বিমানবন্দর থেকে কমালাপুর, ট্রেনের ভাড়া ৬৩০ টাকা!

লিখেছেন লিখেছেন স্বাধীন ভাষী ৩০ জানুয়ারি, ২০১৪, ০৪:৩১:০৯ বিকাল



অফিসের সময় ইতমধ্যেই অতিবাহিত হয়ে গেছে। সকালে বিমানবন্দর গেছিলাম একটা জরুরী কাজে। সেখান থেকে ফিরছি। রেল স্টেশনে আসলাম ট্রেনে উঠতে। টিকেট কাটার লাইন অনেক লম্বা। জরুরী যাওয়ার দরকার। লোকাল ট্রেন আসতে বাকী কমপক্ষে ২/৩ ঘণ্টা। আন্তঃনগর ট্রেন আসবে মাত্র কিছুক্ষন পরেই। ইতিমধ্যেই ‘সিল্কসিটি’ ট্রেন এসে হাজির হলো। ট্রেনের ভিতর টিকেট চেকারের কাছে ভ্রাম্যমান টিকেট পাওয়া যায়। সেই ভিত্তিতে ট্রেনে উঠলাম। যাব কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন।

অপেক্ষা করতে থাকলাম টিকেট চেকারের অপেক্ষায়। টিকেট না কাটলে স্টেশন থেকে বের হতে দেবে না। বিমানবন্দর থেকে ট্রেন রওয়ানা হলো কমলাপুর স্টেশনের দিকে। কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ট্রেন থামলো। ইতিমধ্যেই অফিসের সময়ের ২:৩০ মি. দেরি হয়ে গেছে। পার্ট টাইম চাকরি। যদিও কিছু সময় ছুটি নিয়েছিলাম স্যারকে ফোন করে তার পরও এটা একটু বেশীই দেরি হয়ে গেছে।

নামার জন্য প্রস্তুতী নিচ্ছি। কিন্তু দুঃখের বিষয় এখনো পর্যন্ত কোন টিকেট চেকার আসেনি। আমি অবশ্য ২/৩টা বগিতে চেকারকে খুজেছিলাম, পাইনি। সিদ্ধান্ত নিলাম, গেটে চেকারের কাছে ভাড়া দিয়ে দিব। যাহোক, অফিসের দেরি হয়ে যাচ্ছে। তাড়াতাড়ি ট্রেন থেকে নামলাম। গেটের কাছে পৌছানোর পূর্ব মুহূর্তে একটা ফোন আসলো। ফোনে কথা বলছি। এই মুহূর্তে এক রেলওয়ে পুলিশের জিজ্ঞাসা, কোথা থেকে আসছেন, আমি বললাম বিমানবন্দর থেকে। পরক্ষনেই জিজ্ঞাসা, টিকেট কাটছেন? আমি বললাম, না। চেকার আসেনি তাই কাটতে পারিনি। তবে গেটে ভাড়া দেব বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বললো, আসুন আমার সাথে। আমি ভাড়া দেয়ার জন্য মানিব্যাগ বের করে পুলিশের পিছু পিছু গেলাম। পুলিশ আমাকে কন্ট্রোল রুমে নিয়ে বললো এখানে দাঁড়ান। আমি বললাম একটু তাড়াতাড়ি ভাড়া নিন, আমার তাড়া আছে।

এর মধ্যে আরো ৭/৮ জনকে কন্ট্রোল রুমে নিয়ে আসা হলো। আমি টাকা বের করে টাকা নিতে বললাম। আবার জিজ্ঞেস করলো, কোথা থেকে আসছেন? বললাম, বিমানবন্দর থেকে। ভাড়া চাইলো ৬৩০ টাকা। আমি বললাম, কেন? বললো, এটাই ভাড়া। কারণ জিজ্ঞেস করলাম এবং বিস্তারিত খুলে বললাম। গেটে ভাড়া দিতে আসার বিষয়টিও বললাম। আমি তাকে বললাম, আমি একজন ছাত্র। বিমানবন্দর থেকে আসছি। বিমানবন্দর থেকে ঢাকা পর্যন্ত ভাড়া ৪০ টাকা। সেখানে জরিমানাসহ দ্বিগুন হতে পারে, কিন্তু ৬৩০ টাকা কেন। কিন্তু ওই রেলওয়ে কর্মকর্তা নাছোড়বান্দা ভাড়া ৬৩০ টাকাই দিতে হবে। বেশী কথা বললে আমাকে থানায় নিয়ে যাওয়ার ভয় দেখানো হলো। একজনকে বললো আমাকে দড়ি দিয়ে বেধে রাখতে। একজনকে বললো হাতকড়া পরাতে। আমিতো রিতিমত হতভম্ব!

