংস্পর্শে এসে আরোগ্য লাভ করতে (১০.৫৭, ১৭.৮২, ৪১.৪৪)। যে যেই ভাষা বা জাতি গোষ্ঠিরই হোকনা কেন কুরআনের শিক্ষাগ্রহণ যে সহজ করা হয়েছে তা পুনঃ পুনঃ উচ্চারিত হয়েছে। আমরা যেন কাউকে সাবিলিল্লাহ বা আল্লাহর পথ থেকে প্রতিরুদ্ধ না করি (অ-ইয়াছুদ্দুনা আংছাবিলিল্লাহি-৩.৯৯, ৭.৪৫, ৭.৮৬, ৮.৪৭, ৯.৩৪, ১১.১৯, ১৪.৩, ২২.২৫/ ৪.১৬৭, ১৬.৮৮, ৪৭.১, ৪৭.৩২, ৪৭.৩৪, ৫৮.১৬, ৬৩.২)। আর আল্লাহ আমাদের কার্যকলাপ সম্বন্ধে মোটেই অনবহিত নন (অমাল্লাহু বিগফিলিন ‘আম্মা তা’মালুন-২.৭৪, ২.৮৫, ২.১৪০, ২.১৪৪, ২.১৪৯, ৩.৯৯)। মোজাদ্দেদ আর পীর-কেবলার দরবারমুখি পথ আল্লাহর পথ নয়, ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থা বা খিলাফত কায়েমের স্বঘোষিত ঠিকাদারের রাজনৈতিক ইশতিহার আল্লাহর পথ নয়। আবার ‘ইসলামী আমলের’ বটিকাসহ করে দ্বারে দ্বারে ঘুরে যারা খণ্ডিত দ্বীনের দাওয়াত বিপণন করে সেটাও আল্লাহর পথ নয় কুরআন একমাত্র আল্লাহর পথ।

আমরা অনেকেই কল্যাণের জন্য ছুটোছুটি করি, কিন্তু সুস্থির হয়ে এই আলো প্রক্ষেপনের কাজটি করিনা। বিষয়টা এতটা পরিহাসকর হয়ে যায় যে, আমরা কল্যাণ ফেরি করি, অথচ নিজেই অকল্যাণের যাত্রী (২.৪৪, ৭.৩০, ৪৩.৩৭, ৬১.২-৩)। “হে ঈমানদারগণ, তোমরা নিজেদের চিন্তা কর (ইয়া আইয়্যুহাল্লাজিনা আমানু ‘আলাইকুম আংফুসাকুম-Guard your own souls/ take care of your souls)। যখন তোমরা সrপথের উপর রয়েছ, তখন কেউ পথভ্রষ্ট হলে তোমাদের কোন ক্ষতি নেই। তোমাদের সকলকে আল্লাহরই সমীপে ফিরে যেতে হবে। অতপর তিনি তোমাদেরকে জানিয়ে দেবেন যা কিছু তোমরা করতে”- ৫.১০৫। “কেউ কারো বোঝা বহন করবে না” (৬.১৬৪, ১৭.১৫, ৩৫.১৮, ৩৯.৭, ৫৩.৩৮)- অলা তাঝিরু অঝিরতুও বিঝরা উখরা। আল্লাহ তাঁর রাসূলকে বলেন: “ওরা যা বলে তা আমি সম্যক অবগত আছি। তুমি তাদের উপর জোরজবরদস্তিকারী নহ (অমা আংতা আলাইহিম বিজব্বার); অতএব যে আমার শাস্তিকে ভয় করে তাকে কুরআন দ্বারা উপদেশ দাও (ফাজাক্বির বিল কুরআন)”-৫০.৪৫।

