ইসলাম ও গনতন্ত্র জান্নাত ও জাহান্নামের পথ

লিখেছেন লিখেছেন মুহাম্মদ_২ ০৫ মে, ২০১৫, ১০:৩২:১৬ রাত



আউযু বিল্লাহি মিনাশ্ শাইতানির রাজীম

আল্লাহ সকল সৃষ্টির স্রষ্টা , লালন কর্তা, মেহেরবান ও দয়াময়। ইবলিস শয়তান মানুষের সৃষ্টিলগ্ন থেকে ঘোষিত শত্রু। পৃথিবীময় মানুষে মানুষে মারামরি, কাটাকাটি, হিংসা বিদ্বেষ ও মানুষে মানুষে বৈষম্য সৃষ্টি, সকল শয়তানের কাজ।

“ওয়াল্ আসর ইন্নাল্ ইনসানা লাফি খুসর্।” “যুগের কসম, মানবজাতি নিশ্চিত বিপন্ন।”

বিশ্বময় মানবজাতি আজ ধ্বংসের মুখোমুখি।

*** *** ***

বিশ্বের দরিদ্রতম ঘনবসতিপূর্ন বাংলাদশ শয়তান ও তার সৃষ্ট রাজনৈতিক বাটপারদের “পাতানো খেলে” আজ এক মহা ধ্বংসযজ্ঞের ও মুখোমুখি। কে¦য়ামতের পূর্বে পার্থিব ক্বেয়ামতের দ্বারপ্রান্তে । জন্মের লগ্ন থেকে ভুলের পর ভুলে জাতি জাহান্নামের কিনারে দন্ডায়মান। আর একটি মাত্র ভুল, দুঃস্বপ্নময় পরিনাম ডেকে আনবে।

*** ***

স্রষ্টা ও সৃষ্টির বিধানে কোথাও গনতন্ত্র , ভোটাভুটি বা “অল্পের উপর অধিকাংশের ” নিয়ন্ত্রন বা শাসন নাই, স্রষ্টা এক, সৃষ্টি অসংখ্য। স্রষ্টার বিধানে সৃষ্টি চলে। সৃষ্টির বিধানে নয়। মানবদেহে মাথার ওজন মাত্র দুই তিন কেজি, দেহের ওজন পঞ্চাশ কেজি। দুই কেজি মাথার দ্বারা যদি দেহ নিয়ন্ত্রিত হয়, তাহলে মানুষ সুস্থ। আর যদি পঞ্চাশ কেজি দেহ দ্বারা মাথা চালিত হয়, তাহলে মানুষ উন্মাদ ও পাগল। নরনারীর বিবাহ, একক নর কর্তৃক নারী ও নারী কর্তৃক নরের পছন্দের মাধ্যমে হয়। জনগনের ভোটাভুটিতে হয় না। নারীপুরুষের মিলন ও সন্তানের জন্ম, তাও গনসমাবেশ ও গনভোটে হয়না। পরিবারে মাতাপিতা দু’জন। সন্তান অনেক , সন্তানদের ভোটে পরিবার চলে না। বরং পিতামাতার মধ্যেও একজনের কর্তৃত্ব ও অন্য সকলের আনুগত্বে সংসার “আদর্শ স্বর্গীয় সংসার” হয়।

*** *** *** ***

গনতন্ত্র ও ভোটাভোটি ইবলিস শয়তানের Brain child বা শয়তানী মস্তিষ্কের অবাধ্যতার ফল।

*** *** *** ***

আল্লাহ রাহমান মানুষকে পৃথিবীতে কল্যান ও আখরাতে জান্নাতের দিকে পরিচালিত করে ঈমান ও আমলের দ্বারা। নারী তার পেছনে, “কল্যানীয়া” সহধর্র্মিনী। ইবলিশ শয়তান মানুষকে পৃথিবীতে যৌনবিকৃতি ও পরকাল জাহান্নামের দিকে নিয়ে যায়। নারী তার সামনে, “কামসহচরী”, ধর্ম নষ্টকারিনী। আমরা কোন পক্ষে যাব ? আল্লাহর না শয়তানের?

*** *** *** ***

বাংলাদেশ পৃথিবীর দারিদ্রপীড়িত এক অশান্ত জনবহুল ক্ষুদ্রদেশ। এজাতিই আল্লাহর রহমতের আদর্শ প্রতিষ্ঠার জন্য “পাকিস্তান ” নামের পবিত্র রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছিল। কিন্তু পার্থিব স্বার্থের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে মন কষা কষির সময় শয়তান ফাঁকে ঢুকে পড়ে দুই মুসলমান ভাইদের মধ্যে খুনাখুনি আরম্ভ করে দেয়। একদিকে পাঞ্জাবী বিহারী, অপরদিকে বাঙ্গালী। কেউ আর মুসলমান রইল না।আল্লাহ শেষ নবী সঃ বলেছেন, “তোমাদের মধ্যে এমন এক সময় আসবে যখন তোমরা পরস্পর হত্যায় লিপ্ত হবে। তাতে হত্যাকারী ও নিহতরা জাহান্নামী হবে।” তাকে জিজ্ঞাসা করা হলো , ইয়া রাসুলুল্লাহ , হত্যাকারী হয়তো হত্যার জন্য জাহান্নাম যাবে, নিহত ব্যক্তি কেন জাহান্নামী হবে? উত্তওে রসুল সঃ বলেছেন, কারণ , নিহত ব্যক্তিও সুযোগ পেলে হত্যাকারীকে হত্যা করতো।”