এর মধ্যেই খেয়াল করলাম রুমে নিয়ে আসা অপর যাত্রীদের কাছ থেকেও একই ভাবে আদায় করা হচ্ছে ভাড়া। যাদের বেশীরভাগ আমার মত ভুক্তভোগী এবং যার মধ্যে আমার সাথে একই স্থান থেকে আসা একজন যাত্রীও ছিল। আমি এবং ওই ছাত্র আমাদের যার যার ভার্সিটির আইডি কার্ড দেখলাম। তার পরও ৬৩০ টাকা না দিলে ছাড়তে নারাজ। বললো, থানায় নিলে ঠিকই ভাড়া দিবেন। যখন চার্জশিট দিব, তখন বুঝবেন।

উপায় না দেখে বোঝানোর চেষ্টা, কলেজ থেকে আসছি, আমার কাছে এত টাকা নেই। তার পরও তারা নাছোড় বান্দা। আবার আমাকে দড়ি দিয়ে বেধে থানায় নিয়ে যেতে বললো, দায়িত্বরত কর্মকর্তা। আমি অনুনয় বিনয় করে বললাম, দেখুন একজন ছাত্র আমি, একটু বোঝার চেষ্টা করুন। কিন্তু আমার কোন অনুনয় বিনয় তারা শুনতে রাজি নন। বললাম, আমার কাছে অল্প কিছু টাকা আছে প্রয়োজনে সেটা নিয়ে হলেও আমাকে যেতে দিন, আমার একটু ব্যস্ততা আছে।

আমার মানিব্যাগ চেক করা হলো। তাকে ১৪৫ টাকার মত ছিল। একটা ক্রেডিট কার্ড ছিল আর কিছু কাগজপত্র ছিল। আমি বললাম, এগুলোর মধ্যে আমার ২০ টাকা রিকশা ভাড়া রেখে বাকীটা নিয়ে হলেও আমাকে একটু তাড়াতাড়ি যেতে দিতে। আমার তাড়া আছে। তার পরও তাদের কিছুতেই মন গললো না। তারা ৬৩০ টাকা দিতে পারবো কিনা জানতে চাইলো। বললো, “৬৩০ টাকা দিতে পারবেন কি পারবেন না? ইয়েস অর নো।” আমি বললাম আমার কাছে অত টাকা নেই। দেখছেন তো মাত্র ১৪৫ টাকা আছে। আবারো আমাকে দড়ি দিয়ে বেধে থানা নিয়ে যেতে বলা হলো। আমি আবার অনুরোধ কলাম। এক পুলিশ ওই কর্মকর্তাকে বললো, দেখেন যা আছে এটা নিয়ে ছাড়া যায় কিনা। তাতেও ওই কর্মকর্তা তার সিদ্ধান্তে অবিচল। অবশেষে আমার শত অনুরোধে পুলিশ ওই কর্মকর্তাকে, যা আছে তাই নিয়ে ছেড়ে দেয়ার জন্য অনুরোধ করলে কর্মকর্তা রাজি হলো।

একটা ব্যবহৃত ও পরিত্যাক্ত টিকেটের অপর পার্শে ১৩০ টাকা উল্লেখ করে আমার নাম লিখে অবশেষে আমাকে ছাড়তে বলা হলো। এর জন্য আমাকে কোন টিকেট বা প্রাপ্তি রশিদ দিলো না।

ইতিমধ্যেই আমি লক্ষ্য করলাম, কন্ট্রোল রুমে ১২/১৫ জনকে নিয়ে আসা হয়েছে। সবার নিকট থেকে একই ভাবে টাকা আদায় করা হচ্ছে। অধিকাংশের কাছ থেকেই ৬৩০ টাকা বা কিছু কমবেশী রেখে তাকে গেট পার করে দেয়া হচ্ছে। তাদেরকে দেয়া হচ্ছে না কোন প্রকার টিকেট বা রশিদ। তাহলে এই টাকাগুলো কোথায় যাচ্ছে। টাকা গুলো যাচ্ছে না সরকারের কোষাগারে। জনগণকে হয়রাণী করে কামানো এ টাকা যাচ্ছে ঐ সকল আমলা ও পুলিশ কর্মকর্তাদের পটেকে। যারা বিভিন্ন কলা, কৌশল ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে সাধারণ ও নির্দোষ যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করে নিচ্ছে। সারাদিন শেষে ভাগ-বাটোয়ারা করে তারা পকেট বোঝায় করে বাড়ী ফিরে যাচ্ছে। আর এ অসৎ ইনকামের উদ্দেশ্যেই তারা সাধারণ যাত্রীদের এভাবে হয়রাণী করছে।