এখন সময় এসেছে সবাই মিলে কুরআনের সবটাকে ভালভাবে ধারণ করার। সময় এসেছে এই অবহেলিত, পরিত্যক্ত মহাগ্রন্থকে গভির মমতায় বুকে তুলে নেবার। সময় এসেছে এর মধ্যে গভীর অন্তর্দৃষ্টি প্রক্ষেপনের। আমরা কি কিছুক্ষণ ভেবে দেখব, এমন একটি সমাজের কথা – যার উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ নিবিড় নিষ্ঠা আর অতলান্ত ভালবাসা নিয়ে প্রতিনিয়ত সকাল-সন্ধায় (বুকরতাও অআছিলা) কুরআন চর্চা করে, জীবনাচরণে তার প্রকাশ ঘটায় ভারসাম্য ও মধ্যপন্থার মাধ্যমে, নির্ধারিত সীমারেখার মধ্যে থেকে তা পৌঁছে দেয় স্বীয় পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন আর আল্লাহর অন্যান্য বান্দার কাছে, কুরআনের ভাষায় যারা কথা বলে, যাদের শারিরীক ভাষাকে কুরআন এক যথাযথ আদল দিয়ে দেয়, তাহলে কতইনা সন্তুষ্ট হবেন আল্লাহ সেই সত্তাগুলোর প্রতি, আর সমষ্টিগতভাবে সেই সমাজের প্রতি – যারা আল্লাহর শেখানো ভাষায় কথা বলে – যাদের ভয়েস আল্লাহর ভয়েস হয়ে যায়।

আমরা নিজেকে আল্লাহওয়ালা বলে ভাবব, কিন্তু আল্লাহর মধুর বাণী কুরআন আমাদের টানবে না, তা কি কখনো হয়? প্রতিটি সন্দিগ্ধ মন ভেবে দেখুক, কেন কুরআন তাকে টানেনা। ‘শোনা ইসলাম’ আর ‘দেখা ইসলাম’কে কুরআনের কষ্টপাথরে যাচাই করার তাগিদ কেন আমাদের নেই? পুরো মানবজাতি সংস্কারহীন মনে এই মহান গ্রন্থখানা আদ্যোপান্ত পড়ে দেখুক কী নেয়ামত থেকে মানবজাতির কমন ও স্বঘোষিত দুষমন শয়তান আর তার দোসররা তাদেরকে বঞ্চিত করছে।

আবার উল্টো দৃশ্য আছে, কুরআন পাঠ নেই, কিন্তু কুরআন খতমের হিড়িক আছে, কুরআনের গবেষণা আছে, গবেষণা প্রতিষ্ঠান আছে, প্রকাশনা আছে, এসবকিছুর দোকান আছে, কুরআন শেখানোর বদলে কুরআনের কোর্স চালু আছে। লেকচার, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম আছে, কিন্তু কুরআনের যে পঠন-পাঠনকে আল্লাহ্ উদ্বুদ্ধ করেছেন তা নেই (ইয়াতলু নাহু হাক্কা তিলাওয়াতিহি, উলাইকা ইয়ু’মিনুনা বিহি-২.১২১; অরত্তিলিল কুরআনা তারতিলা-৭৩.৪; ৭৩.২০; ৭৫.১৬)। কুরআন নিয়ে যে চিন্তাফিকির করতে বারংবার তাগিদ প্রদান করা হয়েছে তা নেই (কাজালিকা ইয়ুবায়্যিনুল্লাহু লাকুমুল আইয়াতি লা’আল্লাকুম তাতাফাক্কারুন-২.২১৯, ২৬৬; অলাআল্লাহুম ইয়া তাফাক্কারুন-১৬.৪৪, ৫৯.২১; অলাক্বদ ছর্রাফনা ফি হাজাল কুরাআনি লিইয়াজ্জাক্কারু-১৭.৪১; অছর্রাফনা ফিহি মিনাল অ’ঈদ লা’আল্লাহুম ইয়াত্তাআকুনা আও ইয়ুহদিছু লাহুম জিকরা-২০.১১৩; আফালাম ইয়াদ্দাব্বারুল ক্বওলা-২৩.৬৮; আফালা ইয়া তাদাব্বারুনাল কুরআনা, আম ‘আলা ক্বুলুবিন আক্বফালুহা-৪৭.২৪; অলাক্বদ ইয়াচ্ছারনাল কুরআনা লিজ্জিকরি ফাহাল মিম্ মুদ্দাকির-৫৪.১৭,২২,৩২,৪০)। তাদের চিন্তা-চেতনায় কমার্শিয়ালাইজেশনের ধারণাটি বেশ প্রকট, “ইসলামের সবকিছু ঝকঝকে তকতকে, মসৃন হতে হবে”। কোথায় পাওয়া গেল এ শিক্ষাগুলো, কুরআনের কোন আয়াত এ সংক্রান্ত দিক-নির্দেশনা দেয়? ইসলাম কি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন কোন ব্রান্ড কোম্পানীর কমোডিটি যা প্রচার করলেই শনৈ শনৈ প্রসার হতে থাকবে? একথার মধ্যে দরবারী, রাজতন্ত্রী, গোত্রবাদী ও মুস্তাকবিরি ইসলামের গন্ধ পাওয়া যায়, ইসলামের নয়। আল্লাহ্ তাঁর রাসূলকে বরং জোর দিয়ে বলেনঃ আমি তাদের কতক শ্রেণীকে ভোগবিলাসের যে উপকরণ দিয়েছি তুমি তার প্রতি চক্ষু তুলেও দেখবে না, তাদের জন্যে চিন্তিত হবে না আর মুমিনদের জন্য তুমি তোমার পক্ষপুট অবনমিত কর-১৫.৮৮! “আমি তাদের কতক শ্রেণীকে পরীক্ষা করার জন্যে পার্থিবজীবনের সৌন্দর্য স্বরূপ ভোগবিলাসের যে উপকরণ দিয়েছি, তুমি তার প্রতি চক্ষু তুলেও দেখবে না। তোমার প্রতিপালকের জীবনোপকরণ উৎকৃষ্ট ও অধিক স্থায়ী-২০.১৩১। হ্যাঁ, বিজনেস প্রমোশনের জন্য ব্যবসায়িক চেম্বারকে ঝলমলে করার দরকার আছে বৈকি। কুরআন শেখা বা শেখানো, প্রচার-প্রসার, দ্বীনচর্চার সাথে তার দূরতম সম্পর্কও নেই।