*** *** *** ***

হত্যাযজ্ঞ ও খুনাখুনি যে জাতি ও রাষ্ট্রের স্রষ্টা , যে জাতি তওবা করে আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পন না করলে “এক মহা হত্যাযজ্ঞের ” মাধ্যমে সে জাতি বিলুপ্ত হয়। বাংলাদেশ আজ সে ক্রান্তি লগ্নে।” আল্লাহ কোন জাতির ভাগ্য পরিবর্তন করেন না, যে পর্যন্ত না স জাতি তার অন্তর পরিবর্তন করে।” (আল কোরআনঃ রাদ ১১)

*** *** ***

আল্লাহ তাঁর রহমত দিয়ে নরনারীকে স্বামী স্ত্রী , সন্তান সন্তুতি ভাইবোন ও আত্মীয় স্বজন রুপে এক , ঐক্যবদ্ধ ও মিল মোহাব্বতে সুখে দুঃখে পরস্পরকে বেঁধে মানব সমাজকে “একপরিবারে” রুপান্তরিত করেন। অভিশপ্ত শয়তান স্বামী স্ত্রীতে ফাটল ধরায়। তারপর মানব সন্তানদের একের পর এক রক্তে, বর্ণে,ভাষায়, পেশায় ও ভৌগোলিক সীমায় বিভক্ত কওে রাষ্ট্র, জাতি ও প্রজাতিতে শতধা বিভক্তির পর বিভক্ত করে পরস্পরকে গোষ্ঠীগত কলহ ও দ্বন্দে লিপ্ত করে। শান্তির সমাজ , স্বার্থদ্বন্ধের মানব সমাজের নরকের রুপ নেয়।

*** *** *** ***

وَاعْتَصِمُوا بِحَبْلِ اللَّهِ جَمِيعًا وَلَا تَفَرَّقُوا “আল্লাহর রশিকে সবে মিলে সর্বশক্তি দিয়ে ধারন করো, কখনো বিভক্ত হয়ো না,” ঈমানদার জনগোষ্ঠীর জন্য আল্লাহর নির্দেশ। এক ঘরে দশ ভাই, সমাজসেবী, চিকিৎসাবিদ, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিক্ষক, ধর্মগুরু, ব্যবসায়ী, কর্মচারী, কৃষক ও শ্রমজীবী। এরা প্রত্যেকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে পরিবারের পরস্পরের সহায়ক হলে পরিবারটি কেমন হয়? আর যদি প্রত্যেকে নিজ নিজ পেশাভিত্তিক সংগঠনের সদস্য হয়ে স্বীয় স্বার্থের পূজারী হয়ে দ্বন্ধে লিপ্ত হয়, তা হলেই বা পরিবার টি কিরুপ হয়?

প্রথমটি আল্লাহর রহমতের বন্ধনে তৈরী স্বর্গীয় পরিবার। দ্বিতীয়টি শয়তানী বিভক্তির অভিশপ্ত পরিবার।

*** *** ***

বর্তমানের রাজনৈতিক দলসমূহ, ছাত্রদলসমূহ, শিক্ষক সমিতি, মহিলা পরিষদ, চিকিৎসক সমিতি, সরকারী কর্মচারী সমিতি, বেসরকারী কর্মচারী সমিতি, শ্রমিক দল, ইত্যাকার সকল গোষ্ঠী-বিভক্তি, আল্লাহর কসম, শয়তানের নারকীয় নৈরাজ্য, যার নাম বর্তমান রাজনীতি।

এ সকল দলাদলি ও সংঘাত নির্মূল করে মানুষে মানুষে ভাই, নর ও নারীতে “ঘর ও বাহির”, শ্রমিক ও মালিকে পিতা পুত্র, শাসক ও শাসিতে “ইমাম ও মুক্তাদী”, পিতা ও পুত্রে গুরু ও শিষ্য ও সর্বোপরি, বিশ্বের মানব জাতিকে “নেক ও এক” করার “আসমানী সংগ্রাম”ই ঈমান, জিহাদ ও আল্লাহর এবাদত, বেহেশত ও মুক্তির চাবি।

এর বাইরে, সকল মত ও পথ, শয়তান-সৃষ্ট কুফর ও কাফেরীর, “মাথা-গোনা” গনতন্ত্রের । যার পরিণাম, এজন্মে সংঘাত ও “সাফাকুদ্দিমা” বা রক্তক্ষয়ী খুনখারাবী; পরজন্মে জাহান্নাম।

হে মানুষ, কোন্ পথ তোমার, শয়তানের, না “রাহমানের”?

বিষয়: বিবিধ

১৫১৩ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

318383
০৬ মে ২০১৫ রাত ০২:২৭
নুর আয়শা আব্দুর রহিম লিখেছেন : আস্সালামু আলাইকুম ওয়া রাহামাতুল্লাহি ওবারাকাতুহু । ভালো লিখেলিখেছেন....!! কিন্তু পাঠক সংখ্যা একেবারে কম!!!

জনাব ব্লগার ভেবে দেখবেন কি পাঠক সংখ্যা কম হবার কারন?
318495
০৬ মে ২০১৫ সন্ধ্যা ০৬:৫৪
শেখের পোলা লিখেছেন : লেখাটি সত্যই হৃদয়ে নাড়া দিয়ে গেল৷ আন্তরিক শুভেচ্ছা রইল৷

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File