বিশেষ করে তাদের এ একগুয়েমিতার শিকার হচ্ছে সে সকল যাত্রী, যারা বাসে তীব্র যানজটের কারণে বিকল্প উপায়ে জয়দেবপুর বা বিমানবন্দর থেকে কমলাপুরে আসছেন অর্থাৎ ঢাকার অভ্যন্তরে ট্রেনে যাতায়াত করছেন তারা। অধিকাংশেরই টিকেট কাটার আগ্রহ থাকলেও টিকেট লাইনে অতিরিক্ত ভীড় থাকা বা কাজ জরুরী হওয়ায় দ্রুত ট্রেনে উঠে পড়ছে। ট্রেনের ভিতর টিকেট চেকাররা ভাড়ার বিনিময়ে টিকেট বা রশিদ প্রদান করে সে আসায়। কিন্তু চেকারকে না পাওয়া বা অন্যান্য কারণে শেষ পর্যন্ত টিকেট না কাটতে পারলে তারা পড়েন রেলওয়ে কর্মকর্তাদের এই নজিরবিহীন হয়রানীতে। ন্যায্য ভাড়া দিতে চাইলে তা মঞ্জুর হয় না। দিতে হয় অযথা কয়েক গুন ভাড়ার মাশুল। অসৌজন্যমূলক ব্যবহার ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে অসৎ উপায়ে ভাড়া আদায় করে থাকে রেলওয়ে কর্মকর্তারা।

গত কিছুদিন আগে চিত্রা এক্সপ্রেসে ‘ঢাকা থেকে কোটচাঁদপুরের’ একটা শোভন চেয়ারের টিকেট কেটে ট্রেনে উঠলাম। ট্রেন যখন কোটচাঁদপুর পৌছালো তখন বাজে ভোর ৪:৩০ মি.। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমি ট্রেনে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। কোটচাঁদপুর স্টেশন থেকে ট্রেন ছেড়ে যাওয়ার কিছু পরেই সজাগ হয়ে জানতে পারলাম, ট্রেন কোটচাঁদপুর পার হয়ে চলে এসেছে। উপায় না থাকায় চিন্তা করলাম যশোর স্টেশনে নেমে অন্য কোন ট্রেন ধরে বা বাস ধরে কোটচাঁদপুরে চলে আসব।

যশোর স্টেশনে ট্রেন থামলো। তখনো আধারে আচ্ছন্ন চারিদিক। ফজরের আজান হয়নি। এই মুহূর্তে বাস বা অন্য কিছু পাব না বলে অপেক্ষা করতে লাগলাম। স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে জিজ্ঞাসা করলাম কোটচাঁদপুর মুখি ট্রেন কখন আসবে। বললো, সকাল ৯ টা থেকে সাড়ে ৯ টার দিকে। ভাবলাম দেরি হয়ে যাবে, তাই বাসেই চলে যাবো। কিন্ত আঁধার থাকায় স্টেশন থেকে একটু পর বের হবো বলে চিন্তা করলাম। এর মধ্যে অন্য এক রেল কর্মকর্তা আমাকে ডেকে স্টেশন মাস্টারের কক্ষে নিয়ে গেলেন। জিজ্ঞেস করলেন, কোথা থেকে আসছেন? বললাম, ঢাকা থেকে। বললো টিকেটা দেখি? আমি দেখালাম। বললো, এটাতো কোটচাঁদপুরের টিকেট। আমি বললাম, জি এটা কোটচাঁদপুরের টিকেট। সাথে আমার ঘুমিয়ে যাওয়ার কাহিনীও বললাম। তিনি আমাকে বললেন, আপনি টিকেট ছাড়া যশোর এসেছেন, ভাড়া দিন। ভাড়া কত জানতে চাইলে বললো, জরিমানাসহ ৫১০ টাকা। আমি এত কেন জানতে চাইলে বললো ঢাকা থেকে যশোর এর ভাড়া ৪২০ টাকা এবং বিনা টিকেটে আসার কারণে জরিমানা বাবদ ৯০ টাকা। কিন্তু আমিতো কোটচাঁদপুর পর্যন্ত টিকেট কাটছি বললে, উত্তর দিল ওটা গ্রহণযোগ্য নয়। আপনি এখানে এসেছেন এখানকার টিকেট দেখান। ওই টিকেটের ব্যাপার কোটচাঁদপুর স্টেশন কর্মকর্তারা বুঝবে। আমি হতবাক হয়ে গেলাম। তাদের কথা, সম্পূর্ণ ভাড়াই দিতে হবে। কিছুতেই বোঝানো গেলো না তাদেরকে। বেশী কথা বললে থানায় নিয়ে যাওয়ার ভয় দেখানো হলো। দীর্ঘক্ষন অনুরোধ করার পর আমাকে জরিমানাসহ কোটচাঁদপুর থেকে যশোরের ভাড়া নিয়ে নিস্তার দেয়া হলো।