খাতামুন্নাবিয়্যিন হযরত মুহম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম)-এর ওফাতের অব্যবহিত পরে হযরত উম্মে আয়মন বারাকাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহা) প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছিলেন এই বলে যে, “আসমান থেকে আসা অহীর দরজা বন্ধ হয়ে গেল”। হযরত উম্মে আয়মন ছিলেন আব্দুল্লাহ ইবনে মুত্তালিবের কৃষ্ণাঙ্গ ক্রীতদাসী, শেষনবীর ধাত্রীমাতা। আরবের মরুপথে যখন মা আমেনার মৃত্যু হয়, তখন শিশু মুহম্মদকে (দHappy এই উম্মে আয়মন বারাকাহই কোলে করে আগলে নিয়ে মক্কায় ফেরত এসেছিলেন। শৈশব, কৈশোর, যৌবন এবং নবুওয়াতী জিন্দেগীর প্রায় পুরোটা সময় জুড়েই তিনি আল্লাহর রাসূলের নিকট সান্নিধ্যে ছিলেন। নবীকে কুরাইশী গোত্রবাদী অপবিত্রতা থেকে মুক্ত রেখে আসমানী সওগাত প্রদানের এ যেন দোজাহানের বাদশাহর অভূতপূর্ব এক আয়োজন। বস্তুতঃ শেষনবীর ইন্তেকালের পর আরো বেশ কবছর বেঁচে ছিলেন তিনি – যাকে নবীজি আমেনার পর তাঁর মা বলে ডাকতেন। স্বীয় রব্ব আল্লাহর প্রতি নিস্কলুস ঈমান, রাসূলের সার্বক্ষণিক সাহচর্য, নিবিড় পর্যবেক্ষণ, আজীবন অপার নিষ্ঠাপূর্ণ খেদমত থেকে রাসূলের ওফাত সম্পর্কিত তাঁর এই যে অভিব্যক্তি তা সবিশেষ তাত্পর্যপূর্ণ, গভীর অন্তর্দৃষ্টির পরিচয়বহ। এই প্রতিক্রিয়া মানবসৃষ্টির সূচনাকালকে ছুঁয়ে প্রতিঘাত হতে হতে ক্বিয়ামত পর্যন্ত পৌঁছে যায়।