ওই দিনই যখন ট্রেনের মধ্যে ছিলাম দেখতে পেলাম আরো অনেক অনিয়ম। টিকেট চেকার টিকেট চেক করার সময় যারা ভাড়া বিহীন গাড়ীতে উঠেছে তাদের কাছে দ্বিগুন মাশুলসহ ভাড়া আদায় করছেন। অধিকাংশেরই দেয়া হচ্ছে না সেইসব ভাড়ার কোন টিকেট বা রশিদ। জানতে চাইলে বলেন, “গেটে বের করে দেয়ার দায়িত্ব আমাদের।” জরিমানা মওকুফ করতে অনুরোধ করলে বা প্রদত্ত্ব ভাড়ার রশিদ বা টিকেট চাইলে যাত্রীদের পেতে হচ্ছে অসৌজন্যমূলক ব্যবহার ও দেখানো হচ্ছে নানা অজুহাত, টালবাহানা, দ্বিগুন জরিমানা ও থানা-পুলিশের ভয়-ভীতি।

কয়েকদিন পর ঢাকায় ফেরার পথে একই আবার একই বিষয় পরিলক্ষিত হলো। তবে এবার একটা অভিনভ বিষয় খেয়াল করলাম। যেটা হলো, ঢাকা স্টেশনে পৌঁছার পূর্বে খিলগাওতে কোন সিগনাল বা কারণ ছাড়ায় ট্রেনের গতি কমানো হলো। দেখলাম, যারা টিকেট বিহীন এসেছে তাদেরকে চেকার ওখানে নামিয়ে দিচ্ছে। বিষয়টা এই দিন ছাড়াও আরো কয়েকবার যাতায়াতের সময় খেয়াল করলাম, ট্রেন খিলগাও বা তেজগাঁওতে গতি কমিয়ে এভাবে টিকেট বিহীন যাত্রীদেরকে নামিয়ে দেয়া হয়। যারা চেকারের কাছে টিকেট বা রশিদ বিহীন ভাড়া দিয়ে এসেছে। পরবর্তীতে এবং সম্প্রতি এ ঘটনা বিশ্লেষন করে অবশেষে বুঝতে সক্ষমত হলাম, এটা মুলত একটা সিন্ডিকেট। ট্রেনে দায়িত্বরত নীল কোর্ট ও সাদা পোশাকধারী কর্মকর্তা ও পুলিশ এ সিন্টিকেট তৈরী করছেন এভাবে অবৈধভাবে নিজেদের পকেট ভর্তি করার উদ্দেশ্যে। এরা মূলত ট্রেনের ভিতর ভাড়া নেয়ার পর বলে থাকে, বড় স্যার আসছে টিকেট নিয়ে দিচ্ছি, একটু বসুন টিকেট দিচ্ছি বা কাউকে নামিয়ে গেট পার করার ব্যবস্থা করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভাড়া আদায় করে থাকে। পরবর্তীতে এভাবে লাইনের মাঝে ট্রেনের গতি কমিয়ে ট্রেন থেকে যাত্রীদের নামানোর ব্যবস্থা করে।

এর অর্থ হচ্ছে টিকেট বিহীন এই সকল ব্যক্তিদের প্রদত্ত্ব ভাড়া সরকারের কোষাগারের পরিবর্তে যাবে ট্রেনে যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য দায়িত্বরত ওই সকল টিকেট চেকার ও পুলিশ কর্মকর্তাদের পকেটে। এভাবে প্রতি ট্রিপে তারা কামিয়ে নিচ্ছেন হাজার হাজার টাকা। যে টাকা যাওয়ার কথা ছিল সরকারী কোষাগারে।

এই হলো আমাদের বর্তমান যাত্রীদের নিরাপত্তা বিধানে নিয়োজিত রেলওয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের কর্মকান্ড! এ অবস্থা প্রায় অধিকাংশ ট্রেন ও রেলস্টেশনেই ঘটে চলেছে। প্রতিদিন যার শিকার হচ্ছেন হাজার হাজার সাধারণ যাত্রী।

এই টাকা ভাগ হয় ওই ট্রেনের পুরা রুটে কর্মরত কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে। ঢাকার আভ্যন্তরীন ট্রেন রুট নিকটবর্তী বা ট্রেনে যাতায়াত করে যাদের কর্মস্থলে যেতে সুবিধা তারা সাধারণত স্বল্প সময় হাতে নিয়ে অফিসে বা কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য যানজট এড়াতে ট্রেনে যাতায়াত করে থাকেন। কিন্তু টিকেট কাউন্টারে অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে সব সময় তারা টিকেট কেটে ট্রেনে উঠতে পারেন না। যার কারণে ট্রেনের আভ্যন্তরে টিকেট কাটার আসায় বিনা টিকেটেই ট্রেনে উঠে পড়ে। কিন্তু যখন টিকেট কাটতে ব্যর্থ হয় বা চেকারের দেখা না পান, তখন তাদের পড়তে হয় এই সিন্ডিকেটকারী কর্মকর্তাদের হাতে। শিকার হতে হয় অমানবিক ভোগান্তির। এক্ষেত্রে ঢাকার আভ্যন্তরীন স্টেশনগুলিতে একটা আভ্যন্তরীন রুটের টিকেট কাউন্টার চালু থাকলে এবং প্রতি ট্রেনে চেকাররা সঠিকভাবে তদারকি করলে সাধারণ যাত্রীরা এ ধরনের ভোগান্তির অবসান হয়। কিন্ত যেখানে বেড়ায়ই ফসল খেয়ে যাচ্ছে সেখানে তা কিভাবে সম্ভব! মূলত সিন্ডিকেটকারীরা ইচ্ছা করেই কাউন্টারগুলো বন্ধ করে রাখেন বলে সাধারণের ধারণা।

সাধারণত সাধারণ জনগণ অযথা থানা-পুলিশ ঝামেলা থেকে মুক্ত থাকতে এই অন্যায় ভাড়া প্রদান করতে বাধ্য হন। এভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যতে যাত্রীসাধারণ সরকারী যান ট্রেনে যাতায়াত বন্ধ করে দেবেন। এর একটা সুরাহা হওয়া অতীব জরুরী।

যাত্রীদের সুবিধার্থে ট্রেনে আভ্যন্তরীন ভাড়া আদায় নিশ্চিত করা, পুলিশ ও রেলওয়ে কর্মকর্তাদের এ ধরণের হয়রাণী বন্ধ এবং এর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট মহলের দৃষ্টি আকর্শন করছি। আশাকরি তারা যথপোযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। ( ভোগান্তির শিকার এক ট্রেনযাত্রী।)

বিষয়: বিবিধ

২০২২ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

170405
৩০ জানুয়ারি ২০১৪ বিকাল ০৫:২৫
হতভাগা লিখেছেন : এরা এভাবেই তাদের চাকরির সময়ে ঘুষ বাবদ দেওয়া টাকা উসুল করে ।

যারা পরীক্ষা দিয়ে পাশ করে এসেছে তাদের ব্যবহার আর যারা ঘুষ দিয়ে ঢুকেছে তাদের ব্যবহারে মধ্যে পার্থক্য থাকবেই ।
170410
৩০ জানুয়ারি ২০১৪ বিকাল ০৫:৩০
নীল জোছনা লিখেছেন : সর্ষের মধ্যে ভুত থাকলে সে ভুতকে তাড়ানো যায় না। যারা এসব বাস্তবায়ন করবে তারাই তো লুটপাটে ব্যস্ত ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File