এই সেই অহী যা মানব ইতিহাসের এক অভূতপূর্ব ক্ষণে দীর্ঘ ২৩ বছর মেয়াদে যখন যেমন প্রয়োজন আল্লাহর তরফ থেকে মানুষের কল্যাণে নাযিল হয়েছে। (আরবী ‘ওয়াও’ এর পরিবর্তিত রূপ ‘ব’, অহী থেকে বহি, বহি থেকে আমরা বাংলায় পড়ি বই।) এই সেই অহী যা সীমাহীন যাতনা-লাঞ্ছনা, দুঃসহ কষ্টভোগের মধ্য দিয়ে আল্লাহর শেষনবী পুরো মানবজাতির জন্য রেখে গিয়েছেন – যে যন্ত্রণার ব্যাপ্তি, গভীরতা আমাদের পক্ষে কস্মিনকালেও অনুভবে বা বোধের জগতে আনা সম্ভব নয়। ইহকাল পরকালে মানবজাতিকে মহিমা দান করতে, অকল্যাণ থেকে বাঁচাতে, আর চিরস্থায়ী কল্যাণ দিতে অহীর মাধ্যমে প্রাপ্ত চূড়ান্ত ফয়সালাকারী সেই বাণীর সংকলন পবিত্র আল-কুরআন। সেই মহিমান্বিত কুরআন পরিত্যক্ত, পরিত্যজ্য, অবজ্ঞাত, বর্জিত (২৫.৩০)– আমাদের দৈনন্দিন হিসাবের একেবারেই বাইরে।

পৃথিবীতে মানব সভ্যতার সামগ্রিক বয়স অনেক। হয়ত ক্বিয়ামত খুবই সন্নিকটে (১৬.৭৭, ২১.১, ৪২.১৭, ) যেমনটি আসমান-যমিন ও তার মধ্যস্থিত সকল কিছুর মালিক আল্লাহ বলেছেন। চারিদিকে তাকালে, একটু ভাবলে কেমন যেন স্পষ্ট হয়ে যায় মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সকল দিক থেকে সৃষ্টিটাকে গুটিয়ে আনছেন। পশ্চাতে আয়োজন চলছে এই সাময়িক পর্বটি চুকিয়ে ফেলার। কত শত সহস্র নবী-রাসূল আর তাঁদের মাধ্যমে আসমানী কিতাব পাঠিয়ে আল্লাহর একত্ব, তাওহীদের শিক্ষা, স্বীকৃতি ও তার উপর দৃঢ় প্রতিষ্ঠিত থাকতে মানব সম্প্রদায়ের প্রতি তাঁর অপার করুনার ধারা অহীর মাধ্যমে জারী রেখেছিলেন এই সেদিন পর্যন্ত। আজ সেই ধারাটি বন্ধ হয়ে গেল ‘মুহম্মাদুর রাসূলুল্লাহর’ ইন্তেকালের মধ্য দিয়ে। এরচে’ বড় সংবাদ বা তার শিরোনাম আর কী হতে পারে? তাবৎ পৃথিবীর মানুষের পক্ষে হাজার বছর সেজদায় লুটিয়ে পড়ে থেকেও আর কোন আসমানী বাণী আণয়ন সম্ভবপর হবে না। তার প্রয়োজনও নেই। কেননা শেষনবী আর মহাগ্রন্থ আল-কুরআনের মাধ্যমে আল্লাহ মানবকূলের প্রতি তাঁর প্রদত্ত নেয়ামতকে পূর্ণ করে দিয়েছেন।

আল্লাহর রাসূলের ওফাতের পর থেকে এ পর্যন্ত আমরা ইসলামের নামে অনেক কথা-কাহিনী, টার্ম-টার্মিনোলজী তৈরি করেছি আমাদের খেয়াল খুশিমতো, কখনো উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে – কুরআন পড়লে যা আপনাআপনি অসাড় বলে প্রতিয়মান হয়।

বিষয়: বিবিধ

১৩২২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File